গার্টি কোরি এর জীবনী | Biography Gerty Cori

গার্টি কোরি এর জীবনী | Biography Gerty Cori

May 15, 2025 - 16:27
May 20, 2025 - 23:13
 0  1
গার্টি কোরি এর জীবনী | Biography Gerty Cori

গের্টি তেরেসা কোরি: চিকিৎসা বিদ্যায় নোবেল বিজয়ী প্রথম নারী

জন্ম
Gerty Theresa Radnitz

১৫ আগস্ট ১৮৯৬
Prague, Bohemia, Austro-Hungarian Empire

মৃত্যু

২৬ অক্টোবর ১৯৫৭ (বয়স ৬১)
Glendale, Missouri, U.S.

জাতীয়তা

  • Austrian-Hungarian
  • American (naturalised)

মাতৃশিক্ষায়তন

Karl-Ferdinands-Universität in Prague
পরিচিতির কারণ
  • কার্বোহাইড্রেট মেটাবলিজম
  • দ্য কোরি সাইকেল
  • আইডেন্টিফিকেশন অব গ্লুকোজ ১- ফসফেট

দাম্পত্য সঙ্গী

কার্ল ফার্দিনান্দ কোরি (বি. ১৯২০)

সন্তান

1
পুরস্কার
  • চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার (১৯৪৭)
  • Garvan–Olin Medal (1948)

বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন

কর্মক্ষেত্র

Biochemistry

প্রতিষ্ঠানসমূহ

Washington University Medical School

গারটি কোরি

গারটি (গার্টি) টেরেসা কোরি (১৫ ই আগস্ট, ১৮৯৬ - অক্টোবর ২৬, ১৯৫৭) ছিলেন একজন অস্ট্রো-হাঙ্গেরীয় এবং আমেরিকান বায়োকেমিস্ট যিনি ১৯৪৭ সালে বিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী তৃতীয় মহিলা ছিলেন এবং "গ্লাইকোজেনের অনুঘটক রূপান্তরের কোর্সের আবিষ্কার" এ তার উল্লেখযোগ্য ভূমিকার জন্য ফিজিওলজি বা মেডিসিনে প্রথম মহিলা হিসেবে এই পুরস্কারটি পেয়েছিলেন। তিনি এটি তাঁর স্বামী বিজ্ঞানী ড. কার্ল ফার্দিনান্দ কোরি, এবং ড. বের্নার্দো হুসেই-এর সঙ্গে যুগ্মভাবে লাভ করেন। তিনি এছাড়াও অন্যান্য উল্লেখযোগ্য পুরস্কারে ভূষিত হয়েছিলেন।

কোরি প্রাগে জন্মগ্রহণ করেন (তখন অস্ট্রো-হাঙ্গেরীয় সাম্রাজ্য, বর্তমানে চেক প্রজাতন্ত্র)। Gerty একটি ডাকনাম ছিল না, বরং তিনি একটি অস্ট্রিয়ান যুদ্ধজাহাজের নামে নামকরণ করা হয়েছিল। এমন এক সময়ে বেড়ে ওঠা যখন নারীরা বিজ্ঞানে প্রান্তিক হয়ে পড়েছিল এবং কয়েকটি শিক্ষার সুযোগ পেয়েছিল, তিনি মেডিকেল স্কুলে ভর্তি হয়েছিলেন, যেখানে তিনি তার ভবিষ্যত স্বামী কার্ল ফার্দিনান্দ কোরির সাথে অ্যানাটমি ক্লাসে দেখা করেছিলেন; ১৯২০ সালে স্নাতক হওয়ার পর তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।

ইউরোপে অবস্থার অবনতির কারণে, এই দম্পতি ১৯২২ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান। গার্টি কোরি চিকিৎসা গবেষণায় তার প্রাথমিক আগ্রহ অব্যাহত রেখেছিলেন, কার্লের সাথে পরীক্ষাগারে সহযোগিতা করেছিলেন। তিনি তার স্বামীর সাথে সহ-লেখক গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করেছিলেন, পাশাপাশি এককভাবে প্রকাশ করেছিলেন। তার স্বামীর বিপরীতে, তার গবেষণার অবস্থানগুলি সুরক্ষিত করতে অসুবিধা হয়েছিল এবং তিনি যেগুলি পেয়েছিলেন সেগুলি সামান্য বেতন সরবরাহ করেছিল। তার স্বামী তাদের সহযোগিতা চালিয়ে যাওয়ার জন্য জোর দিয়েছিলেন, যদিও তাকে নিযুক্ত কারী প্রতিষ্ঠানগুলি তাকে তা করতে নিরুৎসাহিত করেছিল।

তার স্বামী কার্ল এবং আর্জেন্টাইন ফিজিওলজিস্ট বার্নার্ডো হুসে-র সাথে, গার্টি কোরি ১৯৪৭ সালে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন এমন একটি প্রক্রিয়া আবিষ্কারের জন্য যার মাধ্যমে গ্লাইকোজেন - গ্লুকোজের একটি ডেরিভেটিভ - পেশী টিস্যুতে ল্যাকটিক অ্যাসিডে ভেঙে যায় এবং তারপরে শরীরে পুনরায় সংশ্লেষিত হয় এবং শক্তির উত্স হিসাবে সংরক্ষণ করা হয় (কোরি চক্র নামে পরিচিত)।

তারা গুরুত্বপূর্ণ অনুঘটক যৌগ, কোরি এস্টারকেও চিহ্নিত করেছে। কোরিস ছিলেন তৃতীয় বিবাহিত দম্পতি যিনি নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। ২০০৪ সালে, গার্টি এবং কার্ল কোরি উভয়কেই কার্বোহাইড্রেট বিপাককে স্পষ্ট করার ক্ষেত্রে তাদের কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ একটি জাতীয় ঐতিহাসিক রাসায়নিক ল্যান্ডমার্ক হিসাবে মনোনীত করা হয়েছিল।

১৯৫৭ সালে, গার্টি কোরি মাইলোস্ক্লেরোসিসের সাথে দশ বছরের লড়াইয়ের পরে মারা যান। তিনি তার জীবনের শেষ পর্যন্ত গবেষণা গবেষণাগারে সক্রিয় ছিলেন। তিনি একাধিক পুরস্কার এবং সম্মানের মাধ্যমে তার কৃতিত্বের জন্য স্বীকৃতি পেয়েছিলেন।

কোরি চক্র

 (যথাক্রমে, জন্ম ৫ ডিসেম্বর, ১৮৯৬, প্রাগ, চেক।—মৃত্যু ২০ অক্টোবর, ১৯৮৪, কেমব্রিজ, ম্যাসাচুসেটস, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র; জন্ম ১৫ আগস্ট, ১৮৯৬, প্রাগ, চেক।—মৃত্যু ২৬ অক্টোবর, ১৯৫৭, সেন্ট লুইস, মো., মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র) ছিলেন আমেরিকান জৈবরসায়নবিদ, স্বামী-স্ত্রীর একটি দল যাদের সরল চিনির গ্লুকোজের ফসফেট-ধারণকারী রূপ এবং কার্বোহাইড্রেটের জন্য এর সার্বজনীন গুরুত্ব আবিষ্কার করা হয়েছিল।বিপাক , প্রাণীজগতে শর্করা এবং স্টার্চের আন্তঃরূপান্তরের উপর হরমোনের প্রভাব সম্পর্কে ধারণা লাভের দিকে পরিচালিত করে। তাদের আবিষ্কারের ফলে তারা ( বার্নার্ডো হাউসের সাথে ) ১৯৪৭ সালে চিকিৎসাবিদ্যা বা শারীরবিদ্যায় নোবেল পুরষ্কার অর্জন করেন।

জার্মান বিশ্ববিদ্যালয় প্রাগে ছাত্র থাকাকালীন তাদের পরিচয় হয় এবং ১৯২০ সালে তাদের বিয়ে হয় এবং একই বছর তারা তাদের মেডিকেল ডিগ্রি অর্জন করে। ১৯২২ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন করে, তারা নিউ ইয়র্কের বাফেলোতে অবস্থিত ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অফ ম্যালিগন্যান্ট ডিজিজের কর্মীদের সাথে যোগ দেয় (১৯২২-৩১)। ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি মেডিকেল স্কুল, সেন্ট লুইসের অনুষদ সদস্য হিসেবে (১৯৩১ সাল থেকে), তারা (১৯৩৬) সক্রিয় মধ্যবর্তী আবিষ্কার করে,গ্লুকোজ ১-ফসফেট (গ্লুকোজ অণুর উপর একটি নির্দিষ্ট কার্বন পরমাণুর সাথে আবদ্ধ ফসফেট), যা "কোরি এস্টার" নামে পরিচিত। তারা দেখিয়েছেন যে এটি প্রাণীর স্টোরেজ কার্বোহাইড্রেটের গ্লুকোজে রূপান্তরের প্রথম ধাপ।গ্লাইকোজেন , যার প্রচুর পরিমাণে লিভারে পাওয়া যায়, এবং—কারণ বিক্রিয়াটি বিপরীতমুখী—কিছু ক্ষেত্রে রক্তের গ্লুকোজকে গ্লাইকোজেনে রূপান্তরের শেষ ধাপ।

ছয় বছর পর তারা গ্লাইকোজেন-কোরি এস্টার বিক্রিয়ার অনুঘটকের জন্য দায়ী এনজাইম (গ্লাইকোজেন ফসফোরাইলেজ) বিচ্ছিন্ন এবং পরিশোধিত করে, এবং এর সাহায্যে তারা ১৯৪৩ সালে গ্লাইকোজেনের টেস্ট-টিউব সংশ্লেষণ অর্জন করে । আন্তঃরূপান্তরের প্রমাণ তাদের ""কোরি সাইকেল", যা লিভারের গ্লাইকোজেন রক্তের গ্লুকোজে রূপান্তরিত হয় যা পেশীতে গ্লাইকোজেনে পুনরায় রূপান্তরিত হয়, যেখানে ল্যাকটিক অ্যাসিডে এর ভাঙন পেশী সংকোচনে ব্যবহৃত শক্তি সরবরাহ করে।লিভারে গ্লাইকোজেন পুনঃগঠন করতে ল্যাকটিক অ্যাসিড ব্যবহার করা হয়। প্রাণীদের মধ্যে হরমোনগুলি কার্বোহাইড্রেট বিপাককে কীভাবে প্রভাবিত করে তা অধ্যয়ন করে, কোরিস দেখিয়েছেন যেএপিনেফ্রিন এক ধরণের ফসফরিলেজ এনজাইম তৈরি করে যা গ্লাইকোজেনকে সক্রিয় গ্লুকোজে রূপান্তরিত করতে সাহায্য করে এবংইনসুলিন গ্লুকোজে ফসফেট যোগ করার মাধ্যমে রক্ত ​​থেকে চিনি অপসারণ করে। কোরিস বিশ্বজুড়ে বিপুল সংখ্যক স্নাতক ছাত্র এবং পোস্টডক্টরাল ফেলোদের প্রশিক্ষণ দিয়েছে।

স্ত্রীর মৃত্যুর পর কার্ল কোরি গ্লাইকোজেন থেকে ল্যাকটিক অ্যাসিডে ভাঙনের সাথে জড়িত এনজাইমগুলির ভৌত-রাসায়নিক ক্রিয়া সম্পর্কে গবেষণার জন্য তার প্রচেষ্টা নিবেদিত করেন।

নোবেল জিতেছেন যে দম্পতিরা

প্রতি বছরই পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, চিকিৎসা শাস্ত্র, অর্থনীতি, সাহিত্য এবং শান্তি- এই ছয়টি বিভাগে নোবেল পুরস্কার ঘোষণা করা হয়। এসব বিভাগে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা ব্যক্তিত্বরা পান পরম আরাধ্য স্বীকৃতি।

কিন্তু বাঙালি বা বাংলাদেশীদের জন্য নোবেল পুরস্কার ঘোষণা খুব কম সময়ই আনন্দের বার্তা বয়ে আনে। কেননা এখন অবধি নোবেল পুরস্কার লাভ করেছেন মাত্র একজন বাংলাদেশী। আর সব মিলিয়েও এই বছরের আগ পর্যন্ত নোবেল পুরস্কারজয়ী বাঙালির সংখ্যা ছিল সাকুল্যে তিন।

তবে এবারের নোবেল পুরস্কারের ঘোষণা ব্যাপক আলোড়ন তুলেছে বাঙালিদের মনে। কারণ চতুর্থ বাঙালি হিসেবে নোবেল পুরস্কার জয়ের গৌরব অর্জন করেছেন অভিজিৎ বিনায়ক ব্যানার্জি। অর্থনীতি বিভাগে অমর্ত্য সেনের পর দ্বিতীয় বাঙালি হিসেবে নোবেলের মালিক হয়েছেন তিনি।

তবে শুধু এ কারণেই নয়, অভিজিতের নোবেলজয় তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে অন্য আরো একটি কারণেও। তাঁর পাশাপাশি এবার অর্থনীতিতে নোবেল জিতেছেন আরো দুজন: এসথার ডুফলো ও মাইকেল ক্রেমার। মজার ব্যাপার হলো, ডুফলো সম্পর্কে অভিজিতের স্ত্রীও বটে!

যারা আমেরিকান বিখ্যাত সিটকম ‘দ্য বিগ ব্যাং থিওরি’ দেখেছেন, তাদের কাছে এ বিষয়টি খুব একটা উল্লেখযোগ্য না-ও মনে হতে পারে। কারণ পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার তো জিতেছে তাদের প্রিয় দম্পতি শেলডন কুপার এবং এমি ফারাহ ফাওলারও!

তাছাড়া যারা ‘দ্য বিগ ব্যাং থিওরি’ দেখেননি, তাদেরও অভিজিৎ-ডুফলো দম্পতির নোবেল জয়ে চমৎকৃত না হওয়ার যথেষ্ট কারণ থাকতে পারে। কেননা অভিজিৎ-ডুফলোই প্রথম দম্পতি নন। তাদের আগেও পাঁচটি ‘পাওয়ার কাপল’ গড়েছেন নোবেল পুরস্কার জয়ের অভাবনীয় রেকর্ড।

চলুন পাঠক, আপনাদেরকে পরিচিত করিয়ে দেয়া যাক সেই নোবেলজয়ী দম্পতিদের সাথে।

গার্টি কোরি ও কার্ল কোরি

গার্টি ও কার্লের জীবনের পথচলাটা হয়েছে একদম হাত ধরাধরি করে। একসাথেই তারা পড়াশোনা করেছেন মেডিকেল স্কুলে। গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্নও করেছেন একই সময়ে। এরপর তারা আবদ্ধ হয়েছেন বিবাহবন্ধনে। ভিয়েনায় অবস্থানকালে যখন খেয়াল করেন দেশে ইহুদি-বিদ্বেষ ক্রমশ বেড়ে চলেছে, তখন তাঁরা একত্রে পাড়ি জমান যুক্তরাষ্ট্রের বাফানো শহরে।

যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানকালেই তাঁরা হরমোন ও এনজাইম নিয়ে গবেষণা করতে থাকেন। প্রায় ৩০ বছরের দীর্ঘ সাধনার মাধ্যমে তাঁরা আবিষ্কার করেন গ্লাইকোজেন ও মেটাবলিজম, যা চিকিৎসা বিজ্ঞানের ইতিহাসে অন্যতম স্মরণীয় উদ্ভাবন হয়ে আছে। তাঁদের এই অসামান্য অবদানের জন্য ১৯৪৭ সালে তাঁদেরকে দেয়া হয় চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার।

মেরি কুরি ও পিয়েরে কুরি

রি ও পিয়েরে কুরি বিয়ে করেন ১৮৯৫ সালে। ওই একই বছরই অঁরি বেকেরেল ইউরেনিয়ামের লবণের দ্যুতির উপর গবেষণা করতে গিয়ে ঘটনাচক্রে তেজস্ক্রিয়তা আবিষ্কার করে বসেন।

তাঁর আবিষ্কারের কথা জানতে পেরে মেরিও প্রচণ্ড আগ্রহী হয়ে পড়েন ‘ইউরেনিয়াম রশ্মি’র ব্যাপারে। তিনি এটি নিয়ে নিজের মতো করে গবেষণা শুরু করেন, যার মাধ্যমে উদ্ভূত হয় একেবারে নতুন ধরনের একটি উপাদানের ধারণা।

পিয়েরে তখন অন্য একটি বিষয়ে গবেষণা করছিলেন। কিন্তু একপর্যায়ে নিজের গবেষণা বাদ দিয়ে তিনিও গভীরভাবে জড়িয়ে পড়েন স্ত্রীর প্রকল্পে। এবং সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ১৮৯৮ সালে তারা দুজন আবিষ্কার করেন নতুন দুটি মৌল– পোলোনিয়াম ও রেডিয়াম। ১৯০৩ সালে তেজস্ক্রিয়তা নিয়ে গবেষণার স্বীকৃতিস্বরূপ অঁরি বেকেরেলের সাথে যৌথভাবে পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার জিতে নেন কুরি দম্পতি।

তবে মেরির নোবেলজয় খুব সহজে আসেনি। প্রাথমিকভাবে নোবেল কমিটি অঁরি বেকেরেলের সাথে নোবেলজয়ী হিসেবে ঘোষণা করেছিল কেবল পিয়েরে কুরির নাম। পরবর্তীতে পিয়েরে কুরির আপত্তির ফলে সিদ্ধান্ত পুনঃপর্যালোচনা করে মেরি কুরির নামও যুক্ত করা হয় নোবেলজয়ীর তালিকায়।

তবে নিজের নোবেলজয় নিয়ে যে বিতর্ক ছিল, ১৯১১ সালে সেটির অবসান ঘটান মেরি কুরি। সেবার তিনি নোবেল জেতেন রসায়নেও। এভাবেই ইতিহাসের প্রথম বিজ্ঞানী হিসেবে দুইটি ভিন্ন শাখায় নোবেল জেতার কৃতিত্ব দেখান তিনি।

আইরিন কুরি ও ফ্রেডেরিক জোলিও-কুরি

আইরিন ছিলেন নোবেলজয়ী দম্পতি মেরি ও পিয়েরে কুরিরই জ্যেষ্ঠ কন্যা। তিনি অনুসরণ করেছিলেন বাবা-মায়েরই পদচিহ্ন। ছোটবেলা থেকেই বিজ্ঞানের প্রতি তাঁর গড়ে উঠেছিল অসামান্য আগ্রহ, যার সূত্র ধরে তিনি কাজ করতে শুরু করেন রেডিয়াম ইনস্টিটিউটে।

১৯২৪ সালে ঐ ইনস্টিটিউটে মেরি কুরির সহযোগী হিসেবে কাজ করতে আসেন ফ্রেডেরিক জোলিও। মেরির কাছে তেজস্ক্রিয়তা গবেষণার উপর বিস্তারিত দীক্ষা লাভ করেন ফ্রেডেরিক। ১৯২৬ সালে তাঁরা বিয়ে করেন। এরপর একক ও যৌথ দুভাবেই তাঁরা তেজস্ক্রিয়তা নিয়ে কাজ অব্যাহত রাখেন। এরই ধারাবাহিকতায় তাঁরা একপর্যায়ে আবিষ্কার করে ফেলেন কৃত্রিম তেজস্ক্রিয়তা, যা তাঁদেরকে এনে দেয় ১৯৩৫ সালে রসায়নে নোবেল পুরস্কার।

আলভা মিরডাল ও গানার মিরডাল

এই তালিকায় আলভা ও গানার খানিকটা ব্যতিক্রম। কেননা তাঁরাই হলেন এখন পর্যন্ত ইতিহাসের একমাত্র দম্পতি, যারা দুটি ভিন্ন শাখায় দুটি ভিন্ন সালে নোবেল পুরস্কার জয় করেছেন।

১৯৩০-এর দশকে এই দম্পতি ছিলেন খুবই প্রভাবশালী সমাজবিজ্ঞানী। তাঁরা কাজ করতেন পারিবারিক রাজনীতি ও সমাজকল্যাণ বিষয়ে। এরই ফলস্বরূপ ১৯৭৪ সালে প্রথমে নোবেল জেতেন গানার। তিনি নোবেল পান অর্থনীতি শাখায়। আর আট বছর পর, ১৯৮২ সালে নোবেল জেতেন আলভাও। তবে তিনি অর্থনীতিতে নয়, শান্তিতে নোবেল জেতেন।

মে ব্রিট মোজার ও এডভার্ড মোজার

ঝে মিরডাল দম্পতিরা নোবেল জিতেছিলেন বটে, কিন্তু গার্টি-কার্ল দম্পতির পর দীর্ঘদিন একই বছরে একই বিষয়ে নোবেল জেতেননি আর কোনো দম্পতি। তাই এমনটিও যে সম্ভব তা ভুলতে বসেছিলেন অনেকেই।

অবশেষে ২০১৪ সালে, ১৯৪৭ সালের পর দীর্ঘ ৬৭ বছর বাদে, ফের ঘটে এমন ঘটনা। মস্তিষ্কের পজিশন সিস্টেম বা ‘ইনার জিপিএস’-এর গঠনকারী কোষ আবিষ্কার করেছিলেন মোজাররা, যা তাদেরকে এনে দেয় চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার। এ পুরস্কার তাঁরা ভাগ করে নেন মার্কিন-ব্রিটিশ বিজ্ঞানী জন ও’কিফের সাথে।

এসথার ডুফলো ও অভিজিৎ ব্যানার্জি

বাঙালিদের কাছে অভিজিতের নোবেল জেতাকেই বেশি উল্লেখযোগ্য মনে হতে পারে, তবে নিরপেক্ষ দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার করলে কিন্তু তার ফরাসি স্ত্রী ডুফলোর নোবেলজয়ও কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। কারণ, সেই ১৯৬৮ সাল থেকে অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হলেও, ৫০ বছরের ইতিহাসে ডুফলোই সর্বকনিষ্ঠ নারী হিসেবে জয়ী হলেন এ শাখায়।

যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিতে (এমআইটি) সহকর্মী হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করার পর ২০১৫ সালে বিয়ে করেন অভিজিৎ ও ডুফলো। ক্রেমারের পাশাপাশি এ দম্পতিকে নোবেলজয়ের উপযুক্ত হিসেবে বেছে নেয়ার ক্ষেত্রে যে বিষয়টি সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পেয়েছে, তা হলো- বৈশ্বিক দারিদ্র বিমোচনে তাঁদের পরীক্ষানির্ভর গবেষণা পদ্ধতি।

গত দুই দশকে বিশ্বজুড়ে গবেষকরা নানা দৃষ্টিকোণ থেকে এ বিষয়ে কাজ করে গেছেন। অভিজিৎ-ডুফলো-ক্রেমারদের গবেষণাও স্পর্শ করেছে ইতিপূর্বের সেসব গবেষণাকে, এবং তাদের গবেষণাটিকে অতীতের গবেষণাগুলোর তুলনায় অপেক্ষাকৃত বাস্তবসম্মত ও প্রভাবশালী বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

মৃত্যু:

ম্যালিগন্যান্ট ডিজেজ ইন্সটিটিউটে কাজ করার সময় গের্টিকে সারাক্ষণ এক্স-রে ব্যবহার করতে হত। এই এক্স-রে এর প্রভাব শেষ বয়সে তার শরীরের উপর পড়ে। পলে তিনি মজ্জার ক্যান্সারে (মাইলোক্লারেসিস)  আক্রান্ত হন। দীর্ঘ দশ বছর ক্যান্সারে ভুগে ১৯৫৭ সালের ২৬ অক্টোবর এই মহিয়ষী নারী মৃত্যুবরণ করেন। তিনি নিঃসন্দেহে আধুনিক নারীদের আদর্শ।

What's Your Reaction?

Like Like 0
Dislike Dislike 0
Love Love 0
Funny Funny 0
Angry Angry 0
Sad Sad 0
Wow Wow 0