মুঘল সম্রাট জাহাঙ্গীরের জীবনী । Biography Of Mughal Empire Jahangir

মুঘল সম্রাট জাহাঙ্গীরের জীবনী । Biography Of Mughal Empire Jahangir

May 20, 2025 - 01:13
Jun 20, 2025 - 20:13
 0  1
মুঘল সম্রাট জাহাঙ্গীরের জীবনী ।  Biography Of Mughal Empire Jahangir

আবু আল হাসান দ্বারা ১৬১৭ সালে আঁকা জাহাঙ্গীরের প্রতিকৃতি
৪র্থ মুঘল সম্রাট

রাজত্ব

৩ নভেম্বর ১৬০৫ – ২৮ অক্টোবর ১৬২৭

রাজ্যাভিষেক

২৪ অক্টোবর ১৬০৫

পূর্বসূরি

আকবর
উত্তরসূরি শাহ জাহান (আইনত)
শাহরিয়ার মির্জা (কার্যত)
জন্ম নুরুদ্দীন মহম্মদ সেলিম
৩০ আগস্ট ১৫৬৯
ফতেপুর সিকরি[]
মৃত্যু ২৮ অক্টোবর ১৬২৭ (বয়স ৫৮)
কাশ্মীর

সমাধি

জাহাঙ্গীরের সমাধিসৌধ(লাহোর)
দাম্পত্য সঙ্গী
  • বেগম-ই-খাস পাদশাহ মহল সলিহা বানু বেগম সাহিবা
  • বেগম-ই-খাস পাদশাহ মহল নূরজাহান মেহেরুন্নেসা বেগম সাহিবা

মির্জা নূর উদ্দিন মুহাম্মদ সেলিম

 (ফার্সি: میرزا نورالدین محمد سلیم) বা জাহাঙ্গীর (ফার্সি: جهانگیر) (আগস্ট ৩০, ১৫৬৯  অক্টোবর ২৮, ১৬২৭) ছিলেন মুঘল সাম্রাজ্যের চতুর্থ সম্রাট। তিনি ১৬০৫ সাল থেকে তার মৃত্যু অবধি ১৬২৭ সাল পর্যন্ত রাজত্ব করেন। তাঁর রাজকীয় নামটির (ফার্সী ভাষায়) অর্থ 'বিশ্বের বিজয়ী', 'বিশ্ব-বিজয়ী'।

জাহাঙ্গীর, সম্রাট (১৬০৫-১৬২৭) 

সম্রাট জাহাঙ্গীর ছিলেন মুঘল সাম্রাজ্যের চতুর্থ সম্রাট, যিনি ১৬০৫ থেকে ১৬২৭ সাল পর্যন্ত শাসন করেছেন। তাঁর প্রকৃত নাম ছিল নুরউদ্দিন মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর। তিনি ছিলেন সম্রাট আকবরের পুত্র এবং মাতা ছিলেন মহলু-বেগম।

মুগল সাম্রাজ্যের চতুর্থ সম্রাট। তিনি জয়পুরের রাজপুত রাজকন্যা ও সম্রাট আকবর এর প্রথম পুত্র এবং তাঁর নাম রাখা হয় সেলিম। তিনি তাঁর পিতার উত্তরাধিকারী হিসেবে নূরুদ্দীন মুহম্মদ জাহাঙ্গীর উপাধি গ্রহণ করে ১৬০৫ খ্রিস্টাব্দে আগ্রার সিংহাসনে আরোহণ করেন। ক্ষমতা গ্রহণের পর তিনি জনকল্যাণমূলক বারোটি অনুজ্ঞা জারি করেন এবং বিখ্যাত ন্যায় বিচারের শিকল ঝুলিয়ে দেন। পিতার বিরুদ্ধে বিদ্রোহের সময় যারা তাঁর বিরোধিতা করেছিল তাদের সবার প্রতি তিনি সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেন।

নূরজাহানের সঙ্গে জাহাঙ্গীরের বিয়ে ছিল অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। পারস্যদেশীয় অভিজাতের কন্যা নূরজাহানের পূর্ব নাম মেহেরুন্নিসা। বর্ধমান-এর জায়গির শের আফগান বাংলার গভর্নর কুতুবউদ্দীন খান কোকার হাতে নিহত হলে (১৬০৭) তাঁর স্ত্রী মেহেরুন্নিসা দরবারে ফিরে যান এবং ১৬১১ খ্রিস্টাব্দে জাহাঙ্গীরের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাঁকে নূরজাহান উপাধি দেওয়া হয়। একজন বিদুষী রমণী নূরজাহান তাঁর স্বামীর উপর এমন কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেছিলেন যে, তিনি সাম্রাজ্যের যৌথ শাসকে পরিণত হন। নূরজাহানের নাম বাদশাহর সঙ্গে যৌথভাবে মুদ্রায় খোদাই করা হয় এবং তাঁর আত্মীয়গণ সাম্রাজ্যের উঁচুপদগুলি দখল করেন।

প্রাথমিক জীবন

শাহজাদা সেলিম, পরে জাহাঙ্গীর, ১৫৬৯ সালের ৩১ আগস্ট ফতেপুর সিক্রিতে আকবর এবং তার এক স্ত্রী, আম্বাররাজা ভর্মলের কন্যা মরিয়ম-উজ-জামানি গর্ভে জন্মগ্রহণ করেন।[] আকবরের পূর্ববর্তী ছেলেমেয়েরা শৈশবে মারা গিয়েছিল এবং তিনি একটি পুত্র সন্তানের জন্য পবিত্র লোকদের সাহায্য চেয়েছিলেন। সেলিমের নাম ছিল শেখ সেলিম, যদিও আকবর তাকে সবসময় শেখু বাবা বলে ডাকতেন।[][]

জাহাঙ্গীর ছিলেন মুঘল সাম্রাজ্যের তৃতীয় সম্রাট আকবর-এর পুত্র। শুরুতেই তিনি তার পিতা আকবর এর মতাদর্শী ছিলেন। সেই সময় আকবর দক্ষিণ ভারত-এ ব্যস্ত ছিলেন। তিনি হেরে গেলেও পরবর্তী কালে তার সৎমা রুকাইয়া সুলতান বেগম  সেলিমা সুলতান বেগম এর সমর্থনে ১৬০৫ সালে সম্রাট হতে সমর্থ হন। প্রথম বছরেই তাকে তার বড় ছেলে খসরুর বিদ্রোহের মোকাবিলা করতে হয় ও তিনি তাতে সফল হন। তিনি খসরু সমর্থিত ২০০০ লোককে মৃত্যুদণ্ড দেন ও খসরুকে অন্ধ করে দেন।

শাসনকাল:

জাহাঙ্গীর ১৬০৫ সালে তাঁর পিতা সম্রাট আকবরের মৃত্যুর পর মুঘল সিংহাসনে আরোহণ করেন। তাঁর শাসনকালে মুঘল সাম্রাজ্য বৃদ্ধি পায় এবং অনেক অঞ্চল তার শাসনে অন্তর্ভুক্ত হয়। কিন্তু জাহাঙ্গীরের শাসনকাল মূলত রাজনৈতিক অস্থিরতা, ব্যক্তিগত সংগ্রাম এবং ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে আলোচিত হয়েছে।

  • রাজনৈতিক পরিস্থিতি: জাহাঙ্গীরের শাসনকালে সাম্রাজ্যটি কিছুটা দুর্বল ছিল, কারণ তাঁর শাসনকাল কিছুটা উত্তেজনাপূর্ণ ছিল। একদিকে যেমন কিছু রাজ্য বিদ্রোহ করছিল, অন্যদিকে তিনি নতুন অঞ্চলে বিজয় লাভ করেন।

  • বৈষয়িক অবস্থা: সম্রাট জাহাঙ্গীর ছিলেন এক শিল্প ও সৌন্দর্যপ্রেমী ব্যক্তি। তিনি নিজেও একজন শিল্পী ছিলেন, এবং তাঁর শাসনকালে শিল্পকলার উন্নতি ঘটে। তিনি বিশেষ করে পেন্টিং ও চিত্রকলায় আগ্রহী ছিলেন।

স্ত্রী মমতাজের প্রতি ভালোবাসা:

জাহাঙ্গীরের প্রেমিকা ছিলেন মমতাজ মহল, যিনি পরবর্তী সময়ে তার মৃত্যুর পর "তাজমহল" নামে একটি অমর সৌধের প্রেরণা হয়েছিলেন। জাহাঙ্গীর এবং মমতাজের সম্পর্ক ছিল অত্যন্ত গভীর এবং প্রেমময়।

মৃত্যু:

জাহাঙ্গীর ১৬২৭ সালের ৩১ জুলাই মারা যান, এবং তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর পুত্র শাহজাহান মুঘল সাম্রাজ্যের সিংহাসনে বসেন।

জাহাঙ্গীরের অবদান:

  • নিউজ ও সাহিত্য: জাহাঙ্গীর নিজে একজন সাহিত্যিক ছিলেন এবং তাঁর শাসনকালে হিন্দু ও মুসলিম সমাজের মধ্যে ঐক্যবদ্ধতা স্থাপন করতে চেষ্টা করেন। তাঁর শাসনকালে ইতিহাসের বিখ্যাত গ্রন্থ "জাহাঙ্গীরনামা" রচিত হয়, যা তাঁর শাসনকালের এক গুরুত্বপূর্ণ দলিল।

  • শিল্প ও সংস্কৃতি: জাহাঙ্গীর পেন্টিং, সঙ্গীত, ও নৃত্য সহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের প্রতি গভীর আগ্রহী ছিলেন। তাঁর শাসনে মুঘল চিত্রকলার একটি বিশেষ শাখার বিকাশ ঘটে, যা ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

জাহাঙ্গীর ছিলেন একজন প্রতিভাবান শাসক, যার শাসনকালে মুঘল সাম্রাজ্য অনেক দিকে সমৃদ্ধি লাভ করেছিল, যদিও তাঁর শাসনকাল সামরিক দিক থেকে কিছুটা অস্থির ছিল।

প্রিন্স সেলিম, : 

পরে জাহাঙ্গীর, ১৫৬৯ সালের ৩১ আগস্ট ফতেপুর সিক্রিতে আকবর এবং তার এক স্ত্রী, আম্বাররাজা ভর্মলের কন্যা মরিয়ম-উজ-জামানি গর্ভে জন্মগ্রহণ রেন। আকবরের পূর্ববর্তী ছেলেমেয়েরা শৈশবে মারা গিয়েছিল এবং তিনি একটি পুত্র সন্তানের জন্য পবিত্র লোকদের সাহায্য চেয়েছিলেন। সেলিমের নাম ছিল শেখ সেলিম, যদিও আকবর তাকে সবসময় শেখু বাবা বলে ডাকতেন। 

জাহাঙ্গীর ছিলেন মুঘল সাম্রাজ্যের তৃতীয় সম্রাট আকবর-এর পুত্র। শুরুতেই তিনি তার পিতা আকবর এর মতাদর্শী ছিলেন । সেই সময় আকবর দক্ষিণ ভারত-এ ব্যস্ত ছিলেন। তিনি হেরে গেলেও পরবর্তী কালে তার সৎমা রুকাইয়া সুলতান বেগম ও সেলিমা সুলতান বেগম এর সমর্থনে ১৬০৫ সালে রাজা হতে সমর্থ হন। প্রথম বছরেই তাকে তার বড় ছেলে খসরুর বিদ্রোহের মোকাবিলা করতে হয় ও তিনি তাতে সফল হন। তিনি খসরু সমর্থিত ২০০০ লোককে মৃত্যুদণ্ড দেন ও খসরুকে অন্ধ করে দেন।

বাবার মত চমৎকার প্রশাসন ছাড়াও জাহাঙ্গীর-এর শাষনামলে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, শক্তিশালী অর্থনীতি এবং চিত্তাকর্ষক সাংস্কৃতিক সাফল্য বিদ্যমান ছিল। এছাড়া সার্বভৌম সীমানা অগ্রসরও অব্যাহত ছিল - বঙ্গ, মেওয়ার, আহমেদনগর ও দক্ষিণ ভারত পর্যন্ত তার রাজ্য বিস্তৃত ছিল। এই সাম্রাজ্য বৃদ্ধির একমাত্র বাধা আসে যখন পারস্য অঞ্চলের সাফারীদ রাজবংশের শাহেনশাহ আব্বাস কান্দাহার আক্রমণ করেন। তা ঘটে যখন ভারতে তিনি খসরুর বিদ্রহ দমন করছিলেন। তিনি রাজপুতানা রাজাদের সাথে সমস্যার সমাধান নিয়ে আলোচনায় বসেন ও তারা সকলেই মুঘল আধিপত্য মেনে নেন ও তার বদলে তাদের মুঘল সাম্রাজ্যে উঁচু পদ দেওয়া হয়।

জাহাঙ্গীর শিল্প, বিজ্ঞান এবং, স্থাপত্য সঙ্গে মুগ্ধ হয়ে তরুণ বয়স থেকেই চিত্রকলার প্রতি ঝোঁক দেখিয়েছেন এবং তার নিজের একটি কর্মশালায় ছিল। মুঘল চিত্রকলা শিল্প, জাহাঙ্গীর এর রাজত্বের অধীনে মহান উচ্চতায় পৌঁছেছিল। তার সময় উস্তাদ মনসুর জন্তু ও পাখির ছবি একে বিখ্যাত হন। জাহাঙ্গীর এর ছিল একটি বিশাল পক্ষিশালা ও পশুশালা ছিল। জাহাঙ্গীর ইউরোপীয় এবং ফার্সি শিল্পকলাকেও ভালবাসতেন। তিনি ফার্সি রানী নুর জাহান দ্বারা প্রভাবিত হয়ে তার সাম্রাজ্য জুড়ে ফার্সি সংস্কৃতি প্রচার করেন। তার সময়েই শালিমার গার্ডেন তৈরি হয়।

জাহাঙ্গীর তার বাবার মত একজন কঠোর সুন্নি মুসলমান ছিলেন না। তিনি সার্বজনীন বিতর্কে বিভিন্ন ধর্মের মানুষদের অংশগ্রহণ করতে দিতেন। জাহাঙ্গীর তার লোকদের কাউকে জোড়পূর্বক ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করতে বারণ করতেন। তিনি সকল প্রকার ধর্মের লোকেদের থেকে সমান খাজনা নিতেন। থমাস রো, এডওয়ার্ড টেরি-সহ অনেকেই তার এইপ্রকার আচরণের প্রশংসা করেন।

অনেক ভাল গুন থাকা সত্ত্বেও, মদ্যপান ও নারী এই দুই আসক্তির জন্য জাহাঙ্গীর সমালোচিত হন। তিনি এক সময় তার স্ত্রী নুর জাহান কে অতিরিক্ত ক্ষমতা দিয়ে ফেলেন এবং নুর জাহান বিভিন্ন বিতর্কিত চক্রান্তের সাথে জড়িয়ে পরেছিলেন।

শেষ দিকে মুসলিম মনীষি আহমদ সিরহিন্দি রহঃ এর ইসলামিক আন্দলনের ফলশ্রুতিতে তিনি ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসী হোন । ১৬২২ সালে তার পুত্র খুররাম প্রথম বিদ্রোহ করেন। কিন্তু ১৬২৬ সালে জাহাঙ্গীরের বিশাল সেনাবাহিনীর কাছে কোণঠাসা হয়ে তিনি নিঃশর্তভাবে আত্মসমর্পণ করেন। কিন্তু ১৬২৭ সালে তার মৃত্যুর পর ক্ষুরামই নিজেকে শাহ জাহান উপাধিতে ভূষিত করে সিংহাসন দখল করেন। জাহাঙ্গীরের মৃত্যুর পর বিভিন্ন গল্প , সিনেমা ও সাহিত্যে তার ও আনারকলির রহস্যে ভরা সম্পর্ক স্থান পায়।

sourse : teachers ,,,,,, wikipedia

What's Your Reaction?

Like Like 0
Dislike Dislike 0
Love Love 0
Funny Funny 0
Angry Angry 0
Sad Sad 0
Wow Wow 0