বিল গেটস এর জীবনী | Biography of Bill Gates
মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস এর জীবনী | Biography of Bill Gates

পুরো নাম | উইলিয়াম হেনরি গেটস 3 |
জন্মস্থান | 28 অক্টোবর 1955, সিয়াটল (ওয়াশিংটন) |
মা বাবা | উইলিয়াম এইচ গেটস (পিতা), মেরি ম্যাক্সওয়েল গেটস (মা) |
স্ত্রী | মেলিন্ডা গেটস |
সন্তান | জেনিফার ক্যাথরিন গেটস, ফোবি অ্যাডেল গেটস (কন্যা) ররি জন গেটস (পুত্র) |
ব্যবসা | ব্যবসায়ী |
শিক্ষা | হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় (স্নাতক হয়নি) |
বাসস্থান | আমেরিকা |
ওয়েবসাইট | gatesnotes.com |
বিল গেটস সোশ্যাল মিডিয়া লিংক
বিল গেটস টুইটার | এখানে ক্লিক করুন |
বিল গেটস ফেসবুক | এখানে ক্লিক করুন |
বিল গেটস ইনস্টাগ্রাম | এখানে ক্লিক করুন |
জন্ম এবং পরিবার (বিল গেটসের পরিবার)
তিনি 28 অক্টোবর, 1955 সালে সিয়াটল, ওয়াশিংটনে জন্মগ্রহণ করেন এবং বিল গেটসের পুরো নাম উইলিয়াম হেনরি গেটসI
বিল গেটসের পিতার নাম ছিল উইলিয়াম এইচ গেটস, যিনি পেশায় একজন প্রখ্যাত আইনজীবী ছিলেন এবং তার মা ছিলেন মেরি ম্যাক্সওয়েল গেটস, যিনি ইউনাইটেড ইন্টারস্টেট ব্যাংক সিস্টেমের পরিচালনা পর্ষদে ছিলেন। গেটসের পরিবারে তার বাবা-মা ছাড়াও ক্রিস্টি এবং লিবি নামে দুই বোন রয়েছে।
1989 সালে, গেটস ফ্রান্সের বাসিন্দা মেলিন্ডা ফ্রেঞ্চের সাথে দেখা করেন। মেলিন্ডা তার কোম্পানি মাইক্রোসফটে কর্মী হিসেবে কাজ করছিলেন। গেটস যখন প্রথম মেলিন্ডাকে দেখেছিলেন, তিনি তাকে পছন্দ করেছিলেন। আমরা আপনাকে বলি যে মেলিন্ডা বয়সে গেটসের চেয়ে ছোট ছিলেন।
বিল গেটস মেলিন্ডাকে 1 জানুয়ারী, 1994 সালে বিয়ে করেন। 1996 এর পরে, তাদের তিনটি সন্তান ছিল, একটি ছেলে এবং দুটি মেয়ে, তাদের নাম জেনিফার ক্যাথারিন গেটস (1996), ফোবি অ্যাডেল গেটস (2002) এবং ছেলেটির নাম ররি জন গেটস (1999)।
গেটস তার পরিবারের সাথে ওয়াশিংটনের মদিনায় তার সুন্দর বাড়িতে থাকেন, যার মূল্য প্রায় $12.50 মিলিয়ন। বিল গেটসের মোট সম্পদ $110 বিলিয়ন (প্রায় 7.89 লাখ কোটি টাকা)।
বিল গেটসের শিক্ষা (Bill Gates education)
গেটস তার স্কুলে পড়াশুনার পাশাপাশি খেলাধুলার প্রতি খুব আগ্রহী ছিলেন। লেকসাইড স্কুল থেকে তার স্কুলে পড়াশোনা শুরু হয়। গেটসের বাবা-মা চেয়েছিলেন যে তিনি আইন পেশায় এগিয়ে যান। কিন্তু গেটস এই বিষয়ে মোটেই আগ্রহী ছিলেন না।
বিল যখন তার স্কুলে ক্লাস 8 এ পড়ত, তখন তার স্কুল একটি ASR-33 টেলিটাইপিং টার্মিনাল এবং জেনারেল ইলেকট্রিক (GE) কম্পিউটারে একটি কম্পিউটার প্রোগ্রাম কিনেছিল। এতে তিনি আগ্রহ প্রকাশ করেন।
13 বছর বয়সে, বিল গেটস লেকসাইড স্কুলে ভর্তি হন, যার কারণে কম্পিউটারের প্রতি বিলের আগ্রহ বেড়ে যায়। 13 বছর বয়সে, বিল গেটস নিজেই স্কুলের কম্পিউটারে একটি সফ্টওয়্যার প্রোগ্রাম তৈরি করেছিলেন। বিল গেটস যখন হাই স্কুলে পৌঁছান, তখন তিনি তার কিছু বন্ধুর সাথে স্কুলের বেতন ব্যবস্থা কম্পিউটারাইজড করেছিলেন। এখান থেকে জানা যায় যে বিল গেটসের মনে কম্পিউটার প্রোগ্রাম আগ্রহ ছিল ছোটবেলা থেকেই ।
1973 সালে, বিল তার স্কুলে পাস করেন। বিল SAT পরীক্ষায় 1600 এর মধ্যে 1590 নম্বর পেয়ে একজন জাতীয় পণ্ডিত ছিলেন। এই বিলের পরে হার্ভার্ড কলেজে ভর্তি হন। কলেজে, বিল তার বেশিরভাগ সময় কম্পিউটারে কাটাতেন, তিনি তার অন্যান্য বিষয়গুলিতে মনোযোগ দিতেন না।
পল অ্যালেন, যার সাথে বিল পরে এত বড় ব্যবসা গড়ে তুলেছিলেন, তিনি স্কুলে তার সিনিয়র ছিলেন। দুজনে ভালো বন্ধু হয়ে ওঠে। মাত্র 17 বছর বয়সে, তিনি এবং তার বন্ধু পল অ্যালেন একটি ট্র্যাফ-ও-ডেটা প্রোগ্রাম তৈরি করেছিলেন যা Intel 8000 প্রসেসরের উপর ভিত্তি করে ছিল। এটি সিয়াটল শহরের ট্রাফিক পর্যবেক্ষণ করত এবং এটি উন্নত করার চেষ্টা করত। এর জন্য তাকে 20,000 ডলার দেওয়া হয়েছিল, যা ছিল বিল গেটসের জীবনের প্রথম উপার্জন।
হাওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয় ত্যাগ (Leaving Howard University)
1973 সালে তার স্কুলের পড়াশোনা শেষ করার পর, গেটস হাওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন, কিন্তু এটি দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। বিল গেটস 2 বছরের মধ্যে কলেজ ছেড়ে দেন।
পরে, গেটস ইন্টেল 8080 চিপ তৈরি করেন। এটি সেই সময়ে একটি ব্যক্তিগত কম্পিউটারের ভিতরে চলমান সবচেয়ে সাশ্রয়ী মূল্যের চিপ ছিল। এই চিপ তৈরির পর বিল গেটস নিজের কোম্পানি শুরু করার কথা ভাবলেন।
বিল গেটসকে MITS (Micro Instrumentation and Telemetry Systems) এর একটি প্রদর্শনীতে আসার অনুমতি দিয়েছিল। এমআইটিএস একটি মাইক্রোকম্পিউটার তৈরি করেছিল এবং বিল গেটস আলটেয়ার এমুলেটর তৈরি করেছিল যা একটি মিনি কম্পিউটার হিসাবে কাজ করেছিল।
পরিকল্পনা এবং ব্যবসা শুরু বন্ধু অ্যালেনের সাথে
১৯৭০ সালে মাত্র ১৫ বছর বয়সে পল অ্যালেনের সাথে ব্যবসা শুরু করার পরিকল্পনা করেন। তারা একসাথে রাস্তার ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের জন্যে একটি সফটওয়্যার তৈরী করেন এবং এটি ২০,০০০ ডলারে বিক্রি করেন।
এরপর গেটস এবং অ্যালেন তাদের নিজেদের প্রতিষ্ঠান শুরু করার জন্যে মনস্থির করেন। কিন্তু গেটস এবং তার বাবা-মা স্কুলের গণ্ডি পার হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে চান।
মূলত গেটসের বাবা-মা তাকে একজন আইনজীবী হিসেবে দেখতে চেয়েছিলেন। তাই তিনি হাভার্ড কলেজে ভর্তি হন। কিন্তু কলেজের একাডেমিক পড়াশোনা তার কাছে দুর্বোধ্য লাগতে শুরু করে। ফলে তিনি উচ্চশিক্ষার প্রতি ধীরে ধীরে আগ্রহ হারাতে থাকেন এবং কলেজ শেষ না করেই একাডেমিক পড়াশোনা বন্ধ করে দেন।
এরপর তিনি ও বন্ধু অ্যালেন দুজন এমআইটির অ্যাল্টার কম্পিউটার সিস্টেমের জন্যে সফটওয়্যার তৈরী শুরু করেন। ১৯৭৫ সালে গেটস ও অ্যালেন যৌথ অংশীদারিত্বে মাইক্রো কম্পিউটার ও সফটওয়্যারের প্রতিষ্ঠান “মাইক্রোসফট” প্রতিষ্ঠা করেন।
মাইক্রোসফটের যাত্রা শুরু
মাইক্রোসফটের শুরুর দিকের যাত্রা খুব একটা মসৃণ ছিলো না। যদিও মাইক্রোসফট অ্যাল্টার কম্পিউটারের জন্যে তৈরী করা BASIC সফটওয়্যার প্রোগ্রাম থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ ও স্বত্ত্ব পেতো কিন্তু এটা চুক্তিভিত্তিক ছিলো না।
সে সময়ে অ্যাল্টার কম্পিউটারে BASIC ব্যবহারকারীদের মধ্যে কেবল ১০ শতাংশ মানুষ টাকা দিতো।
মাইক্রোসফটের এই সফটওয়্যারটি কম্পিউটার প্রেমীদের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে উঠে। যার ফলে অনেকেই তাদের পাওয়া প্রি-মার্কেট কপিকে নতুন করে তৈরী করে বিনামূল্যে বাজারজাত করে।
বিল গেটস এই বিষয়টিতে খুশি ছিলেন না। তিনি লাইসেন্স পলিসি আনার পরিকল্পনা করলেন। কিন্তু সেই সময় বেশিরভাগ কম্পিউটার প্রেমী মানুষ এটির জন্যে অর্থ দিতে রাজি ছিলেন না।
তারা বিনামূল্যে সফটওয়্যার পেতে আগ্রহী। কেননা, তারা বিনামূল্যে সফটওয়্যার পেলে যে কারো সাথে শেয়ার করতে পারবেন। বিল গেটস একটু ভিন্নভাবে চিন্তা করলেন। তিনি দেখলেন বিক্রির উদ্দেশ্যে তৈরী সফটওয়্যারগুলো বিনামূল্য দিলে চুরি হবার আশংকা থাকে।
মাইক্রোসফট কোম্পানির প্রতিষ্ঠা (Founding of Microsoft Company)
বিল গেটস এবং তার বন্ধুকে এমআইটিএস (MITS) অফিসে কাজ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। এই অফিসটি আলবুকার্কে অবস্থিত ছিল। বিল গেটস এবং তার সঙ্গী তাদের জুটির নাম রেখেছেন মাইক্রো-সফট। তারপর তারা উভয়েই আলবুকার্কেই তাদের প্রথম অফিস তৈরি করে এবং 26 নভেম্বর 1976 তারিখে তাদের কোম্পানি মাইক্রোসফ্ট আনুষ্ঠানিকভাবে নিবন্ধিত হয়।
খুব দ্রুত মাইক্রোসফ্ট বেসিক কম্পিউটার পছন্দকারী সকলের কাছে পছন্দ হয়েছিল এবং কাজটি সময়ের সাথে সাথে খুব জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। তারপর 1976 সালে, মাইক্রোসফ্ট এমআইটিএস থেকে স্বাধীন হয়। বিল গেটস এবং তার সঙ্গী কম্পিউটার প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ সফটওয়্যার নিয়ে কাজ করতে থাকেন।
মাইক্রোসফটের অফিস (Microsoft Office)
কিছু সময় পর মাইক্রোসফট আলবুকার্কের অফিস বন্ধ করে দেয় এবং বেলভিউ, ওয়াশিংটনে তার নতুন অফিস খোলে। বিল নিজেই তার কর্মচারীদের লেখা কোডের তত্ত্বাবধান করতেন এবং নিজেই কোড লিখতেন। একটি বিখ্যাত সংস্থা আইবিএম মাইক্রোসফ্টের সাথে কাজ করতে চেয়েছিল।
এই সব চলাকালীন গেটসকে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছিল, কিন্তু ধীরে ধীরে সময়ের সাথে সবকিছু ঠিক হয়ে যায়। এর পরে, গেটস সেটেল কম্পিউটার পণ্যের সাথে একটি চুক্তি করেন। তারপর ইউনিফাইড লাইসেন্সিং এজেন্ট এবং তারপর 86-ডস-এর পূর্ণ কর্মকর্তা হয়ে ওঠেন। পরে তিনি এটিকে $80,000 ফি দিয়ে PC-DOS নামে IBM-এর কাছে নিয়ে নেন। তখন মাইক্রোসফট ইন্ডাস্ট্রিতে অনেক নাম পেয়েছে।
এত কিছুর পর, 1981 সালের পর মাইক্রোসফ্ট পুনর্গঠন করা হয় এবং বিল গেটসকে এর চেয়ারম্যান এবং পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান করা হয়। এরপর মাইক্রোসফট মাইক্রোসফট উইন্ডোজের সংস্করণ দেয়। বিল গেটস 1976 থেকে 2006 পর্যন্ত অনেক কিছু করেছিলেন, যাতে মাইক্রোসফ্ট আরও অনেক উচ্চতায় পৌঁছেছিল।
Windows এর সূচনা
1985 সালে Microsoft Company কম্পিউটারের জন্য windows একটি নতুন ধরণের operating system লঞ্চ করে যেটা খুব তাড়াতড়ি তখনকার সফটওয়্যার মার্কেটে বিপুল জনপ্রিয়তা লাভ করে। Windows জনপ্রিয়তা পাওয়ার পিছনে যে যে মূল কারণগুলো ছিল তা হলো:
Easy to use:
তখনকার মার্কেটে যে ধরণের operating system গুলি ছিল, উইন্ডোস ছিল তাদের থেকে খুবই সহজ। খুব সহজে তাকে নিয়ন্ত্রণ করা যেত।
Easy graphical user interface:
উইন্ডোস আরো জনপ্রিয় হবার পিছনে আরো একটি কারণ তার easy graphical user interface.যখন সেই সময়কার অন্যান্য সফটওয়্যার গুলি command based operation মডেলে কাজ করতো উইন্ডোস ছিল একমাত্র যে ছবির মাধ্যমে বা Option click বা button ক্লিক করার মাধ্যমে কাজের ধারণা নিয়ে আসে।
Advance software:
উইন্ডোস সেই সময়ে এত advance হওয়ার পিছনে কারণ ছিল গেটস এর এতো বছরের programming এর দক্ষতা এবং তার অভিজ্ঞতা।
বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন (Bill & Melinda Gates Foundation)
2000 সালে, বিল গেটস তার স্ত্রী মেলিন্ডার সাথে বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন গঠন করেন। এটি ছিল বিশ্বের বৃহত্তম দাতব্য ফাউন্ডেশন স্বচ্ছভাবে কাজ করছে।
গেটস এবং তার স্ত্রী মেলিন্ডা দুজনেই একসঙ্গে একটি ফাউন্ডেশন চালান। এই ফাউন্ডেশনের উদ্দেশ্য হল সরকার সাধারণত উপেক্ষা করে এমন সমস্যাগুলির উপর ফোকাস করা এবং সমাধান করা। যেসব সমস্যায় কৃষি, রোগ যার চিকিৎসা খুবই ব্যয়বহুল, স্কুল-কলেজের বৃত্তি ইত্যাদি।
2000 সাল নাগাদ, বিল গেটস 29 বিলিয়ন ডলার দান করেছিলেন শুধুমাত্র জনহিতকর কাজে এবং 2006 সাল নাগাদ মানুষ তার জন্য উচ্চ আশা করেছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিল গেটস ঘোষণা করেন যে তিনি মাইক্রোসফটে আংশিকভাবে কাজ করবেন এবং বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন সম্পূর্ণভাবে কাজ করবে।
মাইক্রোসফটের সফলতা
১৯৭৯ থেকে ১৯৮১ সালের মধ্যে মাইক্রোসফটের ব্যবসা বিপুলভাবে ছড়িয়ে পড়ে। কর্মীর সংখ্যা ২৫ থেকে ১২৮ এ চলে যায়। আয় ২.৫ মিলিয়ন ডলার থেকে ১৬ মিলিয়ন ডলারে পৌছায়।
মাইক্রোসফটের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির ফলে স্টিভ জবসের অ্যাপলের সাথে প্রযুক্তিগত অনেক বিষয় নিয়ে গেটস হুমকির সম্মুখীন হন। যদিও অ্যাপল ও মাইক্রোসফট শুরুর দিকের অনেক উদ্ভাবনে যৌথভাবে কাজ করেছিলো।
১৯৮১ সালে অ্যাপেল ম্যাকিনটোশ কম্পিউটারের সফটওয়্যার তৈরীর জন্যে মাইক্রোসফটকে আমন্ত্রণ জানায়। এই কাজ করার অভিজ্ঞতা মাইক্রোসফটকে উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম এর বিপুল পরিবর্তন আনতে সাহায্য করে। তারা মাউস ব্যবহার করে গ্রাফিক্স ইন্টারফেসের মাধ্যমে লেখা ও ছবি পর্দায় দেখাতে সক্ষম হয়।
বিল গেটস বুঝতে পারলেন, এই ধরণের কাজ MS-DOS কে সবার সামনে জাহির করতে পারবে। তিনি ধারণা করলেন, ম্যাকইনটোস সিস্টেমের VC Cops এর থেকে ভালো গ্রাফিক্স দিতে পারলে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা সহজ হবে।
এ কারণে গেটস একটি বিজ্ঞাপন ক্যাম্পেইন করেন এবং সেখানে মাইক্রোসফটের উচ্চতর গ্রাফিক্সের ব্যাপারে সবাইকে জানান। এটার নাম দেন মাইক্রোসফট এবং MS-DOS সিস্টেমে তৈরী সব সফটওয়্যার এতে চলবে বলে আশ্বস্ত করেন।
মূলত এটি একটি ভূয়া ঘোষণা ছিলো। কারণ, সে মুহূর্তে মাইক্রোসফটের এমন কোন প্রোগ্রাম প্রক্রিয়াধীন ছিলো না।
কিন্তু এই ঘোষণার কারণে বাজারের ৩০ শতাংশ কম্পিউটার MS-DOS সিস্টেমের অধীনে চলে যায় এবং তারা অপারেটিং সিস্টেম চেঞ্জ না করে মাইক্রোসফটের সফটওয়্যারের জন্যে অপেক্ষা করতে থাকে।
যেহেতু সবাই অপারেটিং সিস্টেম পরিবর্তন করছে না তাই VC COPS ডেভেলপের পরিকল্পনা চলে। কিন্তু ডেভেলপাররা এই প্রোগ্রামের কোড নিয়ে কাজ করতে চায় না। যার ফলে ১৯৮৫ সালে VC COPS নিয়ে উদ্দীপনা কমে যায়।
ঠিক সে বছরই ঘোষণার দুই বছর পর মাইক্রোসফট বাজারে উইন্ডোজ নিয়ে আসে। সেসময় মাইক্রোসফটের কোন প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলো না।
উইন্ডোজ নিয়ে মাইক্রোসফটের যাত্রা শুরু
১৯৮৬ সালে মাইক্রোসফট পুজি বাজারে প্রবেশ করে এবং একেকটি শেয়ার ২১ ডলারে বিক্রি করে। এটি কোম্পানির ৪৫% শেয়ার ধরে রাখে এবং বিল গেটস ৩১ বছর বয়সে মিলিয়নিয়র বনে যান।
১৯৯৪ সালের পহেলা জানুয়ারি বিল গেটস মাইক্রোসফটের প্রোডাক্ট ম্যানেজার মেলিন্ডাকে বিয়ে করেন। মেলিন্ডার প্রভাবেই বিল গেটস অন্যান্য চারিটি ওয়ার্কে যুক্ত হন।
১৯৯৯ সালে পুজিবাজারে মাইক্রোসফটের শেয়ারের দাম প্রায় ৮ গুণ বেড়ে যায়। এর ফলে বিল গেটস ১০১ ট্রিলিয়ন ডলারের মালিক হয়ে যান।
২০০০ সালে স্ত্রী মেলিন্ডাকে নিয়ে মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেন। শুরুতেই এটি ২৮ বিলিয়ন ডলারের ফান্ডিং পায়। এই বছরই গেটস মাইক্রোসফটের প্রতিটি কাজের নিবিড় তদারকি শুরু করেন। তিনি তার বন্ধু স্টিভ বেলমারকে মাইক্রোসফটের সিইও নিযুক্ত করেন।
গেটস তার দক্ষতার কারণে সফটওয়্যার ইন্ডাস্ট্রির প্রোডাক্ট ডেভেলপমেন্ট থেকে কর্পারেট স্ট্রাটেজি দেখেছেন। তারপর তিনি একটি প্রোফাইল তৈরীর মাধ্যমে জানতে চেয়েছেন কোন কাজ কিভাবে সম্ভব।
এই গুণের কারণে তিনি ১৯৯০ ও ২০০০ সালের মাইক্রোসফট চালাতে গিয়ে কিছু ভুল করলেও তা পুষিয়ে নেন। তিনি এখন বিশ্বের সবচেয়ে সম্পদশালী ব্যাক্তি। উচ্চাভিলাষীতা আর দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার মধ্যে দিয়ে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত তিনি।
What's Your Reaction?






