নীল হার্ভে এর জীবনী | Biography Of Neil Harvey
নীল হার্ভে এর জীবনী | Biography Of Neil Harvey

ব্যক্তিগত তথ্য |
|
---|---|
পূর্ণ নাম |
রবার্ট নীল হার্ভে
|
জন্ম | ৮ অক্টোবর ১৯২৮ ফিটজরয়, ভিক্টোরিয়া, অস্ট্রেলিয়া |
ডাকনাম |
নিনা |
উচ্চতা |
১.৭১ মিটার (৫ ফুট ৭ ইঞ্চি) |
ব্যাটিংয়ের ধরন |
বামহাতি |
বোলিংয়ের ধরন |
ডানহাতি অফ-স্পিন |
ভূমিকা |
শীর্ষসারির ব্যাটসম্যান |
রবার্ট নীল হার্ভে, এমবিই (ইংরেজি: Neil Harvey; জন্ম: ৮ অক্টোবর, ১৯২৮) ভিক্টোরিয়া প্রদেশের ফিটজরয় এলাকায় জন্মগ্রহণকারী সাবেক ও বিখ্যাত অস্ট্রেলীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা। তিনি ১৯৪৮ থেকে ১৯৬৩ সময়কালে অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের অন্যতম ব্যাটসম্যান হিসেবে পরিচিত ছিলেন। ১৯৫৭ সাল থেকে অবসর গ্রহণের পূর্ব-পর্যন্ত অস্ট্রেলীয় দলে সহঃ অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন। অবসর গ্রহণের সময় তিনি অস্ট্রেলিয়ার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারী ও সেঞ্চুরির অধিকারী ছিলেন। বামহাতি আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ের অধিকারী ও ‘নিনা’ ডাকনামে পরিচিত নীল হার্ভে দক্ষ ফিল্ডার হিসেবেও দলে সমান অবদান রেখেছেন। এছাড়াও, মাঝে-মধ্যে অফ-স্পিন বোলিং করতেন। ১৯৫০-এর দশকে অস্ট্রেলীয় দলে বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যাটসম্যান ছিলেন। ঐ সময়ে উইজডেন কর্তৃপক্ষ তাকে সর্বাপেক্ষা দক্ষ ফিল্ডার হিসেবে বিবেচিত করেছিল।
প্রারম্ভিক জীবন
হোরেস হার্ভের ছয় পুত্রের প্রত্যেকেই ক্রিকেটার ছিলেন। শারীরিক গড়ন ছোট হলেও জন্মেছেন ৪.৫ কিলোগ্রাম (১০ পাউন্ড) ওজন নিয়ে। পরিবারটি ব্রোকেন হিল এলাকায় বসবাস করতো। সেখানে হোরেস হার্ভে খনি শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। এরপর সিডনিতে বসবাস করলেও পরবর্তীকালে ১৯২৬ সালে তারা মেলবোর্নে স্থানান্তরিত হন। উত্তরাঞ্চলীয় শিল্প এলাকার উপকণ্ঠে ফিটজরয় এলাকায় আবাস গড়ে তোলেন। ছয় সন্তানের প্রত্যেকেই বাবার নির্দেশনায় ক্রিকেট খেলা শিখতে থাকেন। তারা বোলার হবার চেয়ে ব্যাটসম্যানের দিকেই অধিক মনোনিবেশ করেন ও টেনিস বল ব্যবহার করতেন। ছেলেদেরকে জর্জ স্ট্রিট স্টেট স্কুল ও ফকোনার স্ট্রিট সেন্ট্রাল স্কুলে পড়াশোনা করিয়েছেন হোরেস হার্ভে। ক্রিকেট খেলা ও ক্রিকেট বিষয়ক কথাবার্তা তাদের পরিবারের অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিল। হোরেস ব্রোকেন হিলের হয়ে তাদের পারিবারিক ব্যাটিং গড়কে ১৯৮ রানে নিয়ে যান ও মেলবোর্ন ক্লাব ক্রিকেটে খেলতে পাঠান। তন্মধ্যে মিক ও রে ভিক্টোরিয়ার হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেন। ব্রায়ান ও হ্যারল্ড জেলা ক্রিকেটে ফিটজরয়ের পক্ষে খেলেন। হার্ভে তার বড় ভাই মার্ভের সাথে টেস্ট ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেন। মার্ভ অস্ট্রেলিয়া জাতীয় ক্রিকেট দলের পক্ষে একটি টেস্টে অংশ নিয়েছিলেন। এছাড়াও, হ্যারল্ড বাদে বাকী পাঁচজনই বেসবল খেলায় ভিক্টোরিয়ার প্রতিনিধিত্ব করেন।
খেলোয়াড়ী জীবন
জানুয়ারি, ১৯৪৮ সালে তার টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে। তখন তার বয়স ছিল মাত্র ১৯ বছর তিন মাস। নিজস্ব দ্বিতীয় খেলায় তিনি চমকপ্রদ সেঞ্চুরি করেন। এরফলে তিনি অস্ট্রেলিয়ার সর্বকনিষ্ঠ সেঞ্চুরি লাভকারী ক্রিকেটারের সম্মান লাভ করেন যা অদ্যাবধি অক্ষত রয়েছে। এছাড়াও ১৯৪৮ সালে ইংল্যান্ড সফরে স্যার ডোনাল্ড ব্র্যাডম্যানের নেতৃত্বাধীন অপরাজেয় দলের অন্যতম ও সর্বকনিষ্ঠ সদস্য ছিলেন তিনি। এ দলটি টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে সর্বাপেক্ষা সুসংগঠিত দলরূপে চিহ্নিত হয়ে আছে। শুরুতে ইংরেজ পরিবেশে কিছুটা সমস্যা দেখা দিলেও তিনি অ্যাশেজ সিরিজে সেঞ্চুরি করেছেন। হার্ভে তার খেলোয়াড়ী জীবন শুরু করেছেন অত্যন্ত রাজকীয় ঢংয়ে। তার প্রথম ছয়টি সেঞ্চুরিই আসে মাত্র তেরো টেস্টে, শতাধিক রান গড়ে। তন্মধ্যে ১৯৪৯-৫০ মৌসুমে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেন চারটি; যার একটি ছিল টেস্ট জয়ী খেলায় অপরাজিত ১৫১* রান করে। ১৯৫০-এর দশকে ব্র্যাডম্যানের অবসরগ্রহণের পর অপরাজেয় দলটি ভেঙ্গে পড়ে। তখন হার্ভে দলের সর্বাপেক্ষা বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যাটসম্যান ছিলেন। ১৯৫৩ সালে ইংল্যান্ড সফরে তিনি দুই হাজারেরও অধিক রান সংগ্রহ করেন। এরফলে ১৯৫৪ সালে উইজডেন কর্তৃপক্ষ তাকে বর্ষসেরা ক্রিকেটার হিসেবে ঘোষণা করে। ১৯৫৪-৫৫ মৌসুমে ডারবান ও সিডনিতে অনুষ্ঠিত ব্যাটিং অনুপযোগী খেলায় যখন সতীর্থ খেলোয়াড়েরা ব্যাটিং করতে হিমশিম খাচ্ছিলেন, তখন তিনি অপরাজিত ১৫১* ও ৯২* রান করে ব্যাটিংয়ে তার নৈপুণ্যতা দেখাতে পেরেছিলেন। এছাড়াও ঢাকায় পাকিস্তানের বিপক্ষে করেছেন ৯৬ রান।
২৭ জুলাই, ১৯৫৬ তারিখে নীল হার্ভে জোড়া শূন্য রানের সাথে নিজেকে যুক্ত করেন। ১৯৫৬ সালে ম্যানচেস্টারের ওল্ড ট্রাফোর্ডে অনুষ্ঠিত টেস্টে জিম লেকার খেলায় ৯০ রান খরচায় ১৯ উইকেট লাভের কীর্তিতে দ্বিতীয় দিনে ২ ঘণ্টার ব্যবধানে হার্ভে জোড়া শূন্য রান করেন।
অবসর পরবর্তীকাল
হার্ভের অবসরকালীন সময়ে কেবলমাত্র ব্র্যাডম্যানই তার তুলনায় অধিক রান ও সেঞ্চুরি করতে পেরেছিলেন। হার্ভে তার পায়ের সুচারু কারুকাজ ও স্ট্রোক প্লে’র জন্য বিখ্যাত ছিলেন। পাশাপাশি ফিল্ডিংয়েও সমান দক্ষ ছিলেন। অবসর পরবর্তীকালে তিনি বারো বছর অস্ট্রেলিয়া জাতীয় ক্রিকেট দলের নির্বাচক ছিলেন। কিন্তু সাম্প্রতিককালে তিনি দীর্ঘদিন যাবৎ আধুনিক ক্রিকেটের সমালোচনায় মুখর হয়ে সরব ভূমিকা পালন করছেন। ২০০০ সালে অস্ট্রেলীয় ক্রিকেট হল অব ফেমে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। এছাড়াও, অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট বোর্ডের শতাব্দীর সেরা দলের অন্যতম সদস্য হিসেবে মনোনীত হন নীল হার্ভে। ২০০৯ সালে আইসিসি ক্রিকেট হল অব ফেমের জন্য মনোনীত ৫৫জন ক্রিকেটারের মধ্যে তাঁকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
অধিনায়কত্ব
১৯৫৭ সালে অধিনায়ক ইয়ান ক্রেগের সহকারী হিসেবে মনোনীত হন তিনি। ক্রেগ মাত্র ছয়টি খেলায় অধিনায়কত্ব করেন। এ সময় দল পুণঃগঠনের ফলে তরুণ খেলোয়াড়দেরকে সম্পৃক্ত করা হয়। এরফলে ক্রেগের দল দূর্বল হতে থাকে। এ অবস্থায় দলকে সহায়তার হাত বাড়ান হার্ভে।
পরবর্তী মৌসুমে ক্রেগের অসুস্থতা ও হার্ভে আন্তঃরাজ্য খেলায় অংশগ্রহণের ফলে রিচি বেনোকে অধিনায়কত্ব প্রদান করা হয়। কিন্তু হার্ভেকে তার খেলোয়াড়ী জীবনের শেষ পর্যন্ত সহকারী অধিনায়কের ভূমিকাতেই রাখা হয়েছিল। তিনি কেবলমাত্র একটি খেলাতেই অধিনায়কত্ব করেন। ১৯৬১ সালে লর্ডসে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় টেস্টে বেনো আহত হলে হার্ভে দলকে নেতৃত্ব দেন। পর্বত-শিখরের লড়াই নামে পরিচিত ঐ খেলায় তার দলকে জয়ের জন্য প্রাণান্তকর পরিশ্রম করতে হয়।
আন্তর্জাতিক তথ্য |
|
---|---|
জাতীয় দল |
|
টেস্ট অভিষেক |
২৩ জানুয়ারি ১৯৪৮ বনাম ভারত |
শেষ টেস্ট |
১৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৩ বনাম ইংল্যান্ড |
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
|
sourse:wikipedia
What's Your Reaction?






