কার্ল হুপার এর জীবনী | Biography Of Carl Hooper

কার্ল হুপার এর জীবনী | Biography Of Carl Hooper

May 30, 2025 - 22:25
 0  0
কার্ল হুপার এর জীবনী | Biography Of Carl Hooper

ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নাম
কার্ল লিউলিন হুপার
জন্ম ১৫ ডিসেম্বর ১৯৬৬ (বয়স ৫৮)
জর্জটাউন, গায়ানা
ব্যাটিংয়ের ধরন ডানহাতি
বোলিংয়ের ধরন ডানহাতি অফ ব্রেক

কার্ল লিউলিন হুপার (ইংরেজি: Carl Llewellyn Hooper; জন্ম: ১৫ ডিসেম্বর, ১৯৬৬) গায়ানার জর্জটাউনে জন্মগ্রহণকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাবেক আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট দলের অধিনায়কের দায়িত্বেও ছিলেন তিনি। ডানহাতি ব্যাটসম্যান ছিলেন কার্ল হুপার। এছাড়াও অফ-স্পিন বোলার হিসেবে ১৯৮০-এর দশকের শেষদিকে গর্ডন গ্রীনিজ, ডেসমন্ড হেইন্স, ম্যালকম মার্শাল  কোর্টনি ওয়ালশকে সাথে নিয়ে বৈশ্বিক ক্রিকেট অঙ্গনে দলের আধিপত্য বিস্তারে ভূমিকা রেখেছিলেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলে তিনি ২১-বছরেরও অধিক সময় ব্যয় করেন।

মেঘের আড়ালে নিখোঁজ তারকা কার্ল হুপার

ওয়েস্ট ইন্ডিজের

অলরাউন্ডার কার্ল হুপার। তার জন্মটা ছিল উদ্ভাসিত এক তারার যুগে যখন, ক্রিকেট বিশ্বে প্রতিটি দলেই দেখা মিলত তারকারদের। সেসব তারকার ভিড়ে খুব বেশি মাতামাতি হয়নি ব্যাট, বল, ফিল্ডিং তিন বিভাগেই আলো ছড়ানো হুপারকে নিয়ে। তিনি ছিলেন যেন অন্ধকারের তারকা।

সদা ঠাণ্ডা মাথায় অবিচল, দুর্দান্ত পাওয়ার হিটিং! অফ ব্রেক বোলিংয়ের সাথে স্লিপে দুর্দান্ত সব ক্যাচ নিয়ে ইতিহাসের পাতায় জায়গা করে নিয়েছেন কার্ল হুপার। সে সময়ের বোলার ওয়ার্নকে ডাউন দ্য উইকেটে এসে উড়িয়ে মারা কিংবা ওয়াসিম আকরামের নাভিশ্বাস তুলে নেওয়ার জন্য যথেষ্ট ছিলেন তিনি। একবার এক সাক্ষাৎকারে ওয়াসিম বলেছিল, ‘হুপার যেদিন খেলেন, সেদিন বাকিরা শুধু চেয়ে চেয়ে দেখেন!’ এতেই আপনি আন্দাজ করতে পারেন হুপার কতোটা প্রতিভা নিয়ে বিশ্ব ক্রিকেটে পা রেখেছিল!

ইতিহাসের প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে টেস্ট ও ওয়ানডে উভয় ফরম্যাটেই ১০০ ম্যাচে ৫০০০ রান, ১০০ উইকেটের সাথে ১০০টি ক্যাচ নিয়েছিলেন তিনি। অদ্ভুতভাবে ওয়ানডেতে তার মোট রান ৫,৭৬১ আর টেস্টে ৫,৭৬২ – মানে ওয়ানডের থেকে ১ রান বেশি টেস্টে!

হুপার কেমন অলরাউন্ডার ছিলেন তার একটি প্রমাণ মেলে তার ক্যারিয়ারের পরিসংখ্যান থেকে। পুরো ক্যারিয়ারে (লিস্ট ‘এ’, প্রথম শ্রেণিসহ) নামের পাশে যোগ করেছিলেন ৪৮ হাজার ১৪ রান ও ১২৬৬ উইকেট; সাথে ৮৫৮ ক্যাচ! ক্যারিয়ারে সব মিলিয়ে খেলা ১১৩৫ টা ম্যাচের মাঝে নট আউটই ছিলেন ১৯৩ বার!

আবেগী হয়ে, অসুস্থ সন্তান ও পরিবারের পাশে থাকবেন বলে ১৯৯৯ সালেই অবসর নিয়ে নিয়েছিলেন। পরে ফিরেও এসেছিলেন বছর দুয়েক বাদে। এসেই তিনি পেয়ে যা অধিনায়কত্ব। দলের দায়িত্ব নিয়ে 

খেলোয়াড়ী জীবন

২০০১ সালে ভারত সফরে তিনি তার সর্বোচ্চ ২৩৩ রানের ইনিংস করেন। টেস্ট ক্রিকেটে তিনি ৫,৭৬২ রান করেছেন। ১০২ টেস্টে ৩৬.৪৬ রান গড়ে ও একদিনের আন্তর্জাতিকে ২২৭ খেলায় ৩৫.৩৪ রান গড়ে আদর্শ অল-রাউন্ডারের মর্যাদা লাভ করেন।

হুপার প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে স্থানীয় গায়ানা দল ও কাউন্টি ক্রিকেটে কেন্ট এবং ল্যাঙ্কাশায়ার দলে খেলেছেন। ২০০৩ সালে দ্বিতীয় খেলোয়াড় হিসেবে ১৮ কাউন্টি দলের সবগুলোর বিপক্ষেই সেঞ্চুরি করেছেন।

বিশ্বের একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে টেস্ট ও একদিনের আন্তর্জাতিক - উভয়ক্ষেত্রেই পাঁচ হাজার রান, একশত উইকেট, একশত ক্যাচ এবং একশত খেলায় অংশগ্রহণের কীর্তিগাঁথা রচনা করেন যা পরবর্তীতে জ্যাক ক্যালিসও এ সম্মাননা অর্জন করেন। স্টিভ ওয়াহ তার আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থে লিখেছেন যে, হুপার দ্রুত পায়ের কাজ করতেন ও নির্দয়তার সাথে স্ট্রোক মারতেন। ইনিংসকে অসম্পূর্ণ রেখেই নিয়মিতভাবে আউট হতেন ও পাশাপাশি তার অমনোযোগীতাও এর প্রধান কারণ ছিল।

কার্ল হুপার: বিশ্ব ক্রিকেটের আন্ডাররেটেড এক অলরাউন্ডার!

পাঁচ হাজার রান, ১০০ উইকেট, ১০০ ক্যাচ এবং ১০০ টি ম্যাচ। এই সবকিছু যখন একজনের নামের পাশে তখন তাকে চিনতে আর কি বা লাগে! আর সেটি যদি হয় টেস্ট ও ওয়াইডের দুই ফরম্যাটেই তাহলে আর চিনতে বাকি রইলো কি? তবুও যদি অচেনা লাগে তাহলে ইতিহাস ঘাঁটতে হবে। উত্তরে আপনি দুইটি নাম খুঁজে পাবেন, যার একটি জ্যাক ক্যালিস আরেকটি ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটের কিংবদন্তী। সদা ঠান্ডা মাথায় অবিচল, দুর্দান্ত পাওয়ার হিটিং! অফ ব্রেক বোলিংয়ের সাথে স্লিপে দুর্দান্ত সব ক্যাচ নিয়ে যিনি জায়গা করে নিয়েছেন ইতিহাসের পাতায়, তিনি তো বিশ্ব ক্রিকেটের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডারদের একজন হয়েও যেনো নেই আলোচনায়। যাকে নিয়ে আজকেট গল্প তিনি জর্জটাউনে জন্ম নেওয়া কার্ল লিউলিন হুপার।

আধুনিক ক্রিকেটে সেরা অলরাউন্ডারের দৌড়ে সাকিব বেশ উপরেই, এই তালিকায় আছেন স্টোকস, জাদেজার মতো ক্রিকেটাররা। একটু পিছনে ফিরলে ভেসে আসবে জ্যাক ক্যালিস, ইমরান খান কিংবা ড্যানিয়েল ভেট্টরির নাম। এবার আরেকটু পিছনে ফিরলে রিচার্ড হ্যাডলি, কপিল দেবরা নিবে অনেকটা জায়গা। ইয়ান বোথাম কিংবা গ্যারি সোবার্সকে নিয়ে তো একেকটা উপন্যাস লেখা সম্ভব। এদের মাঝে একজন যেনো নিরবে নিভৃতেই নিজেকে নিয়েছেন এগিয়ে, ব্যাটে-বলে পারফর্ম করে ঠিকই পৌঁছেছেন ইতিহাসে; জায়গা করে নিয়েছেন প্রথম পাতায়। তবুও তাকে নিয়ে নেই এতো আলোচনা, নেই কৌতুহলও। তাতে কি? কার্ল যে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটের অন্যতম সেরা নক্ষত্র সেটি মানতে দ্বিধা থাকার কথা নয় কারো।

তবুও যদি খটকা লাগে তাহলে দেখুন হুপারের ক্রিকেটীয় ক্যারিয়ার। সবধরনের ক্রিকেটে নামের পাশে ৪৮ হাজার ১৪ রান ও ১২৬৬ উইকেট সাথে ৮৫৮ ক্যাচ! একজন অলরাউন্ডার হতে এটাই কি যথেষ্ট নয়? উত্তরটা হ্যা হলেও কোথাও একটা শূন্যতা থেকেই যায়। কেননা হুপার তার প্রতিভার অর্ধেকও বিকাশ ঘটাননি। অথচ প্রবল সম্ভাবনাময় এক ক্রিকেটার ছিলেন হুপার। ছিলেন গর্ডন গ্রিনিজ, ভিভ রিচার্ডস, ম্যালকম মার্শাল, ডেসমন্ড হেইন্স আর কোর্টনি ওয়ালশদের মতো ক্রিকেটারদের সতীর্থ। এখানে সতীর্থ বললেও ভুল হবে, কেননা হুপার পেয়েছিলেন তাদের সান্নিধ্য! তবুও হুপার নিজেকে মেলে ধরেননি কোনো এক অজানা কারণে।

অথচ ওয়ার্নকে ডাউন দ্য উইকেটে এসে উড়িয়ে মারা কিংবা ওয়াসিম আকরামের নাভিশ্বাস তুলে নেওয়ার জন্য যথেষ্ট ছিলেন হুপার। যেই ওয়ার্নের স্পিন সামলাতে হিমসিম খেয়েছিলো বিশ্বের বাঘা বাঘা ব্যাটাররা সেখানে হুপার ছিলেন অনবদ্য, ছিলেন ওয়ার্নের গলার কাঁটা। কথাটি ওয়াসিমের ক্ষেত্রেও বলা যায়। একবার এক সাক্ষাৎকারে হুপারকে নিয়ে বলতে গিয়ে ওয়াসিম বলেছিলেন, “হুপার যেদিন খেলেন, সেদিন বাকীরা শুধু চেয়ে চেয়ে দেখেন!” এতেই আপনি আন্দাজ করতে পারেন হুপার কতোটা প্রতিভা নিয়ে বিশ্ব ক্রিকেটে পা রেখেছিলো!

খেলার ধরন

ফিল্ডিং চলাকালীন তিনি সচরাচর দক্ষ ফিল্ডার হিসেবে দ্বিতীয় স্লিপে অবস্থান করতেন। অ্যামব্রোস এবং ওয়ালশের বলে অগণিত ক্যাচ পেয়েছেন। তিনজন খেলোয়াড়ের একজন হিসেবে ১৮টি ভিন্ন ভিন্ন ইংরেজ কাউন্টি দলের বিপক্ষে সেঞ্চুরি পেয়েছেন।

অবসর পরবর্তী-জীবন

১৯৯০-এর দশক থেকে অ্যাডিলেডে বসবাস করছেন হুপার। ২০১০-১১ ও ২০১১-১২ মৌসুমে অ্যাডিলেডের উডভিল ডিস্ট্রিক্ট ক্রিকেট ক্লাবে কোচের দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

তরুণ ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ব্যাটসম্যান চিহ্নিতকরণে সাগিকর হাই পারফরম্যান্স সেন্টারে ব্যাটিং কোচের দায়িত্ব পান। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের ধ্যান-ধারণার বিপক্ষে অবস্থান করেন হুপার। অক্টোবর, ২০১২ সালে তিনি আইপিএল সম্বন্ধে বলেন যে, এটি ক্রিকেটের অন্যতম বৃহৎ ও ভীতিকর ধোঁকাবাজি।

আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
  • ওয়েস্ট ইন্ডিজ
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ১৯০)
১১ ডিসেম্বর ১৯৮৭ বনাম ভারত
শেষ টেস্ট ৩ নভেম্বর ২০০২ বনাম ভারত
ওডিআই অভিষেক
(ক্যাপ ৫০)
১৮ মার্চ ১৯৮৭ বনাম নিউজিল্যান্ড
শেষ ওডিআই ৪ মার্চ ২০০৩ বনাম কেনিয়া
ওডিআই শার্ট নং

খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট ওডিআই এফসি এলএ
ম্যাচ সংখ্যা ১০২ ২২৭ ৩৩৯ ৪৫৭
রানের সংখ্যা ৫,৭৬২ ৫,৭৬১ ২৩,০৩৪ ১৩,৩৫৭
ব্যাটিং গড় ৩৬.৪৬ ৩৫.৩৪ ৪৭.৬৮ ৪০.১১
১০০/৫০ ১৩/২৭ ৭/২৯ ৬৯/১০৪ ১৫/৮৫
সর্বোচ্চ রান ২৩৩ ১১৩* ২৩৬* ১৪৫
বল করেছে ১৩,৭৯৪ ৯,৫৭৩ ৪৬,৪৬৪ ১৯,৭১৮
উইকেট ১১৪ ১৯৩ ৫৫৫ ৩৯৬
বোলিং গড় ৪৯.৪২ ৩৬.০৫ ৩৫.৩০ ৩৪.৩৭
ইনিংসে ৫ উইকেট ১৮
ম্যাচে ১০ উইকেট - -
সেরা বোলিং ৫/২৬ ৪/৩৪ ৭/৯৩ ৫/৪১
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ১১৫/– ১২০/– ৩৭৫/– ২৪২/–

sourse:dainikbangla :cricketkhorbd :wikipedia...

What's Your Reaction?

Like Like 0
Dislike Dislike 0
Love Love 0
Funny Funny 0
Angry Angry 0
Sad Sad 0
Wow Wow 0