কাজী নজরুল ইসলামের জীবনী (Biography of Kazi Nazrul Islam)

কাজী নজরুল ইসলামের জীবনী (Biography of Kazi Nazrul Islam)

May 10, 2025 - 17:18
May 10, 2025 - 20:16
 0  2
কাজী নজরুল ইসলামের জীবনী (Biography of Kazi Nazrul Islam)

কাজী নজরুল ইসলাম সংক্ষিপ্ত জীবনী

নাম: কাজী নজরুল ইসলাম
জন্ম: ১৮৯৮ সালের ২৪শে মে
জন্মস্থান: বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রাম
পিতার নাম: কাজী ফকির আহমেদ
মাতার নাম: জাহেদা খাতুন
স্ত্রীয়ের নাম: নার্গিস আসার খানম ওরফে প্রমীলা দেবী
ছদ্মনাম: দুখু মিয়া
মৃত্যু: ১৯৭৬ সালের ২৯ শে আগস্ট
মৃত্যুস্থান: ঢাকা, বাংলাদেশ

ভূমিকা:

বাংলা সাহিত্যের এক বিষ্ময় প্রতিভার নাম কাজী নজরুল ইসলাম। কবিতা, নাটক ও উপনাস্যের মতো সাহিত্যের প্রত্যেকটা ক্ষেত্রে তাঁর ছিলো অবাধ বিচরণ | নিজেই লিখতেন গান, দিতেন সেইসব গানের সুর এবং সেইসাথে গাইতেন গানও। এছাড়াও পাশাপাশি সাংবাদিক হিসাবে ধরেছিলেন পেন এবং করেছিলেন নানা আন্দোলন রাজনৈতিক অধিকার আদায়ের জন্য। ধর্মান্ধতা, কুসংস্কার, সাম্প্রদায়িকতা ও পরাধীনতার বিরুদ্ধে তাঁর অবস্থানের কারণের জন্য কাজী নজরুল ইসলামকে “বিদ্রোহী কবি” হিসাবে আখ্যা দেওয়া হয়। আজ বিদ্রোহী কবির জীবনী সম্পর্কে আলোচনা করবো। তার আগে একনজরে তাঁর সম্পর্কে কিছু জরুরি তথ্য জেনে নেওয়া যাক।

জন্ম

কাজী নজরুল ইসলাম ১৮৯৯ সালের ২৪শে মে ( ১১ জ্যৈষ্ঠ, ১৩০৬ বঙ্গাব্দ) পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার আসানসোল মহকুমার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন ৷ তার ডাক নাম ছিল দুখুমিয়া ৷ তার পিতা-মাতার নাম ছিল কাজী ফকির আহমেদ ও জায়েদা খাতুন ৷ কাজী নজরুল ইসলাম ছিলেন তার পিতা-মাতার ষষ্ঠ সন্তান ৷ তার পিতা স্থানীয় একটি মাজারের খাদেম ছিলেন ৷ কাজী নজরুল ইসলাম তার পিতাকে হারান মাত্র আট বছর বয়সে ৷ পিতাকে হারানোর ফলে তার পরিবার অত্যন্ত দরিদ্র হয়ে যায় ৷ কাজী নজরুল ইসলামের স্ত্রীর নাম অশালতা সেনগুপ্ত ।

কবির শিক্ষাজীবন:

ছােটবেলায় নজরুল এক মাদ্রাসায় লেখাপড়া শুরু করেন । তিনি সুললিত কন্ঠে কোরআন তেলওয়াত করতে পারতেন । এ সময় দুষ্টুমির পাশাপাশি নজরুল তার আপন কাকার কাছে ফার্সি ভাষা ও সাহিত্যেরও নানা পাঠ নিতে থাকেন। ১৯১০ সালে তিনি রানীগঞ্জের সিয়ারসোল রাজ স্কুল এবং পরে মাথরুন উচ্চ ইংরেজি স্কুলে পড়াশোনা করেন। কিন্তু শীঘ্রই তিনি আর্থিক সঙ্কটের কারণে পড়াশোনা ত্যাগ করেন। ষষ্ঠ শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশুনো করার পর তিনি আবার কাজে যোগ দেন এবং রান্নার কাজ শুরু করেন। পরে আসানসোলের বেকারি ও চায়ের দোকানে চাকরি নেন তিনি।
চায়ের দোকানে কাজ করার সময় তার পরিচয় হয় আসানসোলের দারোগা রফিজউল্লাহ’র সাথে। দোকানে কাজ করার পাশাপাশি নজরুল কবিতা এবং ছড়া রচনা করতেন তা দেখে রফিজউল্লাহ মুগ্ধ হন। এবং ১৯১৪ সালে তিনি কবি নজরুল ইসলামকে দরিরামপুর স্কুলে সপ্তম শ্রেণীতে ভর্তি করে দেন। পরবর্তীকালে ১৯১৫ সাল থেকে নজরুল আবার রানীগঞ্জে সিয়ারসোল রাজ স্কুলে চলে যান এবং সেখানে অষ্টম শ্রেণীতে ভর্তি হন। সেখানে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেন। তিনি বাংলা, সংস্কৃত, আরবি, ফারসি সাহিত্য এবং হিন্দুস্তানি শাস্ত্রীয় সংগীত অধ্যয়ন করেন।

কবির গানবাজনা ও কবিতার প্রতি আকর্ষণ:

কাজী নজরুল ইসলাম রানীগঞ্জের এক স্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ার সময় বর্ধমান জেলার মহকুমা শহরে আসানসােলে পালিয়ে আসেন । সেখানে এক রুটির দোকানে পাঁচ টাকা মাসিক বেতনে রুটি বানানাের চাকরি নিলেন ।সেখানকার এক দারােগা কাজী রফিকউদ্দিন গান বাজনা ও কবিতার প্রতি ঝোক দেখে নজরুলকেতার ময়মনসিংহস্থ নিজ গ্রামে কাজীর সিমলায় নিয়ে আসেন । এখানে তিনি তাকে এক স্কুলে ভর্তি করে দেন । কিন্তু পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়ে আবার রানীগঞ্জে ফিরে এলেন । এর ফাঁকে ফাঁকে নানা ধরনের সাহিত্য আর কবিতার বই পড়ে নিজের জ্ঞানভান্ডারকে সমৃদ্ধ করতে লাগলেন।

নজরুলের সেনাবাহিনীতে যোগদান ও অন্যান্য কার্যকলাপ:

নজরুল তখন দশম শ্রেণীতে পড়েন , ম্যাট্রিক পরীক্ষার পূর্বে টেস্ট পরীক্ষা এসে গেল । কিন্তু ১৯১৭ সালে তখন প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলছে । কাজী নজরুল ইসলাম স্থির করলেন যুদ্ধে যােগ দেবেন । ১৯১৭ সালে নজরুল ৪৯ নম্বর বাঙালী পল্টনে যােগ দিয়ে গেলেন নওশেরায় । সেখান থেকে করাচীতে । করাচী সেনানিবাসে তার সঙ্গে আলাপ হয় এক সহকর্মী পাঞ্জাবী মৌলভীর সঙ্গে । ফার্সি ভাষায় তার দক্ষতা ছিলাে গভীর।


১৯১৯ সালে সেনাবাহিনীতে কর্মরত অবস্থায় তার “বাউণ্ডুলের আত্মকাহিনী” সওগাত পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। এছাড়াও সেইসময় তিনি আরও গল্প লিখেছিলেন ‘হেনা’, ‘ব্যথার দান’, ‘মেহের নেগার’, ‘ঘুমের ঘোরে’। ১৯২০ সালে কবি কাজী নজরুল ইসলাম সেনাবাহিনী কর্ম ত্যাগ করেন এবং কলকাতায় ফিরে কলেজ স্ট্রীটে বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য সমিতির যোগদান করেন। যেখানে তিনি তার প্রথম কবিতা লেখেন ‘বাঁধন-হারা’। ১৯২২ সালে৩ তিনি বিদ্রোহী শিরোনাম কবিতা লিখেছিলেন যা “বিজলি” ম্যাগাজিনে প্রকাশিত হয়েছিল। কবিতাটি এক বিদ্রোহী সংবেদনশীলতার বর্ণনা দিয়েছে এবং সমাজের বিভিন্ন শ্রেণির লোকের কাছ থেকে প্রশংসা পেয়েছিল।


১৯২১ সালে অক্টোবর মাসে বোলপুরের শান্তিনিকেতনে কাজী নজরুল ইসলামের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দেখা হয় এবং তখন থেকে প্রায় কুড়ি বছর এই দুই কবির মধ্যে যোগাযোগ অক্ষুণ্ণ থাকে। তারা দুজনে একে অপরকে গভীর শ্রদ্ধা করতেন এবং ভালোবাসতেন।
১৯২২ সালে তার রাজনৈতিক কবিতা “আনন্দময়ীর আগমনে” ধূমকেতু পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। এর ফলে ম্যাগাজিনের অফিসে পুলিশি অভিযানের সময় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। ১৯২৩ সালে ডিসেম্বর মাসে মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত কারাবন্দী থাকাকালীন প্রচুর সংখ্যক কবিতা ও গান রচনা করেছিলেন।


অবশেষে, তিনি “খিলাফত” আন্দোলন এবং ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সমালোচক হয়েছিলেন ব্রিটিশ সাম্রাজ্য থেকে রাজনৈতিক স্বাধীনতা না নেওয়ার জন্য। তিনি জনগণকে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য উদ্বুদ্ধ করেছিলেন এবং ‘শ্রমিক প্রজা স্বরাজ দল’ সংগঠিত করেছিলেন।


১৯২৬ সাল থেকে তিনি সমাজের দুর্বল অংশের জন্য কবিতা এবং গান রচনা করেছিলেন। পরবর্তীকালে তার রচনাগুলি বিদ্রোহ থেকে ধর্মে রূপান্তরিত হয়েছিল। ১৯৩৩ সালে তিনি ‘আধুনিক বিশ্ব সাহিত্য’ শীর্ষক রচনা সংকলন প্রকাশ করেছিলেন, যার বিভিন্ন থিম এবং শৈলী ছিল। তিনি ১০ খণ্ডে শাস্ত্রীয় রাগ, কীর্তন এবং দেশাত্মবোধক গানের উপর ভিত্তি করে ৮০০ টি গান লিখেছিলেন।

বৈবাহিক জীবন

কুমিল্লা দৌলতপুরের থাকাকালে নজরুলের সাথে নার্গিসের প্রেম হয় ৷ ১৯২১ সালে বিবাহ সম্পন্ন হলে কাবিনের জন্য নার্গিসের মামা আলী আকবর নজরুলকে ঘর জামাই থাকার শর্ত দেন , যা নজরুল মেনে নিতে না পারায় বাসর রাতেই দৌলতপুর ছেড়ে চলে যান ৷ ১৯২৪  সালে অশালতা সেনগুপ্তা ওরফে প্রমিলা দেবীকে বিয়ে করেন ৷ অশালতা সেনগুপ্তের জন্ম মানিকগঞ্জে কিন্তু তিনি বসবাস করতেন কুমিল্লায় ৷

নজরুল ও সম্মাননা

১৯২৬ সালে কাজী নজরুল ইসলাম ঢাকায় আসেন ৷ কলকাতার আলবার্ট হলে  ১৯২৯ সালের ১৫ ডিসেম্বর তাকে জাতীয় সংবর্ধনা দেওয়া হয় ৷ সংবর্ধনায় নজরুলকে প্রতিভাবান কবি বলে উল্লেখ করেন প্রফুল্ল চন্দ্র রায় ৷ ১৯৪২ সালে,  ৪৩ বছর বয়সে কবি মস্তিষ্কের ব্যাধি ‘পিকজ ডিজিজ’ এ আক্রান্ত হয়ে বাকশক্তি হারান ৷

  • কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক জগত্তারীনী স্বর্ণপদক – ১৯৪৫ সালে  
  • ভারত সরকার কর্তৃক পদ্মভূষণ – ১৯৬০ সালে 
  • বঙ্গবন্ধুর উদ্দেশ্যে কবিকে সপরিবারে বাংলাদেশে আনা হয় – ১৯৭২ সালের ২৪শে মে
  •  জাতীয় কবির মর্যাদা দেওয়া হয় – ১৯৭৪ সালে 
  • ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক সম্মান সূচক ডক্টরের ডিগ্রি প্রদান করা হয় – ১৯৭৪ সালে 
  • কবি কে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব প্রদান করা হয় – ১৯৭৬ সালে

২০০৪ সালের বিবিসি বাংলার একটি জরিপে কাজী নজরুল ইসলামকে সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালির তালিকায় তৃতীয় স্থান দেওয়া হয় । ২০০৫ সালের ১২ ই জুন প্রথম আন্তর্জাতিক নজরুল সম্মেলন ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয় । কাজী নজরুল ইসলামের স্মৃতি বিজড়িত স্থান ময়মনসিংহের ত্রিশালে ‘জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়’ নামে একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হয় । নজরুল কে নিয়ে কানাডার চলচ্চিত্র পরিচালক ফিলিপ স্পারেল নির্মাণ করেন তথ্যচিত্র ‘নজরুল’ ।

১৯২২ খ্রিষ্টাব্দের ১২ আগস্ট নজরুল ধূমকেতু পত্রিকা প্রকাশ করেন। এটি সপ্তাহে দুবার প্রকাশিত হতো। ১৯২০-এর দশকে অসহযোগ ও খিলাফত আন্দোলন এক সময় ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। এর পরপর স্বরাজ গঠনে যে সশস্ত্র বিপ্লববাদের আবির্ভাব ঘটে তাতে ধূমকেতু পত্রিকার বিশেষ অবদান ছিল। এই পত্রিকাকে আশীর্বাদ করে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছিলেন,

কাব্যগ্রন্থ সমূহ:

কাব্য গ্রন্থ প্রকাশের বছর
সাম্যবাদী ১৯২৫
ঝিঙে ফুল ১৯২৬
সিন্ধু হিন্দোল ১৯২৮
চক্রবাক ১৯২৯
নতুন চাঁদ ১৯৪৫
মরুভাস্কর ১৯৫১
দোলন-চাঁপা ১৯২৩
বিষের বাঁশি ১৯২৪
ভাঙ্গার গান ১৯২৪
চিত্তনামা ১৯২৫
ছায়ানট ১৯২৫
পুবের হাওয়া ১৯২৬
সর্বহারা ১৯২৬
ফণী-মনসা ১৯২৭
সঞ্চিতা ১৯২৮
জিঞ্জীর ১৯২৮
সন্ধ্যা ১৯২৯
প্রলয় শিখা ১৯৩০
নির্ঝর ১৯৩৯
সঞ্চয়ন ১৯৫৫
ঝড় ১৯৬১

আরো পড়ুন:      রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সংক্ষিপ্ত জীবনী 

কাজী নজরুল ইসলামের উপন্যাস সমূহ: 

উপন্যাসের নাম প্রকাশের বছর
বাঁধন হারা ১৯২৭
মৃত্যুক্ষুধা ১৯৩০ 
কুহেলিকা ১৯৩১

কাজী নজরুল ইসলামের নাটক সমূহ:

নাটক সমূহ প্রকাশের বছর
শারদোৎসব  ১৯০৮
রাজা ১৯১০
ডাকঘর  ১৯১২
অচলায়তন ১৯১২
ফাল্গুনী  ১৯১৬
মুক্তধারা ১৯২২
রক্তকরবী ১৯২৬
তাসের দেশ ১৯৩৩
কালের যাত্রা ১৯৩২

নজরুলের গল্পগ্রন্থ সমূহ:

গল্পগ্রন্থ সমূহ প্রকাশের বছর
ব্যাথার দান ১৯২২
রিক্তের বেদন ১৯২৪
শিউলীমালা ১৯৩১

কাজী নজরুল ইসলাম রচিত প্রবন্ধগ্রন্থ সমুহ:

প্রবন্ধগ্রন্থ সমুহ প্রকাশের বছর
যুগবাণী ১৯২২
রুদ্রমঙ্গল ১৯২৩
রাজবন্দীর জবানবন্দী ১৯২৩
দুর্দিনের যাত্রী ১৯২৬

সঙ্গীত গ্রন্থ

  • রাঙাজবা
  • বুলবুল
  • চোখের চাতক
  • গানের মালা
  • গুলবাগিচা
  • মহুয়ার গান
  • চন্দ্রবিন্দু
  • সুর-সাকি
  • গীতি শতদল
  • বনগীতি
  • জুলফিকার

নজরুলের নাট্যগ্রন্থ

  • ঝিলিমিলি ( প্রথম নাট্যগ্রন্থ )
  • মধুমালা 
  • পুতুলের বিয়ে 
  • আলেয়া

নজরুল-রবীন্দ্রনাথ সম্পর্ক

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নজরুলের ধূমকেতু পত্রিকাকে আশীর্বাদ করেন । নজরুল জেলে থাকা অবস্থায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর বসন্ত নাটকটি নজরুলকে উৎসর্গ করেন । নজরুল খুশি হয়ে জেলে বসেই আজ সৃষ্টি সুখের উল্লাসে কবিতাটি লেখেন । নজরুলের অনশনকালীন সময়ে রবীন্দ্রনাথ তাকে টেলিগ্রাম এ পাঠান,Give up hunger strike, our literature claims you.

নজরুলের বাজেয়াপ্ত গ্রন্থ

নজরুলের পাঁচটি গ্রন্থ ব্রিটিশ সরকার কর্তৃক বাজেয়াপ্ত হয় । এগুলো হলঃ

  • যুগবাণী
  • ভাঙার গান
  • প্রলয়শিকা
  • বিষের বাঁশি
  • চন্দ্রবিন্দু

আনন্দময়ীর আগমনে কবিতাটি ১৯২২ সালে ২৬ শে সেপ্টেম্বর ধূমকেতু পত্রিকায় প্রকাশিত হলে, ধুমকেতু পত্রিকার সংখ্যা নিষিদ্ধ হয় এবং কবিকে ১ বছর কারাদণ্ড দেয়া হয় ৷

কাজী নজরুল ইসলামের চলচ্চিত্র:-

নজরুল ধূপছায়া নামে একটি চলচ্চিত্র পরিচালনা করেন। এতে তিনিও ভূমিকা রাখেন। 1931 সালে, তিনি প্রথম বাংলা সবাক চলচ্চিত্র 'জামাই ষষ্ঠী' এবং শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের গল্প অবলম্বনে 'গৃহদাহ' চলচ্চিত্রের সুরকার ছিলেন। তিনি পাইওনিয়ার ফিল্মস প্রযোজিত 1933 সালের চলচ্চিত্র 'ধ্রুব' এর গীতিকার ও সঙ্গীত পরিচালক এবং 1937 সালের চলচ্চিত্র 'গ্রাহের ফের', 1935 সালের চলচ্চিত্র 'পাতালপুরী' এবং 1938 সালের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের চলচ্চিত্র 'গোরা' এর সুরকার ও সঙ্গীত পরিচালক ছিলেন। উপন্যাস. নজরুল ছিলেন। কাজী নজরুল ইসলামের বিখ্যাত কবিতা: নজরুল তার বিখ্যাত কবিতা 'বিদ্রোহী' লিখেছিলেন মাত্র বাইশ বছর বয়সে। এই কবিতা লিখে কাজী নজরুল ইসলাম 'বিদ্রোহী কবি' হিসেবে খ্যাতি লাভ করেন। দেশে ব্যাপক সাড়া পড়েছিল। এই একটি কবিতার জন্যই নজরুল চিরকাল পরিচিত। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ তাঁকে স্বাগত জানিয়ে আশীর্বাদ করেন। তার পরের ইতিহাস বিজয়ের ইতিহাস, গৌরবের ইতিহাস, অমরত্বের ইতিহাস। ১৯২৩ সালের ১৬ জানুয়ারি ধূমকেতু পত্রিকায় ‘মে বুখাহু’ শিরোনামে প্রবন্ধ প্রকাশিত হওয়ার পর নজরুলকে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। 1923 সালের অক্টোবরে নজরুলের বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ অগ্নিবীণা প্রকাশিত হয়।

কাজী নজরুল ইসলামের মৃত্যু:-

কাজী নজরুল ইসলাম 1942 সালের 8 জুলাই থেকে দুরারোগ্য বধির ও মূক রোগে আক্রান্ত হন। বহু বছর মূক ও বধির থাকার পর চির বিদ্রোহী কাজী নজরুল ইসলাম 29 আগস্ট, 1976 তারিখে ঢাকায় ইন্তেকাল করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মসজিদের পাশে জাতীয় মর্যাদায় তাকে সমাহিত করা হয়।

What's Your Reaction?

Like Like 0
Dislike Dislike 0
Love Love 0
Funny Funny 0
Angry Angry 0
Sad Sad 0
Wow Wow 0