ভিভিএস লক্ষ্মণ এর জীবনী | Biography Of VVS Laxman

ভিভিএস লক্ষ্মণ এর জীবনী | Biography Of VVS Laxman

May 29, 2025 - 00:37
Jun 20, 2025 - 18:04
 0  0
ভিভিএস লক্ষ্মণ  এর জীবনী | Biography Of VVS Laxman

ব্যক্তিগত তথ্য

জন্ম

১ নভেম্বর ১৯৭৪ (বয়স ৫০)
হায়দ্রাবাদ, তেলেঙ্গানা, ভারত

ডাকনাম

ভিভিএস, Very Very Special

ব্যাটিংয়ের ধরন

ডান হাতি

বোলিংয়ের ধরন

ডান হাতি অফ স্পিন

ভাঙ্গিপুরাপ্পু বেংকাট সাই লক্ষ্মণ (তেলুগু: వి.వి.యెస్.లక్ష్మణ్, pronunciation; জন্ম: ১ নভেম্বর ১৯৭৪) ভি.ভি.এস. লক্ষ্মণ নামেই বেশি পরিচিত যিনি একজন ভারতীয় ক্রিকেটার এবং বর্তমানে একজন ক্রিকেট ভাষ্যকার। তিনি ডান হাতি মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান এবং ডান হাতি অনিয়মিত অফ-স্পীন বোলার।

তাঁর দুর্দান্ত স্ট্রোকপ্লে আর টেল-এন্ডার(আট থেকে এগারো নম্বরে অবস্থানকারী ব্যাটসম্যান) ব্যাটসম্যানদের সাথে বড় ইনিংস খেলার ক্ষমতা এবং অসংখ্য হেরে যাওয়া ম্যাচ জয় করার নজির তাঁকে ক্রিকেট কিংবদন্তিদের মধ্যে একটি অনন্য মর্যাদায় দিয়েছে। তিনি তাঁর সময়ের সেরা দল অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে, তাঁর অনেকগুলি দুর্দান্ত ক্রীড়াকৌশল প্রদর্শন নথি রয়েছে যেমন ২০০১-এর ইডেন গার্ডেনে তাঁদের বিপক্ষে ২৮১ করা তাঁর রান সর্বকালের সেরা টেস্ট ইনিংস হিসাবে বিবেচিত হয়। পরবর্তীকালে, তিনি অনেক পুরস্কারে পুরস্কৃত হয়েছেন, যেমন ২০০১ সালে 'অর্জুন' পুরস্কার, ২০১১ সালে 'পদ্মশ্রী', ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার। তিনি এমন কয়েকজন খেলোয়াড়ের মধ্যে পড়েন যিনি ক্রিকেট বিশ্বকাপে কখনও না খেলে ১০০ টেস্ট খেলেছেন। উইকেটের মধ্যে তুলনামূলকভাবে ধীরে দৌড়নো সত্ত্বেও তিনি তাঁর মাস্টার স্ট্রোক খেলার ক্ষমতায় জাতীয় দলে জায়গা পাওয়ার জন্য নিজেকে বারবার প্রমাণ করেছেন। তিনি প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে হায়দারবাদের প্রতিনিধিত্ব করেন। তিনি ইংলিশ কাউন্টি ক্রিকেটেও ল্যাঙ্কাশায়ারের পক্ষে খেলেন। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের উদ্বোধনী মরসুমে তিনি ডেকান চার্জার্স দলের

ব্যক্তিগত জীবন

১ নভেম্বর, ১৯৭৪ তারিখে নামকরা চিকিৎসক ডাঃ শান্তরাম এবং বিজয়ওয়াদার সত্যভামা দম্পতির সন্তান ভি.ভি.এস. লক্ষ্মণ অন্ধ্র প্রদেশের হায়দরাবাদে জন্মগ্রহণ করেন।লক্ষ্মণ হলেন ভারতের দ্বিতীয় রাষ্ট্রপতি ড।সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণ নাতির পুত্রের ভাইপো। লক্ষ্মণ হায়দরাবাদের লিটল ফ্লাওয়ার হাই স্কুলে পড়াশোনা করেছেন। স্নাতকোত্তর পড়াশোনার জন্য তিনি মেডিকেল স্কুলে যোগদান করলেও তিনি ক্রিকেটকে ক্যারিয়ার হিসাবে বেছে নিয়েছিলেন। ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০০৪ তারিখে কম্পিউটার অ্যাপ্লিকেশন স্নাতক, গুন্টুর জি আর শায়লাজকে বিয়ে করেছিলেন। তাঁদের দুটি সন্তান - পুত্র সর্বজিৎ এবং মেয়ে অচিন্ত্যা।

অধিনায়কত্ব করেন। পরে তিনি কোচি টাস্কারস দলের হয়ে খেলেছিলেন। তিনি ক্রিকেট কোচিংয়ের সংস্থা 'আইএমডিআই - আই এম দ্যা আই' সাথে যুক্ত আছেন। ২০০২ সালে, উইজডেনের বর্ষসেরা পাঁচ ক্রিকেটারের মধ্যে তিনি একজন ছিলেন। ২০১২ সালে, লক্ষ্মণ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছিলেন।

ইডেনের বাইশ গজে যেবার অতিমানব হয়ে উঠেছিলেন ভিভিএস লক্ষ্মণ

অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দল ২০০১ সালে যেবার ভারত সফরে এলো, তখন তারা টানা ১৫টি টেস্ট জিতে রীতিমতো আকাশে উড়ছে। ব্যাটিংয়ে স্টিভ ওয়াহ্, ম্যাথু হেইডেন, রিকি পন্টিং আর বোলিংয়ে গ্লেন ম্যাকগ্রা-শেন ওয়ার্নদের নিয়ে গড়া দল বলতে গেলে একরকম ‘অজেয়’ হয়ে উঠেছিল৷ ভারত সফর তাই তাদের জয়ের তালিকা আরও দীর্ঘায়িত করবে, এই প্রত্যাশা নিয়েই সবাই টিভির সামনে বসেছিলেন।

টেস্ট ক্রিকেট অন্যান্য ফরম্যাটের ক্রিকেটের মতো সহজ নয়। এখানে পনের সেশনের মধ্যে কমপক্ষে দশ সেশনেই আপনার দলের ট্রাম্পকার্ডগুলোকে জ্বলে উঠতে হবে। একটা ভুল ডিসিশনে আপনার হাত থেকে ম্যাচ বের হয়ে যাবে। ব্যাটসম্যানদের এখানে ঘন্টার পর ঘন্টা ব্যাটিং করে যেতে হয়, পার্টনারশিপ গড়তে হয়। একটি ভুল শট ব্যাটসম্যানের সুন্দরভাবে শুরু করা ইনিংসের ইতি টেনে দিতে পারে। বোলারদের ওভারের পর ওভার ব্যাটসম্যানের মতি বুঝে বল করে যেতে হয়।

মোট কথা, টেস্ট ক্রিকেটে যেরকম পেশাদারিত্ব, ধৈর্য্য আর দক্ষতার পরিচয় দিতে হয়, আর কোনো ফরম্যাটেই সেভাবে দিতে হয় না। তাই টেস্ট ক্রিকেট এখনও ক্রিকেটের সবচেয়ে অভিজাত ফরম্যাট হিসেবে স্বীকৃত।

প্রথম টেস্ট ম্যাচে ভারতকে নিয়ে ছেলেখেলা করে অস্ট্রেলিয়া। প্রথম টেস্টের আগে সর্বকালের সেরা ব্যাটসম্যান ডন ব্র্যাডম্যানের মৃত্যুতে ক্রিকেট বিশ্বের সবাই শোকাহত ছিল। এক মিনিটের নীরবতার পর টসে জিতে শুরুতে ভারতকে ব্যাটিংয়ে আমন্ত্রণ জানান অজি ক্যাপ্টেন স্টিভ ওয়াহ্। মুম্বাইয়ের পিচে অস্ট্রেলিয়ার বোলাররা সুবিধা পাবে, এই ভেবেই ভারতকে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়েছিলেন তিনি।

অধিনায়কের ভরসার যোগ্য প্রতিদান দিয়েছিলেন শেন ওয়ার্ন-গ্লেন ম্যাকগ্রা। তাদের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা। ওয়ার্ন আর গ্লেন ম্যাকগ্রার বোলিং তোপে প্রথম ইনিংসে মাত্র ১৭৬ রানেই গুটিয়ে গিয়েছিল ভারত। এই দুই বোলার একত্রে নিয়েছিলেন সাত উইকেট।

অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ইনিংসে গিলক্রিস্ট আর হেইডেনের সেঞ্চুরিতে ৩৪৯ রানের দাঁড় করায় অস্ট্রেলিয়া। ১৭৩ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নামে ভারত। রাহুল দ্রাবিড়, শচীন টেন্ডুুলকার, সদাগোপান রমেশরা অজি বোলারদের সামনে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা চালিয়েছিলেন। কিন্তু শেষরক্ষা আর হয়নি। মাত্র ২১৯ রানেই শেষ হয় ভারতের দ্বিতীয় ইনিংস।

প্রথম টেস্ট জিততে অস্ট্রেলিয়ার সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় মাত্র ৪৭ রান। দুই ওপেনার ম্যাথু হেইডেন আর মাইকেল স্ল্যাটার মিলে সাত ওভারেই লক্ষ্যে পৌছে যান। ১–০ তে টেস্ট সিরিজে এগিয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। টানা ১৬ টেস্ট জয়ের ধারা অব্যাহত থাকে।

কলকাতার ইডেন গার্ডেনের দ্বিতীয় টেস্ট নিয়ে ভারতের ক্রিকেটপ্রেমীদের খুব একটা প্রত্যাশা ছিল না। দুরন্ত ফর্মে থাকা অজি ক্রিকেটারদের সামনে আরেকবার নাস্তানাবুদ হতে যাচ্ছে ভারতীয় ক্রিকেট দল – সবাই এমনটাই ধরে নিয়েছিল।

কিন্তু ভাগ্যদেবতা অন্য কিছু ঠিক করে রেখেছিলেন ভারতীয় ক্রিকেটের জন্য।

ইডেন গার্ডেনে এবারও টসে জিতলেন অজি ক্যাপ্টেন স্টিভ ওয়াহ্। সোজা ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিলেন। ক্যাপ্টেন স্টিভ ওয়াহ্’র ১১০ এবং ম্যাথু হেইডেনের ৯৭ রানের উপর ভর করে প্রথম ইনিংসে ৪৪৫ রানের বিশাল স্কোর গড়ে অজিরা। ভারতীয় বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে উজ্জ্বল ছিলেন হরভজন সিং। ১২৩ রানে সাত উইকেট নিয়েছিলেন সেই ইনিংসে।

কীর্তি ও সম্মাননা

২০০১ সালে 'অর্জুন' পুরস্কার। ২০০২ সালে, উইজডেনের বর্ষসেরা পুরস্কার। ২০১১ সালে 'পদ্মশ্রী', ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার। একক ওয়ানডে সিরিজে সর্বাধিক সংখ্যক সেঞ্চুরি (৩) গড়ার কয়েকজন ক্রিকেটারের মধ্যে তিনি রয়েছেন। ২০০১ সালে কলকাতায় অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ২৮১ রানের ইনিংসটি উইজডেনের খেলার ইতিহাসে ১০০ টি দুর্দান্ত টেস্ট ইনিংসের তালিকায় ষষ্ঠ স্থানে রাখা হয়েছে। একক ওয়ানডে সিরিজে উইকেটকিপারের ছাড়া সবচেয়ে বেশি ক্যাচ (১২) নেওয়ার রেকর্ড তাঁরই রয়েছে, তিনি এই রেকর্ডটি অ্যালান বর্ডারের সাথে ভাগ করেছেন। তিনি রাহুল দ্রাবিড়ের সাথে টেস্ট ম্যাচের তৃতীয় ইনিংসে সর্বোচ্চ পার্টনারশিপ (৩৬৬ রান) করেন, যা কোনও এক উইকেটের পার্টনারশিপের বিশ্ব রেকর্ড। লক্ষ্মণ একটি টেস্ট ম্যাচের একক অধিবেশনে ১০০ রান সংগ্রহ করা ছয় ভারতীয় টেস্ট খেলোয়াড়ের মধ্যে একজন। তিনি দ্বিতীয় ভারতীয় খেলোয়াড় যিনি একই মাঠে ১০০০ বা তারও বেশি রান করেছেন। তিনি ইডেন গার্ডেন ১১০.৬৩ গড়ে মোট ১২১৭ রান করেছিলেন। তিনি একমাত্র ভারতীয় খেলোয়াড় যিনি একই মাঠে ১০০ এর বেশি গড়ে ১০০০ রান করেছেন। একাধিক বার টেস্টের উভয় ইনিংসে অপরাজিত ৫০ করার রেকর্ড মাত্র ৩ জন আন্তর্জাতিক খেলোয়াড়ের মধ্যে তিনি একমাত্র ভারতীয় খেলোয়াড়, অন্যরা শিবনারায়ণ চন্দরপল এবং স্টিভ স্মিথ। ৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫, নিউ দিল্লির টেরি বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রিতে ভূষিত করেছে।

আন্তর্জাতিক তথ্য

জাতীয় দল

  • ভারত (১৯৯৬–২০১২)

টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ২০৯)

২০ নভেম্বর ১৯৯৬ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা

শেষ টেস্ট

২৪ জানুয়ারি ২০১২ বনাম অস্ট্রেলিয়া

ওডিআই অভিষেক(ক্যাপ ১১২)

৯ এপ্রিল ১৯৯৮ বনাম জিম্বাওয়ে

শেষ ওডিআই

৩ ডিসেম্বর ২০০৬ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা

খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা Test ODI FC LA
ম্যাচ সংখ্যা ১৩৪ ৮৬ ২৬৭ ১৭৩
রানের সংখ্যা ৮,৭৮১ ২,৩৩৮ ১৯,৭৩০ ৫,০৭৮
ব্যাটিং গড় ৪৫.৫ ৩০.৭৬ ৫১.৬৪ ৩৪.৫৪
১০০/৫০ ১৭/৫৬ ৬/১০ ৫৫/৯৮ ৯/২৮
সর্বোচ্চ রান ২৮১ ১৩১ ৩৫৩ ১৫৩
বল করেছে ৩২৪ ৪২ ১,৮৩৫ ৬৯৮
উইকেট ২২
বোলিং গড় ৬৩.০০ ৩৪.২৭ ৬৮.৫০
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ১/২ ৩/১১ ২/৪২
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ১৩৫/– ৩৯/– ২৭৭/১ ৭৪/–
উৎস: ESPNcricinfo, 30 January 2012

sourse:archive.roar.media: wikipedia...

What's Your Reaction?

Like Like 0
Dislike Dislike 0
Love Love 0
Funny Funny 0
Angry Angry 0
Sad Sad 0
Wow Wow 0