জহির আব্বাস জীবনী | Biography Of Zaheer Abbas
জহির আব্বাস জীবনী | Biography Of Zaheer Abbas

ব্যক্তিগত তথ্য | |
---|---|
পূর্ণ নাম |
সৈয়দ জহির আব্বাস কিরমানী
|
জন্ম | ২৪ জুলাই ১৯৪৭ শিয়ালকোট, পাঞ্জাব, ব্রিটিশ ভারত (বর্তমানে পাকিস্তান) |
ব্যাটিংয়ের ধরন |
ডানহাতি ব্যাটসম্যান |
বোলিংয়ের ধরন |
ডানহাতি অফ ব্রেক |
ভূমিকা |
ব্যাটসম্যান, অধিনায়ক, প্রশাসক |
সৈয়দ জহির আব্বাস কিরমানী (উর্দু: سید ظہیر عباس کرمانی; জন্ম: ২৪ জুলাই ১৯৪৭) তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের শিয়ালকোটে জন্মগ্রহণকারী পাকিস্তানের সাবেক ও বিখ্যাত আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা ও ক্রিকেট সংগঠক। তবে, তিনি জহির আব্বাস নামেই সর্বাধিক পরিচিত ব্যক্তিত্ব। তাকে পাকিস্তানের সবচেয়ে বিখ্যাত ব্যাটসম্যানরূপে গণ্য করা হয়। সাবেক অস্ট্রেলীয় ক্রিকেট ব্যক্তিত্ব স্যার ডোনাল্ড ব্র্যাডম্যানের সাথে তুলনান্তে তিনি এশিয়ার ব্র্যাডম্যানরূপে বৈশ্বিকভাবে পরিচিতি পেয়েছেন।
খেলার মাঠে তিনি চশমা পরিধান করতেন, যা খুব কমসংখ্যক পেশাদার ক্রিকেটারদের মাঝে দেখা যায়। ১৯৮১ ও ১৯৮৪ সালে দুই মেয়াদে জাতীয় দলের অধিনায়কত্ব করেন। বর্তমানে তিনি আইসিসি’র সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।
খেলোয়াড়ী জীবন
২৪ অক্টোবর, ১৯৬৯ তারিখে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। নিজস্ব দ্বিতীয় টেস্টে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ২৭৪ রান করেন যা অদ্যাবধি পাকিস্তানীদের পক্ষে ৫ম সেরা রানের রেকর্ড। সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে তিনি চারটি দ্বি-শতক রান করেন। সর্বশেষটি করেন ১৯৮৩ সালে ভারতের বিপক্ষে। ধারাবাহিকভাবে টেস্টে তিনটি শতকসহ প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে একশত সেঞ্চুরি করেছেন আব্বাস। টেস্ট ক্রিকেটসহ প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে মাত্র দ্বিতীয় ব্যাটসম্যানরূপে জিওফ্রে বয়কটের সাথে সেঞ্চুরিতে ভাগাভাগি করেন।
১৯৮২/১৯৮৩ মৌসুমে একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ইতিহাসে প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে ধারাবাহিকভাবে তিনটি শতক করে বিশেষ ক্রীড়া নৈপুণ্য প্রদর্শন করেছিলেন তিনি।
ক্রিকেট প্রশাসন
১৯৮৫ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অঙ্গন থেকে অবসর গ্রহণ করেন। এরপর তিনি একটি টেস্টে ও তিনটি ওডিআইয়ে ম্যাচ রেফারীর দায়িত্ব পালন করেন।
২৫ জুন, ২০১৫ তারিখে তাঁকে আইসিসি’র ১২শ সভাপতি হিসেবে মনোনীত করা হয়। তিনি এক বছরের জন্য এ দায়িত্ব পালন করবেন। বার্বাডোসে অনুষ্ঠিত আইসিসি’র বার্ষিক সম্মেলনের তৃতীয় দিনে তাঁকে এ পদে মনোনয়ন দেয়া হয়। এরপূর্বে পিসিবি কর্তৃপক্ষ তাঁকে মনোনয়নের জন্য আবেদন করে। বর্তমান চেয়ারম্যান এন শ্রীনিবাসন তার এ মনোনয়নকে স্বাগতঃ জানান ও তাঁকে ক্রিকেট খেলার ‘সমৃদ্ধশালী দূত’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন। আইসিসি’র সভাপতি পদে পিসিবি’র চেয়ারম্যান হিসেবে নজম শেঠি তার প্রার্থীতা প্রত্যাহার করলে এ পদের জন্য আব্বাসকে মনোনয়ন দেয়া হয়। পিসিবি’র চেয়ারম্যান পদে থাকাকালীন শেঠি’র অধীনে প্রধান পরামর্শকের দায়িত্ব পালন করেন আব্বাস। গত বছরের সেপ্টেম্বরে পিসিবিকে সাবেক ক্রিকেটার মনোনয়নের জন্য বলা হলেও শেঠি’র নাম চলে আসে। ১ জুলাই থেকে শেঠি’র দায়িত্ব পালনের কথা থাকলেও এপ্রিল, ২০১৫ সালে মোস্তফা কামালের পদত্যাগের কারণে দুই মাসের জন্য অস্থায়ীভাবে এ দায়িত্ব পালন করছিলেন। উল্লেখ্য, আইসিসি’র সভাপতির পদটি আনুষ্ঠানিকতাপূর্ণ ও দূত পর্যায়ের সমতুল্য।
জহির, আব বাস…
তখন ১৯৮৯ সাল। পাকিস্তান সফরে গেছে ভারতীয় দল। তখন, মোহাম্মদ আজহারউদ্দীনের ফর্মটা একটু নড়বড়ে।
একদিন করাচিতে চলছিল অনুশীলন। বাইরে থেকে দাঁড়িয়ে কাঁচা-পাকা চুলের সদ্য সাবেক হওয়া এক ভদ্রলোক অনুশীলন দেখছেন। ক’দিন আগেও তিনি চশমা পরে ব্যাট হাতে বাইশ গজে অসংখ্য বোলারের রাতের ঘুম হারাম করেছেন। আজহারউদ্দীনকে দেখে এগিয়ে আসলেন, ব্যাটিংয়ের গ্রিপটা একটু পাল্টে দিলেন। আত্মবিশ্বাসই বদলে গেল আজহারউদ্দীনের।
অনেক পরে এসে আজহারউদ্দীন বলেন, ‘যখন গ্রিপটা বদলে ফেললাম, তখন থেকেই আরো স্বস্তি পেতে শুরু করলাম। আত্মবিশ্বাস বেড়ে গিয়ে সহজাত খেলায় ফিরলাম। ধীরে ধীরে এই ব্যাপারটা আমাকে আরো বেশি আক্রমণাত্মক ক্রিকেটারে পরিণত করল।’
সেই ভদ্রলোকটি হলেন জহির খান। সাবেক এই পাকিস্তানি গ্রেট অবিস্মরণীয় এক ক্রিকেট চরিত্র। সেটা খেলোয়াড় হিসেবে কিংবা খেলোয়াড়ী জীবন ছাড়ার পরও। ১৯৮৫ সালে তিনি মাঠের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানান। ২০১৫ সালে হন আইসিসির সভাপতি। সাবেক ক্রিকেটার হিসেবে আইসিসির শীর্ষপদে এর আগে আসীন হতে পেরেছেন কেবল দু’জন – কলিন কাউড্রে ও ক্লাইপ ওয়ালকট।
একালের ক্রিকেট ভক্তদের কাছে তাঁর নামটা হয়তো খুবই অপরিচিত ঠেকবে। কিংবা অন্যভাবে বললে, তাঁর অর্জনগুলোর ব্যাপারে অনেকেই ওয়াকিবহাল হবেন না।
তাঁদের উদ্দেশ্যে বলা, জহির আব্বাসকে বলা হত দক্ষিণ এশিয়ান ব্র্যাডম্যান। এটা ঠিক কথার কথা নয়, তার রেকর্ডগুলো আক্ষরিক অর্থেই ছিল ব্র্যাডম্যানিয়। ১৬ বছরের ক্যারিয়ারের পুরোটাই ক্লাসিক, স্টাইল আর ফিটনেস ধরে রাখার অনন্য এক নজির।
এশিয়া মহাদেশে এই জহির আব্বাসই একমাত্র ব্যাটসম্যান যার প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ১০০ টি সেঞ্চুরি আছে। একই প্রথম শ্রেণির ম্যাচে তিনি দু’টি সেঞ্চুরি করেছেন, এমন ঘটনা ঘটেছে ৮ বার।
শততম প্রথম শ্রেণির সেঞ্চুরির মাইলফলক ছুঁয়েছেন, এমন ব্যাটসম্যান ক্রিকেটের ইতিহাসে আছেন ২৫ জন। তারপরও, আলাদা জহির আব্বাস। প্রথম শ্রেণিতে ১০৮ টি সেঞ্চুরির মালিক আব্বাস ইতিহাসের একমাত্র ব্যাটসম্যান যিনি এই ফরম্যাটে চারবার একই ম্যাচে সেঞ্চুরি ও ডাবল সেঞ্চুরি পেয়েছেন। আর প্রতিটি ইনিংসেই ছিলেন অপরাজিত।
এটুকুতেই বোঝা যায়, সাদা পোশাকে তিনি কি প্রকাণ্ড একটা চরিত্র ছিলেন!
কিংবদন্তি পাকিস্তানি ক্রিকেটার জহির আব্বাস আইসিইউতে
সত্তর-আশির দশকে পাকিস্তানের অনেক সাফল্যের নায়ক জহির আব্বাস করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসা নিচ্ছেন। ৭৪ বছর পেরুনো এই সাবেক ডানহাতি ব্যাটারকে লন্ডনের একটি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
পাকিস্তানের গণমাধ্যম জিও নিউজ জানায়, দুবাই থেকে লন্ডন যাওয়ার পথে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন জহির। তার কিডনির পুরনো সমস্যাও দেখা দেয়। এছাড়া তিনি নিউমোনিয়াতেও আক্রান্ত হয়েছেন।
চিকিৎসকের বরতে গণমাধ্যমটি জানায়, তাকে এখন ডায়ালাইসিস করা হচ্ছে। কেউই এখন সাক্ষাতের সুযোগ পাচ্ছেন না।
১৯৬৯ থেকে ১৯৮৫ পর্যন্ত পাকিস্তানের হয়ে টেস্ট ও ওয়ানডে ক্রিকেট মাতান জহির। টানা রান করায় খেলোয়াড়ি জীবনে তখনকার সময়ে তাকে 'এশিয়ান ব্র্যাডম্যান' নামে ডাকা হতো।
আইসিসির হল অব ফেমে জায়গা পাওয়া এই ক্রিকেটারের অসুস্থতার খবর ছড়িয়ে পড়লে বিভিন্ন ক্রিকেটাররা টুইট করে সুস্থতা কামনা করেছেন।
৭৮ টেস্টের ক্যারিয়ারে ৪৪.৭৯ গড়ে, ১২ সেঞ্চুরিতে ৫০৬২ রান করেছেন জহির। ৬২ ওয়ানডে খেলে ৪৭.৬২ গড়ে ৭ সেঞ্চুরিতে ২৫৬২ রান আছে তার। প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ার বেশ সমৃদ্ধ জহিরের। খেলেছেন ৪৫৯ ম্যাচ। ১০৮ সেঞ্চুরিতে রান করেছেন ৩৪ হাজার ৮৪৩।
সম্মাননা
ভারতের জীবন্ত কিংবদন্তি ও সাবেক টেস্ট অধিনায়ক সুনীল গাভাস্কার একসময় ধারাভাষ্যে বলেছিলেন যে, ভারতীয় খেলোয়াড়গণ প্রায়শঃই বলে থাকেন যে, 'জহির, জহির আব-বাস করো' যার অর্থ হচ্ছে 'জহির, এখন বন্ধ করো'। হিন্দী ও উর্দু ভাষায় আব্বাস নামকে ’স্বাধীনভাবে রান করার’ জন্য উৎসাহিত করা হয়। অদ্যাবধি তিনি আইসিসি প্লেয়ার র্যাঙ্কিং প্রথায় একদিনের আন্তর্জাতিকের সর্বকালের শ্রেষ্ঠ তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে অবস্থান করছেন।
১৯৭২ সালে উইজডেন ক্রিকেটার্স অ্যালমেনাক প্রবর্তিত বর্ষসেরা ক্রিকেটাররূপে নির্বাচিত হন জহির আব্বাস। এছাড়াও, ১৯৮৬ সালে ক্রীড়াক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রাখায় প্রাইড অফ পারফরম্যান্স প্রাপক হন তিনি।
আন্তর্জাতিক তথ্য | |
---|---|
জাতীয় দল |
|
টেস্ট অভিষেক (ক্যাপ ৬৩) |
২৪ অক্টোবর ১৯৬৯ বনাম নিউজিল্যান্ড |
শেষ টেস্ট | ২৭ অক্টোবর ১৯৮৫ বনাম শ্রীলঙ্কা |
ওডিআই অভিষেক (ক্যাপ ১৩) |
৩১ আগস্ট ১৯৭৪ বনাম ইংল্যান্ড |
শেষ ওডিআই | ৩ নভেম্বর ১৯৮৫ বনাম শ্রীলঙ্কা |
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
|
sourse:.thedailystar: khela71: wikipedia...
What's Your Reaction?






