জ্যাক কিলবি এর জীবনী | Biography of Jack Kilby

জ্যাক কিলবি এর জীবনী | Biography of Jack Kilby

May 18, 2025 - 17:12
May 25, 2025 - 23:41
 0  1
জ্যাক কিলবি  এর জীবনী | Biography of Jack Kilby

জ্যাক কিলবি: মাইক্রোচিপের জনক

জন্ম

৮ নভেম্বর ১৯২৩
জেফারসন সিটি, মিসৌরি, U.S.

মৃত্যু

২০ জুন ২০০৫ (বয়স ৮১)
ডালাস, টেক্সাস, U.S.

জাতীয়তা

আমেরিকা

মাতৃশিক্ষায়তন

ইউনিভার্সিটি অফ ইলিনয় অ্যাট আর্বানা-শ্যাম্পেইন University of Wisconsin–Milwaukee

পুরস্কার

পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার ২০০০
ইনস্টিটিউট অফ ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ার্স মেডেল অব অনার, ১৯৮৬

বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন

কর্মক্ষেত্র

পদার্থবিজ্ঞান, তড়িৎ প্রকৌশল

প্রতিষ্ঠানসমূহ

টেক্সাস ইনস্ট্রুমেন্ট

 

জ্যাক সেন্ট ক্লেয়ার কিলবি 

 (নভেম্বর ৮, ১৯২৩ - জুন ২০, ২০০৫) বিখ্যাত মার্কিন তড়িৎ প্রকৌশলী। তিনি ২০০০ সালে পদার্থবিজ্ঞানে যৌথভাবে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।[] কিলবি সমন্বিত বর্তনীর মূল উদ্ভাবকদের একজন। তিনি ১৯৫৮ সালে টেক্সাস ইনস্ট্রুমেন্ট্‌স-এ কাজ করার সময় প্রথম এই বর্তনী তৈরি করেন। একটিমাত্র সিলিকনের অণুচিলতে বা মাইক্রোচিপের উপরে স্থাপিত পরস্পরের সাথে সংযুক্ত বহুসংখ্যক ট্রানজিস্টরের ব্যবস্থাকে সামগ্রিকভাবে "সমন্বিত বর্তনী" বলা হয়।

জীবনী

কিলবি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মিসৌরি অঙ্গরাজ্যের জেফারসন সিটি শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তবে তিনি জীবনের অধিকাংশ সময় কাটান কানসাসের গ্রেট বেন্ড শহরে। তিনি গ্রেট বেন্ড হাই স্কুল বিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন। এই শহরের প্রবেশপথে স্থাপিত একটি ফলক সেখানে তার অবস্থানের স্মৃতি বহন করে। অন্য অনেকের মত ছোটবেলায় কিলবির ইলেকট্রনিকসে হাতেখড়ি ঘটে শৌখিন বেতার নিয়ে কাজ করতে গিয়ে। তার বাবা একজন তড়িৎ প্রকৌশলী ছিলেন।

 তিনি ক্যানসাস পাওয়ার কোম্পানি অফ গ্রেট বেন্ড নামক বিদ্যুৎ সরবরাহ সংস্থার পরিচালক ছিলেন। কিলবি যখন উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র, তখন বরফ ঝড়ে বিদ্যুৎ সেবাব্যবস্থাটি ভেঙে পড়ে। তখন যোগাযোগ বজায় রাখার জন্য যেসব শৌখিন বেতারচালকদেরকে ব্যবহার করা হয়; তাদের মধ্যে কিলবি-ও ছিলেন একজন। এরপর ২য় বিশ্বযুদ্ধের সময় কিলবি মার্কিন সেনাবাহিনীতে বিদ্যুৎ-মিস্ত্রী হিসেবে কাজ করেন।

যুদ্ধের পরে কিলবি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অফ ইলিনয় অ্যাট আর্বানা-শ্যাম্পেইন বিশ্ববিদ্যালয়ে তড়িৎ প্রকৌশল বিষয়ে পড়েন এবং ১৯৪৭ সালে ব্যাচেলর অফ সায়েন্স বা বিজ্ঞানে স্নাতক সনদ লাভ করেন। স্নাতক হবার পর কিলবি উইসকনসিন অঙ্গরাজ্যের মিলওয়াকি শহরে অবস্থিত গ্লোব ইউনিয়ন ইনকর্পোরেটেড ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সেন্ট্রাল্যাব শাখাতে চাকুরি নেন। সেখানে তার কাজ ছিল অতিক্ষুদ্র মাপের ইলেকট্রনিক বর্তনী নকশা ও নির্মাণ করা।

কাজ করার পাশাপাশি কিলবি ইউনিভার্সিটি অফ উইসকনসিন বিশ্ববিদ্যালয়ের মিলওয়াকি শাখাতে স্নাতকোত্তর পর্যায়ে পড়াশোনা অব্যাহত রাখেন এবং ১৯৫০ সালে স্নাতকোত্তর সনদ লাভ করেন। ১৯৪৭ সালে বেল ল্যাবরেটরিস কোম্পানিতে ট্রানজিস্টর উদ্ভাবন করা হয়। ১৯৫২ সালে সেন্ট্রাল্যাব কিলবিকে নিউ জার্সি অঙ্গরাজ্যের মারি হিল শহরে বেল ল্যাবসের প্রধান কার্যালয়ে ট্রানজিস্টর সম্পর্কে জ্ঞানার্জন করতে পাঠায়, কেননা সেন্ট্রাল্যাব সেখান থেকে ট্রানজিস্টর উৎপাদন করার অনুমতিপত্র ক্রয় করেছিল।

সেন্ট্রাল্যাবে ফেরত এসে কিলবি শ্রুতি সহায়ক যন্ত্রের জন্য প্রয়োজনীয় জার্মেনিয়াম-ভিত্তিক ট্রানজিস্টরের উপর কাজ করা শুরু করেন। কিন্তু তিনি বুঝতে পারেন যে অতিক্ষুদ্রাকার বর্তনী নির্মাণের জন্য তার আরও বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সম্পদের প্রয়োজন। ১৯৫৮ সালে তিনি টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের ডালাস শহরে অবস্থিত ও বেল ল্যাবসের আরেক অনুমতিপত্রবাহক টেক্সাস ইনসট্রুমেন্টস ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে যোগদান করেন। টেক্সাস ইনসট্রুমেন্টসে আসার পরে স্বল্প সময়ের মধ্যেই কিলবির মাথায় এক অভিনব চিন্তা আসে, যাকে "একখণ্ড-ভিত্তিক চিন্তা" বলা হয়। কিলবি বুঝতে পারেন যে বর্তনীর আলাদা আলাদা উপাদানগুলিকে সংযুক্ত না করে ইলেকট্রনিক উপাদানের সম্পূর্ণ একটি সমবায়কে একটি মাত্র যন্ত্র হিসেবে শুধুমাত্র একটি অর্ধপরিবাহী পদার্থ ব্যবহার করে প্রস্তুত করা সম্ভব।

অর্ধপরিবাহী মাতৃকাতে বিভিন্ন ভেজাল পদার্থ স্থাপন করে বর্তনীর বিভিন্ন ইলেকট্রনিক উপাদানগুলিকে (যেমন রোধক, ধারক, ট্রানজিস্টর, ইত্যাদি) নকল করা যায়। শিঘ্রই কিলবি ডাকটিকিটের সমান আকারের একটি কর্মক্ষম প্রাথমিক নমুনা নির্মাণ করতে সক্ষম হন, যেটি জার্মেনিয়াম নামক অর্ধপরিবাহী দিয়ে তৈরি হয়েছিল। ১৯৫৯ সালে টেক্সাস ইনসট্রুমেন্টস কিলবির নকশাকৃত বিশ্বের ইতিহাসের সর্বপ্রথম সমন্বিত বর্তনীর তথা অতিক্ষুদ্রাকৃতির ইলেকট্রনিক বর্তনীর জন্য একটি পেটেন্ট বা কৃতিস্বত্ব আবেদনপত্র জমা দেয়। এর চার মাস পরে ফেয়ারচাইল্ড সেমিকন্ডাক্টর কর্পোরেশনের বিজ্ঞানী রবার্ট নইস-ও প্রায় একই রকম একটি যন্ত্রাংশের জন্য কৃতিস্বত্বের আবেদনপত্র জমা দেন, যদিও সেটির নির্মাণ প্রক্রিয়াটি ভিন্ন ছিল।

দশ বছর পরে মার্কিন আদালত কিলবিকে সমন্বিত বর্তনীর ধারণার উদ্ভাবক হিসেবে স্বীকৃতি দেয় এবং নইসকে তার সমতলীয় উৎপাদন প্রক্রিয়ার জন্য কৃতিস্বত্ব প্রদান করে। এই প্রক্রিয়াতে সিলিকনের চিলতের ভেতরে সরাসরি বাষ্পীভবনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ পরিবাহী ধাতব পথ (অর্থাৎ এক ধরনের বৈদ্যুতিক তার) বসানো যায়। কিলবি এর পরে আরও ৫০টিরও বেশি কৃতিস্বত্ব অর্জন করেন, যেগুলি বেশিরভাগই ছিল সমন্বিত বর্তনী নকশাকরণ ও উৎপাদন প্রক্রিয়ার উন্নতিসাধন সম্পর্কিত। ১৯৬৭ সালে কিলবি বিশ্বের সর্বপ্রথম সমন্বিত বর্তনীভিত্তিক ইলেকট্রনিক গণনাযন্ত্র (ক্যালকুলেটর) উদ্ভাবন করেন, যার নাম ছিল পকেটট্রনিক।

এই উদ্ভাবনের জন্য তিনি এবং টেক্সাস ইনসট্রুমেন্টস যে কৃতিস্বত্ব সনদটি লাভ করেন, সেটি বর্তমানের সমস্ত পকেট ক্যালকুলেটরের ভেতরের সবচেয়ে মৌলিক বর্তনীটির নকশার সাথে সম্পর্কিত। শুরুর দিকে পকেটট্রনিক ক্যালকুলেটর যন্ত্রে কয়েক ডজন সমন্বিত বর্তনীর প্রয়োজন ছিল, ফলে এটি ছিল জটিল। আর ক্রেতাদের জন্য উৎপাদন করার প্রক্রিয়াটিও তাই ব্যয়বহুল ছিল। কিন্তু ১৯৭২ সাল নাগাদ টেক্সাস ইনসট্রুমেন্টস প্রয়োজনীয় সমন্বিত বর্তনীর সংখ্যা ১-এ নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়। তবে কিলবি ১৯৭০ সালেই প্রতিষ্ঠানটি ছেড়ে দেন ও ব্যক্তিগত পর্যায়ে গবেষণা শুরু করেন, বিশেষ করে সৌরশক্তি উৎপাদন বিষয়ে। তবে তিনি অর্ধপরিবাহী বিষয়ে বিশেষজ্ঞ হিসেবে খণ্ডকালীন চাকুরি করতেন।

১৯৭০ সালেই কিলবিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় বিজ্ঞান পদক প্রদান করা হয়। ১৯৮৯ সালে তাকে চার্লস স্টার্ক ড্রেপার পদক এবং ১৯৯০ সালে জাতীয় প্রযুক্তি পদকে ভূষিত করা হয়। ১৯৯৭ সালে টেক্সাস ইনসট্রুমেন্টসের ডালাস শহরস্থিত নতুন গবেষণা ও প্রস্তুতকরণ ভবনটিকে কিলবি'র নামে নামকরণ করা হয়, যার নাম কিলবি সেন্টার। সুইডেমের রাজকীয় অ্যাকাডেমি সাধারণত তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানীদেরকে নোবেল পুরস্কার প্রদান করে থাকলেও ২০০০ সালে এর ব্যত্যয় ঘটিয়ে ব্যবহারিক পদার্থবিজ্ঞানী হিসেবে কিলবিকে অন্য বিজ্ঞানীদের সাথে যৌথভাবে পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার প্রদান করেন।

প্রারম্ভিক জীবন

জ্যাক কিলবি ১৯২৩ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মিসৌরি অঙ্গরাজ্যের জেফারসন সিটিতে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা-মা হুবার্ট এবং ভিনা ফ্রেইট্যাগ কিলবি, উভয়েই ইউনিভার্সিটি অব ইলিনয়েস থেকে ব্যাচেলর অব সায়েন্স ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন। কিলবির বাবা একটি স্থানীয় ইউটিলিটি কোম্পানির ব্যবস্থাপক ছিলেন।

কিলবি কানসাস রাজ্যের গ্রেট বেন্ড শহরে বেড়ে ওঠেন এবং সেখানকার গ্রেট বেন্ড হাই স্কুল থেকে স্নাতক হন। আজও শহরে ঢোকার পথে সাইনবোর্ডে কিলবির স্মৃতি সংরক্ষিত রয়েছে, এবং গ্রেট বেন্ড হাই স্কুলের কমনস এরিয়াকে তার নামানুসারে "দ্য জ্যাক কিলবি কমনস এরিয়া" বলা হয়।

তিনি ইউনিভার্সিটি অব ইলিনয় আরবানা-শ্যাম্পেইন থেকে ব্যাচেলর অব সায়েন্স ডিগ্রি লাভ করেন, যেখানে তিনি অ্যাকেশিয়া ফ্র্যাটারনিটির একজন সম্মানসূচক সদস্য ছিলেন। ১৯৪৭ সালে তিনি ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ডিগ্রি অর্জন করেন। পরবর্তীতে তিনি উইসকনসিন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক্সটেনশন সেন্টার, মিলওয়াকি থেকে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে মাস্টার অব সায়েন্স ডিগ্রি লাভ করেন।

পেশাগত জীবন

জ্যাক কিলবি ইন্টিগ্রেটেড সার্কিট (মাইক্রোচিপ) আবিষ্কারের ক্ষেত্রে মুখ্য ভূমিকা পালন করেন। ১৯৫৮ সালের মাঝামাঝি সময়ে, তিনি টেক্সাস ইন্সট্রুমেন্টস (Texas Instruments বা TI)-এ নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত একজন ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন এবং সে সময় তার গ্রীষ্মকালীন ছুটি নেওয়ার অনুমতি ছিল না।

গ্রীষ্মকালীন সেই সময়ে তিনি "সংখ্যার অত্যাচার" (tyranny of numbers) নামে পরিচিত সার্কিট ডিজাইনের একটি জটিল সমস্যার সমাধান নিয়ে কাজ করছিলেন। তিনি শেষ পর্যন্ত এই সিদ্ধান্তে উপনীত হন যে, সার্কিটের সমস্ত উপাদানকে (যেমন ট্রানজিস্টর, ডায়োড, রেজিস্টর, ক্যাপাসিটর ইত্যাদি) একত্রে একটি একক সেমিকন্ডাক্টর উপাদানে তৈরি করলে সমস্যার সমাধান সম্ভব।

১৯৫৮ সালের ১২ সেপ্টেম্বর তিনি কোম্পানির ম্যানেজমেন্টকে তার কাজের ফলাফল দেখান, যার মধ্যে মার্ক শেফার্ডও উপস্থিত ছিলেন। তিনি একটি জার্মেনিয়ামের টুকরোতে একটি ওসিলোস্কোপ সংযুক্ত করে বোতাম টিপলে ওসিলোস্কোপে একটি ধারাবাহিক সাইন তরঙ্গ প্রদর্শিত হয়—এটি প্রমাণ করে যে তার ইন্টিগ্রেটেড সার্কিট কাজ করছে।

এরপর ১৯৫৯ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রে তিনি “Miniaturized Electronic Circuits” শীর্ষক প্রথম ইন্টিগ্রেটেড সার্কিটের পেটেন্ট আবেদন করেন (পেটেন্ট নম্বর: 3,138,743)। এতে একক সাবস্ট্রেটে একাধিক বৈদ্যুতিক উপাদান যুক্ত ছিল। রবার্ট নয়েসও একই ধরনের সার্কিট স্বতন্ত্রভাবে কিছু মাস পরে তৈরি করেন, তাই দু’জনকেই ইন্টিগ্রেটেড সার্কিটের সহ-আবিষ্কারক হিসেবে গণ্য করা হয়।

জ্যাক কিলবি পরবর্তীতে এই মাইক্রোচিপ প্রযুক্তির সামরিক, শিল্প এবং বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে প্রয়োগের পথ প্রশস্ত করেন। তিনি এমন দল পরিচালনা করেন যারা প্রথম সামরিক সিস্টেম এবং প্রথম কম্পিউটার তৈরি করেন যেখানে ইন্টিগ্রেটেড সার্কিট ব্যবহৃত হয়েছিল। তিনি জেরি মেরিম্যান ও জেমস ভ্যান ট্যাসেলের সঙ্গে মিলে হ্যান্ডহেল্ড ক্যালকুলেটর-ও উদ্ভাবন করেন।

১৯৭০ সালে তিনি TI থেকে ছুটি নিয়ে একজন স্বাধীন উদ্ভাবক হিসেবে কাজ শুরু করেন। তিনি অন্যান্য বিষয়ের পাশাপাশি সূর্যালোক থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে সিলিকন প্রযুক্তির ব্যবহার নিয়ে গবেষণা করেন। ১৯৭৮ থেকে ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত তিনি টেক্সাস এএন্ডএম বিশ্ববিদ্যালয়ে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং-এর ডিস্টিংগুইশড প্রফেসর হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

১৯৮৩ সালে তিনি টেক্সাস ইন্সট্রুমেন্টস থেকে অবসর গ্রহণ করেন।

ঐতিহ্য (Legacy)

জ্যাক কিলবির মূল ইন্টিগ্রেটেড সার্কিটজ্যাক কিলবি ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে ২০০৫ সালের ২০ জুন, ৮১ বছর বয়সে টেক্সাসের ডালাস শহরে মৃত্যুবরণ করেন।২০০৫ সালের ১৪ ডিসেম্বর, টেক্সাস ইন্সট্রুমেন্টস (Texas Instruments) Historic TI Archives নামে একটি সংরক্ষণাগার প্রতিষ্ঠা করে। জ্যাক কিলবির পরিবার তার ব্যক্তিগত পাণ্ডুলিপি ও ছবি সম্বলিত সংগ্রহ সাদার্ন মেথোডিস্ট ইউনিভার্সিটি (SMU)-তে দান করে। এই সংগ্রহ SMU-র DeGolyer Library-তে সংরক্ষিত ও তালিকাভুক্ত করা হয়।

২০০৮ সালে SMU School of Engineering, DeGolyer Library এবং Library of Congress-এর সহযোগিতায়, কিলবির নোবেলজয়ী ইন্টিগ্রেটেড সার্কিট আবিষ্কারের মাধ্যমে ডিজিটাল যুগের ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন উপলক্ষে একটি বছরব্যাপী অনুষ্ঠান আয়োজন করে। এই অনুষ্ঠানে সিম্পোজিয়াম ও প্রদর্শনীর মাধ্যমে দেখানো হয় কিভাবে প্রযুক্তি ও প্রকৌশলীরা আধুনিক বিশ্বকে রূপ দিয়েছেন। কিলবির সম্মানে SMU তাকে অনারারি সায়েন্স ডক্টরেট প্রদান করে এবং তিনি SMU-র সঙ্গে “Kilby Foundation” এর মাধ্যমে দীর্ঘকাল যুক্ত ছিলেন।

পুরস্কার ও সম্মান (Awards and Honors)

  • জ্যাক কিলবির একটি মূর্তি টেক্সাস ইউনিভার্সিটি অ্যাট ডালাস-এর ক্যাম্পাসে, Texas Instruments Plaza-তে স্থাপন করা হয়েছে।

  • IEEE (Institute of Electrical and Electronics Engineers) কিলবির অসাধারণ অবদানের জন্য তাকে বিভিন্ন পুরস্কারে ভূষিত করে:

    • ১৯৬৬ সালে IEEE Fellow নির্বাচিত হন

    • একই বছরে IEEE David Sarnoff Award

    • ১৯৭৮ সালে প্রথম IEEE Cledo Brunetti Award-এর সহ-প্রাপক

    • ১৯৮৪ সালে IEEE Centennial Medal

    • ১৯৮৬ সালে IEEE Medal of Honor

  • Franklin Institute কর্তৃক ১৯৬৬ সালে Stuart Ballantine Medal লাভ করেন।

  • American Society of Mechanical Engineers (ASME) কর্তৃক ১৯৮২ ও ১৯৮৯ সালে Holley Medal লাভ করেন।

  • ১৯৬৭ সালে National Academy of Engineering (NAE) এর সদস্য নির্বাচিত হন এবং ১৯৭৫ সালে NAE-এর Vladimir K. Zworykin Award লাভ করেন।

  • ১৯৭০ সালে American Academy of Achievement কর্তৃক Golden Plate Award প্রদান করা হয়।

  • ১৯৮৯ সালে NAE-এর প্রথম Charles Stark Draper Prize-এর সহ-প্রাপক হন।

  • ১৯৮০ সালে তার সম্মানে Kilby Award Foundation প্রতিষ্ঠিত হয়।

  • ১৯৯৫ সালে IEEE তার নামে Jack S. Kilby Signal Processing Medal প্রবর্তন করে।

  • ২০০১ সালে তিনি American Philosophical Society-তে নির্বাচিত হন।

  • ১৯৯৭ সালে তিনি Stibitz-Wilson Award লাভ করেন, যা প্রদান করে American Computer & Robotics Museum।

  • তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত সম্মান লাভ করেন:

    • National Medal of Science – ১৯৬৯

    • National Medal of Technology – ১৯৯০

  • ১৯৮২ সালে National Inventors Hall of Fame-এ তার নাম অন্তর্ভুক্ত হয়।

  • ১৯৯৩ সালে Inamori Foundation কর্তৃক Kyoto Prize লাভ করেন।

  • ১৯৯৯ সালে Washington Award এবং Eta Kappa Nu Vladimir Karapetoff Award লাভ করেন।

  • ২০০০ সালে কিলবি পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন তার যুগান্তকারী আবিষ্কারের জন্য এবং তার ভাষণে শিল্প ও প্রযুক্তির ওপর নিজের দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করেন।

  • তিনি বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নয়টি সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেন, এর মধ্যে রয়েছে:

    • Southern Methodist University (SMU)

    • University of Miami

    • University of Illinois

    • University of Wisconsin–Madison

    • Texas A&M University

    • Yale University

    • Rochester Institute of Technology

  • ১৯৯৮ সালে National Chiao Tung University (NCTU), Taiwan তাকে সম্মানসূচক অধ্যাপনার স্বীকৃতি প্রদান করে।

  • টেক্সাস ইন্সট্রুমেন্টস-এর গবেষণাগার “Kilby Labs”, যা সিলিকন উৎপাদন ও ইন্টিগ্রেটেড সার্কিট ডিজাইনের জন্য কাজ করে, তার নাম অনুসারে নামকরণ করা হয়েছে।

  • স্কটল্যান্ডের এডিনবার্গে Edinburgh Napier University-র Merchiston Campus-এ অবস্থিত Jack Kilby Computer Centre তার সম্মানে নামকরণ করা হয়েছে।

মৃত্যু:

জীবনের পরবর্তী পর্যায়ে কিলবি আরও অনেক উদ্ভাবনে জড়িত ছিলেন, যেমন পকেট ক্যালকুলেটর ও থার্মাল প্রিন্টার। তিনি ২০০৫ সালের ২০ জুন মৃত্যুবরণ করেন।

sourse: wikipedia "  thoughtco

What's Your Reaction?

Like Like 0
Dislike Dislike 0
Love Love 0
Funny Funny 0
Angry Angry 0
Sad Sad 0
Wow Wow 0