গ্রেগ চ্যাপেল এর-জীবনী Biography of Greg Chappell
গ্রেগ চ্যাপেল এর-জীবনী Biography of Greg Chappell

ব্যক্তিগত তথ্য | |
---|---|
পূর্ণ নাম |
গ্রিগোরি স্টিফেন চ্যাপেল
|
জন্ম | ৭ আগস্ট ১৯৪৮ আনলে, দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়া, অস্ট্রেলিয়া |
উচ্চতা |
৬ ফুট ১ ইঞ্চি (১.৮৫ মিটার) |
ব্যাটিংয়ের ধরন |
ডানহাতি |
বোলিংয়ের ধরন | ডানহাতি মিডিয়াম |
ভূমিকা |
ব্যাটসম্যান, অধিনায়ক, কোচ, ধারাভাষ্যকার |
গ্রিগোরি স্টিফেন চ্যাপেল,
এমবিই (ইংরেজি: Greg Chappell; জন্ম: ৭ আগস্ট, ১৯৪৮) দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার আনলে এলাকায় জন্মগ্রহণকারী অস্ট্রেলিয়ার সাবেক ও বিখ্যাত আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা। ডানহাতি ব্যাটসম্যান হিসেবে তিনি অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলে খেলেছেন। পাশাপাশি ডানহাতে মিডিয়াম বোলিংও করতেন গ্রেগ চ্যাপেল। এছাড়াও তিনি জাতীয় দলের অধিনায়কও ছিলেন। অবসর পরবর্তীকালে তিনি কোচের দায়িত্ব পালন করেন।
প্রারম্ভিক জীবন
দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার আনলে এলাকায় গ্রেগ চ্যাপেল জন্মগ্রহণ করেন। মার্চিন ও জেন দম্পতির তিনি ছিলেন তৃতীয় পুত্রের মধ্যে দ্বিতীয়। খুব অল্প বয়সেই ক্রিকেটের প্রতি আসক্ত হন তিনি। বাবা মার্টিন ছিলেন অ্যাডিলেডের শীর্ষস্থানীয় ক্রিকেটার। মাতুলালয়ের দাদা ভিক্টর রিচার্ডসন অস্ট্রেলিয়া দলের অধিনায়ক ছিলেন। বড় ভাই ইয়ান চ্যাপেল ও ছোট ভাই ট্রেভর চ্যাপেল অস্ট্রেলিয়া দলের হয়ে খেলেছেন। বড়ভাই ইয়ানের পদাঙ্ক অনুসরণ করে শীর্ষস্থানে উঠে আসেন। লিন ফুলারের কাছ থেকে সাপ্তাহিক শিক্ষা গ্রহণ করতেন।
১৯৭৩-৭৪ মৌসুমে ইয়ান চ্যাপেলের অধিনায়কত্বে সহঃঅধিনায়কের দায়িত্বপালনকারী হিসেবে তাকে সাউথ অস্ট্রেলিয়া থেকে প্রলুদ্ধ করে কুইন্সল্যান্ডের অধিনায়কত্ব প্রদান করা হয়।
গ্রেগ চ্য়াপেলের জীবনে ভয়ঙ্কর সমস্যা! বেঁচে থাকার মতো টাকা নেই হাতে
খেলোয়াড়ী জীবন
১৯৭৫ থেকে ১৯৭৭ সময়কালে তিনি অস্ট্রেলিয়া জাতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক ছিলেন। তারপর তিনি বিতর্কিত বিশ্ব সিরিজ ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেন। তারপর তিনি পুনরায় ১৯৭৯ সালে অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন যা ১৯৮৪ সালে খেলোয়াড়ী জীবন থেকে অবসর নেয়ার পূর্ব-পর্যন্ত ছিল। চ্যাপেল ভাতৃত্রয়ের মধ্যে দ্বিতীয় গ্রেগ চ্যাপেল অস্ট্রেলীয় ব্যাটসম্যানদের মধ্যে প্রভাববিস্তারকারী খেলোয়াড় ছিলেন ও গভীর মনোযোগের সাথে ব্যাটিং করতেন। ব্যতিক্রমধর্মী অল-রাউন্ডার হিসেবে মিডিয়াম পেস বোলিং করতেন। অবসর নেয়ার সময় তিনি টেস্ট ক্রিকেটে সর্বাধিক ক্যাচ লুফে নেয়ার রেকর্ডের দাবীদার ছিলেন। চ্যাপেলের খেলোয়াড়ী জীবন দুইটি যুগে বিভক্ত হয়েছে যা বিশ্ব সিরিজ ক্রিকেটের পর ক্রিকেট খেলায় পেশাদারীত্বের সৃষ্টি হয়।
গ্রেগ চ্যাপেল: কিংবদন্তি ক্রিকেটার, আন্ডারআর্ম বিতর্ক এবং অন্যান্য
পুরোদস্তুর ক্রিকেটীয় ফ্যামিলি। বাবা মার্টিন ছিলেন অ্যাডিলেডের শীর্ষস্থানীয় ক্রিকেটার। দাদা ভিক্টর রিচার্ডসন ছিলেন অস্ট্রেলিয়া দলের সাবেক অধিনায়ক। তাই চ্যাপেল ব্রাদারদের রক্তেই ছিল ক্রিকেট। কিন্তু এই ক্রিকেটীয় রক্তই একটা সময়ের দেশের ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় কলঙ্কের জন্ম দেয়। বড় ভাই ইয়ান চ্যাপেল, মেজো ভাই গ্রেগ চ্যাপেল, ছোট ভাই ট্রেভর চ্যাপেল – তিনজনই দেশকে প্রতিনিধিত্ব করেছেন। আজকের আলোচনার বিষয়বস্তু সেই চ্যাপেল ব্রাদারদের মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত-সমালোচিত সাবেক অজি অধিনায়ক গ্রেগ চ্যাপেলকে নিয়ে।
সাবেক অজি অধিনায়ক গ্রেগরি স্টিফেন চ্যাপেল। এক যুগেরও বেশি সময় ধরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ছড়ি ঘুরিয়েছেন কিংবদন্তি এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান। ১৯৭০ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সে ম্যাচে খেলেছিলেন ১০৮ রানের এক ইনিংস। অধিনায়ক হিসেবে নিজের প্রথম ম্যাচেও সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছিলেন। ক্যারিয়ারের শেষ টেস্টেও পাকিস্তানের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেছিলেন।
তবে মজার ব্যাপার হলো, ৫ জানুয়ারি জীবনের শেষ টেস্ট ইনিংসে ১৮২ করেছিলেন পাকিস্তানের বিপক্ষে সিডনিতে। এর ঠিক ৮ বছর আগে ১৯৭৬ সালে সেই সিডনিতে সেই একই তারিখে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষেও সেই একই স্কোর (১৮২ রান) করেছিলেন।
দা পোশাকের ক্রিকেটে যেকোনো প্রতিপক্ষের বিপক্ষে ছিলেন সাবলীল। ১৯৭২ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১৩১, একই বছর ওভালে ১১৩, সে বছরের শেষ দিকে পাকিস্তানের বিপক্ষে অপরাজিত ১১৬ রান। সময়ের সাথে সাথে যেন নিজেকেই ছাড়িয়ে যাচ্ছিলেন। প্রথম দফায় ১৯৭৫ সাল থেকে ১৯৭৭ পর্যন্ত অধিনায়কত্ব করেছেন। এরপর বিতর্কিত বিশ্ব ক্রিকেট সিরিজের পর পুনরায় ১৯৭৯ সালে অধিনায়কের দায়িত্ব পান। ১৯৮৪ সালে অবসরের আগপর্যন্ত তিনি অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন।
১৯৭১ সালে মেলবোর্নে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে একদিকের ওয়ানডে ক্রিকেটে অভিষেক। ক্যারিয়ারের প্রথম ম্যাচেই ছিলেন অপরাজিত, খেলেছিলেন ২৯ বলে ২২ রানের ইনিংস। ক্যারিয়ারের ১৬তম ইনিংসে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছিলেন। তবে এর মাঝে বেশ কিছু ম্যাচ জেতানো ইনিংস এসেছে চ্যাপেলের ব্যাট থেকে। তবে সাদা পোশাকে সেঞ্চুরি পেতে মোটেও অপেক্ষা করতে হয়নি কিংবদন্তি এই অজি ব্যাটসম্যানকে। ক্রমেই হয়ে উঠেছেন টিম অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং স্তম্ভ। ধারাবাহিকতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত ছিলেন গ্রেগ চ্যাপেল। পুরো ক্যারিয়ার জুরেই খেলেছেন সমান তালে। ১৯৭৪ সালে বেসিন রিজার্ভে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্টের দুই ইনিংসেই সেঞ্চুরি করেছিলেন প্রথম ইনিংসে অপরাজিত ২৪৭* এরপর দ্বিতীয় ইনিংসে করেছিলেন ১৩৩ রান। ক্যারিয়ারের শেষ ভাগে এসেও ব্যাটিং ধার এতটুকুও কমে যায়নি। ক্যারিয়ারের শেষ চার বছরেই করেছেন সাত সেঞ্চুরি!
গ্রেগ চ্যাপেলের শক্তির জায়গা ব্যাটিং হলেও তিনি মিডিয়াম পেস বল করতেন। ওয়ানডেতে পাঁচ উইকেট নেওয়ার কীর্তি গড়েছেন দু’বার। ১৯৭৭ সালে বার্মিংহামে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ২০ রানে নিয়েছিলেন পাঁচ উইকেট। যদিও বড় ব্যবধানে ম্যাচ হেরেছিল অস্ট্রেলিয়া। এরপর সিডনিতে চ্যাপেল-তোপে মাত্র ৬৩ রানে অলআউট হয়েছিল ভারত। ভারতের সাথে সে ম্যাচে ১৫ রানে পাঁচ উইকেট ওয়ানডেতে তার ক্যারিয়ার সেরা বোলিং।
৭৪ ওয়ানডেতে চ্যাপেলের শিকার ৭২ উইকেট। সাদা পোশাকে ৮৭ ম্যাচে চ্যাপেলের শিকার ৪৭ উইকেট। ফিল্ডার গ্রেগ চ্যাপেলও কম যাননি, ৮৭ টেস্ট খেলে নামের পাশে আছে ১২২ ক্যাচ। অবসরের আগপর্যন্ত টেস্টে সর্বাধিক ক্যাচের রেকর্ড ছিল চ্যাপেলের।
ওয়ানডেতে ৭২ ম্যাচে ৪০ গড়ে করেছেন ২,৩৩১ রান। টেস্টে ১৫১ ইনিংসে করেছেন ৭,১১০ রান। টেস্টে ২৪ শতকের সাথে আছে ৩১টি অর্ধশতক। ব্রাডম্যানের পরবর্তী সময়ে গ্রেগ চ্যাপেলকেই অস্ট্রেলিয়ার সেরা ব্যাটসম্যান বিবেচনা করা হতো। আর নিজের সময়ের সেরা ফিল্ডারদের একজন গ্রেগ চ্যাপেল।
সম্মাননা
২০০০ সালে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া কর্তৃক প্রণীত শতাব্দীর সেরা অস্ট্রেলীয় ক্রিকেট বোর্ড দলেও তাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
অবসর পরবর্তী সময়কাল
১৯৮৪ সালে খেলোয়াড়ী জীবন থেকে অবসর নেয়ার পর তিনি বিভিন্ন ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান ও গণমাধ্যমের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হন। পাশাপাশি তিনি পেশাদার ক্রিকেটের সাথে জড়িত থাকেন। ২০০৫ সালে ভারত জাতীয় ক্রিকেট দলে দুই বছরের চুক্তিতে কোচ হন। কিন্তু সিরিজে বিতর্ক ও ব্যক্তিত্বের সংঘাতের ফলে ২০০৭ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপে ভারতের দূর্বল ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শন করায় ৪ এপ্রিল, ২০০৭ তারিখে কোচের পদ থেকে অব্যহতি নেন। রাজস্থান রয়্যালসের অ্যাকাডেমি কোচ হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০০৮ সালের টুয়েন্টি২০ খেলায় অল স্টার্স কোচের হয়ে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অংশ নেন। চ্যাপেল ওয়ে’র অংশ হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত ক্রিকেট সামার ক্যাম্পের কয়েকটি সিরিজে নির্বাহী কোচ ছিলেন তিনি।
জাতীয় পর্যায়সহ কুইন্সল্যান্ড দলের নির্বাচক নিযুক্ত হন। অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট বোর্ডের সদস্য ও জাতীয় দলের কোচ মনোনীত হন। ২৯ অক্টোবর, ২০১০ তারিখে মার্ভ হিউজের পরিবর্তে অস্ট্রেলিয়া জাতীয় দলের নির্বাচক মনোনীত হন। ২০১০-১১ মেয়াদে নির্বাচকের দায়িত্ব পালনকালীন সময়ে টেস্ট দল ব্যাপক সাফল্য লাভ করে। ইংল্যান্ডকে ৩-১ ব্যবধানে অ্যাশেজে পরাজিত করাসহ শ্রীলঙ্কাকে ১-০ ব্যবধানে পরাজিত করে অস্ট্রেলীয় দল। ড্রেসিং রুম থেকে খেলোয়াড়দের বের হওয়া নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন। আগস্ট, ২০১১ সালে শ্রীলঙ্কা সফরে তাকে নির্বাচকের দায়িত্ব থেকে অব্যহিত দেয়া হয়।
আন্তর্জাতিক তথ্য | |
---|---|
জাতীয় দল |
|
টেস্ট অভিষেক (ক্যাপ ২৫১) |
১১ ডিসেম্বর ১৯৭০ বনাম ইংল্যান্ড |
শেষ টেস্ট | ৬ জানুয়ারি ১৯৮৪ বনাম পাকিস্তান |
ওডিআই অভিষেক (ক্যাপ ১) |
৫ জানুয়ারি ১৯৭১ বনাম ইংল্যান্ড |
শেষ ওডিআই | ৩০ এপ্রিল ১৯৮৩ বনাম শ্রীলঙ্কা |
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
|
sourse: bengali.news18: archive : wikipedia..
What's Your Reaction?






