হাশিম আমলা এর জীবনী | Biography of Hashim Amla
হাশিম আমলা এর জীবনী | Biography of Hashim Amla

পূর্ণ নাম |
হাশিম মোহাম্মদ আমলা
|
---|---|
জন্ম | ৩১ মার্চ ১৯৮৩ ডারবান, নাটাল প্রদেশ, দক্ষিণ আফ্রিকা |
উচ্চতা |
১.৮২ মিটার (৬ ফুট ০ ইঞ্চি) |
ব্যাটিংয়ের ধরন |
ডানহাতি |
বোলিংয়ের ধরন |
ডানহাতি অফ ব্রেক |
ভূমিকা |
ব্যাটসম্যান |
সম্পর্ক |
আহমেদ আমলা (ভাই) |
প্রারম্ভিক জীবন
দক্ষিণ আফ্রিকায় একটি মুসলিম পরিবারে হাশিম আমলা'র জন্ম। তার পূর্বপুরুষেরা অনেক বছর পূর্বে অভিবাসিত হয়ে গুজরাত থেকে দক্ষিণ আফ্রিকায় বাসস্থান গড়েন। ডারবান হাইস্কুল থেকে ডিগ্রী গ্রহণ করেন আমলা। যুবদের ক্রীড়াঙ্গনে আমলা আঞ্চলিক দল হিসেবে কোয়াজুলু নাটাল ডলফিনসে অভিষেক ঘটান। খুব দ্রুত দক্ষিণ আফ্রিকা দলের প্রধান হিসেবে মনোনীত হয়ে ২০০২ সালে নিউজিল্যান্ডে অনুষ্ঠিত অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপের ফাইনালে দলকে নিয়ে যান।
তার বড় ভাই আহমেদ আমলাও একজন পেশাদার ক্রিকেটার এবং দু’বছর পূর্বে ক্রিকেট জগতে প্রবেশ করে বর্তমানে ডলফিনের অধিনায়ক হিসেবে আছেন। টেস্টে অভিষেকের পূর্বেই হাশিম আমলা এলকোহলজাতীয় তরল পদার্থের লোগো বিপণনের মাধ্যম হিসেবে বিজ্ঞাপনচিত্র নিয়ে খেলার মাঠে ঢুকাবেন না বলে প্রতিশ্রুতি দিয়ে অদ্যাবধি বজায় রেখেছেন।
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে
ডলফিনসের অধিনায়ক থাকাকালে হাশিম আমলা ২০০৪-০৫ মৌসুমে দক্ষিণ আফ্রিকার ঘরোয়া ক্রিকেটে প্রথম আটটি ইনিংসের চারটিতেই সেঞ্চুরি করেছিলেন। তার এ সাফল্য ঘরোয়া পর্যায় থেকে উত্তরণ ঘটিয়ে ২০০৪ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা এ দলের ভারত সফরে যেতে সহায়তা করে। এর মধ্য দিয়েই আমলা প্রথম ভারতীয় বংশোদ্ভূত দক্ষিণ আফ্রিকান হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পদার্পণ করেন।
১৯ নভেম্বর, ২০১৪ তারিখে অস্ট্রেলিয়া সফরে অনুষ্ঠিত তৃতীয় ওয়ান-ডে ম্যাচে ১৭শ ওডিআই শতকে দ্রুততম সময়ে পৌঁছেন। ঐ খেলায় তার ১১৫ বলে ১০২ রান সংগ্রহ করার পরও অস্ট্রেলিয়ার কাছে তার দল ৭৩ রানে পরাজিত হয়।
আন্তর্জাতিক তথ্য |
|
---|---|
জাতীয় দল |
|
টেস্ট অভিষেক (ক্যাপ ২৯৫) |
২৮ নভেম্বর ২০০৪ বনাম ভারত |
শেষ টেস্ট |
২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ বনাম শ্রীলঙ্কা |
ওডিআই অভিষেক (ক্যাপ ৯০) |
৯ মার্চ ২০০৮ বনাম বাংলাদেশ |
শেষ ওডিআই |
২৮ জুন ২০১৯ বনাম শ্রীলঙ্কা |
ওডিআই শার্ট নং |
৯০ ও ১ |
টি২০আই অভিষেক (ক্যাপ ৩৮) |
১৩ জানুয়ারি ২০০৯ বনাম অস্ট্রেলিয়া |
শেষ টি২০আই |
১৪ আগস্ট ২০১৮ বনাম শ্রীলঙ্কা |
টি২০আই শার্ট নং |
১ |
নিজের পজিশনে সবসময়ই সেরা ছিলেন হাশিম আমলা।
একদিনের ক্রিকেটে অন্তত ১০০ ইনিংস ওপেন করেছে এমন ওপেনারদের মধ্যে হাশিম আমলার গড় ২য় সর্বোচ্চ। সবার উপরে আছে রোহিত শর্মা। ওপেনিং পজিশনে আমলার গড় ৪৯.৮৯, শচীনের ৪৮.২৯, দিলশানের ৪৬.০৪। ওপেনিংয়ে আমলার স্ট্রাইক রেট ৮৮ এর উপরে। মোট ১৭৫ ইনিংস ওপেন করে আমলার মোট সংগ্রহ ৮,০৮৩ রান।
টি২০ ক্রিকেটে সব ম্যাচই খেলেছেন ওপেনিং পজিশনে। টেস্ট ক্রিকেটে প্রিয় জায়গা ছিলো ওয়ান ডাউন। ওয়ান ডাউনে ১০৬ ম্যাচের পর সর্বোচ্চ ২৫ ম্যাচ খেলেছেন ৪ নম্বর পজিশনে। টেস্টে তিন নাম্বার ব্যাটসম্যান হিসেবে হাশিম আমলার সংগ্রহ করা ৭,৯৯৩ রান ৪র্থ সর্বোচ্চ। তার উপরে থাকা ৩ জন হচ্ছেন কুমার সাঙ্গাকারা, রাহুল দ্রাবিড় আর রিকি পন্টিং।
অধিনায়ক হিসেবে খুব বেশিদিন খেলেননি আমলা।
অনূর্ধ্ব ১৯ দলের অধিনায়কত্ব তো পেয়েছিলেন একেবারে শুরু দিকেই, ২০০২ সালে। ২০১১ এর জুনে দক্ষিণ আফ্রিকা ওডিআই এবং টি-টোয়েন্টি দলের সহ-অধিনায়কত্বের দায়িত্ব পান। সেখানে থেকেই ২ টি টি২০ এবং ৯ টি ওডিআই ম্যাচে অধিনায়কত্ব করেন আমলা। এরপর স্বেচ্ছায় সহ-অধিনায়কের দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ান।
২০১৪ সালে পান টেস্ট দলের দায়িত্ব। তার অধিনায়কত্বে দক্ষিণ আফ্রিকা খেলে মোট ১৪টি টেস্ট। এই ১৪ টেস্টে ৪ জয় আর ৬ ড্র এর বিপরীতে দল হারে ৪ ম্যাচ। অধিনায়ক হিসেবে হাশিম আমলার ব্যাক্তিগত পরিসংখ্যানও ছিলো ভালো। ৪৯.৬৬ গড়ে এই ১৪ ম্যাচে আমলা রান করেন ৮৯৪।
হাশিম আমলা মোট ১২৪ টেস্টে তিন অংকের ম্যাজিক ফিগার ছুঁয়েছেন ২৮ বার, ওডিআই এর ১৮১ ম্যাচে ছুঁয়েছেন ২৭ বার। আন্তর্জাতিক টি২০ তে না থাকলেও টি২০ ক্রিকেটে আমলার আছে ২ টি শত রানের ইনিংস। দুটিই আবার ২০১৭ আইপিএলে কিংস ইলেভেনের পক্ষে।
২৩৮টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচে আমলার সংগ্রহ ৪৮.৫২ গড়ে ১৭ হাজার ৮০৯ রান, শতক ৫২ টি আর অর্ধশতকের সংখ্যা ৮৮। ২৪৩টি লিস্ট-এ ম্যাচে ৩০ শতক, ৫২ অর্ধশতক আর ৪৫.১২ গড়ে মোট সংগ্রহ ৯,৯৭৩ রান। লিস্ট-এ তে আর ২৭ রান করলেই ছুঁয়ে ফেলতেন ১০ হাজারের মাইলফলক।
ক্রিকেট মাঠে শান্ত শিষ্ট, নম্রতা-ভদ্রতার দিক দিয়ে হাশিম আমলার থেকে এগিয়ে থাকবে না কেউই। হাশিম আমলাকে মাঠে দেখলেই মনে হতো ক্রিকেটটা আসলেই “জেন্টলম্যান’স গেম”। ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে সাঙ্গাকারার ক্যাচ নিয়ে ধারাভাষ্যকার ডিন জোনসের মুখ থেকে শুনতে হয়েছিলো “টেরোরিস্ট” শব্দটি। “…The terrorist has got another wicket“- এমন ভাষ্যের পরও আমলা ছিলেন আমলার মতোই। সব প্রশ্নের জবাব দিয়ে গেছেন ব্যাট হাতে। আদর্শ একজন ক্রিকেটারের পাশাপাশি হাশিম আমলা ছিলেন একজন আদর্শ ভদ্রলোক আর আদর্শ ধার্মিক ব্যাক্তিও। ভিরাট কোহলি, স্টিভ স্মিথ, এবিডি ভিলিয়ার্সদের মতো তারকা খ্যাতি হয়তো তার নেই, তবে সত্যিকারের ক্রিকেট প্রেমীদের কাছে তিনি যুগ যুগ বেঁচে থাকবেন ক্রিকেট মাঠের ‘লিওনার্দো দ্যা ভিঞ্চি’ হয়েই।
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
|
source. wikipedia
What's Your Reaction?






