ডেনিস অ্যামিস এর জীবনী | Biography Of Dennis Amiss
ডেনিস অ্যামিস এর জীবনী | Biography Of Dennis Amiss

ব্যক্তিগত তথ্য | |
---|---|
পূর্ণ নাম |
ডেনিস ল্যাসলি অ্যামিস
|
জন্ম | ৭ এপ্রিল ১৯৪৩ হারবর্ন, বার্মিংহাম, ইংল্যান্ড, যুক্তরাজ্য |
ডাকনাম | স্যাকার |
উচ্চতা |
৫ ফুট ১১ ইঞ্চি (১.৮০ মিটার) |
ব্যাটিংয়ের ধরন |
ডানহাতি |
বোলিংয়ের ধরন | বামহাতি মিডিয়াম স্লো লেফট আর্ম অর্থোডক্স |
ভূমিকা | ব্যাটসম্যান, প্রশাসক |
ডেনিস লেসলি অ্যামিস, এমবিই (ইংরেজি: Dennis Amiss; জন্ম: ৭ এপ্রিল, ১৯৪৩) ওয়ারউইকশায়ারের বার্মিংহাম এলাকার হারবর্নে জন্মগ্রহণকারী সাবেক ও বিখ্যাত ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার। এছাড়াও তিনি ক্রিকেট প্রশাসকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন।
ওয়ারউইকশায়ার ও ইংল্যান্ড - উভয় দলের পক্ষেই তিনি ক্রিকেট খেলতেন। ডানহাতি ব্যাটসম্যান ডেনিস অ্যামিস এক্সট্রা কভার ও মিডউইকেট বরাবর স্ট্রোকের মাধ্যমে রান সংগ্রহ করতেন। তিনি সকল ধরনের ক্রিকেটেই নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন।
খেলোয়াড়ী জীবন
অ্যামিস কিশোর বয়সেই ফুটবল খেলায় গভীর অনুরক্ত ছিলেন ও নিয়মিত রুটিনমাফিক খেলতে যেতেন। কিন্তু ঐ বয়সেই ফুটবল খেলায় পিঠে গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হন।
১৯৬৬ মৌসুমে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে অনুষ্ঠিত ৫ম টেস্টের মাধ্যমে ইংল্যান্ডের পক্ষে তার টেস্ট অভিষেক ঘটে। এর মাধ্যমেই তিনি নিজেকে টেস্ট ব্যাটসম্যান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন। প্রতিরক্ষামূলক হেলমেট ব্যবহারে প্রথমদিককার ব্যাটসম্যানদের অন্যতম ছিলেন তিনি। ৩,৬১২ টেস্ট রান করার সময় তিনি এগারোটি অর্ধ-শতক ও এগারোটি শতক হাঁকান। তন্মধ্যে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দু’টি ডাবল সেঞ্চুরি করেন। ১৯৭৩-৭৪ মৌসুমে কিংস্টনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে অপরাজিত ২৬২* রান প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটেও তার সর্বোচ্চ রান। ঐ টেস্টটি ড্রয়ে পরিণত হয়। ১৯৭৫ সালে ইংল্যান্ড দল থেকে বাদ পড়েন অ্যামিস। ১৯৭৬ সালে ওভালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে শেষ টেস্টে দলের সাথে যুক্ত হন। কিন্তু প্রথম ইনিংসে তার ২০৩ রান ইংল্যান্ডকে পরাজয়ের হাত থেকে রক্ষা করতে সক্ষম হয়নি। ১৯৭৭ সালে দল থেকে বাদ পড়লে স্বেচ্ছা নির্বাসন থেকে জিওফ্রে বয়কটের ফিরে আসার সুযোগ ঘটে।
ডেনিস অ্যামিস
‘অভিষেক’ শব্দটার সাথে অ্যামিসের সখ্যতা বেশ পুরানো। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ইতিহাসের প্রথম ওয়ানডে ম্যাচ খেলতে পারেননি তিনি। ওয়ানডে ক্রিকেটে তার অভিষেক ঘটে ওয়ানডে ইতিহাসের দ্বিতীয় ম্যাচে। ১৯৭২ সালের ২৪ আগস্ট ম্যানচেস্টারে অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হয়েছিল ইংল্যান্ড। ৫৫ ওভারের ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া প্রথমে ব্যাট করে আট উইকেটে ২২২ রান সংগ্রহ করেছিল। জবাবে ডেনিস অ্যামিসের দুর্দান্ত শতকের উপর ভর করে ইংল্যান্ড ৩৫ বল এবং ছয় উইকেট হাতে রেখেই জয় তুলে নিয়েছিল।
ডেনিস অ্যামিস ওয়ানডে ক্রিকেটের ইতিহাসে প্রথম শতক হাঁকিয়ে ১০৩ রান করেন। তিনি ১৩৪ বলে নয়টি চারের মারে তার ইনিংসটিকে সাজান। বিশ্বকাপেও প্রথম ব্যাটসম্যান হিসাবে শতক হাঁকানোর কীর্তি গড়েছিলেন তিনি। বিশ্বকাপের উদ্বোধনী দিনে ভারতের বিপক্ষে লর্ডসে প্রথমে ব্যাট করে চার উইকেটে ৩৩৪ রান সংগ্রহ করেছিল ইংল্যান্ড। ইংল্যান্ডের হয়ে সর্বোচ্চ ১৩৭ রান করেছিলেন ডেনিস অ্যামিস। মদনলালের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরার আগে ১৪৭ বলে ১৮টি চারের মারে ১৩৭ রানের ইনিংস খেলেছিলেন তিনি।
জবাবে ভারত পুরো ৬০ ওভার ব্যাট করলেও তিন উইকেটে ১৩২ রানের বেশি তুলতে পারেনি। এই ম্যাচেই সুনীল গাভাস্কার ৩৬ রানের কচ্ছপগতির বিখ্যাত ইনিংসটি খেলেছিলেন। তিনি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ব্যাট করে ১৭৪ বলে মাত্র একটি চারের মারে অপরাজিত ৩৬ রানের ইনিংস খেলেছিলেন।
প্রথম ব্যাটসম্যান হিসাবে ওয়ানডেতে এবং বিশ্বকাপে শতক হাঁকানো ডেনিস অ্যামিস খুব বেশি আন্তর্জাতিক একদিনের ম্যাচ খেলেননি। পাঁচ বছরের ওয়ানডে ক্যারিয়ারে মোট ১৮ ম্যাচ খেলে চারটি শতক এবং একটি অর্ধশতকের সাহায্যে ৪৭.৭২ ব্যাটিং গড়ে ৮৫৯ রান সংগ্রহ করেছিলেন তিনি। সীমিত সংখ্যক ওয়ানডে ম্যাচ খেলা অ্যামিস ওয়ানডে ক্রিকেটের বহু প্রথমের সাথে নিজের নাম পাকাপাকিভাবে লিখে রেখেছেন। তিনি ওয়ানডে ক্রিকেটে খুব বেশি ম্যাচ না খেললেও প্রায় এক যুগের টেস্ট ক্যারিয়ারে ৫০টি টেস্ট ম্যাচ খেলেছিলেন। ৫০ ম্যাচে ১১টি শতক এবং সমান সংখ্যক অর্ধশতক হাঁকিয়ে ৪৬.৩০ ব্যাটিং গড়ে ৩,৬১২ রান সংগ্রহ করেছিলেন।
মূল্যায়ন
প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ৪২.৮৬, লিস্ট-এ ক্রিকেটে ৩৫.০৬, টেস্টে ৪৬.৩০ এবং একদিনের আন্তর্জাতিকে ৪৭.৭২ রান গড়ের অধিকারী ছিলেন। প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে তিনি ১০২টি সেঞ্চুরি করেন। ইংল্যান্ডের ক্রিকেট ইতিহাসে ৫০ বা তদূর্দ্ধ টেস্ট খেলা ক্রিকেটারদের মধ্যে সেরাদের কাতারে রয়েছেন।
১৯৭৫ সালে উইজডেন কর্তৃপক্ষ তাকে অন্যতম বর্ষসেরা ক্রিকেটাররূপে নির্বাচিত করে। ১৯৭৬ সাল শেষে বিশ্বের ১নং খেলোয়াড়ের মর্যাদা লাভ করেন তিনি।
একদিনের আন্তর্জাতিক
২৪ আগস্ট, ১৯৭২ তারিখে ৩ ওডিআই নিয়ে গড়া প্রুডেন্সিয়াল ট্রফি প্রতিযোগিতার প্রথম খেলায় সফরকারী অস্ট্রেলিয়ার রস এডওয়ার্ডস, ডেনিস লিলি, বব ম্যাসি, পল শিহান ও গ্রেম ওয়াটসন এবং ইংল্যান্ডের ডেনিস অ্যামিস, জিওফ আর্নল্ড, ব্রায়ান ক্লোজ, টনি গ্রেগ ও বব উলমারের একযোগে ওডিআই অভিষেক ঘটে। ম্যানচেস্টারের ওল্ড ট্রাফোর্ড ক্রিকেট গ্রাউন্ডে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অনুষ্ঠিত ঐ খেলায় তার দল ৬ উইকেটে জয়লাভ করেছিল।
ওডিআইয়ের ইতিহাসের দ্বিতীয় খেলায় প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে সেঞ্চুরি পান তিনি। তিনি ১৩৪ বলে ১০৩ রান তুলেন। পরবর্তীতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ডেসমন্ড হেইন্স ১৯৭৮ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ১৪৮ রান তুলে তার ব্যক্তিগত সংগ্রহকে অতিক্রম করেন।
অবসর
১৯৮৭ সালে ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর নেয়ার পর ওয়ারউইকশায়ার ক্রিকেট কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৮ সালে এমবিই উপাধি লাভ করেন। ১৯৯২ সালে ইংরেজ ক্রিকেট দল নির্বাচক মনোনীত হন। ১৯৯৪ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত ডেভিড হিথের স্থলাভিষিক্ত হয়ে প্রধান নির্বাহীর দায়িত্বে ছিলেন। নভেম্বর, ২০০৭ সালে ইসিবি’র উপ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। আগস্ট, ২০১১ সালে দ্য ডেইলি টেলিগ্রাফ বোর্ডে তার অসামান্য ভূমিকার কারণে তাকে যথেষ্ট ক্রিকেট জ্ঞানসম্পন্ন ও অর্জিত অভিজ্ঞতাকে জাইলস ক্লার্কের ব্যবসায়িক দক্ষতার সাথে তুলনা করে। ২০০৭-এর গ্রীষ্মে বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রী প্রদান করে।
আন্তর্জাতিক তথ্য | |
---|---|
জাতীয় দল |
|
টেস্ট অভিষেক (ক্যাপ ৪৩৪) |
১৮ আগস্ট ১৯৬৬ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ |
শেষ টেস্ট | ১২ জুলাই ১৯৭৭ বনাম অস্ট্রেলিয়া |
ওডিআই অভিষেক (ক্যাপ ১২) |
২৪ আগস্ট ১৯৭২ বনাম অস্ট্রেলিয়া |
শেষ ওডিআই | ৬ জুন ১৯৭৭ বনাম অস্ট্রেলিয়া |
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
|
sourse:archive.roar.media: wikipedia
What's Your Reaction?






