রিকি পন্টিং এর জীবনী | Biography of Cricketer Ricky Ponting
রিকি পন্টিং এর জীবনী | Biography of Cricketer Ricky Ponting

পূর্ণ নাম |
রিকি থমাস পন্টিং
|
---|---|
জন্ম | ১৯ ডিসেম্বর ১৯৭৪ লন্সেসটন, তাসমানিয়া, অস্ট্রেলিয়া |
ডাকনাম |
পান্টার |
উচ্চতা |
১.৭৮ মিটার (৫ ফুট ১০ ইঞ্চি) |
ব্যাটিংয়ের ধরন |
ডানহাতি ব্যাটসম্যান |
বোলিংয়ের ধরন |
ডানহাতি মিডিয়াম |
ভূমিকা |
ব্যাটসম্যান, অধিনায়ক, ধারাভাষ্যকার |
সম্পর্ক | গ্রেগ ক্যাম্পবেল (মামা) |
প্রারম্ভিক জীবন
তাসমানিয়ার লন্সেসটোনে জন্মগ্রহণকারী রিকি পন্টিং গ্রেইম ও লরেইন পন্টিং দম্পতির চার সন্তানের মধ্যে সকলের বড়। বাবা গ্রেইম ছিলেন একজন ভালমানের ক্লাব ক্রিকেটার। তিনি অস্ট্রেলিয়ান রুলস ফুটবলে খেলেছেন। মা লরেইন ছিলেন রাজ্যের ভিগোরো চ্যাম্পিয়ন। তার মামা গ্রেগ ক্যাম্পবেল ১৯৮৯ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়া দলের হয়ে টেস্ট ক্রিকেট খেলেছেন। প্রথমদিকে পন্টিংয়ের পিতা-মাতা তাসমানিয়ার প্রসপেক্ট এলাকার ৪.১ কিমি (২.৫ মা) দূরে সিটি সেন্টারের দক্ষিণাংশে বসবাস করতেন। তারপর তারা শ্রমজীবিদের এলাকা হিসেবে পরিচিত ৬ কিমি (৩.৭ মা) দূরে সেন্ট্রাল লন্সেসটনের উত্তরাংশে নিউনহ্যাম এলাকায় স্থানান্তরিত হন।
খেলোয়াড়ী জীব
বাবা গ্রেইম ও মামা গ্রেগ ক্যাম্পবেলের উদ্দীপনায় ক্রিকেটে হাতেখড়ি ঘটে পন্টিংয়ের। ১১ বছর বয়সে ১৯৮৫-৮৬ মৌসুমে মোব্রে অনূর্ধ্ব-১২ দলের হয়ে খেলতে নামেন তিনি। জানুয়ারি, ১৯৮৬ সালে পাঁচ-দিনব্যাপী বার্ষিক নর্দান তাসমানিয়া জুনিয়র ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। সপ্তাহব্যাপী এ প্রতিযোগিতায় চারটি সেঞ্চুরি করায় ব্যাট প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান কুকাবুরা পন্টিংয়ের সাথে প্রাতিষ্ঠানিক চুক্তিতে আবদ্ধ হয়। তখন পন্টিং ৮ম গ্রেডে পড়াশোনা করতেন। এরপর একমাসের ব্যবধানে অনূর্ধ্ব-১৬ দলের হয়ে সপ্তাহব্যাপী প্রতিযোগিতায় একই ধারা অব্যাহত রাখেন। চূড়ান্ত দিনে জোড়া সেঞ্চুরি করে তার ক্রিকেটে অসামান্য দক্ষতার পরিচয় দিয়ে সকলের মনোযোগ আকর্ষণ করেন। নর্দার্ন তাসমানিয়ান স্কুলস ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক প্রধান টেড রিচার্ডসন তার সাফল্যে বলেন: "রিকি নিশ্চিতরূপেই এ স্তরের খেলোয়াড় হিসেবে ডেভিড বুনের সমমান।"
পন্টিংয়ের খেলোয়াড়ী জীবনের অন্যতম অংশ হচ্ছে অস্ট্রেলিয়ান রুলস ফুটবল। নর্থ মেলবোর্ন ক্যাঙ্গারুজ দলের একনিষ্ঠ সমর্থক তিনি। ১৪ বছর বয়স পর্যন্ত শীতকালে জুনিয়র ফুটবলে নর্থ লনসেস্টনের হয়ে খেলেছেন। এটি তার জন্য সম্ভাব্য ক্রীড়া বিষয় ছিল। কিন্তু নর্থ লন্সেসটনের অনূর্ধ্ব-১৭ দলে হয়ে খেলার সময় ডানহাতের হিউমেরাস ভেঙ্গে যাওয়ায় ১৩ বছর বয়সে থাকাকালে এ স্বপ্ন ভেঙ্গে যায়। পন্টিংয়ের বাহু গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সেজন্যে তার ভাঙ্গা অংশে পিন লাগাতে হয়েছিল। ফলশ্রুতিতে তাকে ১৪ সপ্তাহের জন্য বিছানায় কাটাতে হয়। এরপর তিনি কখনও প্রতিযোগিতামূলক ফুটবল খেলায় আর খেলতে নামেননি।
তাসমানিয়ান শেফিল্ড শিল্ড প্রতিযোগিতার খেলাগুলো এনটিসিএ গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠিত হলে পন্টিং স্কোরবোর্ডে সহায়তা করেন। এ সময়ই তিনি নিজেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটারদের একজনরূপে ভাবতে শুরু করেন। ১৯৯০ সালে দশ বছর বিদ্যালয়ে পড়াশোনা শেষে তিনি লন্সেসটনের বেসরকারী বিদ্যালয় স্কচ ওকবার্ন কলেজে গ্রাউন্ডসম্যান হিসেবে কাজ করতে থাকেন। ১৯৯১ সালে নর্দান তাসমানিয়ান ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন কর্তৃক পন্টিংকে অ্যাডিলেডের অস্ট্রেলিয়ান ইন্সটিটিউট অব স্পোর্টস ক্রিকেট একাডেমিতে পক্ষকালব্যাপী প্রশিক্ষণের জন্য প্রেরণ করে। দুই সপ্তাহব্যাপী প্রশিক্ষণ পুরো দুই-বছরে নিয়ে যাওয়া হয়। একাডেমির কোচ রড মার্শ তার সম্বন্ধে বলেন যে, ১৭ বছর বয়সী রিকি পন্টিংয়ের ন্যায় সেরা ব্যাটসম্যান তিনি আর দেখেননি।
নভেম্বর, ১৯৯২ সালে ১৭ বছর ৩৩৭ দিন বয়সে তাসমানিয়ার পক্ষে পার্থের অনূর্ধ্ব-১৯ উৎসবে পন্টিং প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষিক্ত হন ও পাঁচ খেলায় অংশগ্রহণ করেন। এরফলে তিনি শেফিল্ড শিল্ডে খেলায় সর্বকনিষ্ঠ তাসমানিয়ান ক্রিকেটারের মর্যাদা পান। খেলাগুলোয় তিনি সর্বমোট ৩৫০ রান সংগ্রহ করেন যা তাকে অস্ট্রেলিয়া অনূর্ধ্ব-১৯ জাতীয় উন্নয়ন দলের সদস্যরূপে পরবর্তী দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের জন্য মনোনীত করা হয়। ১৯৭০ সালে বিল লরি’র দলের পর এ সফরটি ছিল প্রথম অস্ট্রেলীয় ক্রিকেট দলের দক্ষিণ আফ্রিকা সফর।
অবসর
২৯ নভেম্বর, ২০১২ তারিখে পন্টিং টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দেন। পার্থে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে অনুষ্ঠিত টেস্টের পূর্বদিন তিনি এ সিদ্ধান্ত নেন। এটি ছিল তার ১৬৮তম ও শেষ টেস্টে অংশগ্রহণ। এরফলে তিনি সাবেক অস্ট্রেলীয় ব্যাটসম্যান ও অধিনায়ক স্টিভ ওয়াহ’র রেকর্ডের সমকক্ষ হন। ৩ ডিসেম্বর, ২০১২ তারিখে ৫১.৮৫ রান গড় নিয়ে টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নেন। তারপরও তিনি ক্রিকেট খেলা নিয়ে বিশ্বের সর্বত্র ব্যস্ত রয়েছেন। ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ তারিখে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের অধিনায়করূপে তার নাম ঘোষণা করা হয়। মার্চ, ২০১৩ সালে তাকে প্রথম আন্তর্জাতিক খেলোয়াড়রূপে ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগের নিলামে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ঐ মাসের পরপরই পন্টিং ক্রিকেটের শেষ মৌসুমে পদার্পণ করেছেন বলে জানান ও ক্রিকেটের সকল স্তরের প্রতিযোগিতা থেকে অবসরের ঘোষণা দেন।[২৬] ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে তাকে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের কোচ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।
ব্যক্তিগত জীবন
জুন, ২০০২ সালে দীর্ঘদিনের বান্ধবী ও আইনের ছাত্রী রিয়ানা জেনিফার ক্যান্টরের সাথে বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন করেন পন্টিং। তার সান্নিধ্য ও উদ্দীপনার ফলেই পন্টিং খেলোয়াড়ী জীবনে উত্তরোত্তর সফলতা পেয়েছেন বলে জানান। ২৬ জুলাই, ২০০৮ তারিখে সিডনিতে এমি শার্লত নাম্নী এক কন্যা সন্তানের জনক হন পন্টিং। ৮ সেপ্টেম্বর, ২০১১ তারিখে সিডনিতে দ্বিতীয়বারের মতো মাতিসে এলি নাম্নী কন্যা সন্তানের জননী হন ক্যান্টর।
ঘরোয়া ক্রিকেট
অস্ট্রেলিয়ার ঘরোয়া ক্রিকেটে তাসমানিয়ান টাইগার্স, বিগ ব্যাশ লিগে হোবার্ট হারিকেন্স এবং ২০০৮ সালে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে কলকাতা নাইট রাইডার্স দলের হয়ে খেলেছেন। কাউন্টি ক্রিকেটের শেষ প্রথম-শ্রেণীর খেলায় সারে দলের হয়ে নটসের বিপক্ষে তিনি অপরাজিত ১৬৯* রান করেন যা ছিল কাউন্টিতে তার ৮২টি প্রথম-শ্রেণীর সেঞ্চুরি।
ঘরোয়া দলের তথ্য |
|
---|---|
বছর |
দল |
১৯৯২-৯৩ |
তাসমানিয়া |
২০০৪ |
সমারসেট |
২০০৮ | কলকাতা নাইট রাইডার্স |
২০১১-২০১৩ |
হোবার্ট হারিকেন্স |
২০১৩ |
মুম্বই ইন্ডিয়ান্স |
২০১৩ |
সারে |
২০১৩ |
অ্যান্টিগুয়া হকসবিলস |
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে
কিন্তু, তাকে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত একদিনের আন্তর্জাতিকে অংশগ্রহণের জন্য অপেক্ষা করতে হয়। নিউজিল্যান্ডে অনুষ্ঠিত চারদেশীয় প্রতিযোগিতায় দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট দলের বিপক্ষে একদিনের আন্তর্জাতিকে প্রথম অংশগ্রহণ ঘটে তার। এর অল্পকিছুদিন পরই বিশ বছর বয়সে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটাঙ্গনের টেস্ট ম্যাচে অভিষেক ঘটে তার। পার্থে অনুষ্ঠিত সফরকারী শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দলের বিরুদ্ধে ১৯৯৫ সালের ঘরোয়া সিরিজের ১ম টেস্টেই তিনি চমক দেখান। খেলায় তিনি ৯৬ রান সংগ্রহ করেন। এরপর থেকেই তাকে নতুন ডন ব্র্যাডম্যান নামে আখ্যায়িত করতে শুরু করা হয়। ১৯৯৭ সালে ইংল্যান্ড সফরে লিডসে অনুষ্ঠিত টেস্টে প্রথম সেঞ্চুরি করেন।
১৯৯৯ সালের শুরুর সময়ের পূর্ব পর্যন্ত বেশ কয়েকবার জাতীয় দলের বাইরে থাকতে হয় তাকে। নিয়মানুবর্তীতায় ব্যাঘাতসহ মাঠের বাইরে ব্যক্তিগত সমস্যায় শুরুতে ধারাবাহিক ক্রীড়া দক্ষতা প্রদর্শন করতে পারেননি। কিন্তু ক্রিকেটে পুরোদ্যমে মনোযোগী হয়ে তিনি পরবর্তী দশকের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অস্ট্রেলিয়া দলের একচ্ছত্র প্রাধান্য বিস্তারে প্রধান নিয়ামক হিসেবে অনবদ্য ভূমিকা পালন করে গেছেন।
২০০২ সালে অস্ট্রেলিয়ার একদিনের আন্তর্জাতিক দলের নেতৃত্বের ভার গ্রহণ করেন। পরের বছরই তিনি দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত ক্রিকেট বিশ্বকাপে দলকে শিরোপা এনে দেন। ২০০৪ সালে স্টিভ ওয়াহ টেস্ট অধিনায়ক থেকে অবসর গ্রহণ করলে অবশ্যম্ভাবী হিসেবে পন্টিংকে দলের অধিনায়ক মনোনীত করা হয়। ২০০৫ সালে পন্টিংয়ের নেতৃত্বে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে অ্যাশেজ সিরিজ জয়লাভ করে। ২০০৫-০৬ মৌসুমেও পন্টিং তার ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ন রাখেন। সাত সেঞ্চুরিসহ প্রায় ৭৮ রান গড়ে ১,৪৮৩ রান সংগ্রহ করেন। জানুয়ারি, ২০০৬ সালে সিডনিতে অনুষ্ঠিত তার শততম টেস্টে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে উভয় ইনিংসে ১২০ ও ১৪৩* রান করেন।
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
|
sourse: bn.wikipedia
What's Your Reaction?






