নাসিম শাহ এর জীবনী Biography of Naseem Shah
নাসিম শাহ এর জীবনী Biography of Naseem Shah

ব্যক্তিগত তথ্য | |
---|---|
পূর্ণ নাম |
নাসিম আব্বাস শাহ
|
জন্ম | ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০০৩ নিম্ন দির, খাইবার পাখতুনখোয়া, পাকিস্তান[১][২] |
ব্যাটিংয়ের ধরন |
ডানহাতি |
বোলিংয়ের ধরন |
ডানহাতি ফাস্ট |
ভূমিকা | বোলার |
নাসিম শাহ (Naseem Shah)
নাসিম শাহ (Naseem Shah) হলেন একজন তরুণ প্রতিভাবান পাকিস্তানি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার। নাসিম শাহ ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০০৩ সালে পাকিস্তানে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের লোয়ার দির জেলার একটি শহর মায়ার জান্দুলের বাসিন্দা। ছোট বেলা থেকেই ক্রিকেটে আসত্ত ছিলেন তিনি, তবে তার বাবা আব্বাস শাহ তার ক্রিকেট খেলার সিদ্ধান্তের বিপক্ষে ছিলেন। নাসিমের দুই বোন এবং চার ভাই রয়েছে, যার মধ্যে তার ছোট ভাই হুন্নাইন শাহ প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেট খেলে থাকেন। অক্টোবর ২০১৯ সালে, অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজে প্রথম খেলার সুযোগ পান তিনি।
মাত্র ১৬ বছর বয়সে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক করেন নাসিম। ২০১৯ সালে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে টেস্ট ফরম্যাটে ৫ উইকেট তুলে নিয়ে দ্বিতীয় সর্বকনিষ্ঠ বোলার হিসাবে এই কীর্তিমান রচনা করেন তিনি। এরপর ২০২০ সালেই তিনি টেস্ট ফরম্যাটে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে টেস্ট ম্যাচে হ্যাটট্রিক করা সর্বকনিষ্ঠ বোলার হয়ে ওঠেন। তার দুরন্ত প্রদর্শনের পর ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে, কোয়েটায় উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে নাসিম শাহকে বেলুচিস্তান পুলিশে ডেপুটি সুপারিনটেনডেন্ট অফ পুলিশ (DSP) এর সম্মানসূচক পদ দেওয়া হয়েছিল। পাকিস্তান দলের তরুণ প্রতিভা হিসাবে ধরা হচ্ছে তাকে এবং তিনি আসন্ন সময়ে বড় বড় কিংবদন্তি দের ধরে ফেলবেন বলেও মনে করা হচ্ছে।
করোনায় আক্রান্ত নাসিম শাহ
ভারতের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে ধাক্কা খেল পাকিস্তানও। করোনায় আক্রান্ত হলেন দেশটির পেসার নাসিম শাহ। প্রথমে সন্দেহ করা হয়েছিল তার হয়তো নিউমোনিয়া হয়েছে। তবে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড জানিয়েছে, নাসিম কোভিডে আক্রান্ত। ফলে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের বাকি দু’টি ম্যাচে তিনি খেলতে পারবেন না।
বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে গেলেন বুমরাহ
মঙ্গলবার বিকেলে অসুস্থবোধ করেন নাসিম। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হয়েছিল, নাসিমের বুকে সংক্রমণ এবং নিউমোনিয়া হয়েছে। নাসিমের জ্বরও এসেছিল। ডেঙ্গুতেও একই রকম উপসর্গ থাকায় এবং করাচিতে ডেঙ্গুর সংখ্যা বাড়তে থাকায় সেই পরীক্ষাও করানো হয়। শেষে দেখা যায়, নাসিমের কোভিড হয়েছে। তাকে বৃহস্পতিবারই হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। ফিরে এসেছেন হোটেলে। তবে বাকিদের থেকে আলাদা করে রাখা হয়েছে।
সদ্য সমাপ্ত এশিয়া কাপে ইনজুরিতে পড়া শাহিন শাহ আফ্রিদির বদলি হিসেবে দলে সুযোগ পান নাসিম। সেখানে দারুণ পারফর্ম করে সকলের নজর কাড়েন ১৯ বছর বয়সী এই পেসার। টুর্নামেন্টে টি-টোয়েন্টিতে নিজের অভিষেক ম্যাচেই ভারতের বিপক্ষে ২ উইকেটসহ ৬ ম্যাচে তুলে নেন ৭ উইকেট। পাশাপাশি, সুপার ফোরে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ছক্কা মেরে জয়সূচক রানও এনে দেন এই ক্রিকেটার।
পিসিবির আশা, আসন্ন ত্রিদেশীয় সিরিজের আগেই সুস্থ হয়ে উঠবেন নাসিম শাহ। নিউজিল্যান্ডে অনুষ্টিতব্য ত্রিদেশীয় সিরিজ়ে খেলবে বাংলাদেশও। নাসিম অবশ্য সেই দলের সঙ্গে উড়ে যাবেন কি না, তা এখনও পরিষ্কার নয়।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট
সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে ইতোমধ্যে চারটি টেস্টে অংশগ্রহণ করেছেন নাসিম শাহ। ২১ নভেম্বর, ২০১৯ তারিখে ব্রিসবেনে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার।
অক্টোবর, ২০১৯ সালে ১৬ বছর বয়সে পাকিস্তান দলের সদস্যরূপে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ খেলার জন্যে মনোনীত হন। ২০১৯-২০ মৌসুমে পাকিস্তান দলের সদস্যরূপে অস্ট্রেলিয়া গমন করেন। নভেম্বর, ২০১৯ সালে পাকিস্তানি একাদশের সদস্যরূপে অস্ট্রেলিয়া এ দলের বিপক্ষে তিনদিনের প্রস্তুতিমূলক খেলায় অংশ নেন।
২১ নভেম্বর, ২০১৯ তারিখে ব্রিসবেনে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে পাকিস্তানের সদস্যরূপে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। এরফলে টেস্ট ক্রিকেটে নবম সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড়ের মর্যাদা লাভ করেন। পরের মাসে শ্রীলঙ্কা দল পাকিস্তান গমন করে। সফরকারী শ্রীলঙ্কা দলের বিপক্ষে দুই-টেস্টের সিরিজ খেলার জন্যে মনোনীত করা হয়। সিরিজের দ্বিতীয় খেলায় নিজস্ব প্রথম পাঁচ-উইকেটের সন্ধান পান। এ সময়ে তার বয়স ছিল ১৬ বছর ৩৫৭ দিন। এরফলে সর্বকনিষ্ঠ ফাস্ট বোলার ও দ্বিতীয় সর্বকনিষ্ঠ বোলার হিসেবে টেস্টে পাঁচ-উইকেট লাভ করেন।
প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট
২০১৮ সাল থেকে নাসিম শাহ তার প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রেখেছেন। ১ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ তারিখে জারাই তারাকিয়াতি ব্যাংক লিমিটেডের সদস্যরূপে ২০১৮-১৯ মৌসুমের কায়েদ-ই-আজম ট্রফি প্রতিযোগিতায় প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। একই দলের সদস্যরূপে ১৬ অক্টোবর, ২০১৮ তারিখে ২০১৮-১৯ মৌসুমের কায়েদ-ই-আজম ওয়ান ডে কাপে প্রতিযোগিতায় লিস্ট-এ ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে।
সেপ্টেম্বর, ২০১৯ সালে ২০১৯-২০ মৌসুমের কায়েদ-ই-আজম ট্রফি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকল্পে মধ্য পাঞ্জাব দলের সদস্যরূপে মনোনীত হন। ২০১৯-২০ মৌসুমের ন্যাশনাল টি২০ কাপ প্রতিযোগিতাকে ঘিরে অক্টোবর, ২০১৯ সালে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) কর্তৃপক্ষ ছয়জন খেলোয়াড়ের অন্যতম হিসেবে তাকে পর্যবেক্ষণে রাখে। ১৩ অক্টোবর, ২০১৯ তারিখে ২০১৯-২০ মৌসুমের ন্যাশনাল টি২০ কাপ প্রতিযোগিতায় মধ্য পাঞ্জাবের সদস্যরূপে টুয়েন্টি২০ অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয় তার।
নাসিম ‘শাহেনশাহ’
একটা গোলাকার আবরণ। তাঁর কেন্দ্রবিন্দু যেই ছেলেটা সে তো কেবল পার করেছেন কৈশরের গণ্ডি। আর তাঁকে ঘিরে দাঁড়িয়ে থাকা বাকি সবাই এগিয়ে। বয়স অথবা অভিজ্ঞতায়। টি-টোয়েন্টিতে ষাট খানা উইকেট রয়েছে হাসান আলীর পকেটে। সে হাসান আলী এগিয়ে এলেন সবুজ রাঙা এক টুপি হাতে। চড়িয়ে দিলেন ১৯ বছর বয়সী নাসিম শাহের মাথায়। আর অমনি একটা স্মিত হাসি ছড়িয়ে গেল তাঁর মুখে।
টেস্ট অভিষেকটা হয়েছিল ষোল বছর না পেরুতেই। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে তিনি অজি ব্যাটারদের বেশ ভুগিয়েছিলেন। উইকেটের খাতাটা ঠিক ততটা সমৃদ্ধ করে ফেলতে পারেননি। তবে কাঁপন ধরিয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটারদের মনে। কিশোর একজন বোলার খেলছেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের বাঘা একটা দলের বিপক্ষে। স্নায়ুচাপটা সামলে রাখাটা তখনও নিশ্চয়ই আয়ত্তে আসেনি।
তিনি ধীরে ধীরে বুঝতে শুরু করলেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের পরিবেশ। মাঝে ওয়ানডে অভিষেকটাও হয়ে যায় তাঁর। তিনি অপেক্ষায় ছিলেন তিন ফরম্যাটের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ হতে। সে সময়টা এসে গেল তাঁর। তবে মঞ্চটা যে এবার বিশাল বড়। মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্বের মঞ্চ। জাতীয় দলের হয়ে কোন একটা ফরম্যাটে অভিষেক হওয়াটাই তো বেশ আনন্দের। জাতীয় দলই তো এক সুবিশাল ক্যানভাস।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট শুধু রঙের জোগানটা দেয়। আর এশিয়া কাপের মত টুর্নামেন্টগুলো সে ক্যানভাস আর রঙের মিশ্রন ঘটানোর একটা সুযোগ। টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের শুরুতেই সে সুযোগ নিজের হাতে সামনে পেয়ে গেলেন নাসিম শাহ। এই অভিষেকটা চির অমলিন থেকে যাবে নাসিমের স্মৃতিতে। এই অভিষেকের তো আরও এক মাহাত্ম রয়েছে। ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ নিয়ে তো আর নতুন করে কিছু বলবার নেই।
তেমনই এক ম্যাচেই অভিষেকের ক্যাপটা নিজ মাথায় পরে নিলেন ১৯ বছর বয়সী নাসিম শাহ। তবে এই সুযোগটা হয়ত তিনি পেতেন না। পাকিস্তানের এই সময়ের সেরা পেসার শাহীন শাহ আফ্রিদির ইনজুরি তাঁকে সে সুযোগটি করে দেয়। তিনি নিজের ভাগ্যকে হয়ত এ জন্যে পিঠ চাপড়ে দিতেই পারেন। পাকিস্তানের সেরা বোলারের পরিবর্তে তাঁকে যোগ্য মনে করেছে টিম ম্যানেজমেন্ট। এর থেকে বড় কিছু হয়ত নাসিম শাহের মত তরুণ প্রত্যাশাও করেন না।
একটা বার চিন্তা করুণ, এশিয়া কাপের মত মঞ্চে তাঁর অভিষেক, তাও আবার ভারতের বিপক্ষে। চিরপ্রতিদ্বন্দীদের বিপক্ষে তিনি মাঠে নেমেছেন আবার সময়ের সেরা বোলারের বদলে। ইতোমধ্যেই তো নাসিমের অভিষেকটা মহিমান্বিত হয়ে গেছে বহুভাবেই। তবে নাসিমের মধ্যে রয়েছে নিজেকে ছাড়িয়ে যাওয়ার ক্ষুধা। নিজের একটা ছাপ ফেলে রেখে যেতে বদ্ধপরিকর তিনি। তাইতো ইনিংস শুরুতেই তিনি আঘাত হানেন।
মায়ের দোয়ায় আমি এ রেকর্ড গড়তে পেরেছি: নাসিম শাহ
বাংলাদেশের বিপক্ষে রাওয়ালপিন্ডি টেস্টে হ্যাটট্রিক করা পাকিস্তানের ১৬ বছর বয়সী তরুণ পেসার নাসিম শাহ বলেন, আমার মা সারাক্ষণ আমার জন্য মোনাজাত করছিলেন, যে কারণে আমি হ্যাটট্রিক করতে পেরেছি।
বাংলাদেশ দলের বিপক্ষে রাওয়ালপিন্ডি টেস্টে হ্যাটট্রিকের ইতিহাস গড়েন মাত্র ১৬ বছর বয়সী পাকিস্তান পেসার নাসিম শাহ। পাকিস্তানের চতুর্থ বোলার হিসেবে এ রেকর্ড গড়েন তরুণ এ পেসার।
এর আগে পাকিস্তানের কিংবদন্তি ক্রিকেটার ওয়াসিম আকরাম ১৯৯৯ সালের মার্চে এশিয়ান টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের তৃতীয় খেলায় ও ফাইনাল খেলায় লাহোর এবং একই মাসে ঢাকার বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে শ্রীলংকার বিপক্ষে পরপর দুই টেস্টে হ্যাটট্রিকের ইতিহাস গড়েন।
২০০০ সালের জুনে শ্রীলংকার গল আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে স্বাগতিক লংকানদের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করেন পাকিস্তানের তারকা পেসার আব্দুল রাজ্জাক। তার ঠিক দুই বছর পর ২০০২ সালের মার্চে লাহোরে সেই একই প্রতিপক্ষ শ্রীলংকার বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করেন পাকিস্তানের তারকা পেসার মোহাম্মদ সামি। তিন বছরে (১৯৯৯-২০০২) চার সেঞ্চুরির ১৮ বছর পর পাকিস্তানের চতুর্থ বোলার হিসেবে পঞ্চম হ্যাটট্রিক করেছেন নাসিম শাহ।
৭ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডিতে শুরু হওয়া টেস্টের তৃতীয় দিনের শেষ সেশনে বাংলাদেশ ব্যাটসম্যান নাজমুল হোসেন শান্ত, তাইজুল ইসলাম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের উইকেট শিকারের মধ্য দিয়ে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন নাসিম শাহ। তার হ্যাটট্রিকের রেকর্ড গড়া টেস্টে বাংলাদেশ ইনিংস ও ৪৪ রানের ব্যবধানে হেরে যায়।
১৬ বছর ৩৫৮ দিন বয়সে হ্যাটট্রিকের ইতিহাস গড়া নাসিম শাহ বলেন, টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে সবচেয়ে কম বয়সী বোলার হিসেবে এ হ্যাটট্রিকের ইতিহাস গড়া সত্যিই অসাধারণ। বিশেষ করে নিজের দেশের সমর্থকদের সামনে এই রেকর্ড গড়তে পারার আলাদা বিশেষত্ব রয়েছে।
প্রসঙ্গত, নাসিম শাহর আগে বাংলাদেশের সাবেক তারকা অলরাউন্ডার অলক কাপালি টেস্ট ক্রিকেটের সর্বকনিষ্ঠ বোলার হিসেবে হ্যাটট্রিকের ইতিহাস গড়েছিলেন। তিনি ১৯ বছর ২৪০দিন বয়সে হ্যাটট্রিক করেন।
নাসিম শাহ, অগ্রগামী অগ্নিবীনা
তারুণ্য, গতি, দলের প্রতি অসীম নিবেদন। এ তিনের মিশেলে পাকিস্তানের নতুন এক সেনসেশনের নাম নাসিম শাহ। অবশ্য ‘নতুন’ বলাটা এক অর্থে ভুল বলা হলো। কারণ সাদা বলের শুরুটা এ বছরে হলেও লাল বলের ক্রিকেটে নাসিম শাহ আছেন ২০১৯ সাল থেকেই। বলে রাখা ভাল, টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসের সর্ব-কনিষ্ঠতম হ্যাটট্রিকম্যান হলেন এই নাসিম। মাত্র ১৬ বছর বয়সে তাঁর করা সেই হ্যাটট্রিকের ভুক্তভোগী ছিল বাংলাদেশ।
১৯ বছর বয়সী নাসিমের চেহারায় এখনো বেবি ফেসটা কাটেনি। কিন্তু তাতে কী! নিয়মিত ৯০ মাইল গতিতে বল করা নাসিম শাহ যেকোনো দলের ব্যাটিং লাইনআপ গুড়িয়ে দেওয়ার সামর্থ্য রাখে। বাবর আজমের কথাতেও মেলে প্রশংসার সুর।
দলের সেরা পেসার শাহিন শাহ আফ্রিদিকে তিনি মিস করেছেন কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘দলের জন্য শাহিন শাহ তো অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ বোলার। তাকে দলে না পাওয়াটা দুর্ভাগ্যজনক। কিন্তু নাসিম শাহ যেভাবে ভারতের বিপক্ষে বল করেছে তাতে সত্যি বলতে আমি সেভাবে আফ্রিদিকে মিস করিনি। বলা যেতে পারে নাসিম শাহই ওর অভাবটা বুঝতেই দেয়নি আমাদের।’
সবে মাত্র কৈশোর পেরোনো নাসিম ক্রিকেট বলে বল করা শুরু করেছেন ১৪ বছর বয়সে। শুরুর গল্পটার সূচনা লিখেছিল লাহোরের আব্দুল কাদির ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট একাডেমি। পাকিস্তানের কিংবদন্তি লেগ স্পিনার আব্দুল কাদিরের নামে এ ক্রিকেট একাডেমি টা পরিচালনা করেন তারই পুত্র সুলাইমান৷
নাসিম শাহর বেড়ে ওঠা পাকিস্তানের লোয়ার দির অঞ্চলে। লাহোর থেকে ৬০০ কিলোমিটার দূরের অঞ্চলটি মূলত খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের পাহাড়প্রধান একটি এলাকা। কৃষিকাজ করেই এ এলাকার মানুষ জীবিকা নির্বাহ করে। এ পরিবেশ থেকে বেড়ে ওঠা কঠিন হবে ভেবে ১৪ বছর বয়সেই নাসিম শাহর চাচা তাকে লাহোরে নিয়ে আসেন। এখানে এসে তিনি আব্দুল কাদির ইন্টারন্যামে ক্রিকেট একাডেমিতে ভর্তি করিয়ে দেন।
নাসিম শাহর তখন ক্রিকেট খেলার দৌড় টেপ টেনিসে বোলিং করা পর্যন্ত। ক্রিকেট বল তখনো হাতেই নেওয়া হয়নি তাঁর। কিন্তু ক্রিকেট বল হাতে নিয়েই একাডেমির সবাইকে অবাক করে দেন সে সময়ের ১৪ বছর বয়সী নাসিম শাহ। কাদির পুত্র সুলাইমান নাসিমের পেস মুভমেন্ট আর অ্যাকশন দেখে বেশ বিস্মিত হন। কারণ সাধারণত এত কম বয়সে কাউকে এত দ্রুত পেসে বোলিং করতে দেখা যায় না।
বাংলাদেশের মুখোমুখি
শুরুতে তাকে ২০২০ সালের আইসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপে পাকিস্তান দলের সদস্যরূপে অন্তর্ভূক্তি করা হয়। কিন্তু, টেস্ট ক্রিকেটে দূর্দান্ত সূচনা করায় তার নাম প্রত্যাহার করে নেয়া হয়। জানুয়ারি, ২০২০ সালে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) লিখিত বিবৃতিতে তাকে অনূর্ধ্ব-১৯ দল থেকে নাম প্রত্যাহারের কথা জানায়।
জানুয়ারি, ২০২০ সালে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের নেতৃত্বে বাংলাদেশ দল পাকিস্তান গমন করে। ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ তারিখে সফরকারী বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টে দূর্দান্ত ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনে সচেষ্ট হন। ১৬ বছর ৩৫৯ দিন বয়সে সর্বকনিষ্ঠ বোলার হিসেবে টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসের ৪৫তম হ্যাট্রিক করেন। রাওয়ালপিন্ডি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ঐ টেস্টে নাজমুল হোসেন শান্ত ও তাইজুল ইসলামকে এলবিডব্লিউ এবং মাহমুদুল্লাহ রিয়াদকে হারিস সোহেলের হাতে তালুবন্দী করেন।
আন্তর্জাতিক তথ্য | |
---|---|
জাতীয় দল |
|
টেস্ট অভিষেক (ক্যাপ ২৩৭) |
২১ নভেম্বর ২০১৯ বনাম অস্ট্রেলিয়া |
শেষ টেস্ট | ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০ বনাম বাংলাদেশ |
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | |||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
|
sourse: samakal.com: jugantor: khela71.com: sportzwiki :wikipedia...
What's Your Reaction?






