মারভান আতাপাত্তু এর জীবনী Biography of Marvan Atapattu

মারভান আতাপাত্তু এর জীবনী Biography of Marvan Atapattu

May 29, 2025 - 12:37
Jun 20, 2025 - 18:13
 0  1
মারভান আতাপাত্তু এর জীবনী  Biography of Marvan Atapattu

ব্যক্তিগত তথ্য

পূর্ণ নাম

মারভান স্যামসন আতাপাত্তু

জন্ম

২২ নভেম্বর ১৯৭০ (বয়স ৫৪)
কালুতারা, সিলন

ব্যাটিংয়ের ধরন

ডানহাতি

বোলিংয়ের ধরন

ডানহাতি লেগ স্পিন

ভূমিকা

উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান, কোচ

মারভান স্যামসন আতাপাত্তু (সিংহলি: මාවන් අතපත්තු; জন্ম: ২২ নভেম্বর, ১৯৭০) কালুতারায় জন্মগ্রহণকারী সাবেক শ্রীলঙ্কান আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ও কোচ। উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে তিনি শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দলে খেলেছেন। ডানহাতি ব্যাটিং ও লেগ স্পিন বোলিংয়ে দক্ষ আতাপাত্তু শ্রীলঙ্কা দলের অধিনায়কেরও দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।

খেলোয়াড়ী জীবন শেষে মারভান আতাপাত্তু ইন্ডিয়ান ক্রিকেট লিগে অংশগ্রহণ করেন ও দিল্লি জায়ান্টসের অধিনায়ক ছিলেন। কানাডা  সিঙ্গাপুর জাতীয় ক্রিকেট দলের কোচের দায়িত্ব পালন করেছেন। শ্রীলঙ্কা দলের অন্তর্বর্তীকালীন কোচ হিসেবে এপ্রিল, ২০১৪ সাল থেকে দায়িত্ব পালনের পর পরবর্তীতে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সালে তাকে জাতীয় দলের প্রধান কোচের মর্যাদা দেয়া হয়। সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সাল পর্যন্ত এ দায়িত্বে ছিলেন।

প্রারম্ভিক জীবন

খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী মারভান আতাপাত্তুকে শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট ইতিহাসে অন্যতম সঠিকমানের ব্যাটসম্যানরূপে গণ্য করা হয়ে থাকে। গলের মাহিন্দ কলেজে অধ্যয়ণকালীন সময়ে ক্রিকেটের সাথে জড়িয়ে পড়েন। সেখানে তার ক্রিকেট কোচ ছিলেন মেজর জি. ডব্লিউ. এস. ডি সিলভা। তারপর তিনি কলম্বোর আনন্দ কলেজে অধ্যয়ন করেন ও পি. ডব্লিউ. পেরেরা’র পরিচালনায় ক্রিকেট খেলা চালিয়ে যান। পেশাজীবি অ্যাকাউন্টেন্ট নেলুনি আতাপাত্তুকে বিয়ে করেন। তাদের সংসারে দুই কন্যা রয়েছে।

খেলোয়াড়ী জীবন

নভেম্বর, ১৯৯০ সালে বিংশতিতম জন্মদিনের পরপরই টেস্টে অভিষেক ঘটে আতাপাত্তুর। তার প্রথম ছয় ইনিংসেই তিনি শূন্য রানে আউট হন ও একটিতে মাত্র ১ রান সংগ্রহ করেন। কিন্তু পরবর্তীতে মাইক অ্যাথারটন, গ্রাহাম গুচ, লেন হাটন, সাঈদ আনোয়ার, ওয়াসিম আকরামের ন্যায় প্রমূখ ক্রিকেট প্রতিভাদের সাথে নিজেকেও সামিল করেন যারা টেস্ট অভিষেকেই শূন্য রান করেছিলেন। পরবর্তী ১১ ইনিংসে তার সর্বোচ্চ রান উঠে মাত্র ২৯। কিন্তু টেস্ট অভিষেকের ৭ বছর পর ১০ম টেস্টে ভারতের বিপক্ষে তিনি তার প্রথম সেঞ্চুরি হাঁকান। সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে ২২ টেস্টে শূন্য রান ও ৪ বার জোড়া শূন্য পান। ২০০১ সালে কলম্বোতে অনুষ্ঠিত ২য় টেস্টে বাংলাদেশের বিপক্ষে মারভান আতাপাত্তু ও মাহেলা জয়াবর্ধনে এ দুইজন ব্যাটসম্যান টেস্ট ক্রিকেট থেকে রিটায়ার্ড আউট হয়ে উদাহরণের সূচনা করেন। ২০০৪ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে অনুষ্ঠিত টেস্টে নিজস্ব সর্বোচ্চ ২৪৯ করেন। এসময় কুমার সাঙ্গাকারা’র সাথে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ৪৩৮ রান সংগ্রহ করেছিলেন।

নাগপুরে ভারতের বিপক্ষে একদিনের আন্তর্জাতিকে অভিষিক্ত হন। এপ্রিল, ২০০৩ সালে শ্রীলঙ্কার একদিনের আন্তর্জাতিক দলের অধিনায়ক মনোনীত হন।

মারভান ‘মারভেলাস’ আতাপাত্তু

নয় ইনিংসে ছয়টি ডাকে শুরু, এরপর ছয়টি ডাবল সেঞ্চুরি!- অনেকেই অভিযোগের সুরেই বলেন, ওকে আর কত সুযোগ দেবেন? ওর কী এমন আছে যে ওকে এত সুযোগ দেয়া হয়!

নয় ইনিংসে ছয়টি ডাকে শুরু, এরপর ছয়টি ডাবল সেঞ্চুরি!- অনেকেই অভিযোগের সুরেই বলেন, ওকে আর কত সুযোগ দেবেন? ওর কী এমন আছে যে ওকে এত সুযোগ দেয়া হয়!

এই ঘটনার কিছু চমকপ্রদ উদাহরণ আছে যা শুনলে আপনার মনে হবে, ক্রিকেট মাঠে যেসব থিংকট্যাংক আছে তাদের কিছুটা হলেও জ্ঞান আপনার আমার থেকে বেশি।

সাংবাদিকরা যে ভাল তাকে ভাল বলতে পারেন, যে খারাপ তাঁকে খারাপ বলতে পারেন, যে মাঝারি তাকে মাঝারিও বলতে পারেন। কিন্তু ক্রিকেটারের ভবিষ্যৎ বলে দেয়া, সেটা মুশকিল (ঝড়ে বক মরা)।

আবার শুধু প্রতিভার মূল্যায়ন করলে, মেসি আর রোনালদোকে পাশাপাশি দাঁড় করালে রোনালদোকে অনেক কোচ বাতিলই করে দেবেন। সাকিবকেও তাই। সাকিবের ক্রিকেটিং ব্রেন ভাল তার মানে এই না যে সাকিবের প্রতিভা আছে, সাকিবের যেটা আছে সেটা হল সময়ের কাজ সময়ে করার বিচক্ষণতা। কাজকে কাজ হিসেবে দেখার বাস্তবিক চিন্তাধারা।

এদিক থেকে ভাবলে অনেকের ক্যারিয়ারই আসলে ব্লুম করার কথা না। শুধু পারফরম্যান্স বিবেচনা করলে, মেরিট না দেখলে।

আজকে চলুন একটা গল্প বলি!

‘ক্রিকেট ইতিহাসেরই অন্যতম সেরা টেস্ট ব্যাটসম্যান আফসোস করে বলেন যে আমার গড়টা ৪০ থেকে গেল কিছু বাজে ইনিংসের কারণে। এখন দেখেন বড় ব্যাটসম্যানরা ৫০ এর নিচে গড়ে ব্যাটই করে না। ভাগ্যিস আমার কিছু ডাবল সেঞ্চুরি ছিল।’

(ক্রিকেট মান্থলি, ২০২০)

‘সর্বোচ্চ স্তরের ক্রিকেটে চাপ থাকে! থাকবেই। সংবাদ মাধ্যম, একাদশে আছি কি না, ক্রিকেট বোর্ড আমাকে নিয়ে কী ভাবছে!’

(ক্রিকেটমান্থলি, ২০২০)

এসব কথাই বলেন, ক্রিকেটের অন্যতম সেরা টেস্ট ব্যাটসম্যান।

মারভেলাস আতাপাত্তু! আমি যখন ক্রিকেট মন দিয়ে দেখা শুরু করি প্রতিটা ম্যাচ। বল বাই বল, তখনকার প্রিয় তিনজন টেস্ট ব্যাটসম্যানদের একজন, বাকি দুজন বোয়েটা ডিপেনার ও ইউসুফ।

আতাপাত্তু ছিলেন খানিকটা অন্য ঘরানার। ইন্ট্রোভার্ট। সামাজিক তো মোটেই না। এমনকি তার বর্তমান জীবন সম্পর্কে জানলেই টের পাবেন কী পরিমাণ ঘরকুনো এই লোক।

ক্রিকেট মান্থলিকে তিনি বলেন, তাঁর বর্তমান জীবনের পুরোটা জুড়ে তার স্ত্রী ও কন্যা।

লেখার শুরু থেকে মাঝের পথে এই আতাপাত্তু নিয়ে গল্পের কারণ হচ্ছে নাজমুল হোসেন শান্তর ৩০০+ বল খেলা। শান্ত সেঞ্চুরি করেছেন, হ্যাঁ সেটা পরিসংখ্যানের খাতায় তার অর্জন। কিন্তু আমার চোখে বড় অর্জন শান্ত উইকেটে আছেন। আজ সকালেও ধৈর্য্যের সাথে ডিফেন্স করছেন। বাজে বলে রান বের করছেন। বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসের মাত্র সপ্তম ব্যাটসম্যান তিনি যিনি এক ইনিংসে তিনশো বল খেলেছেন।

এই প্রসঙ্গে সবচেয়ে প্রাসঙ্গিক ক্যারেকটার যে মারভান আতাপাত্তু সেটা আমাকে মনে করিয়ে দেন তুহিন সাইফুল ভাই। গতকালই ফোন দিয়ে বলেন, শান্ত-সাদমান-সাইফ এই ঘরানার ক্রিকেটারদের মানসিক একটা ব্যাকিং প্রয়োজন হয়।

আমারও তাই মনে হয়, এক হচ্ছে এরা গ্ল্যামারাস না, এদের সহজেই টার্গেট করা যায় কারণ এদের প্যাশনেট ভক্ত গোষ্ঠী নেই তাই বাঙ্গালি মধ্যবিত্ত তার যাবতীয় ব্যক্তি জীবনের ফ্রাস্ট্রেশন এদের দেখে বা সাকিব আল হাসানের পানি টানা নিয়ে টিটকারি মেরে কাটানোর চেষ্টা করে থাকেন।

আতাপাত্তুও ছিলেন এমন এক ব্যাটসম্যান। যিনি ক্যারিয়ারের প্রথম নয় ইনিংসে মেরেছেন ৬টি ডাক! এই নয় ইনিংসে তার ব্যাটে আসে ৪৮ রান!

কিন্তু তিনি দমেননি! বাদ পড়েছেন বটে। আবার ফিরেছেন। এই ফেরাতেই তার বোর্ডের কৃতিত্ব। যে তাকে ফেরানোর সাহস বোর্ডের ছিল। পরের বারে সে প্রতিদানও দিয়েছেন।

কোচিং

শ্রীলঙ্কার ফিঙ্গারা ক্রিকেট একাডেমিতে ২০০৯ সালে কোচিংয়ের দায়িত্ব পান। ঐ বছরেরই শুরুতে কানাডার ব্যাটিং কোচ মনোনীত হন ও দলকে ২০১১ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপে উত্তরণ ঘটাতে প্রভূতঃ সহায়তা করেন। ২০১০ সালে সিঙ্গাপুর দলে এক বছর মেয়াদের জন্য প্রধান কোচরূপে মনোনীত হন যা জাতীয় পর্যায়ে প্রথমবারের মতো পূর্ণাঙ্গকালীন কোচিংয়ে অংশ নেন। নেপালে অনুষ্ঠিত বিশ্ব ক্রিকেট লিগের পঞ্চম বিভাগে দলটি তৃতীয় স্থান দখল করে ও ২০১২ সালের বিশ্ব লিগে একই অবস্থানে থাকে।

এপ্রিল, ২০১১ সালে বিশ্বকাপ শেষে আতাপাত্তু শ্রীলঙ্কার ব্যাটিং কোচ মনোনীত হন। অন্তর্বর্তীকালীন কোচ স্টুয়ার্ট ল, চম্পকা রামানায়েকে  রুয়ান কালপেগের সাথে ইংল্যান্ড সফর করেন। দলের প্রধান কোচের দাবীদার থাকা স্বত্ত্বেও ২০১৩ সালে পল ফারব্রেসকে এ দায়িত্বভার অর্পণ করা হয়। এ সময় তিনি দলের সহকারী কোচের দায়িত্বে ছিলেন। ২০১৪ সালে অপ্রত্যাশিতভাবে ফারব্রেস চলে যান। ফলশ্রুতিতে দলের অন্তর্বর্তীকালীন কোচ নিযুক্ত হন তিনি। এ সময়ে ১৬ বছরের মধ্যে ২০১৪ সালে ইংল্যান্ড সফরে প্রথমবারের মতো ১-০ ব্যবধানে টেস্ট সিরিজ জয় পায়। সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে দলের প্রধান কোচ হন যা স্থানীয় কোচ হিসেবে ১৫ বছরের মধ্যে প্রথম ছিল। সফরকারী ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৫-২ ব্যবধানে ওডিআই সিরিজ জয় একমাত্র স্বার্থকতা ছিল। কিন্তু পাকিস্তান ও ভারতের বিপক্ষে উপর্যুপরি টেস্ট সিরিজে পরাজয়ের পর সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সালে পদত্যাগ করেন।

আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
  • শ্রীলঙ্কা (১৯৯০ - ২০০৭)
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ৪৬)
২৩ নভেম্বর ১৯৯০ বনাম ভারত
শেষ টেস্ট ১৬ নভেম্বর ২০০৭ বনাম অস্ট্রেলিয়া
ওডিআই অভিষেক
(ক্যাপ ৫৯)
১ ডিসেম্বর ১৯৯০ বনাম ভারত
শেষ ওডিআই ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০০৭ বনাম ভারত

খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট ওডিআই এফসি এলএ
ম্যাচ সংখ্যা ৯০ ২৬৮ ২২৮ ৩২৯
রানের সংখ্যা ৫,৫০২ ৮,৫২৯ ১৪,৫৯১ ১০,৮০২
ব্যাটিং গড় ৩৯.০২ ৩৭.৫৭ ৪৮.৭৯ ৩৯.৪২
১০০/৫০ ১৬/১৭ ১১/৫৯ ৪৭/৫৩ ১৮/৭১
সর্বোচ্চ রান ২৪৯ ১৩২* ২৫৩* ১৩২*
বল করেছে ৪৮ ৫১ ১,৩০২ ৮১
উইকেট ১৯
বোলিং গড় ২৪.০০ ৩৬.৪২ ৬৪.০০
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট - -
সেরা বোলিং ১/৯ ০/৪ ৩/১৯ ১/১২
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ৫৮/– ৭০/– ১৫০/– ৯১/–

sourse:khela71 : wikipedia...

What's Your Reaction?

Like Like 0
Dislike Dislike 0
Love Love 0
Funny Funny 0
Angry Angry 0
Sad Sad 0
Wow Wow 0