উইলহেলম রন্টজেন এর জীবনী | Biography of Wilhelm Röntgen

উইলহেলম রন্টজেন এর জীবনী | Biography of Wilhelm Röntgen

May 14, 2025 - 23:11
May 16, 2025 - 20:47
 0  1
উইলহেলম রন্টজেন এর জীবনী | Biography of Wilhelm Röntgen

উইলহেম রন্টজেন, বিস্ময়কর রঞ্জন রশ্মি এবং পদার্থবিদ্যার সর্বপ্রথম নোবেল বিজয়

ভিলহেল্ম র‌ন্টজেন:

২৭ মার্চ ১৮৪৫  – ১০ ফেব্রুয়ারি ১৯২৩) ছিলেন একজন জার্মান পদার্থবিজ্ঞানী, যিনি ১৮৯৫ খ্রিষ্টাব্দে সর্বপ্রথম রঞ্জন রশ্মির পরিসরে বিদ্যুৎচৌম্বকীয় বিকিরণের আবিষ্কার করেন, যা রঞ্জন রশ্মি বা এক্স-রশ্মি নামে পরিচিত। এই আবিষ্কারের জন্য ১৯০১ সালে তিনি সর্বপ্রথম পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। ২০০৪ খ্রিষ্টাব্দে রন্টজেনের আবিষ্কার এবং অবদানের স্মরণে আন্তর্জাতিক বিশুদ্ধ ও ফলিত রসায়ন সংস্থা (ইউপ্যাক) ১১১ পারমাণবিক সংখ্যাবিশিষ্ট তেজস্ক্রিয় ও কৃত্রিম মৌলের নামকরণ করে রন্টজেনিয়াম, যার একাধিক অস্থিতিশীল আইসোটোপ বিদ্যমান। তার নামে বিকিরণ প্রকাশের একক রন্টজেনের (R) নামকরণ করা হয়।

শিক্ষাজীবন

তার পিতা একজন জার্মান বণিক এবং কাপড় প্রস্তুতকারক ফ্রেডরিখ কনরাড রন্টজেন এবং মাতার নাম শার্লট কনস্ট্যানজে ফ্রোয়েইন। রন্টজেনের বয়স যখন তিন বছর, তখন পরিবারসহ তিনি নেদারল্যান্ডসে স্থানান্তরিত হন। তিনি ইউট্রেচ্ট টেকনিক্যাল স্কুলে প্রায় দুই বছরের জন্য পড়াশোনা করেন। ১৮৬৫ খ্রিষ্টাব্দে তাকে অন্যায়ভাবে হাই স্কুল থেকে বহিষ্কৃত করা হয়, যখন তার একজন শিক্ষক অন্য একজন শিক্ষকের একটি ব্যঙ্গচিত্রে বাধা দেন, যা অন্য কেউ এঁকেছিলেন।

হাই স্কুল ডিপ্লোমা ছাড়াই রন্টজেন শুধুমাত্র অভ্যাগত হিসেবে নেদারল্যান্ডসের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে পারতেন। ১৮৬৫ খ্রিষ্টাব্দে তিনি নিয়মিত ছাত্রদের জন্য প্রয়োজনীয় প্রমাণপত্র ছাড়াই ইউট্রেচ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদানের চেষ্টা করেছিলেন। তিনি জুরিখে অবস্থিত ফেডারেল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে (বর্তমানে ইটিএইচ জুরিখ নামে পরিচিত) ভর্তি হতে পারবেন শুনে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন এবং সেখানে যন্ত্র প্রকৌশল বিষয়ে পড়াশোনা শুরু করেন।[] ১৮৬৯ খ্রিষ্টাব্দে তিনি জুরিখ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টর অব ফিলোসফি ডিগ্রি অর্জন করেন। সেখানে তিনি প্রফেসর আগস্ট কুন্ড্টের একজন পছন্দের ছাত্র হয়ে ওঠেন, যাকে তিনি স্ট্রাসবার্গে সদ্য প্রতিষ্ঠিত জার্মান কায়েজার-ভিলহেম্মস-ইউনিভার্সিটি (বর্তমান স্ট্রাসবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়) পর্যন্ত অনুসরণ করেন।

কর্মজীবন

১৮৭৪ খ্রিষ্টাব্দে রন্টজেন স্ট্রাসবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন প্রভাষক নিযুক্ত হন। ১৮৭৫ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ওয়ার্টেমবার্গের হোহেনহেইমে অবস্থিত একাডেমি অফ এগ্রিকালচারের অধ্যাপক নিযুক্ত হন। ১৮৭৬ খ্রিষ্টাব্দে তিনি পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক হিসেবে পুনরায় স্ট্রাসবার্গে ফিরে আসেন এবং ১৮৭৯ খ্রিষ্টাব্দে তিনি গিসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যা বিভাগের চেয়ারপার্সন নিযুক্ত হন। ১৮৮৮ খ্রিষ্টাব্দে তিনি উরজবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের  এবং ১৯০০ খ্রিষ্টাব্দে বাভারিয়া সরকারের বিশেষ অনুরোধে মিউনিখ বিশ্ববিদ্যালয় এর বিশেষ অনুরোধে পদার্থবিদ্যার চেয়ার হিসেবে যোগদান করেন।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আইওয়ায় রন্টজেনের পরিবার ছিল এবং তিনি দেশত্যাগ করার পরিকল্পনা করছিলেন। তিনি নিউইয়র্ক শহরের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি অ্যাপয়েন্টমেন্ট গ্রহণ করেন এবং প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ার পূর্বেই তার পরিকল্পনা পরিবর্তন করে ট্রান্সআটলান্টিক টিকিট ক্রয় করেন। কর্মজীবনের বাকি সময় তিনি মিউনিখেই অতিবাহিত করেন।

রঞ্জন রশ্মির আবিষ্কার

১৮৯৫ খ্রিষ্টাব্দে ওয়ারজবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়ারজবার্গ ফিজিক্যাল ইনস্টিটিউটে তার পরীক্ষাগারে রন্টজেন বিভিন্ন ধরনের ভ্যাকুয়াম টিউব পরীক্ষার সরঞ্জামের (হেনরিক হার্টজ, জোহান হিটরফ, উইলিয়াম ক্রুকস, নিকোলা টেসলা এবং ফিলিপ লেনার্ডের যন্ত্র) মাধ্যমে বিদ্যুৎ প্রবাহিত করানোর বাহ্যিক প্রভাব নিয়ে গবেষণা করছিলেন। নভেম্বরের শুরুর দিকে তিনি লেনার্ডের টিউবগুলির একটি নিয়ে একটি পরীক্ষার পুনরাবৃত্তি করছিলেন যাতে ক্যাথোড রশ্মি প্রস্থান করার মতো একটি পাতলা অ্যালুমিনিয়ামের জানালা যুক্ত করা হয়েছিল, তবে ক্যাথোড রশ্মি উৎপন্নকারী শক্তিশালী স্থিরতড়িৎ ক্ষেত্রের প্রভাবে অ্যালুমিনিয়ামকে ক্ষয়প্রাপ্ত হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করার জন্য এতে একটি কার্ডবোর্ডের আবরণ যোগ করা হয়েছিল। রন্টজেন জানতেন যে কার্ডবোর্ডের আবরণ আলোর গতিপথে বাধা প্রদান করে, তবুও তিনি লক্ষ্য করলেন যে অদৃশ্য ক্যাথোড রশ্মিগুলি অ্যালুমিনিয়াম উইন্ডোর কাছে রাখা বেরিয়াম প্লাটিনোসায়ানাইড প্রলেপযুক্ত একটি ছোট কার্ডবোর্ডের পর্দায় প্রতিপ্রভা সৃষ্টি করে। রন্টজেন মনে করেন যে লেনার্ড টিউবের চেয়ে অত্যধিক ঘন কাচের প্রাচীরবিশিষ্ট ক্রুকস-হিটরফ টিউবও এই ফ্লুরোসেন্ট প্রভাবের একটি কারণ হতে পারে।

১৮৯৫ খ্রিষ্টাব্দের ৮ নভেম্বরের শেষ বিকেলে নিজস্ব ধারণা পরীক্ষার জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ রন্টজেন যত্ন সহকারে একটি কালো কার্ডবোর্ডের আবরণ তৈরি করেন, যেমনটা তিনি লেনার্ড টিউবে ব্যবহার করেছিলেন। তিনি ক্রুকস-হিটরফ টিউবটিকে কার্ডবোর্ড দিয়ে ঢেকে দিয়েছিলেন এবং স্থিরতড়িৎ আধান তৈরির জন্য একটি রুহম্কর্ফ কয়েলের সাথে তড়িৎদ্বার সংযুক্ত করেন। তিনি বেরিয়াম প্লাটিনোসায়ানাইড স্ক্রিন স্থাপন করার পূর্বে কার্ডবোর্ডের আবরণের স্বচ্ছতা পরীক্ষা করার জন্য ঘরটিকে অন্ধকার করে নিয়েছিলেন। টিউবের মাধ্যমে রুহম্কর্ফ কয়েল চার্জ প্রেরণ করার সময়, তিনি নিশ্চিত করেন যে কভারটি হালকা আঁট ছিল এবং পরীক্ষার পরবর্তী ধাপের জন্য প্রস্তুত হন। এই মুহূর্তে রন্টজেন টিউব থেকে কয়েক ফুট দূরে একটি বেঞ্চ থেকে একটি অস্পষ্ট ঝিলমিল লক্ষ্য করেন। নিশ্চিত হওয়ার জন্য, তিনি আরও বেশ কয়েকটি স্রাবের চেষ্টা করেন এবং প্রতিবার একই ঝিলমিল দেখেন। একটি ম্যাচ স্ট্রাইক করার মাধ্যমে তিনি বুঝতে পারেন যে বেরিয়াম প্লাটিনোসায়ানাইড স্ক্রিনের অবস্থান থেকে ঝিলমিল এসেছে যা তিনি পরবর্তীতে ব্যবহার করতে চেয়েছিলেন।

নিয়মিত ছায়ার গঠনের উপর ভিত্তি করে রন্টজেন একে "রশ্মি" বলে অভিহিত করেন। যেহেতু ৮ নভেম্বর শুক্রবার ছিল, তাই তিনি তার পরীক্ষাসমূহ পুনরাবৃত্তি করার জন্য সপ্তাহান্তিক অবকাশের সুযোগ নিয়েছিলেন এবং তার প্রথম নোট তৈরি করেন। পরের সপ্তাহগুলোতে তিনি অজানা রাশির জন্য ব্যবহৃত গাণিতিক প্রতীক ("X") ব্যবহার করে অস্থায়ীভাবে "এক্স-রে" নামে অভিহিত নতুন রশ্মির বৈশিষ্ট্যসমূহ অনুসন্ধান করা শুরু করেন। এ সময় এ নিবেদিতপ্রাণ পদার্থবিদ তার আহার এবং নিদ্রা পরীক্ষাগারেই সম্পন্ন করতেন। নতুন রশ্মিগুলো অনেক ভাষায় তার নামে "রন্টজেন রশ্মি" নামকরণ করা হয়। বাংল ভাষায় "এক্স-রশ্মি" বা "রন্টজেন রশ্মি"-কে "রঞ্জন রশ্মি" হিসেবেও অভিহিত করা হয়। এ রশ্মি সংশ্লিষ্ট এক্স-রে রেডিওগ্রামকে "রন্টজেনোগ্রাম" হিসেবে নামকরণ করা হয়।

বিজ্ঞানী উইলহেম রন্টজেনের এক্স-রে আবিষ্কার

জার্মান বিজ্ঞানী উইলহেম রন্টজেন একটা বায়ুশূন্য টিউব নিয়ে গবেষণা করছিলেন। টিউবটি থেকে যেন আলো বের হতে না পারে এ জন্য তিনি সেটার চারদিকে কালো কার্ডবোর্ড দিয়ে ঢেকে দেন। টিউবটির মধ্য দিয়ে বিদ্যুৎপ্রবাহ চালানোর সময় তিনি খেয়াল করেন দেয়ালে রাখা একটি বেরিয়াম প্লাটিনো-সায়ানাইড পর্দায় অদ্ভুত একটা কালো দাগ পড়েছে। এ রকম দাগ পর্দার ওপর শুধু আলো পড়লে সৃষ্টি হতে পারে। কালো কার্ডবোর্ড দিয়ে ঢাকা টিউব থেকে আলো বেরিয়ে আসার কোনো উপায় ছিল না। তাই তিনি আলোর উৎস খুঁজে বের করার চেষ্টা করেন।

কয়েকদিন ধরে বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর রন্টজেন নিশ্চিত হন টিউবটির ভেতর থেকেই কোনো একটা অদৃশ্য আলো বেরিয়ে আসছে। একদিন তিনি তাঁর স্ত্রীকে ডাকলেন। স্ত্রীকে বললেন পর্দার সামনে হাত মেলে ধরতে। তখন তাঁর স্ত্রীর হাতে বিয়ের আংটি পরা ছিল। টিউবের মধ্যে বিদ্যুৎ প্রবাহিত করে তিনি দেখতে পেলেন পর্দায় তাঁর স্ত্রীর হাতের হাড়ের ছবি ভেসে উঠেছে এবং বিয়ের আংটির স্থানে কালো রঙের ছায়া দেখা যাচ্ছে। উইলহেম বুঝতে পারলেন, তিনি একটা গুরুত্বপূর্ণ রশ্মি আবিষ্কার করে ফেলেছেন। অজ্ঞাত রশ্মিটির নাম তিনি দিলেন ‘এক্স-রে’।

১৮৯৫ সালের ৮ নভেম্বর যখন উইলহেম নিজের অজান্তে এক্স-রে আবিষ্কার করেন, তখন পদার্থবিজ্ঞানের অনেক মৌলিক বিষয়ও আবিষ্কৃত হয়নি। এক্স-রে আবিষ্কারের তত্ত্বের ওপর ভিত্তি করে অল্প দিনের মধ্যে পদার্থবিজ্ঞানে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আবিষ্কার করা হয়। বলা যায় এক্স-রে আবিষ্কারের ওপর ভিত্তি করে দাঁড়িয়ে গেছে পুরো বিংশ শতাব্দীর পদার্থবিজ্ঞান।

এক্স-রে একটা অতি-উচ্চ কম্পাঙ্কের তড়িৎচুম্বক তরঙ্গ। এর তরঙ্গদৈর্ঘ্য কম হলেও শক্তি অত্যন্ত বেশি। এক্স-রের তরঙ্গদৈর্ঘ্য সর্বোচ্চ ১০ ন্যানোমিটার, অর্থাৎ এটার সর্বোচ্চ তরঙ্গদৈর্ঘ্য ১ মিটারের ১০ কোটি ভাগের এক ভাগ। তরঙ্গদৈর্ঘ্য ছোট হওয়ায় এক্স-রে অদৃশ্য থাকে। তরঙ্গদৈর্ঘ্য যত কম হয় তার পদার্থ ভেদ করার ক্ষমতা তত বেশি। এক্স-রে আমাদের শরীর বা কম ঘনত্বের কোনো পদার্থ ভেদ করে প্রবাহিত হতে সক্ষম হলেও হাড় বা উচ্চ-ঘনত্বের পদার্থ দ্বারা প্রতিহত হয়। এক্স-রে কোনো চার্জ বহন করে না। ফলে কোনো ধরনের তড়িৎক্ষেত্র বা চৌম্বকক্ষেত্রে বাধা পড়ে না। এক্স-রে সাধারণ আলোর মতো প্রতিফলিত বা প্রতিসৃতও হয় না। বায়ুশূন্য টিউবের দুই প্রান্তে অত্যন্ত উচ্চ ভোল্টেজের বিদ্যুৎপ্রবাহ চালনা করার মাধ্যমে এক্স-রে উৎপন্ন করা হয়।

এক্স-রে থেকে ক্ষতিকর তেজস্ক্রিয় বিকিরণ ঘটে। এই বিকিরণ যেন ছড়িয়ে না পড়ে সেজন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়। টিউব থেকে উৎপন্ন এক্স-রে মানুষের শরীর বা কম ঘনত্বের কোনো পদার্থের একদিক দিয়ে প্রবেশ করে অন্যদিক দিয়ে বের হয়ে যায়। বের হয়ে যাওয়া রশ্মিগুলো থেকে রেডিওগ্রাফ বা চিত্র তৈরি করা হয়। এক্স-রে মানুষ বা কোনো পদার্থের ভেতর দিয়ে আসার সময় কিছু অংশ পদার্থটি দ্বারা শোষিত হয়। কী পরিমাণ শোষিত হয়েছে তার হিসেব থেকেই পদার্থটির চিত্র তৈরি করা হয়। এই প্রক্রিয়াটি এক সেকেন্ডেরও কম সময়ের মধ্যে সম্পন্ন হয়।

পুরস্কার এবং সম্মান

  • ১৮৯৬: রয়েল সোসাইটির রামফোর্ড পদক
  • ১৮৯৬: আকাদেমিয়া নাৎসিওনালে দেল্লে সিয়েনৎসের মাতেউচি পদক
  • ১৮৯৭: ফ্রাঙ্কলিন ইনস্টিটিউটের ইলিয়ট ক্রেসন পদক
  • ১৯০০: কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানে অনবদ্য অবদানের জন্য বার্নার্ড পদক
  • ১৯০১: রঞ্জন রশ্মি আবিষ্কারের জন্য পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার

১৯০১ খ্রিষ্টাব্দে রন্টজেন প্রথম পদার্থবিদ্যায় নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হন। পুরস্কারটি আনুষ্ঠানিকভাবে "অসাধারণ রশ্মি, যা পরবর্তীকালে তার নামকরণ করা হয়, আবিষ্কারের মাধ্যমে তিনি যে অসাধারণ সেবা প্রদান করেছেন তার স্বীকৃতিস্বরূপ"। অভিভাষণে লাজুক রন্টজেন নোবেল বক্তৃতা দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন। নোবেল পুরস্কার থেকে প্রাপ্ত অর্থের ৫০,০০০ সুইডিশ ক্রোনা তিনি তার বিশ্ববিদ্যালয়, উরজবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণার জন্যদান করে দেন। মারি এবং পিয়ের ক্যুরির মতোই রন্টজেন তার এক্স-রে আবিষ্কারের সাথে সম্পর্কিত পেটেন্ট নিতে অস্বীকার করেছিলেন। তিনি চেয়েছিলেন যে সমগ্র সমাজ এই ঘটনার ব্যবহারিক প্রয়োগ থেকে উপকৃত হোক। রন্টজেন এছাড়াও ১৯০০ খ্রিষ্টাব্দে বার্নার্ড মেডেল ফর মেরিটরিয়ার সার্ভিস ইন সাইন্স পদকে ভূষিত হন।[১৬]

২০০৪ খ্রিষ্টাব্দের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক বিশুদ্ধ ও ফলিত রসায়ন সংস্থা তার সম্মানে ১১১ পারমাণবিক সংখ্যাবিশিষ্ট মৌলিক পদার্থের রন্টজেনিয়াম (Rg) নামকরণ করেন। আন্তর্জাতিক বিশুদ্ধ ও ফলিত পদার্থ সংস্থা (IUPAP) ২০১১ খ্রিষ্টাব্দের নভেম্বর মাসে নামটি গ্রহণ করে।

১৮৯৭ খ্রিষ্টাব্দে তিনি বেঞ্জামিন ফ্র্যাঙ্কলিন কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত আমেরিকান ফিলোসফিক্যাল সোসাইটির একজন আন্তর্জাতিক সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি ১৯০৭ খ্রিষ্টাব্দে রয়েল নেদারল্যান্ডস একাডেমি অব আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সেসের একজন বিদেশী সদস্য নির্বাচিত হন

মৃত্যু: 

বিজ্ঞানের উন্নতির কথা বিবেচনা করে উইলহেম এক্স-রে আবিষ্কারের মেধাস্বত্ব বিনা মূল্যে দিয়ে গেছেন। এক্স-রে আবিষ্কার করার পর তিনি বিভিন্ন পদকে ভূষিত হন। ১৯০১ সালে নোবেল পুরস্কারের প্রবর্তন হলে তিনি সে বছর পদার্থবিজ্ঞানে সর্বপ্রথম নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। শেষ বয়সে ভীষণ অর্থকষ্টে ভুগে ১৯২৩ সালে ৭৭ বছর বয়সে ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে এই মহান বিজ্ঞানীর মৃত্যু হয়।

sourse, wikipedia

What's Your Reaction?

Like Like 0
Dislike Dislike 0
Love Love 0
Funny Funny 0
Angry Angry 0
Sad Sad 0
Wow Wow 0