জিসান আহমেদ মন্টির জীবনী - Biography of Jisan Ahmed
জিসান আহমেদ মন্টির জীবনী - Biography of Jisan Ahmed

জিসান আহমেদ মন্টি
কিছু সূত্র অনুযায়ী তিনি ১৯৭০ সালে ঢাকার খিলগাঁওয়ে জন্মগ্রহণ করেন। তার মা ছিলেন একজন স্কুল শিক্ষিকা। তাই তিনি মায়ের সঙ্গে মগবাজারে থাকতেন।
অপরাধ জীবন
১৯৯৭ সালের দিকে জিসান ও তার ছোট ভাই শামীম রামপুরায় গার্মেন্টেসের ঝুট ব্যবসা শুরু করেন। ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে আন্ডারওয়ার্ল্ডের সঙ্গে জিসানের পরিচয় হয়। এ সময় তিনি রামপুরার শাহজাদা গ্রুপের সঙ্গে মিলে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতেন। ২০০০ সালের দিকে মতিঝিলের খালেদ মাহমুদ ভুঁইয়া ও জিকে শামীমের সঙ্গে মিলে বিভিন্ন জুয়ার আসন পরিচালনা করতেন।সানরাইজ হোটেল হত্যাকাণ্ড
২০০৩ সালের ১৪ মে রাতে মালিবাগের সানরাইজ হোটেলে ১৫ লাখ টাকা চাঁদাবাজি করতে যান জিসান সেখানে তার বাহিনী পুলিশের ইন্সপেক্টর নুরুল আলম শিকদারসহ দুই পুলিশ সদস্যকে গুলি করে হত্যা করে। ওই ঘটনার পর পালানোর সময় মগবাজারে পুলিশের গুলিতে জিসান গ্রুপের ক্যাডার উপল নিহত হন। এ ঘটনার পরপরই জিসান আত্মগোপনে চলে যান।
আন্ডারওয়ার্ল্ডের শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান ফের আলোচনায়
পুলিশ আরও জানায়, গুদারাঘাট এলাকায় মেহেদী গ্রুপের এবং গুলশান ডিএনসিসি এলাকায় জিসান গ্রুপের আধিপত্য বেশি। সম্প্রতি ডিএনসিসি মার্কেটটি ভাঙার কাজ শুরু হয়। এই কাজটি পায় মেহেদী গ্রুপ। এলাকাটি জিসানের নিয়ন্ত্রণে থাকলেও মার্কেটের কাজ মেহেদী গ্রুপ পাওয়ায় দুগ্রুপের মধ্যে বিরোধ চরম আকার ধারণ করছে। দুই গ্রুপের বিরোধের বিষয়ে তদন্ত চালাতে গিয়ে পুলিশ মেহেদী ওরফে কলিংস গ্রুপের বেশ কয়েকজনের নাম পেয়েছে। তারা হলেন-বাড্ডা থানা আওয়ামী লীগের বড় সাঈদ, দক্ষিণ বাড্ডার দুলাল, ২১ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক মান্নান, একই ওয়ার্ডের ছাত্রলীগ সভাপতি ইমরান, ওই ওয়ার্ডের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ময়লা সাঈদ, আনন্দনগরের মালিক, দক্ষিণ বাড্ডার সজল, পোস্ট অফিস গলির পলক এবং অর্নব সাঈদ, আলাতুন্নেছা স্কুল রোডের রবিউল, কুমিল্লাপাড়া এলাকার কানি সোহেল, উত্তর বাড্ডার হেলার এবং পূর্ব বাড্ডার মবিনুল ইসলাম বাঁধন। সন্ত্রাসী গ্রুপের তিন সদস্য গ্রেফতারের পর তারা সবাই গা-ঢাকা দিয়েছে।
ইন্টারপোলের রেড নোটিশপ্রাপ্ত জিসান আহমেদ মন্টির জন্ম ১৯৭০ সালে। ২০০৩ সালের ১৪ মে রাজধানীর একটি হোটেলে দুজন ডিবি পুলিশ কর্মকর্তাকে হত্যার দায়ে অভিযুক্ত তিনি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রকাশিত ২৩ জন কালো তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসীর অন্যতম জিসান এখন দুবাইতে অবস্থান করছেন। ১৯৯৭ সালের দিকে জিসান ও তার ছোট ভাই শামীম রামপুরায় গার্মেন্টেসের ঝুট ব্যবসা শুরু করেন। ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে আন্ডারওয়ার্ল্ডের সঙ্গে জিসানের পরিচয় হয়। ওই সময় তিনি রামপুরার শাহজাদা গ্রুপের সঙ্গে মিলে বিভিন্ন অপরাধ তৎপরতা চালাতেন। মতিঝিলের খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া ও জিকে শামীমের সঙ্গে তিনি বিভিন্ন জুয়ার আসর পরিচালনা করতেন। ২০০৩ সালের ১৪ মে রাতে মালিবাগের সানরাইজ হোটেলে ১৫ লাখ টাকা চাঁদাবাজি করতে যান জিসান। সেখানে তার বাহিনী পুলিশের ইন্সপেক্টর নুরুল আলম শিকদারসহ দুই পুলিশ সদস্যকে গুলি করে হত্যা করেন। ওই ঘটনার পরপরই জিসান আত্মগোপনে চলে যান।
শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান দুবাইয়ে গ্রেফতার
গ্রেফতার হওয়ার সময় তার হাতে ছিল ভারতীয় পাসপোর্ট। সেখানে তার নাম লেখা ছিল আলী আকবর চৌধুরী। পরে এনসিবি ঢাকা আর এনসিবি দুবাই মিলে বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত যাচাই-বাছাইয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে, গ্রেফতার এই আলী আকবর চৌধুরীই বাংলাদেশের শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান।
উল্লেখ্য, গত মাসের শেষে একটি সংবাদপত্রের প্রতিবেদনে বলা হয়, শামীম ও খালেদকে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে জিসানের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পায় বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তখনই ভারতীয় পাসপোর্ট নিয়ে নতুন নামে জিসানের দুবাইয়ে অবস্থানের বিষয়ে নিশ্চিত হয় তারা।
সম্প্রতি ক্যাসিনোকাণ্ডে যুবলীগ নেতা খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া ও ঠিকাদার জি কে শামীম গ্রেফতার হওয়ার পর জিসানের নাম নতুন করে আলোচনায় আসে।
মহিউল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ পুলিশের তরফ থেকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তৈরি করে দুবাইয়ে পাঠানো হবে। পরে বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতা সেরে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ২০০১ সালে যে ২৩ ‘শীর্ষ সন্ত্রাসীর’ তালিকা করেছিল, জিসান আহমেদ ওরফে মন্টি তাদেরই একজন। এই পলাতক আসামিকে ধরিয়ে দেওয়ার জন্য পুরস্কারও ঘোষণা করা হয়েছিল।
গত শতকের শেষ এবং এ শতকের শুরুর দিকের বছরগুলোয় ঢাকার মতিঝিল, মালিবাগ, বাড্ডা, গুলশান, বনানীর ব্যবসায়ীদের কাছে জিসান ছিলেন আতঙ্কের নাম। তার চাঁদাবাজি ও টেন্ডারবাজির নানা গল্প সে সময় মানুষের মুখে মুখে ঘুরত।
২০০৩ সালের ১৪ মে ঢাকার মালিবাগে একটি হোটেলে জিসানকে গ্রেফতারের জন্য অভিযানে গিয়ে গুলিতে নিহত হন গোয়েন্দা পুলিশের দুই কর্মকর্তা। ওই হত্যাকাণ্ড দেশজুড়ে আলোচনার জš§ দেয়। এরপর জিসান গা-ঢাকা দেন এবং ভারত হয়ে দুবাইয়ে চলে যান বলে ধারণা করা হয়। তাকে ধরতে বাংলাদেশ পুলিশের অনুরোধে রেড নোটিস জারি করে ইন্টারপোল।
সে নোটিসে জিসানের বিরুদ্ধে হত্যা ও বিস্ফোরক বহনের অভিযোগ থাকার কথা বলা হয়েছে। বাংলাদেশের পাশাপাশি তার ডোমিনিকান রিপাবলিকের নাগরিকত্বও রয়েছে বলে সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে। দীর্ঘদিন দেশে না থাকলেও জিসান দুবাইয়ে বসেই ঢাকার অপরাধ জগতের অনেক কিছু নিয়ন্ত্রণ করছিলেন বলে বিভিন্ন সময় খবর এসেছে গণমাধ্যমে।
দুবাইয়ে অবস্থানরত ২৩ শীর্ষ সন্ত্রাসীর অন্যতম জিসান আহমেদ মন্টি ওরফে জিসানের অন্যতম সহযোগী মাজহারুল ইসলাম ওরফে শাকিলকে অস্ত্র ও গুলিসহ রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে র্যাব গ্রেফতার করেছে। শনিবার দুপুরে মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ডে র্যাবের একটি চেকপোস্টে তল্লাশির সময় সিএনজি অটোরিকশা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তার কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগজিন ও ছয় রাউন্ড গুলি উদ্ধার করেছে। তবে গ্রেফতার শাকিলের পরিবারের অভিযোগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) থেকে গত ২০ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ১১টার দিকে শাকিলকে ধরে নিয়ে যায় র্যাব সদস্যরা। অথচ শনিবার দুপুরে তাকে অস্ত্র ও গুলিসহ গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
What's Your Reaction?






