জিসান আহমেদ মন্টির জীবনী - Biography of Jisan Ahmed

জিসান আহমেদ মন্টির জীবনী - Biography of Jisan Ahmed

May 11, 2025 - 19:58
May 13, 2025 - 18:36
 0  1
জিসান আহমেদ মন্টির জীবনী - Biography of Jisan Ahmed

জিসান আহমেদ মন্টি

কিছু সূত্র অনুযায়ী তিনি ১৯৭০ সালে ঢাকার খিলগাঁওয়ে জন্মগ্রহণ করেন। তার মা ছিলেন একজন স্কুল শিক্ষিকা। তাই তিনি মায়ের সঙ্গে মগবাজারে থাকতেন।

অপরাধ জীবন

১৯৯৭ সালের দিকে জিসান ও তার ছোট ভাই শামীম রামপুরায় গার্মেন্টেসের ঝুট ব্যবসা শুরু করেন। ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে আন্ডারওয়ার্ল্ডের সঙ্গে জিসানের পরিচয় হয়। এ সময় তিনি রামপুরার শাহজাদা গ্রুপের সঙ্গে মিলে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতেন। ২০০০ সালের দিকে মতিঝিলের খালেদ মাহমুদ ভুঁইয়া ও জিকে শামীমের সঙ্গে মিলে বিভিন্ন জুয়ার আসন পরিচালনা করতেন।

সানরাইজ হোটেল হত্যাকাণ্ড

২০০৩ সালের ১৪ মে রাতে মালিবাগের সানরাইজ হোটেলে ১৫ লাখ টাকা চাঁদাবাজি করতে যান জিসান সেখানে তার বাহিনী পুলিশের ইন্সপেক্টর নুরুল আলম শিকদারসহ দুই পুলিশ সদস্যকে গুলি করে হত্যা করে। ওই ঘটনার পর পালানোর সময় মগবাজারে পুলিশের গুলিতে জিসান গ্রুপের ক্যাডার উপল নিহত হন। এ ঘটনার পরপরই জিসান আত্মগোপনে চলে যান।

আন্ডারওয়ার্ল্ডের শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান ফের আলোচনায়

আবারও আলোচনায় রাজধানীর আন্ডারওয়ার্ল্ডের পুরস্কার ঘোষিত শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান আহমেদ ওরফে জিসান। শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসানের সহযোগী মাজাহারুল ইসলাম ওরফে শাকিল মাজাহার র‌্যাবের হাতে ধরা পড়ার পর আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এখন টপটেরর বা শীর্ষ সন্ত্রাসীরা। রাজধানী ঢাকার এক সম্রাটকে হত্যার ছককষে দুবাই থেকে ঢাকায় আসার পর দুইটি পিস্তল ও গুলিসহ ধরা পড়েছে শাকিল মাজাহার। শাকিল মাজাহারের বস এই জিসান কে? তার অবস্থান কোথায়? ইন্টারপোলের মাধ্যমে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া চলছে বলেও জানিয়েছিল পুলিশ। কিন্তু শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান আহমেদের সর্বশেষ অবস্থান নিয়ে তৈরি অস্পষ্টতায় রহস্যের জট পাকাচ্ছে।
পুলিশ সদর দফতর সূত্রে এ খবর জানা গেছে। পুলিশ সদর দফতর সূত্রে জানা গেছে, জিসানের পুরো নাম জিসান আহমেদ মন্টি। ঢাকার আলোচিত যুবলীগ নেতা খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া ও জিকে শামীমের সঙ্গে মিলে অপরাধ জগত নিয়ন্ত্রণ করতেন জিসান। এই ত্রয়ীর সঙ্গে সুসম্পর্ক ছিল আরেক ক্যাসিনো গডফাদার ইসমাইল হোসেন স¤্রাটের। গত বছরের ৩ অক্টোবর সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে দুবাইয়ে তার গ্রেফতার হওয়ার খবর জানায় পুলিশ। এখন আর সরকার বা পুলিশের কেউ জিসানের অবস্থান নিয়ে প্রকাশ্যে কিছু বলছেন না। তখন দুবাইয়ের কূটনৈতিক সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে জানানো হয়, দুবাইয়ে পুলিশের হাতে আটক হয় জিসান। প্রায় এক সপ্তাহ পর্যন্ত পুলিশের হেফাজতে ছিলেন তিনি। তবে তিনি জামিন পেয়েছেন কি না, সে সম্পর্কে কূটনৈতিক ওই সূত্রের কাছে কোন তথ্য নেই।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, জিসানকে গত বছর অক্টোবরে দুবাই থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে। এরপর শোনা যাচ্ছে গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিটি জিসান ছিলেন না। অথবা জিসানের কাছ থেকে পাওয়া পাসপোর্টে তার অন্য নাম ছিল। পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একাধিক সূত্রে তখন জানা যায়, জিসান আহমেদের হাতে বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত ও ডমিনিকান রিপাবলিকের পাসপোর্ট রয়েছে। এই পাসপোর্ট নিয়ে তিনি এত দিন দুবাইয়ে অবস্থান করছিলেন। তার বিষয়টি ইন্টারপোলের সহায়তায় দুবাই পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় করছে বাংলাদেশ পুলিশ সদর দফতরের ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরো (এনসিবি)। জিসান নাম বদলে আলী আকবর চৌধুরী নামে ভারতীয় পাসপোর্ট সংগ্রহ করেন। দীর্ঘদিন ধরে তিনি আত্মগোপনে রয়েছেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, গত বছর অক্টোবরে যখন জিসান দুবাইয়ে গ্রেফতার হন তখন জামিনে মুক্তি পেয়েছেন বলে একাধিক সূত্রে খবর প্রকাশ পায়। খবরে বলা হয়, একজন বড় ব্যবসায়ীর জিম্মায় ওই দেশের একটি আদালত জামিন দিয়েছেন জিসানকে। জামিনে থাকা অবস্থায় জিসানকে দুবাই ছেড়ে অন্য কোন দেশে যাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে।
তবে এ বিষয়ে আপাতত কোন তথ্য পুলিশের কাছে নেই। দেশের কয়েকটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, দুবাই থেকে লন্ডনে গিয়ে বসবাস করছেন তিনি। পুলিশ সদর দফতরের সূত্রে জানা গেছে, জিসানকে আটক করা হলেও তার জামিন পাওয়াটা স্বাভাবিক। কেননা তিনি বাংলাদেশের পাসপোর্ট ফেলে দিয়েছেন। অন্য দেশের পাসপোর্ট ব্যবহার করছেন। যতটুকু জেনেছি জিসান বাংলাদেশের পাসপোর্ট ব্যবহার করে না। তাকে ফিরিয়ে আনতে হলে আগে অন্য দেশের পাসপোর্ট বাতিল করতে হবে। এ ছাড়া ভারত ও থাইল্যান্ড ছাড়া আর কোন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের অপরাধী প্রত্যর্পণ চুক্তি নেই। তবে জিসানের জামিনের বিষয়ে তিনি কিছু বলতে পারেননি। কুমিল্লার ছেলে জিসানের বেড়ে ওঠা ঢাকার রামপুরায়। ১৯৯৮-৯৯ সালের দিকে খিলগাঁও এলাকায় অস্ত্র হাতে নিয়ে খুনখারাবিতে জড়িয়ে পড়েন। ২০০১ সালের ২৬ ডিসেম্বর বিএনপি সরকার ২৩ শীর্ষ সন্ত্রাসীর তালিকা প্রকাশ করে। তাদের ধরিয়ে দিলে পুরস্কারও ঘোষণা করা হয়। সেই তালিকায় জিসানের নামও ছিল। এরপর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানের মুখে জিসান দেশ ছেড়ে চলে যান। এরপর তার নামে ইন্টারপোল রেড নোটিস জারি করে। ঢাকা মহানগর পুলিশের একজন কর্মকর্তা বলেন, রাজধানীর গুলশান, বনানী, পল্টন, মগবাজার-মালিবাগ, ফকিরাপুল, মতিঝিল এলাকায় দাবিয়ে বেড়াতেন তিনি। অভিজাত এসব এলাকার ব্যবসা ও সরকারী প্রতিষ্ঠানগুলোতে নিয়মিত চাঁদা তুলতেন তিনি। সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, ক্যাসিনো ব্যবসা, মাদক ব্যবসা সবই করতেন জিসান। 
একসময় ঢাকায় এলাকাভিত্তিক সন্ত্রাসী বাহিনীও গড়ে উঠেছিল তার। যাদের নাম শুনলে ভয়ে তটস্থ থাকত সবাই। দিনে-দুপুরে তারা চাঁদা চেয়ে চিরকুট পাঠাত। সঙ্গে পাঠাত কাফনের কাপড়। অনেকেই নীরবে দাবিকৃত সেই চাঁদা দিয়ে দিত। না দিলে জীবন দিতে হতো। তাদের সন্ত্রাস, দখল, চাঁদাবাজি, লুটতরাজ, সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে সাধারণ মানুষ। এক সময় এমন সন্ত্রাসীদের নামের তালিকা তৈরি করে প্রশাসন তাদের নাম দিয়েছিল ‘শীর্ষ সন্ত্রাসী’। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গত এক দশকে দেশের শীর্ষ ২৩ সন্ত্রাসীর নাম তালিকাভুক্ত করেছে। তাদের অন্যতম হলেন জিসান। তাকে ধরিয়ে দেয়ার জন্য পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছিল। রাজধানীর গুলশান, বনানী, বাড্ডা, ফকিরাপুল, পল্টন, মতিঝিলসহ বেশ কিছু অঞ্চলে তার একচ্ছত্র আধিপত্য ছিল। ওই সব এলাকার সরকারী ও বাণিজ্যিক ভবনগুলোতে নিয়মিত চাঁদাবাজি করতেন তিনি।
বাড্ডা থানার ওসি মোহাম্মদ ইয়াসিন গাজী যুগান্তরকে বলেন, এলাকায় চুরি ও ছিনতাই প্রতিরোধ টিম ডিউটি করার সময় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে, মধ্য বাড্ডা রাতুল মোর্শেদ এন্টারপ্রাইজ এলাকায় কিছু অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী অস্ত্র-গুলিসহ অবস্থান করছে। এমন তথ্যের ভিত্তিতে সেখানে অভিযান চালানো হয়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালানোর সময় তাদের গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের হেফাজত হতে পাঁচ রাউন্ড গুলি, একটি মোটরসাইকেল ও একটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা বিদেশে পলাতক শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান ওরফে হাজী গ্রুপের সক্রিয় সদস্য বলে স্বীকার করেছেন। গ্রেফতারকৃত চাকু সোহেলের বিরুদ্ধে রাজধানীর উত্তরখান এবং দক্ষিণখানসহ বিভিন্ন থানায় নয়টি মামলা আছে বলে ওসি জানান।
তদন্তসংশ্লিষ্টরা জানান, বাড্ডা এলাকায় শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসানের সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসাবে কাজ করে আবুল বাসার প্রকাশ ওরফে বাদশা (৪৫)। জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী তার নাম মো. আবুল বাশার। শনিবারের অভিযান চলাকালে বাদশা ঘটনাস্থলে ছিলেন। পুলিশ তাকে ধরতে না পারলেও মামলায় পলাতক আসামি হিসাবে উল্লেখ করেছে। বাদশার বাবার নাম জহির আলী। মা হজেরা বেগম। গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার চান্দিনায়। থাকেন বাড্ডা লিংক রোডে। তিনি বাড্ডা থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক। তার ব্যবসায়িক পার্টনার যুবলীগ নেতা জাকির ও ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর। প্রায় ১০ বছর ধরে তিনি জিসানসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী গ্রুপের কাছে অস্ত্র সরবরাহ করছেন। পুলিশের খাতায় তিনি চাঁদাবাজ এবং সন্ত্রাসী হিসাবে লিপিবদ্ধ হলেও তিনি কখনো গ্রেফতার হননি। যুবলীগ নেতা জাকির এবং মহারাজ তার সহযোগী হিসাবে কাজ করেন। তার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে গুদারাঘাট এবং দক্ষিণ বাড্ডার বিভিন্ন এলাকা।

পুলিশ আরও জানায়, গুদারাঘাট এলাকায় মেহেদী গ্রুপের এবং গুলশান ডিএনসিসি এলাকায় জিসান গ্রুপের আধিপত্য বেশি। সম্প্রতি ডিএনসিসি মার্কেটটি ভাঙার কাজ শুরু হয়। এই কাজটি পায় মেহেদী গ্রুপ। এলাকাটি জিসানের নিয়ন্ত্রণে থাকলেও মার্কেটের কাজ মেহেদী গ্রুপ পাওয়ায় দুগ্রুপের মধ্যে বিরোধ চরম আকার ধারণ করছে। দুই গ্রুপের বিরোধের বিষয়ে তদন্ত চালাতে গিয়ে পুলিশ মেহেদী ওরফে কলিংস গ্রুপের বেশ কয়েকজনের নাম পেয়েছে। তারা হলেন-বাড্ডা থানা আওয়ামী লীগের বড় সাঈদ, দক্ষিণ বাড্ডার দুলাল, ২১ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক মান্নান, একই ওয়ার্ডের ছাত্রলীগ সভাপতি ইমরান, ওই ওয়ার্ডের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ময়লা সাঈদ, আনন্দনগরের মালিক, দক্ষিণ বাড্ডার সজল, পোস্ট অফিস গলির পলক এবং অর্নব সাঈদ, আলাতুন্নেছা স্কুল রোডের রবিউল, কুমিল্লাপাড়া এলাকার কানি সোহেল, উত্তর বাড্ডার হেলার এবং পূর্ব বাড্ডার মবিনুল ইসলাম বাঁধন। সন্ত্রাসী গ্রুপের তিন সদস্য গ্রেফতারের পর তারা সবাই গা-ঢাকা দিয়েছে।

ইন্টারপোলের রেড নোটিশপ্রাপ্ত জিসান আহমেদ মন্টির জন্ম ১৯৭০ সালে। ২০০৩ সালের ১৪ মে রাজধানীর একটি হোটেলে দুজন ডিবি পুলিশ কর্মকর্তাকে হত্যার দায়ে অভিযুক্ত তিনি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রকাশিত ২৩ জন কালো তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসীর অন্যতম জিসান এখন দুবাইতে অবস্থান করছেন। ১৯৯৭ সালের দিকে জিসান ও তার ছোট ভাই শামীম রামপুরায় গার্মেন্টেসের ঝুট ব্যবসা শুরু করেন। ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে আন্ডারওয়ার্ল্ডের সঙ্গে জিসানের পরিচয় হয়। ওই সময় তিনি রামপুরার শাহজাদা গ্রুপের সঙ্গে মিলে বিভিন্ন অপরাধ তৎপরতা চালাতেন। মতিঝিলের খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া ও জিকে শামীমের সঙ্গে তিনি বিভিন্ন জুয়ার আসর পরিচালনা করতেন। ২০০৩ সালের ১৪ মে রাতে মালিবাগের সানরাইজ হোটেলে ১৫ লাখ টাকা চাঁদাবাজি করতে যান জিসান। সেখানে তার বাহিনী পুলিশের ইন্সপেক্টর নুরুল আলম শিকদারসহ দুই পুলিশ সদস্যকে গুলি করে হত্যা করেন। ওই ঘটনার পরপরই জিসান আত্মগোপনে চলে যান।

শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান দুবাইয়ে গ্রেফতার

গ্রেফতার হওয়ার সময় তার হাতে ছিল ভারতীয় পাসপোর্ট। সেখানে তার নাম লেখা ছিল আলী আকবর চৌধুরী। পরে এনসিবি ঢাকা আর এনসিবি দুবাই মিলে বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত যাচাই-বাছাইয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে, গ্রেফতার এই আলী আকবর চৌধুরীই বাংলাদেশের শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান।
উল্লেখ্য, গত মাসের শেষে একটি সংবাদপত্রের প্রতিবেদনে বলা হয়, শামীম ও খালেদকে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে জিসানের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পায় বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তখনই ভারতীয় পাসপোর্ট নিয়ে নতুন নামে জিসানের দুবাইয়ে অবস্থানের বিষয়ে নিশ্চিত হয় তারা।
সম্প্রতি ক্যাসিনোকাণ্ডে যুবলীগ নেতা খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া ও ঠিকাদার জি কে শামীম গ্রেফতার হওয়ার পর জিসানের নাম নতুন করে আলোচনায় আসে।
মহিউল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ পুলিশের তরফ থেকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তৈরি করে দুবাইয়ে পাঠানো হবে। পরে বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতা সেরে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ২০০১ সালে যে ২৩ ‘শীর্ষ সন্ত্রাসীর’ তালিকা করেছিল, জিসান আহমেদ ওরফে মন্টি তাদেরই একজন। এই পলাতক আসামিকে ধরিয়ে দেওয়ার জন্য পুরস্কারও ঘোষণা করা হয়েছিল।
গত শতকের শেষ এবং এ শতকের শুরুর দিকের বছরগুলোয় ঢাকার মতিঝিল, মালিবাগ, বাড্ডা, গুলশান, বনানীর ব্যবসায়ীদের কাছে জিসান ছিলেন আতঙ্কের নাম। তার চাঁদাবাজি ও টেন্ডারবাজির নানা গল্প সে সময় মানুষের মুখে মুখে ঘুরত।


২০০৩ সালের ১৪ মে ঢাকার মালিবাগে একটি হোটেলে জিসানকে গ্রেফতারের জন্য অভিযানে গিয়ে গুলিতে নিহত হন গোয়েন্দা পুলিশের দুই কর্মকর্তা। ওই হত্যাকাণ্ড দেশজুড়ে আলোচনার জš§ দেয়। এরপর জিসান গা-ঢাকা দেন এবং ভারত হয়ে দুবাইয়ে চলে যান বলে ধারণা করা হয়। তাকে ধরতে বাংলাদেশ পুলিশের অনুরোধে রেড নোটিস জারি করে ইন্টারপোল।


সে নোটিসে জিসানের বিরুদ্ধে হত্যা ও বিস্ফোরক বহনের অভিযোগ থাকার কথা বলা হয়েছে। বাংলাদেশের পাশাপাশি তার ডোমিনিকান রিপাবলিকের নাগরিকত্বও রয়েছে বলে সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে। দীর্ঘদিন দেশে না থাকলেও জিসান দুবাইয়ে বসেই ঢাকার অপরাধ জগতের অনেক কিছু নিয়ন্ত্রণ করছিলেন বলে বিভিন্ন সময় খবর এসেছে গণমাধ্যমে।

দুবাইয়ে অবস্থানরত ২৩ শীর্ষ সন্ত্রাসীর অন্যতম জিসান আহমেদ মন্টি ওরফে জিসানের অন্যতম সহযোগী মাজহারুল ইসলাম ওরফে শাকিলকে অস্ত্র ও গুলিসহ রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে র্যাব গ্রেফতার করেছে। শনিবার দুপুরে মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ডে র্যাবের একটি চেকপোস্টে তল্লাশির সময় সিএনজি অটোরিকশা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তার কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগজিন ও ছয় রাউন্ড গুলি উদ্ধার করেছে। তবে গ্রেফতার শাকিলের পরিবারের অভিযোগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) থেকে গত ২০ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ১১টার দিকে শাকিলকে ধরে নিয়ে যায় র্যাব সদস্যরা। অথচ শনিবার দুপুরে তাকে অস্ত্র ও গুলিসহ গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।

What's Your Reaction?

Like Like 0
Dislike Dislike 0
Love Love 0
Funny Funny 0
Angry Angry 0
Sad Sad 0
Wow Wow 0