জামাল ভূঁইয়া এর জীবনী | Biography of Jamal Bhuyan

জামাল ভূঁইয়া এর জীবনী Biography of Jamal Bhuyan

May 31, 2025 - 00:26
Jun 21, 2025 - 11:22
 0  1
জামাল ভূঁইয়া এর জীবনী | Biography of Jamal Bhuyan

ব্যক্তিগত তথ্য

পূর্ণ নাম

জামাল হ্যারিস ভূঁইয়া

জন্ম

১০ এপ্রিল ১৯৯০ (বয়স ৩৫)

জন্ম স্থান

কোপেনহেগেন, ডেনমার্ক

উচ্চতা

১.৭৩ মিটার (৫ ফুট ৮ ইঞ্চি)

মাঠে অবস্থান

মধ্যমাঠের খেলোয়াড়

ক্লাবের তথ্য

বর্তমান দল

সোল দে মায়ো

জার্সি নম্বর

যুব পর্যায়

প্র্যানপি

কোপেনহেগেন

জ্যেষ্ঠ পর্যায়*

বছর

দল

ম্যাচ (গোল)
২০০৯–২০১২

হেলেরপ

(১)
২০১২–২০১৩

বোল্ডক্লুবেন

(০)
২০১৩–২০১৪

আভেডোর

(০)
২০১৪–২০১৬

শেখ জামাল

(০)
২০১৬–২০১৭

শেখ রাসেল

(০)
২০১৭–২০২২

সাইফ

৭০ (৪)
২০২০–২০২১

 কলকাতা মোহামেডান (ধার)

১২ (০)
২০২২-২০২৩

শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র

১৯ (০)
২০২৩–

সোল দে মায়ো

(১)

জাতীয় দল

২০১৪–২০১৮

বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-২৩

১২ (১)
২০১৩–

বাংলাদেশ

৭৬ (১)

* কেবল ঘরোয়া লিগে ক্লাবের হয়ে ম্যাচ ও গোলসংখ্যা গণনা করা হয়েছে এবং ০৮:১৫, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ (ইউটিসি) তারিখ অনুযায়ী সকল তথ্য সঠিক।
‡ জাতীয় দলের হয়ে ম্যাচ ও গোলসংখ্যা ০৮:১৫, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ (ইউটিসি) তারিখ অনুযায়ী সঠিক।

তবুও এগিয়ে যেতে হবে, এটাই জীবন : জামাল ভূঁইয়া

জামাল হ্যারিস ভূঁইয়া

 (জন্ম: ১০ এপ্রিল ১৯৯০; জামাল ভূঁইয়া নামে সুপরিচিত) হলেন একজন ডেনীয়–বাংলাদেশী পেশাদার ফুটবল খেলোয়াড়। তিনি বর্তমানে আর্জেন্টিনার পেশাদার ফুটবল লিগের তৃতীয় স্তর তোর্নেও ফেদেরাল এ-এর ক্লাব সোল দে মায়ো এবং বাংলাদেশ জাতীয় দলের হয়ে মধ্যমাঠের খেলোয়াড় হিসেবে খেলেন। তিনি মূলত একজন রক্ষণাত্মক মধ্যমাঠের খেলোয়াড় হিসেবে খেললেও মাঝেমধ্যে কেন্দ্রীয় মধ্যমাঠের খেলোয়াড় হিসেবে খেলার পাশাপাশি বাংলাদেশ জাতীয় দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করছেন।

ডেনীয় ফুটবল ক্লাব প্র্যানপির যুব পর্যায়ের হয়ে খেলার মাধ্যমে জামাল ফুটবল জগতে প্রবেশ করেছেন এবং পরবর্তীকালে কোপেনহেগেনের যুব দলের হয়ে খেলার মাধ্যমে তিনি ফুটবল খেলায় বিকশিত হয়েছেন। ২০০৯–১০ মৌসুমে, ডেনীয় ক্লাব হেলেরপের হয়ে খেলার মাধ্যমে তিনি তার জ্যেষ্ঠ পর্যায়ের খেলোয়াড়ি জীবন শুরু করেছেন, যেখানে তিনি ৩ মৌসুম অতিবাহিত করলেও মাত্র ১টি ম্যাচে অংশগ্রহণ করে ১টি গোল করেছেন। অতঃপর বোল্ডক্লুবেন এবং আভেডোরের মতো ক্লাবের হয়ে খেলেছেন। ২০১৪–১৬ মৌসুমে তিনি বাংলাদেশী ক্লাব শেখ জামালে যোগদান করার মাধ্যমে বাংলাদেশের ফুটবল লিগে পদার্পণ করেন, শেখ জামালের হয়ে তিনি ১টি লিগ শিরোপাসহ মোট ৩টি শিরোপা জয়লাভ করেছেন। শেখ জামালে ২ মৌসুম অতিবাহিত করার পর তিনি শেখ রাসেলের চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন, যেখানে তিনি ২টি ম্যাচে অংশগ্রহণ করেছেন। ২০১৭–১৮ মৌসুমে, তিনি সাইফে যোগদান করেছেন। মাঝে তিনি ১ মৌসুমের জন্য ধারে ভারতীয় ক্লাব কলকাতা মোহামেডানের হয়ে খেলেছেন। পরবর্তীকালে, তিনি শেখ রাসেলের হয়ে খেলেছেন। ২০২৩–২৪ মৌসুমে, তিনি শেখ রাসেল হতে আর্জেন্টিনীয় ক্লাব সোল দে মায়োতে যোগদান করেছেন।

২০১৪ সালে, জামাল বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-২৩ দলের হয়ে বাংলাদেশের বয়সভিত্তিক পর্যায়ে অভিষেক করেছিলেন। এরপূর্বে ২০১৩ সালে তিনি বাংলাদেশের হয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অভিষেক করেছেন; বাংলাদেশের জার্সি গায়ে তিনি এপর্যন্ত ৭৬ ম্যাচে ১টি গোল করেছেন।

ব্যক্তিগতভাবে, জামাল বেশ কিছু পুরস্কার জয়লাভ করেছেন, যার মধ্যে ২০১৫ বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে টুর্নামেন্ট সেরার পুরস্কার জয় অন্যতম। দলগতভাবে, জামাল এপর্যন্ত ৩টি শিরোপা জয়লাভ করেছেন, যার সবগুলো শেখ জামালের হয়ে জয়লাভ করেছেন।

ব্যক্তিগত জীবন ও প্রারম্ভিক ক্যারিয়ার

  • জন্ম: ১০ এপ্রিল ১৯৯০, গ্লোস্ট্রাপ, ডেনমার্ক

  • উচ্চতা: ১.৭৩ মিটার

  • পজিশন: ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার

জামালের পিতামাতা ১৯৬০-এর দশকে বাংলাদেশ থেকে ডেনমার্কে অভিবাসিত হন। তিনি ডেনমার্কে বেড়ে ওঠেন এবং কিশোর বয়সে ফুটবল খেলায় মনোনিবেশ করেন। তবে ১৫ বছর বয়সে কোপেনহেগেনে গ্যাং সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে কোমায় চলে যান এবং ১২টি অস্ত্রোপচারের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। এই দুর্ঘটনার পরও তিনি ফুটবল ক্যারিয়ার চালিয়ে যাওয়ার দৃঢ় সংকল্প গ্রহণ করেন।

প্রারম্ভিক জীবন

জামাল হ্যারিস ভূঁইয়া ১৯৯০ সালের ১০শে এপ্রিল তারিখে ডেনমার্কের কোপেনহেগেনে জন্মগ্রহণ করেছেন এবং প্র্যানপিতে তার শৈশব অতিবাহিত করেছেন। জামালের বাবা-মা ১৯৬০-এর দশকের শেষের দিকে বাংলাদেশ থেকে ডেনমার্কে চলে যান।

ক্লাব ক্যারিয়ার

জামাল তার সিনিয়র ক্যারিয়ার শুরু করেন ডেনমার্কের হেলারুপ আইকে ক্লাবে। ২০১২ সালে তিনি বাংলাদেশের আবাহনী লিমিটেড ঢাকায় যোগ দেন এবং জাতীয় দলে অভিষেক করেন। পরবর্তীতে তিনি শেখ জামাল ধানমণ্ডি ক্লাবে যোগ দিয়ে ২০১৫ সালে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ ও ফেডারেশন কাপ জয় করেন। তিনি শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র, সাইফ স্পোর্টিং ক্লাব এবং ভারতের মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবে খেলেছেন। ২০২৩ সালে তিনি আর্জেন্টিনার সোল দে মায়ো ক্লাবে যোগ দেন।

আন্তর্জাতিক ফুটবল

জামাল বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-২৩ দলের হয়ে খেলার মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। বাংলাদেশের বয়সভিত্তিক দলের হয়ে তিনি প্রায় ৪ বছরে ১২ ম্যাচে অংশগ্রহণ করে ১টি গোল করেছেন। তিনি ২০১৮ সালের ১৯শে আগস্ট তারিখে ২০১৮ এশিয়ান গেমসের গ্রুপ বি-এ নিজেদের শেষ ম্যাচে কাতার অনূর্ধ্ব-২৩ দলের বিরুদ্ধে ম্যাচে বাংলাদেশের বয়সভিত্তিক দলের হয়ে প্রথমবারের মতো গোল করেছেন।

২০১৩ সালের ৩১শে আগস্ট তারিখে, মাত্র ২৩ বছর ৪ মাস ২১ দিন বয়সে, ডান পায়ে ফুটবল খেলায় পারদর্শী জামাল নেপালের বিরুদ্ধে ২০১৩ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের গ্রুপ এ-এ নিজেদের প্রথম ম্যাচে অংশগ্রহণ করার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ফুটবলে বাংলাদেশের হয়ে অভিষেক করেছেন। তিনি উক্ত ম্যাচের মূল একাদশে অন্তর্ভুক্ত ছিলেন; ম্যাচে তিনি একজন মধ্যমাঠের খেলোয়াড় হিসেবে খেলেছেন। ম্যাচটি বাংলাদেশ ২–০ গোলের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছিল। বাংলাদেশের হয়ে অভিষেকের বছরে জামাল সর্বমোট ২ ম্যাচে অংশগ্রহণ করেছেন। ২০১৮ সালের ৪ঠা সেপ্টেম্বর তারিখে, তিনি ভুটানের বিরুদ্ধে ২০১৮ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের গ্রুপ পর্বের ম্যাচে বাংলাদেশের হয়ে প্রথমবারের মতো অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন, ম্যাচটি বাংলাদেশ ২–০ গোলের ব্যবধানে জয়লাভ করেছিল। ২০১৯ সালের ৬ই জুন তারিখে, লাওসের বিরুদ্ধে ম্যাচের জয়সূচক গোলটিতে অ্যাসিস্ট করার মাধ্যমে তিনি আন্তর্জাতিক ফুটবলে তার প্রথম অ্যাসিস্টটি করেন। জাতীয় দলের হয়ে অভিষেকের ৮ বছর, ২ মাস ও ১৩ দিন পর, বাংলাদেশের জার্সি গায়ে প্রথম গোলটি করেছেন; ২০১৩ সালের ৩১শে আগস্ট তারিখে, মালদ্বীপের বিরুদ্ধে ম্যাচের ১২তম মিনিটে বাংলাদেশের হয়ে গোলটি করার মাধ্যমে তিনি আন্তর্জাতিক ফুটবলে তার প্রথম গোলটি করেছেন।

২০২১ সালের ৭ই জুন তারিখে কাতারের দোহার শেখ জাসিম বিন হামাদ স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ভারতের বিরুদ্ধে ম্যাচে অংশগ্রহণ করার মাধ্যমে তিনি বাংলাদেশের জার্সি গায়ে তার ৫০তম ম্যাচ খেলেছেন, ম্যাচটিতে বাংলাদেশ ৩–০ গোলের ব্যবধানে পরাজিত করেছিল, যেখানে তিনি বাংলাদেশের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করার পাশাপাশি পূর্ণ ৯০ মিনিট খেলেছেন।

গুঞ্জন উঠেছে জামাল ভূঁইয়া অধিনায়কত্ব হারাতে পারেন। অবশ্য তার আগেই অন্য কারো নেতৃত্ব পরগ করার সুযোগ পাচ্ছে বাংলাদেশ। কারণ, ১৫ জুন ওমানের বিপক্ষে খেলতে পারছেন না নিয়মিত অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া।

বুধবার (৯ জুন) ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড পেজে জামাল ভূঁইয়া লিখেন, ‘প্রত্যাশিত ফলাফল ও নৈপুণ্য অর্জিত না হওয়ায় আমরা সবাই হতাশ। আমরা চাইলে সমালোচনা করতে পারি ম্যাচে কি উচিত হয়নি আমাদের এবং এটাই স্বাভাবিক যখন প্রতিপক্ষ আচমকাই ৭৯ মিনিটে গোল দিয়ে বসে, যা খুব হতাশার।’

জামাল ভূইয়া আরও বলেন, ‘তাও আমাদের এগিয়ে যেতে হবে এবং আরও কঠোর পরিশ্রম করতে হবে এবং এটাই জীবন। আমি আমার দেশের পতাকা এবং আমার দলকে খুবই ভালোবাসি, যা আমার ভাষায় বোঝানো কঠিন। নিশ্চয় কঠোর পরিশ্রম করলে আমাদের সময় আসবেই, ইনশাআল্লাহ।’

এদিকে, জামাল ভূঁইয়াসহ নিয়মিত তিনজনকে না পাওয়া মিডফিল্ডার মাসুক মিয়া জনির খেলার সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে ওমানের বিপক্ষে একাদশে ভারতের বিপক্ষে খেলা একাদশ থেকে চারটি পরিবর্তন আসতে পারে।

ডেনমার্কের রাজধানী কোপেনহেগেন এর বিভিন্ন পর্যায়ের দলের হয়ে ম্যাচ খেলেছিলেন, খেলেছিলেন কোপেনহেগেন অনূর্ধ্ব ১৯ দলেও। কিন্তু দেশের মায়া ভুলতে পারেনি ছেলেটা। তাই নিজের তাগিদেই মা-বাবার কথা উপেক্ষা করে ২০১০ সালে আসার চেষ্টা করেন বাংলাদেশে। কিন্তু পাসপোর্ট জটিলতায় ফিরে যেতে হয়েছিল তাঁকে।

এরপর ২০১১ সালে বাংলার মাটিতে পা রাখলেও ভাগ্য তার সহায় হয়নি। নতুন স্থানে এসে পেরে উঠতে পারেনি ছেলেটা, দ্রুতই হাঁপিয়ে উঠেছিল। বাধ্য হয়ে তাকে বাদ দিতে হয় কোচদের। জাতীয় দলের কাছে গিয়েও সেবার ফিরে যেতে হয় তাকে।

আর সেই শোককে শক্তিতে পরিণত করেই তৎকালীন বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের কোচ লোডভিক ডি ক্রুইফের ডাকে সাড়া দিয়ে ২০১৩ সালে ক্যাম্পে ট্রায়াল দিয়ে বাজিমাৎ করেন এই ফুটবলার। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। দেশের হয়ে লাল-সবুজের জার্সি গায়ে অভিষেকটাও হয়ে যায় নেপালে অনুষ্ঠিত সাফে।

ডেনমার্ক, কোপেনহেগেন, বাংলাদেশ ফুটবল; নিশ্চয়ই বুঝেছেন কার কথা বলা হচ্ছে। জ্বী, বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া’র বাংলার ফুটবলে পা রাখার গল্পই বলা হয়েছে।

ষাটের দশকে জামাল ভূঁইয়ার বাবা-মা পাড়ি দেন ডেনমার্কের উদ্দেশ্যে। জামালের জন্মও হয়েছিল ডেনমার্কেই। ১৯৯০ সালের ১০ এপ্রিল জন্ম নেন তিনি।

ছোটবেলা থেকেই ফুটবলের প্রতি ঝোঁক ছিল জামালের। ক্যারিয়ারের শুরুতে ডেনমার্কের বিভিন্ন পর্যায়ে খেলেছিলেন, এরপর বাংলার লাল-সবুজ জার্সি গায়ে জড়িয়েছেন। শুরুতে কষ্টকর ছিল জামালের জন্য তবে সুযোগ পাওয়ার পর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।

২০১৪ সালে শেখ জামাল ধানমণ্ডি ক্লাবের সাথে প্রথম চুক্তি করেন জামাল। সে সময় টাকার অঙ্কে স্থানীয় ফুটবলারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বেতনভুক্ত খেলোয়াড়ও ছিলেন তিনি। পরের মৌসুমে অবশ্য চুক্তি করেন ক্লাব শেখ রাসেল ক্রীড়াচক্রের সঙ্গে। এখন সাইফ স্পোর্টিং ক্লাবের হয়েই খেলছেন জামাল ভূঁইয়া। কলকাতা মোহামেডানের হয়ে ভারতীয় আইলিগে খেলারও অভিজ্ঞতা রয়েছে তা&র।

জামাল ভূঁইয়া’র জাতীয় দলে অভিষেক হয়েছিল ২০১৩ সালে, তবে লাইমলাইটে প্রথম আসেন ২০১৫ সালে। সেবছর আট দল নিয়ে অনুষ্ঠিত বঙ্গবন্ধু গোল্ড কাপে রানার আপ হয়েছিল বাংলাদেশ, আর টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়ের পুরুষ্কার জিতেছিলেন জামাল ভূঁইয়া। পারফরম্যান্স দিয়ে ধীরে ধীরে একসময় দলের অপরিহার্য হয়ে উঠেছিলেন।

২০১৬ সালে ভুটানের বিপক্ষে ৩-১ গোলে হেরে বসে বাংলাদেশ। থমকে যায় বাংলার ফুটবল, দুই বছরের জন্য নির্বাসিত হয়ে পড়ে দেশের ফুটবল। বাংলাদেশের ফুটবল ইতিহাসে ভুটান ট্রাজেডি নামে পরিচিত হয়ে উঠে এই ঘটনা। সেই ম্যাচে ছিলেন না জামাল ভূঁইয়া। নির্বাসন থেকে ফেরার পরে তার হাতেই তুলে দেয়া হয় লাল-সবুজের আর্মব্যান্ড। ২০১৮ সালে প্রথমবার দেশের মাটিতে অনুষ্ঠিত সাফ ফুটবলে অধিনায়কত্ব করতে নেমেছিলেন জামাল।

প্রথম ম্যাচে ভুটানকে হারিয়েছিল বাংলাদেশ, পরের ম্যাচে পাকিস্তান-কেও হারানোর স্বাদ পেয়েছিল। ঝিমিয়ে পড়া ফুটবল জামালের নেতৃত্বে আবারো জেগে উঠেছিল। ২০২২ বিশ্বকাপের প্লে-অফে লাওস’কে হারিয়ে বাংলাদেশ বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে জায়গা করতে সক্ষম হয়।

বাছাই পর্বের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ হেরে যায় আফগানিস্তানের বিপক্ষে, দ্বিতীয় ম্যাচে কাতারের কাছেও হার। তবে পরিবর্তন ঘটেছিল খেলোয়াড়দের মানসিকতায়। আগের মত ঝিমানো ফুটবল নয়, বরং নব্বই মিনিট ধরে প্রতিপক্ষের সাথে সমানে সমানে টক্কর দেয়া শুরু করে বাংলার ফুটবলাররা। এমন পরিবর্তনের পিছনে নিঃসন্দেহে অধিনায়ক জামালের বড় অবদান রয়েছে।

২০১৯ সালের ১৫ই অক্টোবর, কলকাতার সল্টলেকে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচ খেলতে নেমেছিল ভারত-বাংলাদেশ। সল্ট লেক তখন বিভোর বিশাল জয়ের স্বপ্নে, অধিনায়ক সুনীল ছেত্রীর হ্যাটট্রিকের স্বপ্নে। কিন্তু পুরো গ্যালারি-কে স্তব্ধ করে দিয়ে ম্যাচের ৪২ মিনিটে গোল করে বসে বাংলাদেশ।

অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়ার দুর্দান্ত এক ফ্রি-কিকে মাথা ছুঁয়ে গোল করেছিলেন সাদ উদ্দিন। ম্যাচের শেষ দিকে অবশ্য গোল হজম করায় ড্র নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয়েছিল বাংলাদেশকে তবে জামালের নেতৃত্বে সেদিন ফুটবল দল সবার হৃদয় জিতেই ফিরেছিল বাংলাদেশে।

বৈশ্বিক ফুটবলে অনেকটাই পিছিয়ে থাকা বাংলাদেশ দলে জামাল ভূঁইয়া হয়তো কোন সুপারস্টার নয়, দেশ সেরা কয়েকজনের একজন বড়জোর। কিন্তু অদম্য মানসিকতা জামালকে আলাদা করেছে সবার চেয়ে। লড়াই করেছেন, লড়াই করতে শিখিয়েছেন; উজ্জীবিত করেছেন মাঠের সবাইকে। হয়েছেন ফুটবলের পোস্টার বয়।

ডেনমার্কে এক পার্টিতে দূর্বৃত্তদের গোলাগুলিতে একবার চার – চারটি গুলি লেগেছিল ছোট্ট জামালের। কিন্তু লড়াই করে ঠিকই জীবন যুদ্ধে জিতেছিলেন। সূদুর ডেনমার্কের আভিজাত্যের মায়া ছেড়ে দুর্গম পথ পাড়ি দিয়ে এসেছেন বাংলাদেশ ফুটবলে, ব্যর্থ হয়েছেন তবে হাল ছাড়েন নি। চারটে গুলি লাগার পরেও হারতে না শেখা, কিংবা স্বপ্নের পিছু ছুটতে গিয়ে থামতে না শেখা জামাল ভূঁইয়ারা-ই আমাদের অনুপ্রেরণা।

রোয়া ফুটবলের দল বদলে প্রথমে কোনো ক্লাবের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হতে পারেননি জামাল ভূঁইয়া। দল বদলের সময় শেষ হওয়ার পর ব্রাদার্স ইউনিয়ন নিজেদের ডেরায় নিয়ে নেয় বাংলাদেশ অধিনায়ককে। নির্দিষ্ট সময়ে দল বদল সম্পন্ন না করায় নতুন মৌসুমের প্রথম লেগে গোপীবাগের ক্লাবটির হয়ে খেলা হচ্ছে না ডেনমার্ক প্রবাসী এ ফুটবলারের। তার পরও ব্রাদার্সের সঙ্গে অনুশীলন চালিয়ে যান তিনি। 

নভেম্বরে ঘরের মাঠে মালদ্বীপের বিপক্ষে দুটি প্রীতি ম্যাচের জন্য নিজেকে তৈরি করতে থাকেন জামাল। তবে কিংস অ্যারেনায় ১৬ ও ১৬ নভেম্বর অনুষ্ঠেয় প্রীতি ফুটবল ম্যাচের জন্য বাংলাদেশ কোচ ১৬ সদস্যের যে আংশিক দল ঘোষণা করেছেন, তাতে নেই জামাল ভূঁইয়া। বাকি যারা ডাক পেয়েছেন, তাদের সবারই জাতীয় দলে খেলার অভিজ্ঞতা আছে। এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগে খেলা বসুন্ধরা কিংসের ফুটবলাররা ৩ নভেম্বর দেশে ফিরলে পুরো দল নিয়ে অনুশীলন শুরু করবেন হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরা। শুক্রবার আংশিক দল নিয়ে ক্যাম্প শুরু করবেন স্প্যানিশ কোচ।

সম্মাননা ও অর্জন

  • জাতীয় দলের সর্বোচ্চ ম্যাচ খেলা খেলোয়াড়: ৮৭টি ম্যাচ

  • ২০১৫: বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ ও ফেডারেশন কাপ চ্যাম্পিয়ন (শেখ জামাল ধানমণ্ডি ক্লাব)

  • ২০১৪: কিংস কাপ (ভুটান) বিজয়ী

sourse: wikipedia ..... sportsmail24 ... khela71  ,,, jagonews24 ... samakal 

What's Your Reaction?

Like Like 0
Dislike Dislike 0
Love Love 0
Funny Funny 0
Angry Angry 0
Sad Sad 0
Wow Wow 0