সাদ উদ্দিন এর জীবনী | Biography of Md Saad Uddin
সাদ উদ্দিন এর জীবনী | Biography of Md Saad Uddin

![]() ২০১৯ সালে ঢাকা আবাহনীর হয়ে সাদ
|
|||
ব্যক্তিগত তথ্য |
|||
---|---|---|---|
পূর্ণ নাম |
মোহাম্মদ সাদ উদ্দিন | ||
জন্ম |
১ সেপ্টেম্বর ১৯৯৮[১] | ||
জন্ম স্থান |
সিলেট, বাংলাদেশ | ||
উচ্চতা |
১.৭৫ মিটার (৫ ফুট ৯ ইঞ্চি) | ||
মাঠে অবস্থান |
বাম উইং-ব্যাক, উইঙ্গার | ||
ক্লাবের তথ্য |
|||
বর্তমান দল
|
বসুন্ধরা কিংস |
||
জার্সি নম্বর |
২২ | ||
জ্যেষ্ঠ পর্যায়* |
|||
বছর |
দল | ম্যাচ | (গোল) |
২০১৬–২০২১ |
ঢাকা আবাহনী | ৫৬ | (২) |
২০২২ |
শেখ রাসেল | ১৩ | (০) |
২০২২– |
বসুন্ধরা কিংস | ০ | (০) |
জাতীয় দল‡ |
|||
২০১৫ |
বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৭ | ৪ | (১) |
২০১৫ |
বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-২০ | ৩ | (০) |
২০১৮ |
বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-২৩ | ৪ | (১) |
২০১৮– |
বাংলাদেশ | ২৩ | (১) |
* কেবল ঘরোয়া লিগে ক্লাবের হয়ে ম্যাচ ও গোলসংখ্যা গণনা করা হয়েছে এবং ১৮:৫৭, ২০ ডিসেম্বর ২০২২ (ইউটিসি) তারিখ অনুযায়ী সকল তথ্য সঠিক। |
বাংলাদেশ বনাম ভারত: সিলেটের সাদ যেভাবে বাংলাদেশের ফুটবলে তারকা হলেন
মোহাম্মদ সাদ উদ্দিন (জন্ম: ১ সেপ্টেম্বর ১৯৯৮; সাদ উদ্দিন নামে সুপরিচিত) হলেন একজন বাংলাদেশী পেশাদার ফুটবল খেলোয়াড়।[২] তিনি বর্তমানে বাংলাদেশের পেশাদার ফুটবল লিগের শীর্ষ স্তর বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের ক্লাব বসুন্ধরা কিংস এবং বাংলাদেশ জাতীয় দলের হয়ে একজন বাম উইং-ব্যাক হিসেবে খেলেন। তিনি মাঝেমধ্যে ডান উইং-ব্যাক এবং উইঙ্গার হিসেবেও খেলে থাকেন।
২০১৬–১৭ মৌসুমে, বাংলাদেশী ক্লাব ঢাকা আবাহনীর হয়ে খেলার মাধ্যমে তিনি তার জ্যেষ্ঠ পর্যায়ের খেলোয়াড়ি জীবন শুরু করেছেন, যেখানে তিনি ৫ মৌসুমে ৫৬ ম্যাচে ২টি গোল করেছিলেন। পরবর্তীকালে তিনি শেখ রাসেলের হয়ে খেলেছেন। ২০২২–২৩ মৌসুমে, তিনি শেখ রাসেল হতে বাংলাদেশী ক্লাব বসুন্ধরা কিংসে যোগদান করেছেন।
২০১৫ সালে, সাদ বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৭ দলের হয়ে বাংলাদেশের বয়সভিত্তিক পর্যায়ে অভিষেক করেছিলেন। প্রায় ৩ বছর যাবত বাংলাদেশের বয়সভিত্তিক দলের হয়ে খেলার পর, তিনি ২০১৮ সালে বাংলাদেশের হয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অভিষেক করেছেন; বাংলাদেশের জার্সি গায়ে তিনি এপর্যন্ত ২৩ ম্যাচে ১টি গোল করেছেন।
দলগতভাবে, সাদ এপর্যন্ত ৪টি শিরোপা জয়লাভ করেছেন, যার সবগুলো তিনি ঢাকা আবাহনীর হয়ে জয়লাভ করেছেন।
প্রারম্ভিক জীবন
মোহাম্মদ সাদ উদ্দিন ১৯৯৮ সালের ১লা সেপ্টেম্বর তারিখে বাংলাদেশের সিলেটে জন্মগ্রহণ করেছেন এবং সেখানেই তার শৈশব অতিবাহিত করেছেন।
আন্তর্জাতিক ফুটবল
সাদ বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৭, বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-২০ এবং বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-২৩ দলের হয়ে খেলার মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-২৩ দলের হয়ে তিনি ২০১৮ এশিয়ান গেমসে অংশগ্রহণ করেছেন, তবে তার দল উক্ত প্রতিযোগিতায় শুধুমাত্র ১৬ দলের পর্ব পর্যন্ত অংশগ্রহণ করতে সক্ষম হয়েছিল; উক্ত প্রতিযোগিতায় তিনি ৪ ম্যাচে ১টি গোল করেছিলেন। বাংলাদেশের বয়সভিত্তিক দলের হয়ে তিনি প্রায় ৩ বছরে ১১ ম্যাচে অংশগ্রহণ করে ২টি গোল করেছেন। তিনি ২০১৫ সালের ১৬ই আগস্ট তারিখে ২০১৫ সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ চ্যাম্পিয়নশিপের সেমি-ফাইনালে আফগানিস্তান অনূর্ধ্ব-১৭ দলের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের বয়সভিত্তিক দলের হয়ে প্রথমবারের মতো গোল করেছেন।২০১৮ সালের ৪ঠা সেপ্টেম্বর তারিখে, মাত্র ২০ বছর ৪ দিন বয়সে, ডান পায়ে ফুটবল খেলায় পারদর্শী সাদ ভুটানের বিরুদ্ধে ম্যাচে অংশগ্রহণ করার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ফুটবলে বাংলাদেশের হয়ে অভিষেক করেছেন। তিনি উক্ত ম্যাচের মূল একাদশে ছিলেন, তবে ম্যাচের ৫২তম মিনিটে মধ্যমাঠের খেলোয়াড় মোহাম্মদ ফ্যসাল মাহমুদের বদলি খেলোয়াড় হিসেবে তিনি মাঠ ত্যাগ করেন; ম্যাচে তিনি ৯ নম্বর জার্সি পরিধান করে একজন বাম পার্শ্বীয় আক্রমণভাগের খেলোয়াড় হিসেবে খেলেছেন। ম্যাচটি বাংলাদেশ ২–০ গোলের ব্যবধানে জয়লাভ করেছিল। বাংলাদেশের হয়ে অভিষেকের বছরে সাদ সর্বমোট ৩ ম্যাচে অংশগ্রহণ করেছেন। জাতীয় দলের হয়ে অভিষেকের ১ বছর ১ মাস ১২ দিন পর, বাংলাদেশের জার্সি গায়ে প্রথম গোলটি করেন; ২০১৯ সালের ১৫ই অক্টোবর তারিখে, ভারতের বিরুদ্ধে ম্যাচের প্রথম গোলটি করার মাধ্যমে তিনি আন্তর্জাতিক ফুটবলে তার প্রথম গোলটি করেন।
বাংলাদেশের ফুটবলে সাদ উদ্দিন নামটা এলেই অনেকের চোখে ভাসে সেই দৃশ্যটা। কলকাতার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে ভারতের বিপক্ষে ২০১৯ সালের অক্টোবরে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচে অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়ার ফ্রি–কিকে সাদের উড়ন্ত হেডে স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল গ্যালারি।
৪২ মিনিটের গোলে পাওয়া এই অগ্রগামিতা ৮৮ মিনিট পর্যন্ত ধরে রেখেছিল বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত ম্যাচটা জিততে না পারলেও ওই হেড সাদকে রাতারাতি বাংলাদেশের ফুটবলে তারকা বানিয়ে দেয়।
মাঝে তিনটি আন্তর্জাতিক ম্যাচে প্রতিপক্ষকে পেনাল্টি দিয়ে সিলেটের এই ফুটবলার হয়েছেন খলনায়কও। সেই সাদের সামনে আবারও নায়ক হওয়ার সুযোগ। ২৫ মার্চ শিলংয়ে এশিয়ান কাপের বাছাইয়ে ভারতের বিপক্ষে গোল করতে পারলে সেটি হবে তাঁর জীবনের সেরা প্রাপ্তিগুলোর একটি।
সে কথা গতকাল শিলংয়ের জওহরলাল স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ দলের অনুশীলনের ফাঁকে প্রথম আলোর এক প্রশ্নে বললেনও তিনি, ‘ইনশা আল্লাহ সুযোগ পেলে অবশ্যই গোল করে দলকে জেতাতে চাই।’
কিন্তু জিততে হলে যেমন অনুকূল পরিবেশ পেতে হয়, ২০১৯ সালে তা কলকাতায় পেয়েছিল বাংলাদেশ। সেবার নিজেদের মনমতো অনুশীলন করা গেছে। পছন্দনীয় ঘাসের মাঠ পেয়েছেন ফুটবলাররা।
কিন্তু এবার শিলং এসে প্রথম দুদিনে অনুশীলন মাঠ নিয়ে বাংলাদেশ দলে রয়েছে অসন্তোষ। সেটা উল্লেখ করে সাদ বললেন, ‘২০১৯ সালে সল্টলেকে ম্যাচের আগে এমন সমস্যা ছিল না। সুযোগ–সুবিধা ভালো ছিল। ভালো মাঠে অনুশীলন করেছি। কিন্তু এবার যা অবস্থা, এটা আমাদের জন্য ভালো নয়। আমরা জানতাম এমন সমস্যার মুখোমুখি হব। তবে আমরা মানসিকভাবে তৈরি। এবার আমাদের জিততে হবে। জয়ের মানসিকতা নিয়েই আমরা এখানে এসেছি।
সাদ যখন কথাগুলো বলছিলেন, মনে পড়েছিল ২০১৯–পরবর্তী সময়ে ভিন্ন কারণে তাঁর আলোচনায় আসার সেই দিনগুলো। ২০২১ মালদ্বীপ সাফে নেপালের সঙ্গে জিতলে যেখানে ফাইনালে উঠবে বাংলাদেশ—ম্যাচের একেবারে শেষ দিকে বক্সে তাঁর ফাউলে পিছিয়ে থাকা নেপাল পেনাল্টিতে ১–১ করে। বাংলাদেশ আর ফাইনালে উঠতে পারেনি।
ওই বছরই শ্রীলঙ্কায় চার জাতি টুর্নামেন্টে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে ড্র করলে ফাইনালে উঠত বাংলাদেশ, সেই ম্যাচে ৯০তম মিনিটে বক্সে বল লাগে সাদের হাতে। পেনাল্টিতে গোল করে স্বাগতিক দল ২–১ গোলে জিতে ফাইনালে উঠে যায়।
২০২৩ সালের মার্চে সিলেটে ফিফা প্রীতি ম্যাচে সেশেলসের কাছে বাংলাদেশের ১–০ গোলে হারের উৎসও ছিল সাদের ফাউল। ৬১ মিনিটে বক্সে উড়ে আসা বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে প্রতিপক্ষ খেলোয়াড়ের মাথার ওপর বিপজ্জনকভাবে পা তুলে দিয়েছিলেন সাদ। পেনাল্টিতে গোল করে জিতে যায় সেশেলস। যার ফলে ২০১৯–এর ভারত–ম্যাচের নায়ক পরে তিনটি ভিন্ন আন্তর্জাতিক ম্যাচে প্রতিপক্ষকে পেনাল্টি উপহার দিয়ে বনে যান খলনায়ক। এখন আবার সুযোগ এসেছে নায়ক হওয়ার। আর তা সেই ভারতের মাটিতেই।
যদিও তিনি ডিফেন্ডার, রাইটব্যাকে খেলেন, কিন্তু সুযোগ থাকলে গোল করতে তো আর বাধা নেই। তাই গোল করেই পাঁচ বছর আগের ভারত–ম্যাচের স্মৃতি আবার ফিরিয়ে আনতে চান ২৬ বছর বয়সী ফুটবলার।
সাদকে জাতীয় দলের আক্রমণভাগে ব্যবহার করেছিলেন জেমি ডে। ভারতের বিপক্ষে আলোচিত গোলটা পান ফরোয়ার্ড হিসেবে খেলেই। পরে তাঁকে নামিয়ে আনা হয় রক্ষণে। মূলত আবাহনীতে রক্ষণে খেলতেন বলেই পরবর্তী সময়ে জাতীয় দলে রাইটব্যাক হিসেবে তাঁকে ব্যবহার করেন জেমি ডে।
বসুন্ধরা কিংসেও রাইটব্যাকে খেলেন সাদ। তবে ২০২৩ সালে সেশেলসের বিপক্ষে সেই গোলের পর সাদকে আক্রমণ বা মাঝমাঠে ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছিলেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের তৎকালীন সভাপতি কাজী সালাহউদ্দিন। তিনি বলেছিলেন, ‘আমি মনে করি সাদ রক্ষণের খেলোয়াড় নয়। তাকে ফরোয়ার্ড বা মাঝমাঠে খেলালে ভালো হবে। রক্ষণে খেলতে থাকলে সে বারবার এমন ভুল করে প্রতিপক্ষকে পেনাল্টি দিতেই থাকবে। এ নিয়ে তিনবার দিল। কাজেই এটা নিয়ে ভাবতে হবে।’
তবে হাভিয়ের কাবরেরা এসে সেভাবে ভাবেননি। সাদকে তিনি রক্ষণেই ব্যবহার করেছেন। সেটিও অবশ্য নিয়মিত নন। ২৫ মার্চ ভারত–ম্যাচে সাদকে যদি কাবরেরা একাদশে রাখেন সেটি রাখবেন রক্ষণভাগেই। আর সুযোগ পেলে সাদ আবার গোল করে নায়ক বনে যাবেন না, তা কে বলতে পারে!
sourse: wikipedia
https://www.prothomalo.com/sports/football/l78tqhd9w4
https://www.bbc.com/bengali/news-50071772
What's Your Reaction?






