ইদরীস (আঃ) এর জীবনী | Biography of Idris (prophet)

ইদরীস (আঃ) এর জীবনী | Biography of Idris (prophet)

May 25, 2025 - 12:50
Jun 20, 2025 - 12:01
 0  1
ইদরীস (আঃ)   এর জীবনী | Biography of Idris (prophet)

নবী
হজরত

ʾইদ্রিস
إدريس
ইনোক

আলাইহিস সালাম
ইসলামি চারুলিপিতে লেখা ʾইদ্রিস

জন্ম

বাবিল

অন্যান্য নাম

ইনোক

উপাধি

নবী

পূর্বসূরী

শীষ

উত্তরসূরী

নূহ

সন্তান

মথূশেলহ

পিতা-মাতা

যেরদ

হযরত ইদ্রিস (আঃ)-এর সখের মৃত্যু ও বেহেশতে গমন

ইদ্রিস

 (আরবি: إدريس) যিনি মুসলমানদের নিকট হযরত ইদ্রিস (আঃ) নামে পরিচিত, ইসলামী ইতিহাস অনুসারে মানবজাতির উদ্দেশ্যে প্রেরিত তৃতীয় নবী। মুসলমানদের বিশ্বাস অনুসারে তিনি ইসলামের প্রথম নবী আদমের পর স্রষ্টার নিকট হতে নবীত্ব লাভ করেন। তার জন্মস্থান নিয়ে মতভেদ রয়েছে। কারো মতে তিনি ইরাকের বাবেলে জন্মগ্রহণ করেন। আবার কারো মতে তিনি মিশরে জন্মগ্রহণ করেন। ধারণা করা হয়, বাইবেলে উল্লেখিত হনোক (Enoch) ব্যক্তিটি তিনিই।হযরত আদম আলাই সালাম এর পরের তৃতীয় নবী হযরত ইদ্রিস আলাইহিস সালাম 

ইসলামি ভাষ্যমতে ইসলামের নবী মুহাম্মাদ মিরাজের রাতে চতুর্থ আসমানে ইদ্রিসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। ধারণা করা হয়, তিনিই সর্বপ্রথম কলম এবং কাপড় সেলাই করার বিদ্যা আবিষ্কার করেন। বলা হয়, জ্যোতির্বিজ্ঞান,অঙ্কশাস্ত্র এবং অস্ত্রের ব্যবহারও তিনিই সর্বপ্রথম আবিষ্কার করেন।

বংশ ও পরিচয়

  • নাম ও উপাধি: ইদ্রিস (আঃ)-এর প্রকৃত নাম ছিল "আখনূখ"। "ইদ্রিস" নামটি আরবি, যা "দরস" (পড়াশোনা) শব্দ থেকে উদ্ভূত, অর্থাৎ যিনি অধ্যয়নে রত ছিলেন। হিব্রু ও সুরিয়ানি ভাষায় তাঁকে "এনোক" নামে পরিচিত।

  • বংশধারা: তিনি আদম (আঃ)-এর সপ্তম বংশধর এবং শীষ (আঃ)-এর অনুসারী ছিলেন। ইবনে ইসহাকের মতে, তিনি নূহ (আঃ)-এর দাদা ছিলেন।

  • জন্মস্থান: তাঁর জন্মস্থান নিয়ে মতভেদ রয়েছে; কেউ বলেন তিনি ইরাকের বাবেল নগরে জন্মগ্রহণ করেন, আবার কেউ বলেন মিশরে।

নাম ও বংশপরিচিতি

ইদ্রীস এর নাম ও বংশ নিয়ে ঐতিহাসিক ও ধর্ম বিষেষজ্ঞদের মাঝে বিরাট মতভেদ আছে। বিখ্যাত মুহাদ্দিস ইবনে ইসহাকের মতে, তিনি হলেন ইসলামের নবী নূহ এর দাদা। তার আসল নাম হলো ইনোখ।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] ইদ্রীস তার উপাধি। কিংবা আরবি ভাষায় তার নাম ইদ্রীস আর হিব্রু ও সুরইয়ানী ভাষায় তার নাম হলো ইনোখ । ইবনে ইসহাক তার বংশধারা বর্ণনা করেনঃ আখনূখ (ইদ্রীস) ইবনে ইয়ারুদ ইবনে মাহলাইল। এভাবে তার বংশধারা আদম এর পুত্র শীষ এর সাথে মিলিত হয়। আরেকদল ঐতিহাসিকের মতে, ইদ্রীস ইসরাইল বংশীয় নবী। আর ইদ্রীস ও ইলয়াস একই ব্যক্তির নাম ও উপাধি।

সংক্ষিপ্ত জীবনী

তার জীবন সম্পর্কে যতোটুকু জানা যায়, তা হলো- ছোটবয়সে তিনি দ্বিতীয় নবি শীষ - এর ছাত্র(বাইবেল অনুসারে) ছিলেন। বড় হওয়ার পর আল্লাহ তাকেঁ নুবুওয়্যত দান করেন। তখন তিনি আদম এর ওপরে অবতীর্ণ শরীয়ত ত্যাগ করতে মন্দলোকদের নিষেধ করেন। অল্পকিছু লোক তার আহ্বানে সাড়া দিয়ে সৎপথে ফিরে আসলো। আর অধিকাংশ মানুষই তার বিরোধিতা করলো। তাই তিনি তার অনুসারীদের নিয়ে দেশ ছেড়ে যেতে মনস্থ করলেন। কিন্তু তার অনুসারীরা মাতৃভূমি ছাড়তে গড়িমসি করে বললো, বাবেলের মতো দেশ ছেড়ে গেলে এমন দেশ আর কোথায় পাব? উত্তরে তিনি বললেন, যদি আমরা আল্লহর জন্য হিজরত করি তাহলে আল্লাহ আমাদেরকে এরচে' উত্তম প্রতিদান দেবেন। এরপর তিনি নিজের অনুসারীদেরসহ দেশ ছেড়ে রওয়ানা হলেন এবং একসময় মিশরের নীলনদের তীরে এসে পৌঁছলেন। এ জায়গা দেখে তারা আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলেন এবং এখানেই বসবাস করতে লাগলেন। তিনি সৎকাজের আদেশ এবং অসৎকাজে নিষেধে ব্রতি হন। কথিত আছে, তার যুগে ৭২টি ভাষা ছিল এবং এর সবকটি ভাষাই পারতেন।

নবুয়ত ও দাওয়াত

  • নবুয়ত লাভ: আল্লাহ তাআলা তাঁকে নবুয়ত দান করেন এবং তিনি আদম (আঃ)-এর শরীয়ত অনুসরণ করে মানুষকে সৎপথে আহ্বান করেন।

  • হিজরত: যখন তাঁর সম্প্রদায়ের অধিকাংশ মানুষ তাঁর দাওয়াত প্রত্যাখ্যান করে, তখন তিনি তাঁর অনুসারীদের নিয়ে বাবেল থেকে হিজরত করে মিশরের নীলনদের তীরে বসতি স্থাপন করেন

হাদিসে ইদ্রীস এর আলোচনা

বুখারী ও মুসলিম শরিফের মেরাজের হাদিসে ইদ্রীস সম্পর্কে শুধু এতটুকু বলা হয়েছে যে, তিনি একজন নবী ছিলেন এবং মেরাজের রাতে মুহাম্মাদ এর সাথে চতুর্থ আসমানে তার সাক্ষাৎ হয়েছিল।

যরত ইদ্রিস (আঃ) তাতে রাজী হলে মালাকুল-মওত তাঁকে বেহেশত দেখাতে নিয়ে গেল। বেহেশতের দরজায় আসলে হযরত ইদ্রিস (আঃ) তাঁর পায়ের জুতা খুলে বেহেশতে প্রবেশ করলেন। তিনি কিছু সময় বেহেশতে ঘুরাফেরা করলেন। এরপর তিনি মালাকুল-মওতের কাছে ফিরে এসে নিজের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করলেন। পরক্ষণেই তিনি এক দৌঁড়ে আবার বেহেশতে ঢুকে গেলেন। মালাকুল-মওত তাঁকে ডেকে বলল, ভাই ইদ্রিস! আপনি আবার বেহেশতে ঢুকলেন কেন? তাড়াতাড়ি বেরিয়ে আসুন। আমি আপনাকে আবার পৃথিবীতে পৌঁছে দেব।

হযরত ইদরিস (আঃ) বেহেশতের ভিতর থেকে জবাব দিলেন, ভাই আজরাঈল! আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেছেন - প্রত্যেক প্রাণীই একবার মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবে এবং একবার দোজখ না দেখে কেউ বেহেশতে যেতে পারবেনা। আমি তো একবার মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করলাম এবং দোজখও দেখলাম। তারপর বেহেশত হতে বের হয়ে আপনাকে দেওয়া প্রতিশ্রুতিও রক্ষা করলাম। অতএব এখন আমি আর বেহেশত হতে বের হবো না। আপনি আপনার কাজে চলে যেতে পারেন।

মালাকুল-মওত হযরত ইদ্রিস (আঃ) এর জবাব শুনে কর্তব্য স্থির করতে না পেরে দাঁড়িয়ে রইলেন। আল্লাহ তা’আলা তখন হযরত আজরাঈল (আঃ) কে লক্ষ্য করে বললেন, আজরাঈল! ইদ্রিসকে বেহেশতে থাকতে দাও। তাঁর ভাগ্যে আমি এরূপ ঘটনায় লিপিবদ্ধ করে রেখেছিলাম। অতঃপর হযরত ইদ্রিস (আঃ) মহাসুখে বেহেশতে বসবাস করতে লাগলেন।

বদান ও আবিষ্কার

  • লেখা ও কলম: তাঁকেই প্রথম কলম ও লেখার প্রচলনকারী বলা হয়।

  • বস্ত্র সেলাই: তিনি প্রথম কাপড় সেলাইয়ের কৌশল আবিষ্কার করেন।

  • বিজ্ঞান ও গণিত: জ্যোতির্বিজ্ঞান, অঙ্কশাস্ত্র এবং ওজন ও পরিমাপের জ্ঞানেও তিনি পারদর্শী ছিলেন। 

  • ভাষাজ্ঞান: বলা হয়, তাঁর যুগে ৭২টি ভাষা প্রচলিত ছিল এবং তিনি সবগুলোতেই পারদর্শী ছিলেন। 

 কুরআনে উল্লেখ

কুরআনে হযরত ইদ্রিস (আঃ)-এর নাম দুইবার উল্লেখিত হয়েছে:

  • সূরা মারইয়াম (১৯:৫৬-৫৭): "আর কিতাবে ইদ্রিসের কথা স্মরণ কর। তিনি ছিলেন সত্যবাদী, একজন নবী। আমি তাঁকে উচ্চ মর্যাদায় উন্নীত করেছি।"

  • সূরা আল-আম্বিয়া (২১:৮৫-৮৬): এখানে তাঁকে ধৈর্যশীল নবীদের মধ্যে উল্লেখ করা হয়েছে।

মৃত্যু

ইদ্রীস এর বয়স সম্পর্কে মতভেদ রয়েছে। বাইবেলের বর্ণনা অনুযায়ী ইদ্রীস ৩৬৫ বছর জীবিত থাকেন। তবে আরেক বর্ণনানুযায়ী তিনি ৮২ বছর জীবিত থাকেন। তার মৃত্যুবরণ করা সম্পর্কেও মতভিন্নতা রয়েছে। কারো কারো মতে তিনি মৃত্যুবরণ করেননি। বরং আল্লাহ তাকে চতুর্থ আসমানে তুলে নিয়েছেন। তবে বেহেস্তে থেকে যাওয়ার কাহিনী গুলো ইসরাঈলী বর্ণনা।

sourse: wikipedia   .... somewhereinblog  ... news24bd

What's Your Reaction?

Like Like 0
Dislike Dislike 0
Love Love 0
Funny Funny 0
Angry Angry 0
Sad Sad 0
Wow Wow 0