অরবিন্দ ডি সিলভা এর জীবনী | Biography Of Aravinda de Silva
অরবিন্দ ডি সিলভা এর জীবনী | Biography Of Aravinda de Silva

ব্যক্তিগত তথ্য |
|
---|---|
পূর্ণ নাম |
পিন্নাদুয়াগে অরবিন্দ ডি সিলভা
|
জন্ম | ১৭ অক্টোবর ১৯৬৫ কলম্বো, শ্রীলঙ্কা |
ডাকনাম |
ম্যাড ম্যাক্স |
ব্যাটিংয়ের ধরন |
ডানহাতি |
বোলিংয়ের ধরন |
ডানহাতি অফ ব্রেক |
ভূমিকা | ব্যাটসম্যান, অধিনায়ক, প্রশাসক |
পিন্নাদুয়াগে অরবিন্দ ডি সিলভা (সিংহলি: පින්නදුවගේ අරවින්ද ද සිල්වා; জন্ম: ১৭ অক্টোবর, ১৯৬৫) কলম্বোয় জন্মগ্রহণকারী শ্রীলঙ্কার সাবেক ও বিখ্যাত ক্রিকেট তারকা ও প্রশাসক। তাকে শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে আকর্ষণীয় ব্যাটসম্যানদের একজনরূপে গণ্য করা হয়। এছাড়াও, তিনি তার সময়কালে সর্বাধিক মার্জিত রূচিসম্পন্ন খেলোয়াড় ছিলেন। অদ্যাবধি বিশ্বকাপের ইতিহাসে তিনিই একমাত্র খেলোয়াড়, যিনি সেঞ্চুরির পাশাপাশি ৩ উইকেট লাভ করেছেন অরবিন্দ ডি সিলভা। স্বল্পকালের জন্য জাতীয় নির্বাচক কমিটির প্রধান হিসেবে ২০১১ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপের পর শ্রীলঙ্কা দল থেকে পদত্যাগ করেন।
খেলোয়াড়ী জীবন
কলম্বোয় জন্মগ্রহণকারী ডি সিলভা ৩১ মার্চ, ১৯৮৪ তারিখে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে একদিনের আন্তর্জাতিকে অভিষেক ঘটান নিজেকে। অতঃপর ২৩ আগস্ট, ১৯৮৪ তারিখে ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের বিপক্ষে লর্ডসে অনুষ্ঠিত টেস্টের মাধ্যমে অভিষিক্ত হন তিনি। শুরুতে তিনি আক্রমণাত্মক ভঙ্গীমায় খেলতেন। ফলে বাজে শট খেলে আউট হয়ে যাওয়ায় তার ডাকনাম হয়ে যায় ম্যাড ম্যাক্স। এ বিষয়ে তিনি তার আক্রমণাত্মক ব্যাটিং প্রসঙ্গে জানান, ‘এ ধরনের খেলা আমার সহজাত প্রবৃত্তি। আমি এ ধারা পরিবর্তন করবো না। এ ধারায় খেলতেই আমি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। কেউ যদি বোলিংয়ের উপর প্রভুত্ব ঘটাতে চায়, তাকে তাই করতে দেয়া উচিত। শৈশব থেকেই আমি এভাবে খেলে আসছি।’ নিউজিল্যান্ড সফর শেষে ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে কেন্টের সাথে চুক্তিবদ্ধ হন। এপ্রিল, ১৯৯৫ সালে পূর্ববর্তী মৌসুমে শীর্ষস্থানীয় ব্যাটসম্যান কার্ল হুপার ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের সাথে খেলার লক্ষ্যে চলে যাওয়ায় স্বল্প সময়ের মধ্যে কেন্টে যোগ দেন। প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট খেলার ফলে খেলোয়াড়ী জীবনের মোড় ঘুরে যায় ও খেলার ধারা পরিবর্তিত হয় তার। ঐ মৌসুমে কেন্ট কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপে সর্বশেষ অষ্টাদশ স্থান দখল করেছিল।
এপ্রিল, ১৯৯৭ সালে আটদিনের ব্যবধানে তিনটি টেস্ট সেঞ্চুরি করেছিলেন। তন্মধ্যে কলম্বোর সিংহলীজ স্পোর্টস ক্লাবে পাকিস্তানের বিপক্ষে উভয় ইনিংসে অপরাজিত ১৩৮* ও ১০৫* রান করেন। ভারতের সুনীল গাভাস্কার ও অস্ট্রেলিয়ার রিকি পন্টিং উভয় ইনিংসে তিনবার করে সেঞ্চুরি করেছেন। তিনি ৭৬.২৫ গড়ে ঐ মৌসুমে রান করেন ১,২২০।
অরবিন্দ ডি সিলভা: আন্ডারডগ শ্রীলঙ্কা পরাশক্তি হয়েছিলো যার হাত ধরে
ইডেন গার্ডেনে ১৯৯৬ বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে মুখোমুখি ভারত ও শ্রীলঙ্কা। সেসময়ে শক্তির বিচারে ভারতের আশেপাশেও শ্রীলঙ্কার থাকার কথা না, ভারত যেখানে একবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন সেখানে ওই বিশ্বকাপের আগে শ্রীলঙ্কা কখনো গ্রুপ পর্বই পার হতে পারেনি! কিন্তু ওই বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কা যেন এক ভিন্ন এক অবতারে হাজির হয়েছিলো, গ্রুপ পর্বে এই ভারতকে একপ্রকার উড়িয়েই দিয়েছিলো শ্রীলঙ্কা। তাই এই সেমিফাইনালটা ভারতের জন্য ছিল প্রতিশোধের ম্যাচ।
সেবার শ্রীলঙ্কাকে যত বড় টার্গেটই দেওয়া হচ্ছিলো তার কোনোটাই লংকার ডায়নামিক ব্যাটিং লাইনআপের কাছে ধোপে টিকতে পারছিলো না একারণে ভারতের অধিনায়ক মোহাম্মদ আজহারউদ্দীন টসে জিতে নিলেন ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত। তার সিদ্ধান্তকে সঠিক প্রমাণের জন্য খুব বেশি সময় ভারতীয় বোলাররা নিলো না, প্রথম ওভারে মাত্র ১ রানের মধ্যেই শ্রীলঙ্কার দুই পিঞ্চ হিটার ওপেনার কালুভিতারানা ও জয়াসুরিয়াকে ফিরিয়ে দেন পেসার জাভাগাল শ্রীনাথ। রেগুলার ব্যাটিং অর্ডার অনুযায়ী তখন অরবিন্দ ডি সিলভার নামার কথা, কিন্তু তখন ডি সিলভার গায়ে বেশ জ্বর।
ড্রেসিংরুমের অনেকেই ডি সিলভাকে আরেক উইকেট পরে নামতে বলেছিলো কারণ জ্বর গায়ে ডি সিলভা খুব বেশিক্ষণ উইকেটে থাকতে পারবেন না। ডি সিলভা তখন বলেছিলেন, “৪৫ মিনিট খেলতে পারলেই যথেষ্ট হবে।” ডি সিলভা তার কথা রেখেছিলেন, ১ রানে দুই উইকেট হারিয়ে যেখানে শ্রীলঙ্কার রানের চাকা একদম শ্লথ হয়ে যাওয়ার কথা, সেখানে ডি সিলভা ব্যাটিংয়ে নেমেই শুরু করেন কাউন্টার অ্যাটাক। একঘণ্টা পর ডি সিলভা যখন আউট হন, তখন শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ১৪.২ ওভারে ৮৫/৪। আর সেই ৮৫ রানের মধ্যে ডি সিলভার ব্যাট থেকেই এসেছিলো ৬৬ রান! রানের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ ছিল ডি সিলভা এই রান করতে খরচ করেছিলেন মাত্র ৪৭ বল! ১ রানে দুই ওপেনারের উইকেট পেয়ে যাওয়ার পর ভারত যখন লংকান ব্যাটিং ইউনিটকে পুরোপুরি চেপে ধরার প্ল্যানে ছিল, খেলার এমন পর্যায়ে ডি সিলভার এমন কাউন্টার অ্যাটাকে উল্টো ভারতের বোলাররাই চাপে পড়ে যায়। ডি সিলভার ইনিংসটার জন্যই পরের ব্যাটসম্যানদের রানরেট নিয়ে কোনো চিন্তা করতে হয়নি, ধীরেসুস্থে খেলে বাকি ব্যাটসম্যানরা মিলে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ২৫১ রানে
ইডেনের সেই তপ্ত দুপুরে অসাধারণ কাউন্টার অ্যাটাকিং ফিফটির পর ডি সিলভা; Source: espncricinfo.com
ইডেনের স্লো টার্নিং উইকেটে ২৫০ পার করা এই স্কোরটাই হয়ে যায় উইনিং স্কোর আর ডি সিলভার ৬৪ রানের মিডিয়াম সাইজের ঝড়ো ইনিংসটা গুরুত্বের দিক থেকে ছাড়িয়ে যায় অনেক শতাধিক রানের ইনিংসকেও। সব ইমপ্যাক্ট বিবেচনা করে অনেক ক্রিকেট অ্যানালিস্টই বিশ্বকাপে তাদের প্রিয় ইনিংসের তালিকায় এই ক্যামিওটাকে রাখেন।
লঙ্কান শিবিরের দুর্ধর্ষ সৈনিক অরবিন্দ ডি সিলভা
স্টাইলিশ ব্যাটিংয়ের জন্য স্কুল ক্রিকেটে থাকাকালীনই সবার নজরে চলে আসেন অরবিন্দ ডি সিলভা। উচ্চতায় মাত্র ৫ ফুট ৩ ইঞ্চি হলেও স্কয়ার অব দ্য উইকেটে বেশ ভালো খেলতেন ডি সিলভা। বিশেষ করে পুল আর হুক শটে তিনি তো সর্বকালেরই অন্যতম সেরা। তার এমন অমিয় প্রতিভা দেখে নির্বাচকরা ১৯৮৪ সালে মাত্র ১৯ বছর বয়সেই তাকে ওয়ানডে একাদশে সুযোগ দেন।
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে নিজের অভিষেক ম্যাচে অবশ্য তেমন সুবিধা করতে পারেননি। রিচার্ড হ্যাডলির বলে বোল্ড হয়ে মাত্র ৮ রানেই প্যাভিলিয়নে ফিরে যান ডি সিলভা। একই বছরের আগস্টে ঐতিহাসিক লর্ডসে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক হয় তার। তবে ওয়ানডে অভিষেকের মতো টেস্ট অভিষেকেও সুবিধা করতে পারেননি। ক্যারিয়ারের প্রথম দিকে বেশ কিছুদিন অতি বেশি আক্রমণাত্মক হতে গিয়ে ক্রিজে থিতু হওয়ার আগেই উইকেট বিলিয়ে দিতেন ডি সিলভা। আর এ কারণেই সবাই তাকে ‘ম্যাড ম্যাক্স’ বলে ডাকা শুরু করে।
১৯৯৬ বিশ্বকাপ। লঙ্কানদের বিশ্বজয়ের একমাত্র কারিগর তিনি। সেবার সেমিফাইনাল এবং ফাইনাল দুই ম্যাচেই ম্যাচ সেরা হয়েছিলেন তিনি। সেমিফাইনালে ভারতের বিপক্ষে ৪৭ বলে করেন ৬৬ রান। শিকার করেন একটি উইকেটও। আর ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার ৩ উইকেট তুলে নেওয়ার পাশাপাশি হাঁকান দুর্দান্ত শতক। সে দিন একাই তিনি বিশ্বকাপ এনে দিয়েছিলেন লঙ্কানদের।
২০০৩ বিশ্বকাপের পরই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানান অরবিন্দ ডি সিলভা। প্রায় ২০ বছর শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দলে প্রাণভোমরা হয়ে ছিলেন তিনি। তবে ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট ম্যাচে ডবল সেঞ্চুরি করে দাঁড়ি টানেন তিনি।
শ্রীলঙ্কার হয়ে ৯৩টি টেস্ট ম্যাচে ৬ হাজার ৩৬১ রান করেন অরবিন্দ। এর মধ্যে ২০টি শতকের পাশাপাশি করেছেন ২২টি অর্ধশতক। সেই সঙ্গে ঝুলিতে ভরেছেন ২৯টি উইকেটও। এক দিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে শ্রীলঙ্কার জার্সি গায়ে জড়িয়েছেন ৩০৮টি ম্যাচে। এ সময় ব্যাট হাতে রান করেছেন ৯ হাজার ২৮৪। ১১টি সেঞ্চুরির পাশাপাশি আছে ৬৪টি হাফ সেঞ্চুরিও।
লাহোর ফাইনালে অরবিন্দ ডি সিলভার অমর সেই ইনিংস
আজ থেকে অনেক বছর পর তাঁকে ঘিরে বসা নাতি-নাতনিদের যখন তার গৌরবের গল্প বলতে বসবেন বৃদ্ধ ডি সিলভা, একটি ইনিংসের স্মৃতিচারণা একেবারেই অন্যরকম করে তুলবে তাঁকে। নাতি-নাতনিরা অবাক হয়ে দেখবে এতক্ষণ ইয়ার্কি-ফাজলামোতে চারপাশ মাতিয়ে তোলা তাঁদের দাদু কেমন একটা ঘোরের মধ্যে চলে গেছেন, অস্বাভাবিক উজ্জ্বল দেখাচ্ছে তাঁর চোখ-মুখ। অনুমান করা কোনো সমস্যাই নয়–তখন লাহোরের সেই বিশ্বজয়ের রাতের গল্প বলছেন অরবিন্দ ডি সিলভা!
৭ মার্চ নয়, একদিন আগেই শুরু হয়ে গিয়েছিল তাঁর বিশ্বকাপ ফাইনাল। সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলতে আপত্তি করতেই পারেন, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের যেকোনো তারকার ইন্টারভিউ চাওয়ার সময়ই এর মানসিক প্রস্তুতি থাকে। কিন্তু অরবিন্দ ডি সিলভার প্রতিক্রিয়াটা হলো একটু ব্যতিক্রমী, ইন্টারভিউয়ের জন্য একটু সময় চাইতেই তিনি যেন অনুনয় করলেন, 'প্লিজ, আজ আর আমি একদম কথা বলতে চাই না। কাল ম্যাচ শেষে বলব।'
গাদ্দাফি স্টেডিয়ামের দুই প্রান্তের নেটে তখন দুই ফাইনালিস্ট। ভিড়টা বেশি মার্ক টেলরের দলকে ঘিরেই। স্টিভ ওয়াহ-মার্ক ওয়াহ-শেন ওয়ার্নদের হাসিখুশিও দেখাচ্ছে বেশি। সে তুলনায় শ্রীলঙ্কান প্রান্তের আবহাওয়াটা একটু যেন গুমোট। শ্রীলঙ্কানরা এমনিতে খুবই হাসিখুশি, কিন্তু সেদিন তাদের হাবভাব এতটাই চরিত্রবিরুদ্ধ যে, আজও মনে আছে তা দেখে এক ভারতীয় সাংবাদিক বন্ধুর মন্তব্য। 'তিরাশির ফাইনালের আগের দিন লর্ডসে না থেকেও আমি নিশ্চিত বলতে পারি, সেদিনও ভারতের অবস্থা এমন করুণ দেখাচ্ছিল না’–ওর এ কথা বাড়াবাড়ি বলে মনে হয়নি, শ্রীলঙ্কানদের দেখে এ রকম মনে হওয়ার কারণ ছিল। মনে হচ্ছিল ফাইনালের আগের দিন এসে হঠাৎই যেন জয়াসুরিয়া-মহানামা-ভাসরা বুঝতে পেরেছেন, কী ভয়ঙ্কর কাণ্ড ঘটিয়ে ফেলেছেন তাঁরা! অরবিন্দ ডি সিলভাকে গম্ভীর দেখাচ্ছে এদের চেয়েও বেশি। একটু আগে নেটে ব্যাটিং সেরে এসেছেন। তারপর থেকে একদমই চুপচাপ। তিনি দলের সহ-অধিনায়ক, তাই অধিনায়ক অর্জুনা রানাতুঙ্গা, কোচ ডেভ হোয়াটমোর, ম্যানেজার দিলীপ মেন্ডিসের সঙ্গে আলোচনায় যোগ দিতে হচ্ছে মাঝে-মধ্যেই। তবে পর মুহূর্তেই যেন ভিড়ের মধ্যেও একা হয়ে যাচ্ছেন আবার। নেটের পাশে চেয়ার ছাড়াও হাতল লাগানো যে একটা বেঞ্চমতো ছিল, বেশির ভাগ সময় তারই এক কিনারায় বসে কী যেন ভাবছেন। তখনই কলকাতার সেমিফাইনালে খেলা অসাধারণ ইনিংসটির জন্য অভিনন্দন জানিয়ে ইন্টারভিউয়ের জন্য একটু সময় চাওয়া আর চাইতেই প্রায় অনুনয়ের ওই ভঙ্গি। এরপরও শ্রীলঙ্কা দল যে আধঘণ্টামতো গাদ্দাফিতে রইল, সে সময়টাতেও একই দৃশ্য, অরবিন্দ পিন্নাদুয়াগা ডি সিলভা যেন ধ্যানমগ্ন।
বিশ্বকাপ ক্রিকেট, ১৯৯৬
১৯৯৬ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপের ফাইনালে শ্রীলঙ্কা-অস্ট্রেলিয়া প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। অধিনায়ক অর্জুনা রানাতুঙ্গা টসে জয়ী হয়ে ফিল্ডিং নেন ও ১৯৮৭ সালের বিশ্বকাপ বিজয়ী ও তৃতীয়বারের মতো ফাইনালে অংশগ্রহণকারী অস্ট্রেলিয়াকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানান। ডি সিলভা রিকি পন্টিং ও মার্ক টেলরকে আউট করলে দলের রান ৪ উইকেটে ১৫৬ হয়। স্টুয়ার্ট ল এবং স্টিভ ওয়াহ দলের হাল ধরেন। দু’জনে আউট হলে দল ৬ উইকেটে ২০২ করে। ইয়ান হিলি ও মাইকেল বেভান ক্রিজে আসলে ডি সিলভা পুনরায় হিলিকে আউট করেন। অস্ট্রেলিয়া নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৭ উইকেটে ২৪১ রান করে। জবাবে কুয়াশা ও শিশিরাচ্ছন্ন মাঠে অস্ট্রেলিয়া আধিপত্য বজায় রাখতে শুরুতেই সচেষ্ট হয়। শ্রীলঙ্কা তাদের দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানকে ২৩ রানের মধ্যে হারায়। তারপর ডি সিলভা ক্রিজে আসেন ও তাঁর জীবনের সবচেয়ে আনন্দঘন খেলাটি বিচক্ষণতার সাথে খেলেন। ডি সিলভা ৪২ রানে ৩ উইকেট সংগ্রহের পাশাপাশি অপরাজিত ১০৭* রান করেন ১২৪ বল খেলে, যা বিশ্বকাপের ইতিহাসে তৃতীয় সেঞ্চুরির ঘটনা। তাঁকে যোগ্য সঙ্গ দেন অশঙ্কা গুরুসিনহা (৬৫) ও অর্জুনা রানাতুঙ্গা (৪৭*)। ৪৭তম ওভারেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় তাঁর দল। ক্রিকেট বিশ্বকাপের ইতিহাসে স্বাগতিক কিংবা সহ-স্বাগতিক দেশের বিশ্বকাপ জয়ের প্রথম ঘটনার সূচনা করে শ্রীলঙ্কা। বোলিং ও ব্যাটিং - উভয় বিভাগেই অসাধারণ ক্রীড়াশৈলী উপস্থাপনা করায় ডি সিলভা ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেন।
সম্মাননা
১৯৯৬ সালে উইজডেন কর্তৃপক্ষ তাঁকে বর্ষসেরা ক্রিকেটারের মর্যাদায় অভিষিক্ত করে। এছাড়াও উইজডেনের শীর্ষ ১০০ তালিকায় ৬টি বিভাগে রাখে যা ওয়েস্ট ইন্ডিজের ভিভ রিচার্ডসের চেয়ে মাত্র একটি কম। ১৯৯৬ সালের বিশ্বকাপ বিজয়ে তাঁর অবদানের জন্য উইজডেন কর্তৃপক্ষ ওডিআইয়ের ব্যাটিং বিভাগে ৮ম এবং বোলিং বিভাগে ৮২তম স্থানে রাখে।
আন্তর্জাতিক তথ্য |
|
---|---|
জাতীয় দল |
|
টেস্ট অভিষেক |
২৩ আগস্ট ১৯৮৪ বনাম ইংল্যান্ড |
শেষ টেস্ট |
২৩ জুলাই ২০০২ বনাম বাংলাদেশ |
ওডিআই অভিষেক(ক্যাপ ৩০৮) |
৩১ মার্চ ১৯৮৪ বনাম নিউজিল্যান্ড |
শেষ ওডিআই |
১৮ মার্চ ২০০৩ বনাম অস্ট্রেলিয়া |
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
|
||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ১৮ আগস্ট ২০১৬
|
sourse:utpalshuvro: dainikbangla: archive: wikipedia...
What's Your Reaction?






