জর্জ ওম এর জীবনী | Biography of Georg Ohm

জর্জ ওম এর জীবনী | Biography of Georg Ohm

May 18, 2025 - 16:36
May 25, 2025 - 23:13
 0  1
জর্জ ওম এর জীবনী | Biography of Georg Ohm

জন্ম

১৬ মার্চ ১৭৮৯
এরলাঙেন, ব্রান্ডেন্‌বুর্গ-বায়রয়েট
(বর্তমান জার্মানি)

মৃত্যু

৬ জুলাই ১৮৫৪ (বয়স ৬৫)
মিউনিখ, বাভারিয়া রাজ্য

জাতীয়তা

জার্মান

মাতৃশিক্ষায়তন

এরলাঙেন বিশ্ববিদ্যালয়

পরিচিতির কারণ

ও'মের সূত্র

পুরস্কার

কোপলি পদক (১৮৪১)

বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন

কর্মক্ষেত্র

পদার্থ বিজ্ঞান (বিদ্যুৎ)

প্রতিষ্ঠানসমূহ

মিউনিখ বিশ্ববিদ্যালয়

ডক্টরাল উপদেষ্টা

কার্ল ক্রিস্টিয়ান ফন লাংস্‌ডর্ফ

জর্জ সাইমন ওম

 (জার্মান: Georg Simon Ohm; জন্ম: ১৬ মার্চ ১৭৮৯ – মৃত্যু: ৬ জুলাই ১৮৫৪) ছিলেন একজন জার্মান গণিতবিদ ও পদার্থবিজ্ঞানী। একজন স্কুল শিক্ষক হিসেবে ওম তার গবেষণা শুরু করেন ইতালীয় বিজ্ঞানী আলেসান্দ্রো ভোল্টার উদ্ভাবিত ইলেক্ট্রোকেমিক্যাল সেল ব্যবহার করে। নিজ হাতে তৈরি যন্ত্রপাতি দিয়ে পরীক্ষা করে ওম দেখান যে, একটি পরিবাহকের দুই প্রান্তে প্রয়োগ করা বিভব পার্থক্য ও তাতে প্রবাহিত বিদ্যুৎ প্রবাহের মধ্যে সরাসরি সমানুপাতিক সম্পর্ক আছে। এই সম্পর্কটি ওমের সূত্র (Ohm's Law) নামে পরিচিত।

জীবনী

ওম জার্মানির এলাঙ্গেন শহরে একটি প্রোটেস্টান্ট পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা ছিলেন তালার কারিগর এবং শিক্ষাবিদ নন, কিন্তু তিনি আত্মশিক্ষায় উচ্চ পর্যায়ে জ্ঞান অর্জন করেছিলেন এবং নিজের সন্তানদের হাতে-কলমে বিজ্ঞান, গণিত, রসায়ন এবং দর্শনের উচ্চমানের শিক্ষা দিয়েছিলেন।

বিশ্ববিদ্যালয় জীবন

ওম এলাঙ্গেন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করেন কিন্তু পরে তার বাবা তাকে সুইজারল্যান্ডে পাঠান যেন সে শিক্ষার সুযোগের সদ্ব্যবহার করে। সেখানে তিনি একজন স্কুলে গণিত শিক্ষক হিসেবে কাজ শুরু করেন এবং সেই সময় নিজের উদ্যোগে ইউলার, লাপ্লাস এবং লাক্রোয়ার বই পড়ে গণিত শিখতে থাকেন।

শিক্ষকতা জীবন

১৮১১ সালে তিনি এলাঙ্গেন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেন এবং কিছুদিন সেখানে শিক্ষকতা করেন। কিন্তু চাকরি ও আর্থিক পরিস্থিতি অনিশ্চিত হওয়ায় তিনি ব্যামবার্গের একটি নিম্নমানের স্কুলে শিক্ষকতা শুরু করেন। পরে প্রুশিয়ার রাজা উইলহেল্ম তৃতীয় ওমের লেখা পাঠ্যবই পড়ে সন্তুষ্ট হয়ে তাঁকে কোলোন শহরের জেসুইট জিমনাজিয়ামে নিয়োগ দেন। এখানে ওম একটি উন্নতমানের ল্যাবরেটরিতে কাজ করার সুযোগ পান এবং বৈদ্যুতিক বর্তনী নিয়ে গবেষণা শুরু করেন।

ওমের সূত্রের আবিষ্কার

১৮২৭ সালে তিনি প্রকাশ করেন তার বিখ্যাত বই "Die galvanische Kette, mathematisch bearbeitet" (গ্যালভানিক বর্তনী, গাণিতিকভাবে বিশ্লেষিত)। এই বইয়ে তিনি প্রথমবারের মতো ওমের সূত্র উপস্থাপন করেন, যা বলে: একটি বর্তনীর যেকোনো অংশে প্রয়োগকৃত বৈদ্যুতিক বল (EMF) হল ঐ অংশে বিদ্যুৎ প্রবাহ ও প্রতিরোধের গুণফল। এই সূত্র বৈদ্যুতিক বর্তনীর তত্ত্ব গঠনে এক বিরাট অবদান রাখে।

বিদ্যুৎ বর্তনী

তড়িৎ বর্তনী (Electric Circuit)

তড়িৎ বর্তনী হল একটি পথ যার মাধ্যমে তড়িৎ প্রবাহিত হয়। একটি তড়িৎ বর্তনীতে এমন একটি ডিভাইস থাকে যা প্রবাহিত চার্জ কণাগুলিকে শক্তি দেয়, যেমন একটি ব্যাটারি বা একটি জেনারেটর; সেই সঙ্গে এমন যন্ত্র থাকে যা এই তড়িৎ প্রবাহ ব্যবহার করে, যেমন বাতি, বৈদ্যুতিক মোটর বা কম্পিউটার; এবং যুক্ত করা থাকে সংযোগকারী তার বা বিদ্যুৎ পরিবাহী লাইন।

তড়িৎ বর্তনীর কর্মক্ষমতা বর্ণনা করার জন্য দুটি মৌলিক গাণিতিক নিয়ম হল ওহমের সূত্র (Ohm’s law) এবং কির্শহফের নিয়ম (Kirchhoff’s rules)

তড়িৎ বর্তনীর ধরন:

১. ধারাবাহিক বর্তনী (Series Circuit):
এই ধরনের বর্তনীতে সম্পূর্ণ তড়িৎ প্রবাহ প্রতিটি উপাদানের মধ্য দিয়ে পরপর প্রবাহিত হয়।

২. সমান্তরাল বর্তনী (Parallel Circuit):
এই বর্তনীতে একাধিক শাখা থাকে, যাতে তড়িৎ বিভক্ত হয়ে প্রতিটি শাখার মধ্যে অংশবিশেষ প্রবাহিত হয়। সমান্তরাল বর্তনীর প্রতিটি শাখার উপর ভোল্টেজ বা বিভব পার্থক্য সমান থাকে, কিন্তু প্রতিটি শাখায় প্রবাহিত কারেন্ট বিভিন্ন হতে পারে।

উদাহরণস্বরূপ, একটি গৃহস্থালি বৈদ্যুতিক বর্তনীতে প্রতিটি বাতি বা যন্ত্রের উপর সমান ভোল্টেজ প্রয়োগ করা হয়, কিন্তু প্রতিটি ডিভাইস তার শক্তি প্রয়োজন অনুযায়ী ভিন্ন ভিন্ন পরিমাণ কারেন্ট টানে।

অনুরূপভাবে, একাধিক একই ধরনের ব্যাটারি যদি সমান্তরালে যুক্ত করা হয়, তবে তারা একটি ব্যাটারির তুলনায় বেশি কারেন্ট সরবরাহ করতে পারে, কিন্তু ভোল্টেজ একই থাকে।

  • সমন্বিত বর্তনী (Integrated Circuit)

  • সুর-নির্ধারিত বর্তনী বা টিউনড সার্কিট (Tuned Circuit)

তড়িৎ শক্তি (Electric Power)

তড়িৎ শক্তি হল এমন একটি শক্তি যা অন্যান্য ধরণের শক্তিকে রূপান্তরের মাধ্যমে উৎপন্ন হয়—যেমন যান্ত্রিক, তাপীয় বা রাসায়নিক শক্তি। তড়িৎ শক্তি অনেক ব্যবহারের ক্ষেত্রে অতুলনীয়, যেমন আলো জ্বালানো, কম্পিউটার চালানো, গতি প্রদান (মোটর চালনা) এবং বিনোদনমূলক কাজে। অন্য অনেক কাজে এটি প্রতিযোগিতামূলক, যেমন বিভিন্ন শিল্পে উত্তাপ প্রদান, রান্না, ঘর গরম রাখা (space heating), এবং রেল চলাচলে।

তড়িৎ শক্তি নির্ধারিত হয় দুটি উপাদানের মাধ্যমে—
কারেন্ট অর্থাৎ তড়িৎ চার্জের প্রবাহ এবং
ভোল্টেজ অর্থাৎ সেই চার্জের মধ্যে শক্তি সরবরাহের ক্ষমতা বা বিভব।

একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ শক্তি যে কোনো কারেন্ট ও ভোল্টেজের সংমিশ্রণে তৈরি হতে পারে।


যদি কারেন্ট সরলধারা (Direct Current – DC) হয়, তাহলে ইলেকট্রনের প্রবাহ একটি নির্দিষ্ট দিকে চলতে থাকে এবং শক্তি গ্রহণকারী যন্ত্রে একই দিকে প্রবাহিত হয়।
আর যদি বিকল্পধারা (Alternating Current – AC) হয়, তাহলে ইলেকট্রনগুলো একবার সামনে, একবার পেছনে এভাবে পিছিয়ে-পিছুয়ে চলে, যন্ত্র এবং তারের মধ্যেও একইভাবে চলাচল করে।

অনেক ব্যবহারেই উভয় ধরনের কারেন্ট কার্যকরী হতে পারে, কিন্তু AC সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় কারণ এটি উৎপাদন ও বিতরণের ক্ষেত্রে অনেক বেশি দক্ষ।

তবে কিছু নির্দিষ্ট শিল্পক্ষেত্রে, যেমন ইলেক্ট্রোপ্লেটিং (electroplating), ইলেক্ট্রোমেটালার্জিক্যাল প্রক্রিয়া (electrometallurgical processes), এবং বেশিরভাগ ইলেকট্রনিক যন্ত্রে DC কারেন্ট প্রয়োজন হয়।

স্বীকৃতি ও মৃত্যুর পর

প্রথমে ওমের কাজ তেমন গুরুত্ব পায়নি, কিন্তু পরে তার অবদানের স্বীকৃতি দিতে ১৮৪১ সালে রয়্যাল সোসাইটি তাকে কপলি মেডেল প্রদান করে। তিনি ১৮৪২ সালে রয়্যাল সোসাইটির বিদেশি সদস্য হন এবং ১৮৪৫ সালে ব্যাভারিয়ান বিজ্ঞান একাডেমির পূর্ণ সদস্য হন। ১৮৫৪ সালে মিউনিখে তার মৃত্যু হয়।

ওমের নামানুসারে

  • ওমের সূত্র (Ohm’s Law): V = IR

  • ওম (Ω): বৈদ্যুতিক প্রতিরোধের এসআই একক তার নামানুসারে দেওয়া হয়।

sourse: wikipedia

What's Your Reaction?

Like Like 0
Dislike Dislike 0
Love Love 0
Funny Funny 0
Angry Angry 0
Sad Sad 0
Wow Wow 0