স্যাম কারান এর জীবনী | Biography of Sam Curran
স্যাম কারান এর জীবনী | Biography of Sam Curran

ব্যক্তিগত তথ্য |
|
---|---|
পূর্ণ নাম |
স্যামুয়েল ম্যাথু কারেন
|
জন্ম |
৩ জুন ১৯৯৮ নর্দাম্পটন, নর্দাম্পটনশায়ার, ইংল্যান্ড |
উচ্চতা |
৫ ফুট ৯ ইঞ্চি (১.৭৫ মিটার) |
ব্যাটিংয়ের ধরন |
বামহাতি |
বোলিংয়ের ধরন |
বামহাতি মিডিয়াম-ফাস্ট |
ভূমিকা |
অল-রাউন্ডার |
সম্পর্ক |
কেভিন কারেন (দাদা) |
আন্তর্জাতিক তথ্য |
|
জাতীয় দল |
|
টেস্ট অভিষেক (ক্যাপ ৬৮৬) |
১ জুন ২০১৮ বনাম পাকিস্তান |
শেষ টেস্ট |
৩১ জানুয়ারি ২০১৯ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ |
ওডিআই অভিষেক (ক্যাপ ২৫০) |
২৪ জুন ২০১৮ বনাম অস্ট্রেলিয়া |
শেষ ওডিআই |
২৩ অক্টোবর ২০১৮ বনাম শ্রীলঙ্কা |
ওডিআই শার্ট নং |
৫৮ |
ঘরোয়া দলের তথ্য |
|
বছর |
দল |
২০১৫–বর্তমান |
সারে (জার্সি নং ৫৮) |
২০১৭ |
অকল্যান্ড এইসেস |
২০১৯–বর্তমান |
চেন্নাই সুপার কিংস |
সবকিছু ঘোরের মতো লাগছে কারানের
স্যামুয়েল ম্যাথু কারেন (ইংরেজি: Sam Curran; জন্ম: ৩ জুন, ১৯৯৮) নর্দাম্পটনে জন্মগ্রহণকারী ও জিম্বাবুয়ে বংশোদ্ভূত বিখ্যাত ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা। ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য তিনি। ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে সারে এবং নিউজিল্যান্ডীয় ঘরোয়া ক্রিকেটে অকল্যান্ডের প্রতিনিধিত্ব করছেন। দলে তিনি মূলতঃ অল-রাউন্ডার হিসেবে খেলে থাকেন। বামহাতি ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি বামহাতে মিডিয়াম-ফাস্ট বোলিং করে থাকেন স্যাম কারেন।
পূর্ণ নাম: স্যামুয়েল ম্যাথিউ কারান
জন্ম: ৩ জুন ১৯৯৮
জন্মস্থান: নর্থহ্যাম্পটন, ইংল্যান্ড
পেশা: আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার (ইংল্যান্ড জাতীয় দল)
ভূমিকা: অলরাউন্ডার
ব্যাটিং: বাঁহাতি
বোলিং: বাঁহাতি মিডিয়াম পেস
শৈশবকাল
জিম্বাবুয়ের সাবেক আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার কেভিন কারেনের সর্বকনিষ্ঠ পুত্র ছিলেন তিনি। সহোদর কনিষ্ঠ ভ্রাতা টম কারেন সারে ও ইংল্যান্ড দলের পক্ষে খেলেছেন। অন্য ভ্রাতা বেন কারেন নর্দাম্পটনশায়ারের পক্ষে খেলছেন। মেরোনডেরা স্প্রিংভেল হাউজ, হারারের সেন্ট জর্জেস কলেজ ও বার্কশায়ারের ওয়েলিংটন কলেজে পড়াশোনা করেছেন স্যাম কারেন। সেখানে তিনি পিই, কলা ও ব্যবসায় শিক্ষা বিষয়ে এ-লেভেলে অধ্যয়ন করেছিলেন।রুসাপের পারিবারিক খামারে তিনি বসবাস করতেন। এরপর ২০০৪ সালের ভূমি পুণঃগঠন নীতির আলোকে ঐ খামারটি বাজেয়াপ্ত করা হয়।
পারিবারিক পটভূমি:
স্যাম কারানের পিতার নাম কেভিন কারান, যিনি ছিলেন জিম্বাবুয়ের একজন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার। তার বড় ভাই টম কারান ও আরেক ভাই বেন কারান-ও পেশাদার ক্রিকেটার। ক্রিকেট যেন তাদের রক্তে মিশে আছে।
ক্রিকেট ক্যারিয়ারের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস:
স্যাম কারান একজন উদীয়মান ও প্রতিভাবান ইংলিশ অলরাউন্ডার যিনি তরুণ বয়সেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দারুণ সাফল্য পেয়েছেন। তিনি একজন দক্ষ সুইং বোলার ও কার্যকরী ব্যাটসম্যান।
ঘরোয়া ক্রিকেট
সারে দলের অনূর্ধ্ব-১৫, অনূর্ধ্ব-১৭ ও দ্বিতীয় একাদশে খেলেছেন স্যাম কারেন। ২০১৪ সালে সারে চ্যাম্পিয়নশীপ প্রিমিয়ার বিভাগে ওয়েব্রিজের প্রতিনিধিত্ব করেন। সারের ক্রিকেট পরিচালক অ্যালেক স্টুয়ার্টের অভিমত, স্যাম কারেন তার দেখা ১৭ বছর বয়সী ক্রিকেটারদের মধ্যে সেরা।জ্যেষ্ঠদের ক্রিকেটে টুয়েন্টি২০ খেলার মাধ্যমে অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয় তার। ১৯ জুন, ২০১৫ তারিখে ১৭ বছর ১৬ দিন বয়সে ওভালে অনুষ্ঠিত ন্যাটওয়েস্ট টি২০ ব্ল্যাস্ট প্রতিযোগিতায় ১৭ বছর ১৬ দিন বয়সে তার এই প্রথম খেলায় অংশগ্রহণ ছিল।
কাউন্টি ক্রিকেট
২০১৫ সালে সারের প্রথম একাদশে খেলার সুযোগ পান। সহজাত বামহাতি সুইং ও ব্যাট হাতে ব্যাটিংয়ের পূর্ণাঙ্গ আস্থা নিয়ে খেলতে থাকেন। উভয় বিভাগে সুন্দর ক্রীড়াশৈলী তাকে বিশেষ ক্রিকেটারে পরিণত করে। ১৩ জুলাই, ২০১৫ তারিখে জুলাইয়ে কেন্ট দলের বিপক্ষে ওভালে অনুষ্ঠিত কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপে অংশগ্রহণের মাধ্যমে প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অভিষিক্ত হন তিনি। চোখে পড়ার মতো অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়েছিল তার। স্বীয় ভ্রাতা টমের সাথে বোলিং উদ্বোধনে নেমেছিলেন। নিজস্ব পঞ্চম বলেই দূর্দান্ত ইনসুইঙ্গারে জো ডেনলিকে বোল্ড করেন তিনি।১৭ বছর ৪০ দিন বয়সে সারের দ্বিতীয় সর্বকনিষ্ঠ প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটার হিসেবে তার এই অংশগ্রহণ ছিল। ঠিক ৬৯ বছর পূর্বে ১৭ বছর ৮ দিন বয়সে নিয়ে টনি লক সর্বকনিষ্ঠ প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটারের সম্মাননা পেয়েছিলেন। তিনিও একই দলের বিপক্ষে ওভালে অভিষিক্ত হয়েছিলেন। প্রথম ইনিংসে তার বোলিং পরিসংখ্যান ছিল ৫/১০১। বিশ্বাস করা হয় যে, কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপে খেলায় অভিষেকে সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে পাঁচ-উইকেট পেয়েছেন তিনি। খেলায় তিনি মোট আট উইকেট পেয়েছিলেন। ২৭ জুলাই, ২০১৫ তারিখে ওভালে নর্দাম্পটনশায়ারের বিপক্ষে রয়্যাল লন্ডন ওয়ান-ডে কাপের লিস্ট এ ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। উপর্যুপরী দুইবার রয়্যাল লন্ডন কাপে রানার্স-আপ হয়েছিল সারে দল। লর্ডসে গ্লুচেস্টারশায়ার ও পরবর্তীতে ওয়ারউইকশায়ারের কাছে পরাভূত হয় তার দল। মাত্র ১৮ বছর বয়সে তার এ সাফল্য লাভে তেমন বাজেভাবে শুরু হয়নি। কিন্তু, প্রতিযোগিতামূলক মনোভাবের অধিকারী স্যাম কারেন উভয় খেলাতেই নিজেকে তেমন মেলে ধরতে পারেননি।
২০১৬ সালের গ্রীষ্মে তিনি ব্যাট ও বল হাতে অপ্রতিরোধ্য ছিলেন। তন্মধ্যে, ল্যাঙ্কাশায়ারের বিপক্ষে ব্যক্তিগত সেরা ৯৬ রান তুলেন। আরন লিলি’র বলে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে মনঃক্ষুণ্ন চিত্তে ফিরে যান। ডারহামের বিপক্ষে সাত বলের ব্যবধানে চার উইকেট পান ও প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়নশীপে ছয় উইকেট দখল করেন।
আইপিএল অধ্যায়
২০১৭-১৮ মৌসুমের সুপার স্ম্যাশে অকল্যান্ড এইসেসের পক্ষে খেলার জন্যে চুক্তিবদ্ধ হন। ডিসেম্বর, ২০১৮ সালে কিংস ইলাভেন পাঞ্জাব কর্তৃপক্ষ ২০১৯ সালের ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের খেলোয়াড়দের নিলামে ৭.২০ কোটি রূপিতে ($১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) তাকে চুক্তিবদ্ধ করে।২০১৮ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) কর্তৃক পুরুষদের ক্রিকেটে পাঁচজন উঠতি তারকার অন্যতম হিসেবে মনোনীত হন। মার্চ, ২০১৯ সালে আইপিএল প্রতিযোগিতাকে ঘিরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) আটজন খেলোয়াড়ের একজন হিসেবে নজরে রাখে।
২০১৯ সালে ২০ বছর বয়সে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে সর্বকনিষ্ঠ বোলার হিসেবে হ্যাট্রিক করার কৃতিত্ব গড়েন।[১৩][১৪] উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে দ্রুতগতিতে ২০ রান তোলার পর দিল্লি ক্যাপিটালসের বিপক্ষে মৌসুমের প্রথম হ্যাট্রিক করেন। এরফলে তার দল কিংস ইলাভেন পাঞ্জাব ১৪ রানে বিজয়ী হয়। খেলায় তিনি প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেন।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট
২০১১-১২ মৌসুমে সিএসএ আন্ডার-থার্টিন উইক প্রতিযোগিতায় জিম্বাবুয়ের অনূর্ধ্ব-১৩ দলের প্রতিনিধিত্ব করেন।[১৭] ২০১৬ সালের আইসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপ প্রতিযোগিতায় ইংল্যান্ড দলের পক্ষে খেলেন। ছয় খেলার সবগুলোতে অংশ নিয়ে ২০১ রান সংগ্রহের পাশাপাশি সাত উইকেট দখল করেন। ঐ প্রতিযোগিতায় তার দল ষষ্ঠ স্থান অধিকার করে। ঘরোয়া ক্রিকেটে দূর্দান্ত খেলার কারণে ২০১৬ মৌসুমের শেষ দিকে ইংল্যান্ড লায়ন্স কর্তৃপক্ষের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে উপনীত হন। ২০১৬-১৭ মৌসুমে ইংল্যান্ড লায়ন্সের সদস্যরূপে সংযুক্ত আরব আমিরাত গমন করেন। ২০১৭ মৌসুমে ক্যান্টারবারির সেন্ট লরেন্স গ্রাউন্ডে প্রতিপক্ষ দক্ষিণ আফ্রিকা এ দলের বিপক্ষে খেলেন।
জানুয়ারি, ২০১৮ সালে প্রথমবারের মতো বড়োদের দলে খেলার জন্য আমন্ত্রিত হন। ২০১৭-১৮ মৌসুমের ট্রান্স-তাসমান ত্রি-দেশীয় সিরিজে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে মুখোমুখি হয় তার দল। অন্যদিকে, তার ভ্রাতা টমকেও টি২০ দলের সদস্য করা হয়। কিন্তু, কোন খেলায় অংশগ্রহণের সুযোগ হয়নি তার।
৩০ মে, ২০১৮ তারিখে ইংল্যান্ড টেস্ট দলে অন্তর্ভুক্ত হন তিনি। ২০১৮ মৌসুমে সফরকারী পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে বেন স্টোকস আঘাতের কবলে পড়লে স্থলাভিষিক্ত হন তিনি। ১ জুন, ২০১৮ তারিখে লিডসে হেডিংলি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে টেস্ট অভিষেক ঘটে স্যাম কারেনের। এ সময় তার বয়স ছিল ১৯ বছর ৩৬৩ দিন। ইংল্যান্ডের একমাত্র ইনিংসে তিনি ২০ রান তুলতে পেরেছিলেন ও খেলায় ৪৩ রান খরচায় দুই উইকেট পান তিনি।
এক টেস্ট পরই প্রথমবারের মতো ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার পান। প্রথম ইনিংসে চার উইকেট লাভের পর আক্রমণাত্মক ব্যাটিং উপহার দিয়ে ইংল্যান্ডকে এজবাস্টন টেস্ট জয়ে সহায়তা করেন। তবে, তার এ সফলতার ফলে ব্যাটিং না-কি বোলিং বিভাগে তিনি শক্তিধর তা প্রশ্নবানে মুখর করে তোলে।
২৪ জুন, ২০১৮ তারিখে সফররত অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে একদিনের আন্তর্জাতিকে অভিষেক ঘটে তার। সিরিজের পঞ্চম ওডিআইটিতে ইয়ান বাটলারের শ্বাসরুদ্ধকর ব্যাটিংয়ের কল্যাণে ইংল্যান্ড এক উইকেটে জয় তুলে নেয়ার পাশাপাশি সফরকারীদেরকে হোয়াইটওয়াশ করেছিল।
ভারতের মুখোমুখি
২০১৮ মৌসুমের পতৌদি ট্রফিতে সফরকারী ভারতের বিপক্ষে ইংল্যান্ড দলের সদস্যরূপে খেলেন। এজবাস্টনে অনুষ্ঠিত সিরিজের প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৪/৭৪ পান। তন্মধ্যে, ভারতের শীর্ষস্থানীয় তিনজন ব্যাটসম্যান তার শিকারে পরিণত হয়েছিলেন। দ্বিতীয় ইনিংসে ৬৩ রান সংগ্রহ করেন ও প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচ পুরস্কারে ভূষিত হন। তৃতীয় টেস্টে তাকে দলের বাইরে রাখা হয়। অ্যাজিয়াস বোলে আঘাতপ্রাপ্ত ক্রিস ওকসের স্থলাভিষিক্ত হন। ইংল্যান্ডের প্রথম ইনিংসে ৭৮ রান তুলে শীর্ষ রান সংগ্রাহক হন। কিন্তু, ওভালে অনুষ্ঠিত সিরিজের পঞ্চম টেস্টে প্রথমবারের মতো শূন্য রানে আউট হন। তাসত্ত্বেও, ইংল্যান্ডের ৪-১ ব্যবধানে জয়ী সিরিজে ২৭২ রান ১১ উইকেট নিয়ে প্লেয়ার অব দ্য সিরিজে মনোনীত হন। তার এ অসামান্য ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনের কারণে ২০১৮ সালে ক্রিকেট রাইটার্স ক্লাব কর্তৃক বর্ষসেরা তরুণ ক্রিকেটারের সম্মাননা লাভ করেন।নভেম্বর, ২০১৮ সালে দুই টেস্ট খেলার উদ্দেশ্য নিয়ে ইংল্যান্ডের সদস্যরূপে শ্রীলঙ্কা গমন করেন। সেখানে তিনি ৩৭.৩৩ গড়ে ১১২ রান তুললেও একটিমাত্র উইকেট পেয়েছিলেন।
ঘরোয়া ক্রিকেটে দূর্দান্ত ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১৯ সালের উইজডেন সংস্করণে তাকে অন্যতম বর্ষসেরা ক্রিকেটার হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
আন্তর্জাতিক অভিষেক:
-
টেস্ট অভিষেক: ২০১৮ সালের জুনে, পাকিস্তানের বিপক্ষে
-
ওয়ানডে অভিষেক: ২০১৮ সালের জুনে, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে
-
টি-২০ অভিষেক: ২০১৯ সালের নভেম্বর, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে
স্যাম কারান তার টেস্ট ক্যারিয়ারে বিশেষ নজর কেড়েছিলেন ২০১৮ সালে ভারতের বিপক্ষে সিরিজে অসাধারণ অলরাউন্ড পারফরম্যান্স দিয়ে।
ফাইনাল মঞ্চে রান তাড়ায় দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে দলকে তীরে ভিড়িয়ে সব আলো নিজের দিকে করে নেন বেন স্টোকস। আরও একটি বিশ্বকাপ ফাইনালে তার এক্সেলেন্সই কেড়ে নেয় আলোচনার সবটা। কিন্তু এই জয়ের ভিত যে গড়ে দিয়েছিলেন কারানই। ৪ ওভার বল করে স্রেফ ১২ রান দিয়ে তিনি নিয়েছেন ৩ উইকেট। আউট করেছেন মোহাম্মদ রিজওয়ান, শান মাসুদ আর মোহাম্মদ নাওয়াজকে।
ক্যামেরার চোখ, মানুষের আলোচনা স্টোকসের দিকে ঘুরে গেলেও ম্যাচ সেরা কিন্তু হয়েছেন কারানই। ৬ ম্যাচে ১১.৩৮ গড়, আর ওভারপ্রতি মাত্র ৬.৫২ রান দিয়ে তিনি ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্টও তিনি।
বাঁহাতি পেসে গতি তার জুতসই। বাঁহাতি হওয়ায় সহজাত অ্যাঙ্গেল তো আছেই, সঙ্গে যুক্ত হয় বিষাক্ত স্যুয়িং ও নিখুঁত নিশানা। আসরের সেরা বোলার ও সেরা খেলোয়াড় হয়েছেন কারো কোন দ্বিমত ছাড়া।
ম্যাচ শেষে ব্রডকাস্টারদের সঙ্গে আলোচনায় কারান জানান সব কিছু আপাতত ঘোরের মতো লাগছে তার, 'বিশ্বকাপ জিতেছি আর কিচ্ছু দরকার নেই, এতেই আমি খুশি। এখনো বুঝে উঠতে পারছি না, সময় লাগবে। সকালে ঘুম ভেঙে যখন মনে হবে আমরা বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন তখন রোমাঞ্চ জাগবে।'
মুম্বাই ইন্ডিয়ানস ও রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর মাঝে কারেনকে কেনার লড়াই হয় শুরুতে। দাম হু হু করে ৬ কোটি রুপিতে উঠে যায়। রাজস্থান রয়্যালস ১১ কোটি ৫০ লাখ রুপি দাম বলার পর চেন্নাই সুপার কিংসও যোগ দেয় এই লড়াইয়ে। কারেন চেন্নাইয়ের সাবেক খেলোয়াড়।
শেষ লড়াইটা হয়েছে চেন্নাই, মুম্বাই ও পাঞ্জাবের মধ্যে। মুম্বাই কারেনের দাম ১৮ কোটি রুপি বলার পর পাঞ্জাব আরও ৫০ লাখ বাড়ায়। এরপর মুম্বাই আর এগোয়নি। পাঞ্জাবই কিনে নেয় কারেনকে। নিলামের বাইরে সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিকের রেকর্ড বিরাট কোহলি ও লোকেশ রাহুলের। যৌথভাবে দুজনেই পেয়েছেন ১৭ কোটি রুপি।
আজ নিলামে কারেনকে পাঞ্জাব কেনার আগে আরেক ইংলিশ ক্রিকেটার হ্যারি ব্রুককে ১৩ কোটি ২৫ লাখ রুপিতে কিনে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। ২৩ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান ব্রুক সম্প্রতি পাকিস্তান সফরে টেস্টে ৩ সেঞ্চুরি তুলে সিরিজসেরা হন। ঘরোয়া টি-টোয়েন্টিতে তাঁর ১৪৮.৩৮ স্ট্রাইকরেট ও গড় ৩৩.৭ ।
তবে হ্যারি ব্রুক কিন্তু ২০২৩ আইপিএল নিলামে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দামি খেলোয়াড় নয়। সেই জায়গাটা অস্ট্রেলিয়ার হয়ে মাত্র ৮টি টি-টোয়েন্টি খেলা ক্যামেরন গ্রিনের। কারেন দামের ইতিহাস গড়ার কিছুক্ষণ পর নিলামে নাম ওঠে অস্ট্রেলিয়ান এই ব্যাটিং অলরাউন্ডারের। গ্রিনকে পেতে মুম্বাই ও দিল্লির মধ্যেই মূল লড়াইটা হয়। শেষ পর্যন্ত ১৭ কোটি ৫০ লাখ রুপিতে গ্রিনকে পেয়ে যায় মুম্বাই ইন্ডিয়ানস।
এর মধ্য দিয়ে আইপিএলের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দামি খেলোয়াড় হলেন অস্ট্রেলিয়ার ২৩ বছর বয়সী গ্রিন। ক্রিস মরিস তিনে নেমে গেলেন। তবে সেটি যুগ্মভাবে। কারণ আজকের নিলামে বেন স্টোকসকে আজ ১৬ কোটি ২৫ লাখ রুপিতে কিনেছে চেন্নাই সুপার কিংস। দীপক চাহারকে টপকে চেন্নাইয়ের ইতিহাসে সবচেয়ে দামি খেলোয়াড় এখন ইংল্যান্ডের এই তারকা অলরাউন্ডার।
স্মরণীয় কৃতিত্ব:
-
২০১৮ সালে ভারতের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস ও সুইং বোলিংয়ের মাধ্যমে ম্যাচ জেতাতে সহায়তা করেন।
-
২০২২ সালে টি-২০ বিশ্বকাপে:
-
ইংল্যান্ড চ্যাম্পিয়ন হলে তিনি দলের প্রধান বোলিং অস্ত্র হিসেবে বিশেষ ভূমিকা রাখেন।
-
ফাইনালে পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে ৩ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হন।
-
পুরো টুর্নামেন্টে সেরা খেলোয়াড় (Player of the Tournament) নির্বাচিত হন।
-
ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট:
স্যাম কারান একাধিক ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট লীগে অংশগ্রহণ করেছেন:
-
IPL (ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ):
-
কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব (পাঞ্জাব কিংস)
-
চেন্নাই সুপার কিংস
-
২০২3 সালের নিলামে তিনি ছিলেন সর্বোচ্চ মূল্যের খেলোয়াড় (₹১৮.৫ কোটি) – পাঞ্জাব কিংসে যোগ দেন।
-
-
The Hundred: ওভাল ইনভিন্সিবলস
-
BBL ও অন্যান্য লীগ: মাঝে মাঝে উপস্থিতি
খেলাধুলার বৈশিষ্ট্য:
-
বোলিং: বাঁহাতি সুইং বোলিং, বিশেষ করে নতুন বলে অত্যন্ত কার্যকর
-
ব্যাটিং: নিচের দিকে ঝড়ো ইনিংস খেলার ক্ষমতা
-
ফিল্ডিং: দুর্দান্ত অ্যাথলেটিক ফিল্ডার
ব্যক্তিগত জীবন:
-
ছোটবেলা কেটেছে জিম্বাবুয়ে ও ইংল্যান্ডে।
-
ওকল্যান্ড কলেজ, সারে থেকে পড়াশোনা করেছেন।
-
ছোটবেলা থেকেই
sourse ; thedailystar ... prothomalo .. bhugolshiksha ... wikipedia
What's Your Reaction?






