মোহাম্মদ ইউসুফ এর-জীবনী Biography of Mohammad Yousuf

মোহাম্মদ ইউসুফ এর-জীবনী Biography of Mohammad Yousuf

May 25, 2025 - 00:24
May 25, 2025 - 01:54
 0  2
মোহাম্মদ ইউসুফ এর-জীবনী Biography of Mohammad Yousuf

ব্যক্তিগত তথ্য

পূর্ণ নাম

মোহাম্মদ ইউসুফ

জন্ম

২৭ আগস্ট ১৯৭৪ (বয়স ৫০)
লাহোর, পাঞ্জাব, পাকিস্তান

ব্যাটিংয়ের ধরন

ডানহাতি ব্যাটসম্যান

বোলিংয়ের ধরন

ডানহাতি মিডিয়াম
ভূমিকা ব্যাটসম্যান

ইউসুফ ইউহানা বা মোহাম্মদ ইউসুফ (উর্দুمحمد یوسف‎‎; জন্ম: ২৭ আগস্ট, ১৯৭৪) লাহোরে জন্মগ্রহণকারী পাকিস্তানের সাবেক ও বিখ্যাত আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা। তিনি পাকিস্তান জাতীয় দলের ডানহাতি ব্যাটসম্যান ও অধিনায়কের দায়িত্বে ছিলেন। ২০০৫ সালে তিনি খ্রিস্টান ধর্ম ত্যাগ করে ধর্মান্তরিত হয়ে ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হন। স্বল্পসংখ্যক খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে তিনিও ছিলেন একজন, যিনি পাকিস্তান ক্রিকেট দলের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।

ইসলাম ধর্ম কেন গ্রহণ করলেন ক্রিকেটার মোহাম্মদ ইউসুফ

ঢাকা টাইমস ডেস্ক
  প্রকাশিত : ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৫:৪১

মোহাম্মদ ইউসুফ ধ্রুপদী ব্যাটিংয়ে মন জয় করেছেন বিশ্বের। যিনি পাকিস্তানের লাহোরে জন্মগ্রহণকারী পাকিস্তানের সাবেক ও বিখ্যাত আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা। পাকিস্তান জাতীয় দলের ডানহাতি ব্যাটসম্যান ও অধিনায়কের দায়িত্বে ছিলেন।

মোহাম্মদ ইউসুফ ২০০৫ সালে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নেন। সেই সঙ্গে তিনি ইসলামি নাম মোহাম্মদ ইউসুফও গ্রহণ করেন। তার স্ত্রী তানিয়াও ধর্ম পরিবর্তন করে নিজের নাম ফাতিমা রাখেন। সেইবছর লাহোরে ভারতের বিরুদ্ধে ইউসুফ ১৯৯ বলে ১৭৩ রান করেন। এরপর ২০০৬ সালে পাকিস্তান ক্রিকেট দলের হয়ে ইংল্যান্ড সফরেও তিনি যথেষ্ট ভালো পারফরম্যান্স করেছিলেন। এমনকী সেইবছর একটি ক্যালেন্ডার ইয়ারে সবথেকে বেশি রান করে তিনি ভিভিয়ান রিচার্ডসের রেকর্ডও ভেঙে দেন। সেইবছর তিনি ১,৭৮৮ রান করেছিলেন। আর রিচার্ডস এক ক্যালেন্ডার বর্ষে সবথেকে বেশি ১,৭১০ রান করেছিলেন।

মোহাম্মদ ইউসুফ জানান, তার এই দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের আসল রহস্য হল ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করা। এই মন্তব্যের ঠিক এক বছর আগেই ইউসুফ ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন। প্রথমে তিনি ইউসুফ ইউহানা নামে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলতে শুরু করেন। ইউহানা ছিলেন চতুর্থ খ্রীষ্টান ক্রিকেটার যিনি পাকিস্তান ক্রিকেট দলের হয়ে খেলেছিলেন। ২০০৪ সালে প্রথম অ-মুসলিম ক্রিকেটার হিসেবে তিনি পাকিস্তান ক্রিকেট দলকে নেতৃত্বও দিয়েছিলে

উইজডেনকে দেওয়া একটি ইন্টারভিউয়ে ইউসুফ স্বীকার করে নিয়েছিলেন যে সঈদ আনোয়ার তাঁর খুব কাছের বন্ধু ছিলেন। আনোয়ার তাকে যথেষ্ট প্রভাবিত করেছিল। মেয়ের মৃত্য়ুর পর ক্রিকেট ছেড়ে ধর্মের পথ গ্রহণ করেছিলেন সঈদ আনোয়ার।

মোহাম্মদ ইউসুফ বলেন যে এরপর সঈদ আনোয়ারের জীবনে এক অদ্ভুত পরিবর্তন তিনি লক্ষ্য করেছিলেন। তিনি বলেন, 'আমাকে ধর্ম পরিবর্তন করতে কেউ জোর করেননি। সত্যি কথা তো এটাই যে সঈদ আনোয়ার আমার খুব কাছের একজন বন্ধু। মাঠের ভিতরে হোক কিংবা বাইরে, আমরা সেই বন্ধুত্ব বজায় রাখতাম। কৈশোর থেকেই আমরা একসঙ্গে প্রচুর ক্রিকেট খেলেছি। আমি সঈদের সঙ্গে অনেকটা সময় কাটিয়েছিলাম। ওর বাবা-মা আমাকে নিজেদের সন্তানের মতো ভালোবাসেন। আমি যখনই ওদের বাড়িতে যাই তখন দেখি যে ওর বাবা-মা কতটা শান্ত জীবনযাপন করেন এবং তার থেকেও বড় কথা জীবনে একটা অনুশাসন রয়েছে। আর এই ঘটনায় আমি যথেষ্ট প্রভাবিত হই।'

মোহাম্মদ ইউসুফ আরও যোগ করেন, 'আমি সঈদ আনোয়ারের জীবন ধার্মিক হওয়ার আগে কিংবা পরে, দুটোই দেখেছি। সঈদের ব্যক্তিগত জীবনে যখন ক্ষতি হয়েছে, তার মেয়ে মারা গিয়েছিল, সেইসময় আমি ওর খুব কাছে ছিলাম। এরপর থেকে সঈদ ইসলামের পথে হাঁটতে শুরু করেন। এটা আমার কাছে একটা অনুপ্রেরণা। বলা ভালো, আমার জীবনের টার্নিং পয়েন্ট। এরপর আমিও ইসলাম ধর্ম গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়ে নিই।'

উল্লেখ্য, মোহাম্মদ ইউসুফ পাকিস্তানের হয়ে ৯০টি টেস্ট, ২৮৮ একদিনের ম্যাচ এবং ৩টে টি২০ ম্যাচে পাকিস্তানের জার্সিতে খেলেছেন। তিন ফরম্যাটে তাঁর রানসংখ্যা যথাক্রমে ৭৫৩০, ৯৭২০ এবং ৫০। ২০১০ সালে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের জার্সিতে শেষবার আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেন।

প্রারম্ভিক জীবন

নিম্নশ্রেণীভূক্ত হিন্দু বাল্মিকি গোত্রে জন্মগ্রহণ করেন যারা পরবর্তীতে খ্রিস্টান ধর্মগ্রহণ করেন। বাবা ইয়োহানা মাসেহ রেলওয়ে স্টেশনে কাজ করতেন ও রেলওয়ে কলোনীতে বসবাস করতো তাদের পরিবার। শৈশবে তিনি ব্যাট চালাতে পারতেন না; তাই তার ভাইয়েরা টেনিস বলের সাহায্যে তাকে সাহস যোগাতেন। ১২ বছর বয়সে গোল্ডেন জিমখানা দলের দৃষ্টিতে পড়েন ও ক্রিকেটের সাথে সম্পৃক্ত হন। লাহোরের ফরম্যান ক্রিস্টিয়ান কলেজে অধ্যয়ন করেন ও সেখানেই ১৯৯৪ সালের শুরুর দিক পর্যন্ত খেলতে থাকেন। একসময় তিনি ভাগ্যান্বেষণে ভাওয়ালপুরে রিক্সা চালাতেন।

নিষেধাজ্ঞা

১০ মার্চ, ২০১০ তারিখে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড কর্তৃক ইউসুফকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটাঙ্গন থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। ২০০৯-১০ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়া সফরে দলের পরাজয়ের পর তদন্ত কমিটির সুপারিশই এর প্রধান কারণ। পিসিবি’র আনুষ্ঠানিক ঘোষণায় জানানো হয় যে, তিনি পুনরায় দলের পক্ষ হয়ে খেলতে পারবেন না। এরপর তিনি এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে ২৯ মার্চ, ২০১০ তারিখে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সকল স্তর থেকে অবসরের ঘোষণা দেন। কিন্তু জুলাই/আগস্ট, ২০১০ সালে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে অনুষ্ঠিত প্রথম টেস্টে পাকিস্তানের মারাত্মক বিপর্যয়ের পর অবসর ভেঙ্গে তাকে পুনরায় দলে যোগদানের জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছিল।

খেলোয়াড়ী জীবন

২৬ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৮ তারিখে ডারবানে অনুষ্ঠিত টেস্ট ক্রিকেটে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে অভিষেক ঘটে ইউসুফের। ৫০-এর অধিক গড়ে সাত সহস্রাধিক রান করেন যা যে কোন পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানদের চেয়ে বেশি। এছাড়াও তার ২৪টি সেঞ্চুরিও রয়েছে। ২৭ বলে অর্ধ-শতক করেন যা বিশ্বের তৃতীয় দ্রুততম অর্ধ-শতক। ২০০৪ সালের বক্সিং ডে টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ১১১ রান করেন। ডিসেম্বর, ২০০৫ সালে লাহোরে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ২২৩ রান সংগ্রহ করে ম্যান অব দ্য ম্যাচ পুরস্কার লাভ করেন। সাত মাস পর জুলাই, ২০০৬ সালে ইংল্যান্ড সফরে একই দলের বিরুদ্ধে প্রথম টেস্টে ২০২ ও ৪৮ রান করে পুনরায় ম্যান অব দ্য ম্যাচ পুরস্কার লাভ করেন। হেডিংলিতে অনুষ্ঠিত তৃতীয় টেস্টে ১৯২ ও ওভালের চূড়ান্ত টেস্টে ১২৮ রান সংগ্রহ করেন।

২৮ মার্চ, ১৯৯৮ তারিখে হারারেতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষিক্ত হন। ওডিআইয়ে ৪০-এর অধিক গড়ে নয় সহস্রাধিক রান করেন যা বিখ্যাত ব্যাটসম্যান জহির আব্বাসের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যাটিং গড়। ২০০২-২০০৩ মৌসুমে জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে ৪০৫ রান সংগ্রহ করেন আউট না হয়েই। ২৩ বলে অর্ধ-শতক এবং ৬৮ বলে সেঞ্চুরি করেছেন তিনি। ২০০২ এবং ২০০৩ সালে ধারাবাহিকভাবে বিশ্বের সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারী ছিলেন।

sourse;dhakatimes24;wikipedia

What's Your Reaction?

Like Like 0
Dislike Dislike 0
Love Love 0
Funny Funny 0
Angry Angry 0
Sad Sad 0
Wow Wow 0