ইয়াসিন বোনো এর জীবনী | Biography of Yassine Bounou
ইয়াসিন বোনো এর জীবনী | Biography of Yassine Bounou

ব্যক্তিগত তথ্য |
|||
---|---|---|---|
পূর্ণ নাম |
ইয়াসিন বুনু | ||
জন্ম |
৫ এপ্রিল ১৯৯১ | ||
জন্ম স্থান |
মন্ট্রিয়ল, কানাডা | ||
উচ্চতা |
১.৯৫ মি (৬ ফু ৫ ইঞ্চি) | ||
মাঠে অবস্থান |
গোলরক্ষক | ||
ক্লাবের তথ্য |
|||
বর্তমান দল
|
জিরোনা |
||
জার্সি নম্বর |
১৩ | ||
যুব পর্যায় |
|||
১৯৯৯–২০১০ |
উইদাদ কাসাব্লাঙ্কা | ||
জ্যেষ্ঠ পর্যায়* |
|||
বছর |
দল | ম্যাচ | (গোল) |
২০১০–২০১২ |
উইদাদ কাসাব্লাঙ্কা | ৮ | (০) |
২০১২–২০১৬ |
আতলেতিকো মাদ্রিদ বি | ৪৭ | (০) |
২০১৪–২০১৬ |
→ জারাগোজা (loan) | ৩৮ | (০) |
২০১৬– |
জিরোনা | ৬৬ | (০) |
ইয়াসিন বোনো: মরক্কোর ‘জাতীয় নায়ক’, যার হাতে স্পেনের সর্বনাশ
ইয়াসিন বুনু (আরবি: ياسين بونو; জন্ম: ৫ এপ্রিল ১৯৯১), বোনো নামেই অধিক পরিচিত, হলেন মরক্কোর একজন পেশাদার ফুটবলার, যিনি স্পেনীয় ক্লাব জিরোনা এবং মরক্কো জাতীয় দলের হয়ে একজন গোলরক্ষক হিসেবে খেলেন।
ইয়াসিন বোনো এর জীবনী
জন্ম ও প্রাথমিক জীবন:
ইয়াসিন বোনো জন্মগ্রহণ করেন ৫ এপ্রিল ১৯৯১ সালে কানাডার মন্ট্রিয়লে। যদিও তিনি কানাডায় জন্মগ্রহণ করেন, তাঁর পরিবার ছিল মরক্কোর। ছোটবেলায় তাঁর পরিবার মরক্কো ফিরে আসে এবং সেখানেই তাঁর ফুটবল ক্যারিয়ারের শুরু হয়। তিনি মরক্কোর কিশোর ফুটবল একাডেমিতে প্রশিক্ষণ নেন।
ফুটবল ক্যারিয়ারের শুরু:
বোনোর ফুটবল ক্যারিয়ার শুরু হয় ওয়াইদাদ কাসাব্লাঙ্কা (Wydad Casablanca) ক্লাবের যুবদলে। সেখানে তিনি দ্রুত উন্নতি করেন এবং ২০১০ সালে মূল দলে সুযোগ পান। তিনি ক্লাবের হয়ে CAF চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালসহ গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে অংশগ্রহণ করেন।
ইউরোপে অভিষেক:
২০১২ সালে ইয়াসিন বোনো স্পেনের বিখ্যাত ক্লাব অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের সাথে চুক্তিবদ্ধ হন। যদিও মূলত তিনি ‘বি’ দলে খেলতেন, তাঁর ইউরোপীয় অভিজ্ঞতা এখান থেকেই শুরু হয়।
এরপর তিনি ২০১৬ সালে স্পেনের জিরোনা (Girona) ক্লাবে যোগ দেন। সেখানে তাঁর পারফরম্যান্স চোখে পড়ে এবং তিনি স্প্যানিশ লা লিগায় একজন শক্তিশালী গোলরক্ষক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন।
আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার
বুনু কানাডা এবং মরক্কো উভয় দলের হয়ে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেন,[১] কিন্তু তিনি মরক্কোর হতে খেলার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। তিনি ২০১২ তুলোন টুর্নামেন্টে মরক্কো অনূর্ধ্ব-২০ দলের হয়ে খেলেছেন। তিনি উক প্রতিযোগিতায় ২টি ম্যাচ খেলেছেন। তিনি ২০১২ গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকের জন্য ঘোষিত মরক্কো অনূর্ধ্ব-২৩ দলে স্থান পান, কিন্তু উক্ত প্রতিযোগিতায় তিনি মোহাম্মদ আমসিফের ব্যাকআপ হিসেবে ছিলেন। উক্ত প্রতিযোগিতায় মরক্কো গ্রুপ পর্ব থেকেই বাদ পরে যায়।২০১৩ সালের ১৪ই আগস্ট, বুনু বুরকিনা ফাসোর বিরুদ্ধে এক প্রীতি ম্যাচের মরক্কোর জ্যেষ্ঠ দলে ডাক পান।[২] তিনি এর পরবর্তী দিন, বুরকিনা ফাসোর বিরুদ্ধে ম্যাচের ২য় অর্ধে খেলার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অভিষেক করেন।[৩]
২০১৮ সালের ১৭শে মে তারিখে, তিনি রাশিয়ায় অনুষ্ঠিত ২০১৮ ফিফা বিশ্বকাপের জন্য ঘোষিত ২৩ সদস্যের মরক্কো দলে স্থান পান।
১২০ মিনিটের খেলা শেষ। এ সময়ের মধ্যে ১০১৯টি পাস নিয়েছে স্পেন।
কিন্তু একবারও গোলের মুখ খুলতে পারেনি সাবেক বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। এরপর পেনাল্টি শুটআউটে গড়ানোর পর সবাইকে অবাক করে একবারও বল জালে জড়াতে পারল না লুইস এনরিকের দল। শেষ দুটি শট ঝাঁপিয়ে ঠেকালেন মরক্কোর ইয়াসিন বোনো। এরপর পানেনকা শটে বল জালে জড়িয়ে মরক্কানদের জয় নিশ্চিত করলেন দলটির অভিজ্ঞ মিডফিল্ডার আশরাফ হাকিমি।
হাকিমি নিজে স্পেনে জন্মগ্রহণ করেছেন। কিন্তু খেলছেন মরক্কোর জার্সিতে। আর ক্লাব পর্যায়ে তার ঠিকানা ফ্রান্সের শীর্ষ ক্লাব পিএসজি। তবে তার দলের গোলরক্ষক বোনো স্পেনেই থাকেন প্রায় সারা বছর। খেলেন স্পেনের ক্লাবে। কিন্তু তার দুর্দান্ত দুটি সেভ হৃদয় ভেঙেছে স্প্যানিশদেরই। তার হাত ধরেই ঐতিহাসিক জয়ে প্রথমবার বিশ্বকাপের শেষ আটে উঠেছে মরক্কো। সেই সঙ্গে আরব বিশ্বের প্রথম দল হিসেবেও এই রেকর্ডের মালিক হয়েছে উত্তর আফ্রিকার দলটি। এজন্য তাকে বলা হচ্ছে 'মরক্কোর উপহার'। দেশটিতে তাকে ঘিরে এখন বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ।
২০১০ বিশ্বকাপের পর এই প্রথম কোনো আফ্রিকান দল খেলবে বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে। সেবার ইতিহাসে নাম লিখিয়েছিল ঘানা। এবার মরক্কো। এর পুরো কৃতিত্ব দেওয়া হচ্ছে বোনোকে। টাইব্রেকারে পোস্টের নিচে নাচের ভঙ্গীতে প্রতিপক্ষ খেলোয়াড়দের মনোযোগ নষ্ট কর নজর কেড়েছেন তিনি। বোনো কিন্তু ইউরোপীয় ক্লাব ফুটবলে বেশ পরিচিত নাম। স্প্যানিশ লা লিগার ক্লাব সেভিয়ার গোলরক্ষক তিনি। মূলত ডাকনাম হলেও দেশ ও ক্লাবের জার্সিতে তার নাম লেখা থাকে বোনো।
বোনোর জন্ম কানাডার মন্ট্রিলে, ১৯৯১ সালে। অল্প বয়সেই তিনি পরিবারের সঙ্গে মরক্কোয় যান। মাত্র ৮ বছর বয়সে যোগ দেন ওয়াইদাদ ক্যাসাব্লাঙ্কা নামের ক্লাবে। ১৯ বছর বয়স পর্যন্ত সেখানেই খেলেন তিনি। ক্লাবটির সিনিয়র দলের হয়ে ১১ ম্যাচে মাঠে নেমেছিলেন তরুণ বুনো। পরিণত বয়সে তার উচ্চতা দাঁড়ায় ৬ ফুট ৫ ইঞ্চি, ওজন ১৭৪ পাউন্ড। মাত্র ২১ বছর বয়সে তাকে দলে ভেড়ায় স্পেনের ক্লাব আতলেতিকো মাদ্রিদ। সেখানে দুই মৌসুম ক্লাবের 'বি' টিমের হয়ে খেললেও মূল দলে জায়গা হয়নি তার।
২০১৪ সালে আতলেতিকো থেকে ধারে স্পেনের দ্বিতীয় বিভাগের ক্লাব জারাগোজায় যোগ দেন বোনো। এরপর জিরোনায় যোগ দিয়ে ক্লাবকে লা লিগায় উঠে আসতে সহায়তা করেন। ওই ক্লাবেই ২০১৯ সাল পর্যন্ত কাটান তিনি। এরপর তাকে ধারে দলে নেয় সেভিয়া। গত তিন মৌসুম ধরে এই ক্লাবের প্রথম পছন্দের গোলরক্ষক তিনি। ২০২০-২১ মৌসুমে ১৫ ম্যাচে এবং গত মৌসুমে ১৩ ম্যাচে নিজের পোস্ট সুরক্ষিত (ক্লিনশিট) রাখেন এই মরক্কান।
শীর্ষ পর্যায়ের ক্লাবে সময় লাগলেও মরক্কোর জাতীয় দলে সেই ২০১৩ সাল থেকেই নিয়মিত মুখ বোনো। ২০২১ আফ্রিকা কাপ অব ন্যাশন্সে ৪ ম্যাচ এবং বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ৮ ম্যাচে মাঠে নামেন তিনি। আর বিশ্বকাপে এসে তো চমকেই দিলেন। তবে আরও আগেই তার নাম ইউরোপের শীর্ষ পর্যায়ের ফুটবলে বেশ জোরেশোরে উচ্চারিত হয়েছে।
২০২০ ইউরোপা লিগের সেমিফাইনালে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে সেভিয়ার সেই বিখ্যাত ২-১ গোলের জয়ে গোলপোস্টের নিচে রীতিমতো দেয়াল হয়ে দাঁড়ান বোনো, দারুণ দক্ষতায় প্রতিহত করেন ৬টি শট। ওই আসরের ফাইনালে ইন্টার মিলানের বিপক্ষে ৩-২ গোলে জিতে শিরোপা উদযাপন করে সেভিয়া। সেবার ২ গোল হজম করলেও ২টি দারুণ সেভ করেন বোনো। এরপরই তাকে চার বছরের নতুন চুক্তি উপহার দেয় স্প্যানিশ ক্লাবটি।
২০২০-২১ চ্যাম্পিয়নস লিগে সেভিয়ার জার্সিতে পাঁচ ম্যাচে মাঠে নামেন বুনো এবং দুই ম্যাচে ক্লিনশিট পাওয়ার পরও তার দল শেষ ষোলোয় বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের কাছে হেরে বিদায় নেয়। ২০২১-২২ মৌসুমে লা লিগার সেরা গোলরক্ষকের পুরস্কার জামোর্তা ট্রফি জেতেন বুনো।
কাতার বিশ্বকাপে কেন মরক্কোর সব ম্যাচে মাঠে নামেননি বুনো?
গ্রুপ পর্বে মরক্কোর প্রথম ম্যাচ ছিল গত বিশ্বকাপের রানার্সআপ ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে। ম্যাচটিতে পোস্টের নিচে দাঁড়ান বুনো। ইভান পেরিসিচ, লুকা মদ্রিচের মতো খেলোয়াড়দের একবারও নিজের জাল ভেদ করতে দেননি তিনি। গ্রুপ 'এফ'-এ মরক্কোর পরের ম্যাচ ছিল বেলজিয়ামের বিপক্ষে। ম্যাচের লাইনআপে ছিল বুনোর নাম। এমনকি মাঠে নেমে দলের সঙ্গে জাতীয় সঙ্গীতও গাইতে দেখা যায় তাকে। শুধু কি তাই, গ্লাভস হাতে মাথায় হাত দিয়ে দাঁড়িয়েও থাকতে দেখা যায়। কিন্তু মূল খেলায় নামলেন না তিনি। তার জায়গায় পোস্ট সামলালেন মুনির এল কাজুই।
মরক্কোর হেড কোচ ওয়ালিদ রাগরাগি জানান, শারীরিকভাবে অসুস্থ বোধ করছিলেন বোনো। ফলে শেষ মুহূর্তে তার জায়গায় মুনির এল কাজুইকে নামানো হয়। ম্যাচটিতে কোনো গোল হজম করেনি মরক্কো। বরং ২-০ গোলে জয় তুলে নিয়ে নকআউট পর্বে উঠার পথে এক ধাপ এগিয়ে যায় তারা। পরের ম্যাচে বোনো ফেরেন এবং কানাডাকে ২-১ গোলে হারিয়ে শেষ ষোলো নিশ্চিত করে মরক্কো। বোনো ওই ম্যাচে প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়দের গোল করতে দেননি। কানাডার ওই একটি গোল হয় আত্মঘাতী। এরপর আর কোনো দল মরক্কোর বিপক্ষে গোল করতে পারেনি। এমনকি পেনাল্টি শুটআউটও না।
সেভিয়া এফসি এবং খ্যাতি:
২০১৯ সালে বোনো সেভিয়া এফসি ক্লাবে যোগ দেন। সেখানেই তাঁর ক্যারিয়ারের অন্যতম বড় সফলতা আসে। তিনি ২০২০ ইউরোপা লিগ-এ সেভিয়ার হয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন এবং ক্লাবকে শিরোপা জেতাতে সহায়তা করেন। তিনি বিশেষ করে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিরুদ্ধে সেমিফাইনাল এবং ইন্টার মিলানের বিপক্ষে ফাইনাল-এ দারুণ পারফর্ম করেন।
আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার:
বোনো মরক্কো জাতীয় দলের নিয়মিত সদস্য। তিনি ২০১8 ও 2022 সালের ফিফা বিশ্বকাপ-এ মরক্কোর হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেন। ২০২২ সালের কাতার বিশ্বকাপে তিনি বিশ্বের নজর কাড়েন, যেখানে মরক্কো ইতিহাসে প্রথমবারের মতো সেমিফাইনালে পৌঁছায়। এই টুর্নামেন্টে বোনো অসাধারণ গোলরক্ষণের প্রদর্শনী দেন এবং স্পেনের বিপক্ষে টাইব্রেকারে তিনটি পেনাল্টি ঠেকিয়ে বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হন।
ব্যক্তিগত জীবন:
ইয়াসিন বোনো শান্ত স্বভাবের মানুষ এবং ফুটবলের বাইরে সঙ্গীত ও সংস্কৃতির প্রতি আগ্রহী। তিনি স্প্যানিশ, ফরাসি, আরবি ও ইংরেজি ভাষায় দক্ষ। তাঁর সহধর্মিণী ইমেন এবং তাঁদের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে।
গুরুত্বপূর্ণ অর্জনসমূহ:
-
CAF চ্যাম্পিয়নস লিগ রানার্স আপ – ওয়াইদাদ কাসাব্লাঙ্কা (২০১১)
-
ইউরোপা লিগ বিজয়ী – সেভিয়া (২০২০, ২০২৩)
-
লা লিগার মাসের সেরা গোলরক্ষক (একাধিকবার)
-
২০২2 ফিফা বিশ্বকাপে গোল্ডেন গ্লাভস শর্টলিস্টেড
sourse: wikipedia ,,,,,,,, tbsnews .... protidinerbangladesh
What's Your Reaction?






