আলেকজান্ডার গ্রাহাম বেল এর জীবনী | Biography of Alexander Graham Bell
আলেকজান্ডার গ্রাহাম বেল এর জীবনী | Biography of Alexander Graham Bell

টেলিফোনের আবিষ্কারক আলেকজান্ডার গ্রাহাম বেলের জীবনী
দ্রুত তথ্য: আলেকজান্ডার গ্রাহাম বেল:
|
আলেকজান্ডার গ্রাহাম বেল
(৩ মার্চ ১৮৪৭ - ২ আগস্ট ১৯২২) প্রখ্যাত বিজ্ঞানী ও উদ্ভাবক। টেলিফোনের অন্যতম আবিষ্কারক হিসেবে তিনি সবচেয়ে পরিচিত। তাঁকে বোবাদের পিতা তথা দ্য ফাদার অফ দ্য ডিফ নামে ডাকা হতো। তাঁর বাবা, দাদা এবং ভাই সবাই একক অভিনয় ও বক্তৃতার কাজে জড়িত ছিলেন এবং তাঁর মা ও স্ত্রী উভয়েই ছিলেন বোবা। এ কারণেই বোবাদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে তিনি অনেক গবেষণা করেছেন। টেলিফোন উদ্ভাবনের আগে থেকেই তিনি শ্রবণ ও কথন সংশ্লিষ্ট গবেষণায় নিয়োজিত ছিলেন। ১৮৭৬ সালে তাঁকেই টেলিফোনের প্রথম মার্কিন পেটেন্টের সম্মানে ভূষিত করা হয়।
পরবর্তী জীবনে বেল আরও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা করেন যার মধ্যে রয়েছে উড়ো নৌকা এবং বিমানচালনবিদ্যা। ১৮৮৮ সালে প্রতিষ্ঠিত ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক সোসাইটির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন বেল।তাঁর সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য উদ্ভাবন যে টেলিফোন, সেটিকেই তিনি এক উটকো ঝামেলা জ্ঞান করতেন। এজন্যেই নিজের গবেষণা ও অধ্যয়ন কক্ষে কোন টেলিফোন রাখতেন না। বেল মারা যাওয়ার পর আমেরিকার সকল টেলিফোনে এক মিনিটের জন্য অবিরাম রিং বাজানো হয়। মার্কিন প্রশাসনের ভাষ্য মতে যে মহান ব্যক্তি মানুষে-মানুষে যোগাযোগের এ পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন তাকে উপযুক্ত সম্মান দেখানোর জন্যই এমনটি করা হয়েছে।
প্রথম জীবন
আলেকজান্ডার গ্রাহাম বেল ১৮৪৭ সালের তেশরা মার্চ স্কটল্যান্ডের এডিনবার্গে জন্মগ্রহণ করেন। এডিনবার্গের ১৬ চারলোটি স্ট্রিটের একটি বাড়িতে একটি পাথরের খোদাই থেকে জানা যায় যে এটিই তার পরিবারের আবাসস্থল এবং তার জন্মস্থান ছিল। গ্রাহাম বেলের দুইজন ভাই ছিলেন মেলভিল জেমস বেল এবং এডওয়ার্ড চার্লস বেল যাদের দুজনই পরবর্তীতে যক্ষ্মায় মারা যান। জন্মের সময় তার নাম ছিল আলেকজান্ডার বেল, তবে তার বয়স যখন দশ বছর তখন তিনি তার বাবার কাছে তার বড় দুই ভাইয়ের মধ্যনামের মত একটি মধ্যনামের জন্য আবদার করেন। তার এগারো তম জন্মদিনে তার বাবা আলেকজান্ডার মেলভিল বেল তারই এক কানাডিয়ান বন্ধুর । নাম অণুশারে তার ছোট ছেলের মধ্য নাম রাখেন গ্রাহাম। এর পর থেকেই তার নাম হয় আলেকজান্ডার গ্রাহাম বেল। তবে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তার পরিবারের সদস্য এবং বন্ধুরা এলেক নামেই ডাকত।
প্রথম উদ্ভাবন
শিশুকাল থেকেই আলেকজান্ডার প্রাকৃতিক পরিবেশ সম্পর্কে অত্যন্ত কৌতূহলি ছিলেন এবং এরই পরিপ্রেক্ষিতে তিনি পরীক্ষানিরীক্ষা করার জন্য বিভিন্ন উদ্ভিদের নমুনা সংগ্রহ করতেন। ছোটবেলায় আলেকজান্ডারের সবচেয়ে ভাল বন্ধু ছিলেন বেন হের্ডম্যান। হের্ডম্যানের পরিবার আলেকজান্ডারের প্রতিবেশী ছিলো এবং একটি ময়দা মিল পরিচালনা করত। একবার আলেকজান্ডার প্রশ্ন করেছিলো যে ময়দা প্রস্তুত করতে হলে কি কি করতে হয়, এই প্রশ্নের জবাবে তাকে বলা হয়েছিলো যে পরিশ্রমসাধ্য এক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে গমের খোসা ছাড়িয়ে ময়দা প্রস্তুত করতে হয়। মাত্র ১২ বছর বয়সে পেরেকের ব্রাশ এবং ঘুর্ণায়মান প্যাডেলের সমন্বয়ে আলেকজান্ডার একটি গম পেষাই যন্ত্র তৈরী করেন যা ঐ মিলে অনেক বছর ধরে ব্যবহার করা হয়েছিল। এই উদ্ভাবনের জন্য জন হের্ডম্যান আলেকজান্ডার এবং বেনকে নতুন নতুন জিনিস উদ্ভাবন করার গবেষণা করার জন্য একটি ওয়ার্কশপ উপহার দেয়।
জীবনের প্রথম দিক থেকেই আলেকজান্ডার সঙ্গীত এবং কলার প্রতি অত্যন্ত সংবেদনশীল ছিলেন যা তার মায়ের অণুপ্রেরনায় আরোও উদ্ভাসিত হয়েছিল। কোন প্রথাগত প্রশিক্ষণ ছাড়াই অনেক অল্প বয়সেই তিনি একজন পিয়ানোবাদক হয়ে ওঠেন। শৈশবে তিনি মুখাভিনয় এবং বিভিন্ন প্রকারের শব্দ উৎপাদনের মাধ্যমে পরিবারে আগত অতিথিদের মনোরঞ্জন করতেন। তার মায়ের ক্রমবর্ধমান বধীরতা (আলেকজান্ডারের মা মাত্র ১২ বছর বয়সে শ্রবণশক্তি হারাতে শুরু করেন) তাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করেছিল। তার মায়ের সাথে কথোপোকথনের জন্য তিনি সাংকেতিক ভাষা রপ্ত করেন যাতে করে তিনি নীরব থেকেই মায়ের সাথে কথা বলতে পারেন। তার মায়ের বধিরতা নিয়ে কাজ করতে গিয়েই আলেকজান্ডার শব্দবিজ্ঞান নিয়ে পরাশুনা শুরু করেন। আলেকজান্ডারের পরিবার বহুকাল থেকেই বক্তৃতাকৌশল শিক্ষাদানের কাজ করে আসছিল। লন্ডনে তার দাদা আকেলজান্ডার বেল, ডাবলিনে তার চাচা এবং এডিনবার্গে তার বাবা সকলেই এই পেশার সাথে যুক্ত ছিলেন।
এই বিষয়ের উপর আলেকজান্ডারের বাবার অনেক প্রকাশনা আছে যার কতগুলো আজকের যুগেও অনেক জনপ্রিয় বিশেষ করে ১৮৬৯০ সালে প্রকাশিত দ্যা স্ট্যান্ডার্ড এলোকিউশনিস্ট। দ্যা স্ট্যান্ডার্ড এলোকিউশনিস্ট এডিনবার্গে প্রকাশিত হয় ১৮৮৬ সালে এবং এর ১৬৮ টি ব্রিটিশ সংস্করণ শুধুমাত্র যুক্তরাষ্ট্রেই প্রায় ১২ লাখ কপি বিক্রি হয়। কীভাবে বধির মানুষদের অপরের ঠোঁটের নরাচরা দেখে ভাব বোঝার প্রশিক্ষণ দেওয়া যায় এই বইতে তার বিস্তারিত বিবরন ছিল। কিশোর আলেকজান্ডারকে এবং তার দুই ভাইকে তাদের বাবা এই পদ্ধতি রপ্ত করতে সাহায্য করেছিলেন। প্রশিক্ষণের ফলে আলেকজান্ডার এতটাই পারদরশি হয়ে উঠেছিলেন যে তিনি তার বাবার সাথে বিভিন্ন কর্মশালায় যেতেন এবং নিজেই পদ্ধতিগুলো প্রদর্শন করে দর্শকদের মুগ্ধ করতেন। ধীরে ধীরে তিনি এই কাজে এতটাই সক্ষম হয়ে উঠেছিলেন যে কোন পূর্ব অভিজ্ঞতা এবং উচ্চারন জ্ঞান ছাড়াই ল্যাটিন, স্প্যানিশ, স্কটিশ, গেলিক কিংবা সংস্কৃত যেকোন ভাষাই সংকেতের মাধ্যমে প্রকাশ করতে পারতেন।
শিক্ষা
ভাইদের মত আলেকজান্ডারও ছোটবেলায় পরিবারে বাবার কাছ থেকেই শিক্ষা লাভ করে। যদিও খুব অল্প বয়সেই তাকে এডিনবার্গের রয়েল হাই স্কুলে ভর্তি করা হয়েছিল, সেখানে তিনি চার ক্লাস । পর্যন্তই পড়াশোনা করেন এবং মাত্র ১৫ বছর বয়সেই স্কুল ছেড়ে দেন। স্কুলে তার ফলাফল খুব একটা ভাল ছিল না এবং প্রায়শই স্কুল কামাই দেওয়ার প্রবণতা দেখা গিয়েছে। তার বাবার উচ্চাশা সত্ত্বেও স্কুলের পাঠ্যবিষয়গুলোর প্রতি আলেকজান্ডারের কোন আগ্রহই ছিল না বরং বিজ্ঞান এবং বিশেষ করে জীববিজ্ঞানে তার মারাত্বক আগ্রহ ছিল। স্কুল ত্যাগ করার পর আলেকজান্ডার তার দাদার সাথে বসবাস করার জন্য লন্ডনে গমন করেন। লন্ডনে তার দাদার সাথে থাকার সময় পরাশুনার প্রতি তার গভীর ভালবাসা জন্মায় এবং প্রায়শই তার দাদার সাথে বিভিন্ন বিষয়ের উপর আলোচনা এবং পরাশুনা করে তার ঘণ্টার পর ঘণ্টা কেটে যেত। দাদা আলেকজান্ডার বেল তার নাতিকে তারই শিক্ষানবিশ শিষ্য হিসেবে গ্রহণ করেন এবং তাকে এই বিষয়ের প্রশিক্ষক হিসেবে গড়ে তোলার জন্য কঠোর পরিশ্রম করেন। মাত্র ১৬ বছর বয়সেই আলেকজান্ডার শিক্ষানবিশ শিক্ষক হিসেবে স্কটল্যান্ডের ওয়েস্টন হাউস একাডেমিতে যোগদান করেন। যদিও তখন তিনি ল্যাটিন এবং গ্রিক ভাষার ছাত্র ছিলেন, তিনি তার পরিচালিত প্রত্তেকটি ক্লাসের জন্য ১০ পাউন্ড করে পেতেন। এর পরের বছর তিনি এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন যেখানে তার বড় ভাইও পড়েছিলেন। ১৮৬৮ সালে স্বপরিবারে কানাডা চলে যাওয়ার আগে তিনি লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তার ম্যাট্রিকুলেশন সম্পন্ন করেছিলেন।
আলেকজান্ডার গ্রাহাম বেলের উক্তি
যেখানেই তুমি আবিষ্কারককে পাবে, তাকে সম্পদ দিতে পারো অথবা তার যা কিছু আছে তা কেড়ে নিতে পারো; আর সে আবিষ্কার করেই যাবে। সে আর ভাবতে বা শ্বাস নিতে সাহায্য করতে পারে এমন আবিষ্কার না করে থাকতে পারবে না।
উদ্ভাবক পৃথিবীকে দেখেন এবং জিনিসপত্র যেমন আছে তেমনই নিয়ে সন্তুষ্ট থাকেন না। তিনি যা দেখেন তার উন্নতি করতে চান, তিনি বিশ্বের উপকার করতে চান; তিনি একটি ধারণা দ্বারা আচ্ছন্ন। উদ্ভাবনের চেতনা তাকে ধারণ করে, বস্তুগতীকরণের সন্ধান করে।
মহান আবিষ্কার এবং উন্নতির জন্য সর্বদাই অনেক মনের সহযোগিতা জড়িত। পথটি উজ্জ্বল করার জন্য আমাকে কৃতিত্ব দেওয়া যেতে পারে, কিন্তু যখন আমি পরবর্তী উন্নয়নগুলি দেখি তখন আমার মনে হয় যে কৃতিত্ব আমার নিজের নয় বরং অন্যদের।
যখন একটি দরজা বন্ধ হয়, তখন আরেকটি দরজা খুলে যায়; কিন্তু আমরা প্রায়শই এত দীর্ঘ এবং অনুতপ্তভাবে বন্ধ দরজাটির দিকে তাকিয়ে থাকি যে, আমাদের জন্য খোলা দরজাটি আমরা দেখতে পাই না।
এই শক্তি কী, তা আমি বলতে পারব না; আমি শুধু এটুকু জানি যে এটি বিদ্যমান এবং এটি তখনই উপলব্ধি করা সম্ভব যখন একজন মানুষ মনের এমন অবস্থায় থাকে যেখানে সে ঠিক কী চায় তা জানে এবং যতক্ষণ না সে তা খুঁজে পায় ততক্ষণ হাল ছাড়বে না বলে সম্পূর্ণরূপে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
আমেরিকা উদ্ভাবকদের দেশ, এবং সর্বশ্রেষ্ঠ উদ্ভাবক হলেন সংবাদপত্রের কর্মীরা।
আমাদের গবেষণার চূড়ান্ত ফলাফল আলোর কম্পনের প্রতি সংবেদনশীল পদার্থের শ্রেণীকে আরও বিস্তৃত করেছে যতক্ষণ না আমরা এই সত্যটি তুলে ধরতে পারি যে এই ধরনের সংবেদনশীলতা সমস্ত পদার্থের একটি সাধারণ বৈশিষ্ট্য।
অধ্যবসায়ের অবশ্যই কিছু বাস্তব লক্ষ্য থাকে, নাহলে এটি ধারণকারী ব্যক্তির কোনও কাজে আসে না। যে ব্যক্তির কাছে বাস্তব লক্ষ্য নেই, সে একজন পাগল বা বোকা হয়ে ওঠে। এই ধরণের ব্যক্তিরা আমাদের আশ্রয়স্থল পূরণ করে।
একজন মানুষ, একটি সাধারণ নিয়ম হিসাবে, যা নিয়ে জন্মগ্রহণ করে তার কাছে তার খুব কম ঋণী - একজন মানুষ নিজেকে যা তৈরি করে তা।
তোমার সমস্ত চিন্তাভাবনা হাতের কাজে মনোনিবেশ করো। সূর্যের রশ্মি মনোযোগ আকর্ষণ না করা পর্যন্ত জ্বলে না।
শেষ পর্যন্ত, সবচেয়ে সফল পুরুষরা হলেন তারাই যাদের সাফল্য অবিচ্ছিন্নভাবে বৃদ্ধির ফলাফল।
ওয়াটসন, যদি আমি এমন একটি ব্যবস্থা খুঁজে পাই যা বিদ্যুৎ প্রবাহের তীব্রতা পরিবর্তন করবে, যেমন বাতাস যখন কোনও শব্দের মধ্য দিয়ে যায় তখন ঘনত্ব পরিবর্তিত হয়, তাহলে আমি যেকোনো শব্দ, এমনকি কথার শব্দও টেলিগ্রাফ করতে পারব।
তারপর আমি মুখপত্রে চিৎকার করে নিম্নলিখিত বাক্যটি বললাম: মিঃ ওয়াটসন, এখানে আসুন, আমি আপনাকে দেখতে চাই। আমার আনন্দের বিষয় হল, তিনি এসে ঘোষণা করলেন যে তিনি আমার কথা শুনেছেন এবং বুঝতে পেরেছেন। আমি তাকে কথাগুলো পুনরাবৃত্তি করতে বললাম। তিনি উত্তর দিলেন, "আপনি বলেছেন, মিঃ ওয়াটসন, এখানে আসুন, আমি আপনাকে দেখতে চাই।"
Alexander Graham Bell এর চরিত্রের রাশিফল
দুর্ভাগ্যবশত আপনি প্রচুর অর্থ উপার্জন করতে পারবেন না, তবে টাকা বাহ্যিক কিছু আনন্দই দিতে পারে, আপনার অর্থ না থাকলেও ভেতর থেকে আপনি খুশি অনুভব করবেন।আপনি একজন তেজস্বী মানুষ, ততক্ষণ আপনি নিশ্চিন্ত হন না যতক্ষণ না আপনার কাজ শেষ হয়। আপনি মানসিক ও শারীরিক উভয় দিকেই শক্তিশালী এবং আপনার হাতে যা কাজ থাকে সেটাকে উদ্যমের সাথে শেষ করেন। আপনি অসীম সাহসের অধিকারী, এবং এই গুনের মিশ্রনের ফলে আপনার জীবন ভিন্নতায় ভরা থাকে। আপনি কোনো নির্দিষ্ট দিক ঘোষণার পরেও কোনো একটি জিনিস নিয়ে পড়তে থাকতে পারেন না।
আপনি আপনার চাকরি, বন্ধু, শখ অথবা যেকোনো জিনিসই বদলাতে পারেন যখন আপনার মনে হয় বদলানোটা আপনার জন্য উপকারী। তবে দুর্ভাগ্যবশত এইসব পরিবর্তনের খুঁটি-নাটি আপনি সে পরিমানে বিচার করেন না যতটা আপনি করতে পারেন আর তাই কিছু ক্ষেত্রে এইসব জিনিসের জন্য আপনাকে সমস্যার সম্মুখীনও করতে হতে পারে। তবু আপনার মধ্যে সাহস আছে, আপনি জাত-যোদ্ধা আর আপনি অনেক নতুন উদ্যোগ অন্বিত করেন। শেষ-মেষ সবকিছুই আপনার উন্নতিকে সক্ষম করে।
আপনি ভালো লেনদেনের জন্য নতুন নতুন জায়গায় ঘুরবেন আর তারজন্য আপনি পৃথিবীর নতুন নতুন জায়গাও দেখবেন। যদি আপনি একজন পুরুষ হন তাহলে আপনার নিজের কারবার বা কার্যক্ষেত্রে দেশের বিভিন্ন জায়গায় থাকার সুযোগ পাবেন, আর যদি আপনি একজন মহিলা হন, তাহলে আপনার স্বামীর ব্যবসা বা কার্যক্ষেত্রের জন্য বিভিন্ন স্থানে ঘুরবেন। আমরা সুপারিশ করব আপনি আপনার ধৈর্য ধরার ক্ষমতা বাড়ানোর চেষ্টা করুন, এবং কোনো নতুন উদ্যোগ নেওয়ার আগে ভালো করে সেটার খুঁটিনাটি নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করুন। কিছু অসুবিধা থাকতে পারে তবে সেগুলো আপনার সাফল্যকে দমাতে পারবে না। আপনার বয়স যখন ৩৫ বছর পেরিয়ে যাবে তারপর রূপান্তর করা ঠিক হবে না।
Alexander Graham Bell এর সুখ ও সাচ্ছন্দের রাশিফল
আপনি খুবই পরিশ্রমী এবং তীখ্ন বুদ্ধির অধিকারী এবং আপনি যা অর্জন করতে চান তার জন্য আপনি কঠোর পরিশ্রম করতে পারেন এবং অবশেষে তা লাভ করেন। আপনার তাত্ক্ষণিক জ্ঞান আপনাকে আপনার ক্ষত্রে সবচেয়ে আগে এগিয়ে রাখবে এবং কঠোর পরিশ্রমের কারণেই আপনি বিষয়টিকে অন্তিম পরিণামে পরিণত করবেন। আপনি শাস্ত্র পাঠে আগ্রহী হবেন এবং জীবনের সত্যতা সম্পর্কিত বিষয়গুলির প্রতি আপনার রুচি বোধ থাকবে। আপনি নিজের জীবনে সব সুখ অর্জন করতে চান এবং তার জন্য প্রজনয়ীও কার্য সম্পর্কে আপনার ধারণা থাকবে, এই কারণে আপনি শিক্ষা লাভের দিকে বিশেষ ভাবে নজর দেবেন এবং জীবনে কঠোর পরিশ্রম ও অধ্যাবসায়ের সাথে এগিয়ে যাবেন। আপনার মেজাজ বা রাগের ওপর আপনার নিয়ন্ত্রণ রাখা উচিত, কারণ এটি আপনার শিক্ষা লাভের রাস্তাকে বিঘ্ন করতে পারে এবং পড়াশোনায় একাগ্রতা হ্রাস করতে পারে। যাইহোক, আপনার ধারালো বুদ্ধি সর্বদা শীর্ষে রাখবে।আপনার চিন্তা-ভাবনা আর অনুভূতির মধ্যে একটা মিল লক্ষ্য করা যায়,যা আপনাকে বাস্তব সম্বন্ধে সঠিক উপলব্ধি প্রদান করে। আপনি খুবই বাস্তবিক, নিজেকে বুঝতে সক্ষম, এবং আপনার মনের মধ্যে যা থাকে সেটাকে সুকৌশলে বলেন। আপনার ভেতরের সন্তুষ্টির জন্য আপনার সহজাত স্বভাব বাধা দিলে সেটাকে আপনি দেখতে সক্ষম এবং সেটাকে বলতেও সক্ষম।যদিও তুচ্ছ ব্যাপারে আপনার চিন্তা করার ঝোঁক আছে,পরচর্চাতেও আপনার ঝোঁক আছে এবং নিজের ব্যাপারেও সমানভাবে সমালোচনামূলক হন যেমন আপনি অন্যের ব্যাপারে হন।
Alexander Graham Bell এর জীবন শৈলির রাশিফল
আপনি আপনার যৌন-জীবন বৃদ্ধি করতে উদ্দেশ্যমূলক। যদি অন্যান্য কারণে আপনি অনুভব করেন যে ধন-সম্পদ জরুরী তো আপনি প্রচুর টাকা অর্জন করতে উত্সাহিত হবেন। যাই আপনার লক্ষ্য হোক, যৌন-সুখ আপনার কাছে একটা প্রেরনাদায়ক জিনিস। এটা নিয়ে ঝামেলা না করে এটাকে স্বীকৃতি দিন এবং সর্বোচ্চ সুবিধা ওঠাতে এটাকে ব্যবহার করুন।
অতঃপর টেলিফোন আবিষ্কার
যখন টেলিগ্রাফের মাধ্যমে মোর্স কোড পাঠানোকেই মানুষ বিস্ময়কর ভাবতো তখন বেল কাজ করছিলেন কীভাবে সংকেত না পাঠিয়ে মানুষের স্বরই পাঠানো যায় তা নিয়ে। তবে এর জন্য প্রয়োজন ছিল অনেক টাকার। ৪ বছর গবেষণা করে যখন সাফল্যের নিকটবর্তী হন তখন অর্থের যোগানদাতাও পেয়ে যান বেল। ১৮৭৪ সালে হাবার্ড এবং স্যান্ডার্স নামক দুইজন ধনী উদ্যোক্তা বেলের প্রকল্পে বিনিয়োগ করেন। এই হাবার্ডই পরবর্তী জীবনে বেলের শ্বশুর হন। যা-ই হোক, অর্থের ব্যবস্থা হওয়ায় বেল তখন সুদক্ষ ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার থমাস ওয়াটসনকে নিজের ওয়ার্কশপে নিয়োগ দেন সহকারী হিসেবে।
পরের বছর নিজের গবেষণা কাজকে সুরক্ষিত করে ফেলতে তিনি তার প্যাটেন্ট অ্যাটর্নী অ্যানথনি পোলকের উপদেশে যুক্তরাজ্যে ‘বৈদ্যুতিক তার এর মাধ্যমে শব্দ প্রেরণ’ এর জন্য প্যাটেন্ট এর আবেদন করেন। সিদ্ধান্ত নেন যুক্তরাষ্ট্রে আরো কিছুদিন পর আবেদন করবেন। আর এই সিদ্ধান্ত বিপদ ডেকে আনে বেলের জন্য। কেননা ১৮৭৬ সালে এলিশা গ্রে যুক্তরাষ্ট্রে টেলিফোনের জন্য প্যাটেন্ট আবেদন করেন। তবে কাকতালীয়তার চরম উদাহরণ সৃষ্টি করে বেলের অ্যাটর্নী পোলক একইদিনে বেলের জন্য টেলিফোনের প্যাটেন্ট আবেদন করেন!
বেল আর এলিশা গ্রে’র টেলিফোনের ডিজাইন প্রায় একই রকম ছিল। একদিকে বেলের পূর্বেই গ্রে লবণাক্ত পানিতে ভ্যারিয়েবল রেজিস্টর বা পরিবর্তনশীল রোধ ব্যবহার করে শব্দ প্রেরণে সক্ষম হন। অন্যদিকে গ্রে অনেক পূর্বেই বেল তরল পারদে পরিবর্তনশীল রোধ ব্যবহার করে শব্দকে বিদ্যুতে রূপান্তরিত করার একটি ডিজাইন প্রণয়ন করেছিলেন এবং তার জন্য প্যাটেন্টের আবেদনও করেছিলেন। ফলে ব্যাপারটা এমন দাঁড়ায় যে উভয়েই টেলিফোনের প্যাটেন্টের জন্য আদালতের শরণাপন্ন হন। তবে প্রায় ৬০০ মামলা লড়ার পর বেলই টেলিফোনের আবিষ্কর্তা বলে স্বীকৃত হন!
পুরস্কার ও প্রাপ্তি
১৮৮০ সালে বেল ফ্রান্সের সরকার প্রদত্ত ‘ভোল্টা পুরস্কার’ (৫০ হাজার ফ্রাংক সহ) লাভ করেন। পরের বছর ফ্রেঞ্চ সরকার তাকে ফ্রান্সের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা ‘লিজিয়ন অব অনার’ দ্বারা সম্মানিত করে। এছাড়াও তিনি ‘আলবার্ট পদক’, ‘ফ্রাঙ্কলিন পদক’, ‘এডিসন পদক’ লাভ করেন। এসবের পাশাপাশি আধ ডজন পিএইচডি ডিগ্রি সম্মাননা তো আছেই।
মৃত্যু
১৮৭৭ সালে আলেক্সান্ডার গ্রাহাম বেল তার টেলিফোন প্রোজেক্টের অর্থদাতা হাবার্ডের কন্যা মাবেলকে বিয়ে করেন। তাদের ঘরে দুই মেয়ে এলিসা ও মারিয়ানা এবং দুই ছেলে রবার্ট এবং এডওয়ার্ডের জন্ম হয়। দুই ছেলেই শৈশবে মারা যায়।
১৯২২ সালের ২ আগস্ট কানাডার স্কটিয়ায় ৭৫ বছর বয়সী বেল ডায়াবেটিস জনিত জটিলতায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালীন তার পরিবারের সকলেই জীবিত ছিলেন। তার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার সময় তার সম্মানে আমেরিকার সকল টেলিফোন বন্ধ রাখা হয়। পরবর্তীকালে শব্দের তীব্রতার একক তার নামে ‘বেল’ রাখা হয় যার ক্ষুদ্রতর একক ‘ডেসিবেল’।
What's Your Reaction?






