অ্যান্টনি আলবেনিজ এর জীবনী | Biography of Anthony Albanese

অ্যান্টনি আলবেনিজ এর জীবনী | Biography of Anthony Albanese

May 30, 2025 - 11:41
Jun 21, 2025 - 11:18
 0  1
অ্যান্টনি আলবেনিজ এর জীবনী | Biography of Anthony Albanese

দ্য অনারেবল
অ্যান্থনি আলবানিজ
এমপি

৩১তম অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী

দায়িত্বাধীন

অধিকৃত কার্যালয়
২৩ মে ২০২২

সার্বভৌম শাসক

এলিজাবেথ দ্বিতীয়
চার্লস তৃতীয়

গভর্নর জেনারেল

ডেভিড হার্লি
স্যাম মোস্টিন

ডেপুটি

রিচার্ড মার্লস
পূর্বসূরী

স্কট মরিসন

২১তম [[লেবার পার্টির নেতা]]

দায়িত্বাধীন

অধিকৃত কার্যালয়
৩০ মে ২০১৯

ডেপুটি

রিচার্ড মার্লস

পূর্বসূরী

বিল শর্টেন

অস্ট্রেলিয়ার বিরোধীদলীয় নেতা

কাজের মেয়াদ
৩০ মে ২০১৯ – ২৩ মে ২০২২

প্রধানমন্ত্রী

স্কট মরিসন

ডেপুটি

রিচার্ড মার্লস

পূর্বসূরী

বিল শর্টেন

উত্তরসূরী

পিটার ডাটন

অস্ট্রেলিয়ার উপপ্রধানমন্ত্রী

কাজের মেয়াদ

২৭ জুন – ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৩

প্রধানমন্ত্রী

কেভিন রাড

পূর্বসূরী

ওয়েইন সোয়ান

উত্তরসূরী

ওয়ারেন ট্রাস

অস্ট্রেলিয়ান লেবার পার্টির উপনেতা

কাজের মেয়াদ
২৬ জুন – ১৩ অক্টোবর ২০১৩

নেতা

কেভিন রাড

পূর্বসূরী

ওয়েইন সোয়ান

উত্তরসূরী

তানিয়া প্লিবারসেক


পূর্ববর্তী পদসমূহ ২০০৭–টেমপ্লেট:Wj২০১৩

অস্ট্রেলিয়ান হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের সদস্য
গ্রেইনডলার আসন থেকে

দায়িত্বাধীন

অধিকৃত কার্যালয়
২ মার্চ ১৯৯৬

পূর্বসূরী

জিনেট ম্যাকহিউ

ব্যক্তিগত বিবরণ

জন্ম

অ্যান্থনি নরম্যান আলবানিজ
২ মার্চ ১৯৬৩ (বয়স ৬২)
সিডনি, নিউ সাউথ ওয়েলস, অস্ট্রেলিয়া

রাজনৈতিক দল

লেবার পার্টি (১৯৭৯ থেকে বর্তমান)

দাম্পত্য সঙ্গী

কারমেল টেবাট (বি. ২০০০; বিবাহবিচ্ছেদ ২০১৯)

ঘরোয়া সঙ্গী

জোডি হেইডন (২০২১–বর্তমান, ২০২৪-এ বাগদান)

সন্তান

বাসস্থান
  • দ্য লজ (প্রধান বাসভবন)
  • কিরিবিলি হাউস (গৌণ বাসভবন)
প্রাক্তন শিক্ষার্থী

সিডনি বিশ্ববিদ্যালয় (বিইসি)

ওয়েবসাইট
  • ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
  • সরকারি ওয়েবসাইট

ডাকনাম

আলবো

অস্ট্রেলিয়ার নতুন প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ ইংরেজি ভাষাভাষী নন

অ্যান্টনি নরম্যান অ্যালবানিজ

 ( /ˌælbəˈnzi/ AL-bə-NEEZ-ee বা /ˈælbənz/ AL-bə-neez ;  জন্ম ২ মার্চ ১৯৬৩) একজন অস্ট্রেলিয়ান রাজনীতিবিদ যিনি অস্ট্রেলিয়ার ৩১তম এবং বর্তমান প্রধানমন্ত্রী । তিনি ২০১৯ সাল থেকে অস্ট্রেলিয়ান লেবার পার্টির (ALP) নেতা এবং ১৯৯৬ সাল থেকে গ্রেন্ডলারের সংসদ সদস্য (এমপি)। অ্যালবানিজ ২০১৩ সালে দ্বিতীয় রুড সরকারের অধীনে অস্ট্রেলিয়ার ১৫তম উপপ্রধানমন্ত্রী এবং ২০০৭ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত রুড এবং গিলার্ড সরকারের মন্ত্রিপরিষদ মন্ত্রী ছিলেন।

শৈশব জীবন

আইরিশ বংশোদ্ভূত একক মায়ের একমাত্র সন্তান অ্যান্থনি আলবানিজি, সিডনির অভ্যন্তর-দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ক্যাম্পারডাউন এলাকায় সরকারি আবাসনে বড় হন। তাঁর মা দীর্ঘস্থায়ী রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসে ভুগতেন, যার ফলে মাঝে মাঝে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হতো। এই অবস্থায় তিনি ও তাঁর ছেলের জীবিকা নির্বাহ করতেন সরকার প্রদত্ত প্রতিবন্ধী ভাতার মাধ্যমে।

শৈশবের বেশিরভাগ সময়জুড়ে আলবানিজি বিশ্বাস করতেন, তাঁর বাবা একটি গাড়ি দুর্ঘটনায় মারা গেছেন। কিন্তু তিনি যখন ১৪ বছর বয়সে পৌঁছান, তখন তাঁর মা তাঁকে জানান যে, তিনি একজন ইতালীয় জাহাজকর্মীর সঙ্গে একটি ক্রুজ জাহাজে ইউরোপ ভ্রমণের সময় সম্পর্ক গড়ে তোলেন, এবং আলবানিজি সেই সম্পর্কের ফল। গর্ভবতী, অবিবাহিতা এবং রোমান ক্যাথলিক ধর্মাবলম্বী হওয়ায় তিনি সিডনিতে ফিরে এসে তাঁর বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকতে শুরু করেন এবং সমাজে গ্রহণযোগ্যতা পেতে এক কাল্পনিক বিবাহ ও স্বামীর মৃত্যুর গল্প তৈরি করেন।

তাঁর মায়ের মৃত্যুর পর আলবানিজি নিজের পিতার সন্ধানে আগ্রহী হন এবং তাঁর মা যে জাহাজে ভ্রমণ করেছিলেন, সেই জাহাজ সংস্থার রেকর্ড ঘেঁটে পিতার খোঁজ পান। ২০০৯ সালে, তখন তাঁর বয়স ৪৬, তিনি ইতালিতে যান এবং তাঁর পিতা ও সৎ ভাই-বোনদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন।

বিশ্বাস ও রাজনৈতিক জীবন

আলবানিজি তাঁর মায়ের কাছ থেকে তিনটি মৌলিক প্রতিষ্ঠানের প্রতি আনুগত্য উত্তরাধিকারসূত্রে পেয়েছিলেন, যেগুলোর ভিত্তিতে তিনি তাঁর বিশ্বাস গড়ে তোলেন: ক্যাথলিক ধর্ম, সাউথ সিডনি র‍্যাবিটোস (একটি রাগবি লিগ দল), এবং অস্ট্রেলিয়ান লেবার পার্টি।

১২ বছর বয়সে তিনি প্রথম রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশ নেন—সেই সময় তিনি অন্যান্য সরকারি আবাসনের বাসিন্দাদের সঙ্গে মিলে স্থানীয় সরকার কর্তৃক তাঁদের ঘর বিক্রির পরিকল্পনা সফলভাবে প্রতিহত করেন।

১৯৭৯ সালে, কিশোর বয়সে, তিনি লেবার পার্টিতে যোগ দেন। তিনি প্রথমে ক্যাম্পারডাউনের সেন্ট জোসেফ প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং পরে সিডনির কেন্দ্রস্থলের সেন্ট মেরি'স ক্যাথেড্রাল কলেজে পড়াশোনা করেন। এরপর তিনি প্রায় দুই বছর কমনওয়েলথ ব্যাংকে চাকরি করেন।

পরবর্তীতে, লেবার প্রধানমন্ত্রী গফ হুইটল্যাম প্রবর্তিত বিনামূল্যে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষানীতির সুবিধা নিয়ে আলবানিজি সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন, যেখানে তিনি ছাত্র সরকারে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন এবং অর্থনীতিতে ডিগ্রি অর্জন করেন।

রাজনীতিতে উত্থানপর্ব

১৯৮৪ সালে স্নাতক সম্পন্ন করার পর, অ্যান্থনি আলবানিজি প্রায় পাঁচ বছর কাজ করেন লেবার পার্টির রাজনীতিক টম ইউরেন-এর গবেষণা কর্মকর্তা হিসেবে। ইউরেন ছিলেন স্থানীয় সরকার ও প্রশাসনিক পরিষেবা বিষয়ক মন্ত্রী এবং পরবর্তীতে লেবার পার্টির ডেপুটি নেতা; তিনিই আলবানিজির রাজনৈতিক পরামর্শদাতা হয়ে ওঠেন।

এই সময়কালে (১৯৮৫–১৯৮৭) আলবানিজি নিউ সাউথ ওয়েলসের ইয়াং লেবার সংগঠনের সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।

এরপর ১৯৮৯ থেকে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত তিনি রাজ্যের লেবার পার্টির সহকারী মহাসচিব ছিলেন এবং ১৯৯৫ থেকে ১৯৯৬ পর্যন্ত নিউ সাউথ ওয়েলসের তৎকালীন প্রিমিয়ার বব কার-এর প্রধান নীতিনির্ধারণী উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেন।

১৯৯৬ সালে আলবানিজি ফেডারেল হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস-এ গ্রেইন্ডলার আসন থেকে নির্বাচিত হন—এই অঞ্চলেই তিনি বড় হয়েছিলেন। পরে তিনি মোট নয় বার পুনর্নির্বাচিত হন: ১৯৯৮, ২০০১, ২০০৪, ২০০৭, ২০১০, ২০১৩, ২০১৬, ২০১৯ ও ২০২২ সালে।

হাউসে তাঁর প্রথম ভাষণে তিনি বলেন: আমার পক্ষে যদি এমনভাবে স্মরণ করা যায় যে আমি আমার নির্বাচনী এলাকার স্বার্থ, শ্রমজীবী জনগণের অধিকার, লেবার আন্দোলন এবং আমাদের জাতির প্রগতিশীল উন্নয়নের পক্ষে দাঁড়িয়েছি, তাহলেই আমি সন্তুষ্ট থাকব।”

রাজনীতিতে নিজের যাত্রা শুরু করেছিলেন লেবার পার্টির কট্টর বামপন্থী শাখার সদস্য হিসেবে। ধীরে ধীরে দলীয় পর্যায়ে উঠে আসেন এবং তিনি এলজিবিটিকিউ অধিকার ও সমলিঙ্গ বিবাহের একজন প্রথমদিককার এবং জোরালো সমর্থক ছিলেন।

তাছাড়া, তিনি দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ায় হিন্ডমার্শ আইল্যান্ড ব্রিজ নির্মাণের বিরুদ্ধে সক্রিয়ভাবে প্রতিবাদ করেন। এই ইস্যুটি শুধু পরিবেশবাদীদের সঙ্গে ডেভেলপারদের দ্বন্দ্বই নয়, বরং আদিবাসী সম্প্রদায় এবং টরেস প্রণালির দ্বীপবাসীদের মধ্যেও বিভাজন সৃষ্টি করেছিল।

অ্যালবানিজ সিডনিতে একজন ইতালীয় পিতা এবং একজন আইরিশ অস্ট্রেলিয়ান মায়ের কাছে জন্মগ্রহণ করেন যিনি তাকে একক অভিভাবক হিসেবে বড় করেছেন। অর্থনীতি পড়ার জন্য সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার আগে তিনি সেন্ট মেরি'স ক্যাথেড্রাল কলেজে ভর্তি হন। ছাত্রাবস্থায় তিনি এএলপিতে যোগ দেন এবং সংসদে প্রবেশের আগে দলীয় কর্মকর্তা ও গবেষণা কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করেন। অ্যালবানিজ 1996 সালের নির্বাচনে প্রতিনিধি পরিষদে নির্বাচিত হন, নিউ সাউথ ওয়েলসের গ্রেন্ডলারের আসনে জয়লাভ করেন। ২০০১ সালে সাইমন ক্রিয়ান দ্বারা তিনি প্রথম ছায়া মন্ত্রিসভায় নিযুক্ত হন এবং বেশ কয়েকটি ভূমিকা পালন করেন, অবশেষে ২০২৬ সালে বিরোধী ব্যবসার ব্যবস্থাপক হন ।

২০০৭ সালের নির্বাচনে শ্রমের বিজয়ের পর, অ্যালবানিজকে হাউসের নেতা নিযুক্ত করা হয়েছিল, এবং তাকে আঞ্চলিক উন্নয়ন ও স্থানীয় সরকার এবং অবকাঠামো ও পরিবহন মন্ত্রীও করা হয়েছিল । ২০১০ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত কেভিন রুড এবং জুলিয়া গিলার্ডের মধ্যে পরবর্তী নেতৃত্বের উত্তেজনায়, অ্যালবানিজ প্রকাশ্যে উভয়ের আচরণের সমালোচনা করেছিলেন, দলীয় ঐক্যের আহ্বান জানিয়েছিলেন। ২০১৩ সালের জুনে উভয়ের মধ্যে চূড়ান্ত নেতৃত্বের ব্যালটে রুডকে সমর্থন করার পর, অ্যালবানিজ লেবার পার্টির উপনেতা নির্বাচিত হন এবং পরের দিন উপ-প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন।

২০১৩ সালের নির্বাচনে লেবারদের পরাজয়ের পর, অ্যালবানিজরা পরবর্তী নেতৃত্ব নির্বাচনে বিল শর্টেনের বিরুদ্ধে দাঁড়ায়, প্রথম তারা পার্টির সদস্যদের পাশাপাশি এমপিদের অন্তর্ভুক্ত করে। যদিও অ্যালবানিজরা সদস্যপদে বৃহৎ সংখ্যাগরিষ্ঠতা জিতেছে, শর্টেন লেবার এমপিদের মধ্যে বেশি জয়লাভ করে এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছে; শর্টেন পরবর্তীকালে অ্যালবানিজকে তার ছায়া মন্ত্রিসভায় নিযুক্ত করেন। ২০১৯ সালের নির্বাচনে লেবার-এর আশ্চর্যজনক পরাজয়ের পর, শর্টেন পদত্যাগ করেন এবং অ্যালবানিজ একমাত্র ব্যক্তি হয়েছিলেন যিনি নেতৃত্ব নির্বাচনে তাকে প্রতিস্থাপন করতে মনোনীত হন; পরবর্তীকালে তিনি লেবার পার্টির নেতা হিসেবে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন, বিরোধী দলের নেতা হন ।

২০২২ সালের নির্বাচনে, অ্যালবানিজ তার দলকে স্কট মরিসনের লিবারেল-ন্যাশনাল কোয়ালিশনের বিরুদ্ধে একটি নির্ণায়ক বিজয়ে নেতৃত্ব দিয়েছিল, প্রথম ইতালীয় অস্ট্রেলিয়ান হিসেবে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ইতিহাস তৈরি করে। তিনি তার চারজন সিনিয়র ফ্রন্টবেঞ্চ সহকর্মীর সাথে ২৩ মে ২০২২-এ শপথ গ্রহণ করেছিলেন।

অস্ট্রেলিয়ার ৩১তম প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন লেবার নেতা অ্যান্থনি আলবানিজ।

তিনিই হবেন অস্ট্রেলিয়ার ইতিহাসে অ্যাংলো-কেল্টিক পটভূমির বাইরে প্রথম প্রধানমন্ত্রী।

অ-ইংরেজি ভাষাভাষী ব্যাকগ্রাউন্ডের আলবানিজ বলেছেন, বহুসংস্কৃতির অস্ট্রেলিয়ার জন্য এটি বড় জয়৷

এটি এমন কৃতিত্ব যে তিনি আশা করেন 'বহু সাংস্কৃতিক অস্ট্রেলিয়াকে বার্তা পাঠাবে যে আপনি এই দেশে কিছু অর্জন করতে পারেন।'

নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী তার নির্বাচনী প্রচারণার সময় নিয়মিতভাবে নিজের শৈশবের কথা বলেছেন। সিডনি শহরতলীর ক্যাম্পারডাউনের পাবলিক হাউজিংয়ে তার মা মেরিয়েন তাকে বড় করেছেন।

অস্ট্রেলিয়ায় 'পাবলিক হাউজিং' রাজ্য সরকারের বিভাগ দ্বারা সরবরাহ করা হয়। কমনওয়েলথ-স্টেট হাউজিং চুক্তির কাঠামোর মধ্যে কাজ করে। এখানে বাস করেন ডিভোর্সি নারী, বেকার, অসহায় অভিবাসী। মূলত গৃহহীনদেরকেই এখানে থাকার অনুমতি দেওয়া হয়।

অ্যান্থনি আলবানিজের মা ছিলেন ইতালিয়ান বংশোদ্ভূত অভিবাসী।

আলবানিজ তার জয়ের পর জাতির উদ্দেশ্যে বলেন, 'আমাদের মহান বহুসংস্কৃতির সমাজের মধ্যে আমরা বিশ্বের প্রাচীনতম জীবন্ত অবিচ্ছিন্ন সংস্কৃতিকে গণনা করি।'

তিনি আরও বলেছেন, 'অস্ট্রেলিয়ার জনগণ পরিবর্তনের পক্ষে ভোট দিয়েছে। আমি এই বিজয়ে বিনীত ও অস্ট্রেলিয়ার ৩১তম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কাজ করার সুযোগ পেয়ে সম্মানিত।'

আলবানিজ তার বিজয়ে আয়োজিত সভায় নিজের অতীত জীবনের কথা স্মরণ করে বলেন, 'আমি আশা করি, এখানে পাবলিক হাউজিং পরিবারের অনেকেই উপস্থিত আছেন। আজকের এই রাতে আমি চাই প্রত্যেক অভিভাবক যেন তাদের সন্তানকে বলতে পারেন যে আপনি যেখানেই থাকুন বা যেখান থেকে আসুন না কেন, অস্ট্রেলিয়ায় সুযোগের দরজা আমাদের সবার জন্য উন্মুক্ত।'

আলবানিজের মা মেরিয়ান প্রতিবন্ধী সহায়তা পেনশনের ওপর নির্ভরশীল ছিলেন এবং আলবেনিজ ছোটবেলা থেকেই নানান কাজ করে সংসার চালিয়েছেন।

অ্যান্থনি আলবানিজ জানতেন যে তার বাবা কার্লো একটি ইউরোপীয় ক্রুজে তার মায়ের সঙ্গে কয়েক বছর কাটানোর পর মারা যান। পরে জানতে পারেন যে তিনি জীবিত এবং ইতালিতে থাকেন।

২০০১ সালে মায়ের মৃত্যুর পর আলবানিজ ইতালি ভ্রমণের সময় সংক্ষিপ্তভাবে তার বাবার সঙ্গে দেখা করেন।

গত বুধবার আলবেনিজ অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় প্রেসক্লাবের ভাষণে বলেছিলেন, তিনি বিশ্বাস করেন তার বিজয় আধুনিক অস্ট্রেলিয়ার বহুসংস্কৃতির অলৌকিক ঘটনা।

প্রধানমন্ত্রীত্ব

২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে অ্যান্থনি আলবানিজি একটি গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য অর্জন করেন, যখন একটি আইন পাস হয় যার মাধ্যমে ২০৩০ সালের মধ্যে ৪৩ শতাংশ কার্বন নিঃসরণ হ্রাস করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়। তাঁর সরকারের অন্যান্য উদ্যোগগুলোর মধ্যে ছিল বয়স্কদের যত্ন, সাবসিডিযুক্ত শিশু পরিচর্যা, ঔষধের খরচ কমানো, এবং গার্হস্থ্য সহিংসতার শিকারদের জন্য প্রদত্ত ছুটি।

২০২২ সালের নভেম্বর মাসে ইন্দোনেশিয়ায় চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিনপিং-এর সঙ্গে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের মাধ্যমে আলবানিজি অস্ট্রেলিয়া-চীন সম্পর্ক পুনর্গঠনে সক্ষম হন, যার ফলে অস্ট্রেলিয়ান কাঠ ও কয়লার ওপর চীনের আরোপিত নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়।

তবে, ২০২৩ সালের মার্চ মাসে অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন লেবার প্রধানমন্ত্রী পল কিটিং আলবানিজিকে কঠোর ভাষায় সমালোচনা করেন, কারণ তিনি যুক্তরাষ্ট্র থেকে ৩৬৮ বিলিয়ন ডলারের পারমাণবিক সাবমেরিন কেনার একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেন। কিটিং এই চুক্তিটিকে ইতিহাসের "সবচেয়ে খারাপ চুক্তি" বলে অভিহিত করেন এবং বলেন এটি চীনের সঙ্গে উত্তেজনা বৃদ্ধি করবে এবং অস্ট্রেলিয়াকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অত্যন্ত ঘনিষ্ঠভাবে বেঁধে ফেলবে।

২০২২–২৩ সালে আলবানিজির বহির্বিশ্বে কূটনৈতিক ভ্রমণের মধ্যে ছিল রানী এলিজাবেথ II-এর স্মরণসভায় অংশ নিতে ইংল্যান্ড সফর এবং পরবর্তীতে রাজা চার্লস III-এর রাজ্যাভিষেক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ।

আদিবাসী স্বীকৃতি সংক্রান্ত গণভোট

আলবানিজির রাজনৈতিক এজেন্ডার একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ ছিল একটি জাতীয় গণভোট আয়োজন, যার মাধ্যমে সংবিধানে সংশোধন এনে আদিবাসী জনগোষ্ঠী এবং টরেস প্রণালির দ্বীপবাসীদের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি প্রদান এবং “ভয়েস টু পার্লামেন্ট” নামে একটি উপদেষ্টা সংস্থা গঠনের প্রস্তাব রাখা হয়। এই সংস্থাটি সরকারকে আদিবাসী জনগণের ওপর প্রভাব ফেলে এমন নীতিমালা বিষয়ে পরামর্শ প্রদান করবে।

প্রধানমন্ত্রী এবং অন্যান্য সমর্থকরা বিশ্বাস করতেন, প্রস্তাবটি গৃহীত হলে এটি আদিবাসী ও অ-আদিবাসী অস্ট্রেলিয়ানদের মধ্যে ঐক্য ও মিলনের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হবে। তবে বিরোধীরা—প্রধানত রক্ষণশীল গোষ্ঠী—এটি অপ্রয়োজনীয় ও যথেষ্ট স্পষ্ট নয় বলে সমালোচনা করেন।

এই গণভোটটি অনুষ্ঠিত হয় অক্টোবর ২০২৩ সালে, যা ছিল দুই দশকের বেশি সময় পরে অস্ট্রেলিয়ায় প্রথম জাতীয় গণভোট। প্রস্তাবটি পাস করাতে সারাদেশে ভোটারদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা এবং কমপক্ষে চারটি রাজ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠ সমর্থন প্রয়োজন ছিল।

কিন্তু বাস্তবে, প্রায় ৬০ শতাংশ ভোটার এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন, এবং ছয়টি রাজ্যের একটিতেও এটি সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি।
এই ফলাফল ছিল অস্ট্রেলিয়ার আদিবাসীদের জন্য একটি বড় আঘাত এবং আলবানিজির জন্য একটি গুরুতর রাজনৈতিক পরাজয়। পরাজয়ের প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন:

পরাজয়ের প্রতিক্রিয়া

পরাজয়ের প্রতিক্রিয়ায় অ্যান্থনি আলবানিজি বলেন:

“আমরা আজ রাতে যে ফলাফল পেয়েছি তা হতাশাজনক, তবে আমি গর্বিত যে আমরা চেষ্টা করেছি। এই পরাজয় সত্ত্বেও, আমি বিশ্বাস করি, এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার সূচনা করেছে, যা আমরা আগামী দিনে চালিয়ে যাব।”

sourse: wikipedia ..britannica

What's Your Reaction?

Like Like 0
Dislike Dislike 0
Love Love 0
Funny Funny 0
Angry Angry 0
Sad Sad 0
Wow Wow 0