|
পূর্ণ নাম |
অ্যাঞ্জেলো ডেভিস ম্যাথিউস
|
জন্ম |
২ জুন ১৯৮৭ (বয়স ৩৭) কলম্বো, শ্রীলঙ্কা |
ডাকনাম |
কালুয়া, অ্যাঞ্জি |
উচ্চতা |
৬ ফুট ০ ইঞ্চি (১.৮৩ মিটার) |
ব্যাটিংয়ের ধরন |
ডানহাতি |
বোলিংয়ের ধরন |
ডানহাতি ফাস্ট-মিডিয়াম |
ভূমিকা |
অল-রাউন্ডার, অধিনায়ক |
অ্যাঞ্জেলো ডেভিস ম্যাথিউস (তামিল: ஏஞ்சலோ மேத்யூஸ், সিংহলি: ඇන්ජෙලෝ මැතිව්ස්; জন্মঃ ২রা জুন, ১৯৮৭) কলম্বোয় জন্মগ্রহণকারী শ্রীলঙ্কার প্রথিতযশা ক্রিকেটার। বর্তমানে তিনি শ্রীলঙ্কা জাতীয় ক্রিকেট দলের টেস্ট ও একদিনের আন্তর্জাতিক খেলায় অধিনায়ক হিসেবে আসীন রয়েছেন। এরপূর্বে টুয়েন্টি২০ আন্তর্জাতিকেও অধিনায়কত্ব করেছেন তিনি। ২০০৬ সালে শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিত অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ ক্রিকেটে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দলেরও অধিনায়ক ছিলেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস। বিখ্যাত বোলার চামিন্দা ভাসের ন্যায় তিনিও আনুষ্ঠানিক শিক্ষাগ্রহণ করেন কলম্বোর সেন্ট জোসেফ'স কলেজ থেকে। জাফনার তামিল পিতা ও সিংহলীজ মাতার সন্তানরূপে কলম্বোয় জন্মগ্রহণ করেন।
ক্রীড়া জীবন
ম্যাথিউস নভেম্বর, ২০০৮ সালে জিম্বাবুয়ে দলের বিপক্ষে একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষিক্ত হন। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে কলকাতা নাইট রাইডার্সের পক্ষ হয়ে খেলেন। চতুর্থ মৌসুমে তিনি ৯৫০,০০০ মার্কিন ডলারের বিনিময়ে সাহারা পুনে ওয়ারিয়র্স দলের সাথে চুক্তিতে আবদ্ধ হন। ২০১১ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেটে আঘাতপ্রাপ্তি ঘটায় আট সপ্তাহের জন্য আইপিএলে অনুপস্থিত ছিলেন।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথম ক্রিকেটার হিসাবে ‘টাইমড আউট’ অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ, সোশ্যাল মিডিয়ায়
হৈচৈ
নিয়ম রয়েছে, কিন্তু বিশ্ব ক্রিকেটের মঞ্চে কোনও ক্রিকেটারকে টাইমড আউট হতে দেখা যায়নি। ২০২৩ ওডিআই বিশ্বকাপের মঞ্চে সেই চিত্রও এবার দেখা গেল। আর তাতেই কার্যত হতবাক হয়েছেন সকলে। সময়মতো স্ট্রাইক নিতে না পারার জন্য টাইমড আউট নিয়মের জেরে মাঠ ছাড়তে হল শ্রীলঙ্কার তারকা ক্রিকেটার অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজকে। আর তাতেই হতবাক শ্রীলঙ্কার এই তারকা ক্রিকেটার। শুধু তিনিই নন, এমন ঘটনায় হতবাক গোটা ক্রিকেট বিশ্বও। সাকিব অল হাসানের এমন আপিলের জেরেই ঘটেছে এই ঘটনা। কার্যত দিল্লির অরুন জেটলি স্টেডিয়ামে ক্রিকেটের ম়্চে এক নতুন ইতিহাস তৈরি হল।
ক্রিকেটের রুলবুকে রয়েছে এমন নিয়মের কথা। কোনও ক্রিকেটার আউট হওয়ার ২ মিনিটের মধ্যে যদি নতুন ব্যাটার স্ট্রাইক না নিতে পারেন তবে তাঁকে আউট ঘোষণা করা হয়ে থাকে। কিন্তু আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের মঞ্চে এমন ঘটনা হতে কখনোই দেখা যায়নি। কোনও দলের অধিনায়কই এমন আপিল করেননি। কিন্তু চলতি বিশ্বকাপের মঞ্চেও সেই ঘটনাও এবার ঘটতে দেখা গেল। সাকিব অল হাসানের আপিলে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ শিকার টাইমড আউটের। এমন সিদ্ধান্তে আউট হয়ে ম্যাথুজ যে বেশ ক্ষুব্ধ তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
শ্রীলঙ্কার অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় জানানোর ঘোষণা দিয়েছেন। বাংলাদেশের বিপক্ষে আগামী ১৭ জুন গলেতে শুরু হতে যাওয়া সিরিজের প্রথম টেস্ট দিয়েই টেস্ট ক্রিকেটে ১৬ বছরের দীর্ঘ পথচলা শেষ করবেন তিনি। গতকাল শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেওয়া এক আবেগঘন বার্তায় ম্যাথিউস লেখেন, ‘শ্রীলঙ্কার হয়ে গত ১৭ বছর ধরে ক্রিকেট খেলা আমার জন্য সর্বোচ্চ সম্মান ও গর্বের বিষয়। আমি ক্রিকেটকে সবকিছু দিয়েছি, বিনিময়ে ক্রিকেট আমাকে সবকিছু দিয়েছে এবং আমাকে আজ এই পর্যন্ত আসার সুযোগ করে দিয়েছে।’ ৩৭ বছর বয়সী এই অলরাউন্ডার জানান, টেস্ট থেকে অবসর নিলেও দেশের প্রয়োজন হলে সাদা বলের ক্রিকেটে এখনও তাকে পাওয়া যাবে। যদিও গত এক বছর ধরে সীমিত ওভারের ক্রিকেটে দলে জায়গা পাননি তিনি। টেস্ট ক্যারিয়ারে ম্যাথিউস খেলেছেন ১১৮টি ম্যাচ। ব্যাট হাতে তার রান ৮১৬৭, গড় ৪৪.৬২। সেঞ্চুরি ১৬টি, ফিফটি ৪৫টি। টেস্টে শ্রীলঙ্কার হয়ে তার চেয়ে বেশি রান আছে শুধু কুমার সাঙ্গাকারা (১২,৪০০) ও মাহেলা জয়াবর্ধনের (১১,৮১৪)। বোলার হিসেবেও ম্যাথিউসের অবদান ছিল। যদিও নিয়মিত বোলিং করতেন না, তবুও ৮৬ ইনিংসে ৩৩টি উইকেট নিয়েছেন। ২০০৯ সালে অভিষেক হয়েছিল ম্যাথিউস শ্রীলঙ্কার অধিনায়কের দায়িত্বে ছিলেন ২০১৩ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত। এই সময়ে ৩৪টি টেস্টে দলকে নেতৃত্ব দিয়ে জয় পেয়েছেন ১৩টিতে। তার অধিনায়কত্বে সবচেয়ে স্মরণীয় জয় ২০১৪ সালে ইংল্যান্ডের হেডিংলিতে। ম্যাচটিতে ২৪৯ বলে ১৬০ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেছিলেন তিনি, সঙ্গে ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে (৪/৪৪) দলের জয়ে রেখেছেন বড় ভূমিকা। ম্যাথিউসের ক্যারিয়ারে বিতর্কও কম ছিল না। ২০১৭–১৮ সালে শ্রীলঙ্কার সাবেক প্রধান কোচ চান্দিকা হাথুরুসিংহের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে আলোচনায় আসেন তিনি। এছাড়া চোট ছিল তার ক্যারিয়ারের বড় বাধা। বিশেষ করে হাঁটু ও পায়ের ইনজুরির কারণে বহুবার ছিটকে যেতে হয়েছে দল থেকে। তবে শেষ কয়েক বছর ধরে নিজের ফিটনেসে বিশেষ নজর দিয়েছেন এই অলরাউন্ডার। আগামী মাসে পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলতে শ্রীলঙ্কা সফরে যাচ্ছে বাংলাদেশ। গল টেস্ট দিয়েই ক্রিকেটের অভিজাত সংস্করণকে বিদায় বলবেন শ্রীলঙ্কার অন্যতম সফল ক্রিকেটার অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস।
শ্রীলঙ্কার ব্যাটিংয়ের ২৫ নম্বর ওভারেই ঘটে এই ঘটনা
ম্যাচের ২৫ নম্বর ওভারে ঘটে এই ঘটনা। এদিন সাদিরা সামারাবিক্রমা আউট হওয়ার পরই মাঠে আসেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ। ক্রিজে পৌঁছেও গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সেই সময়ই তাঁর হেচনমেটে কিছু সমস্যা হয় এবং হেটলমেট বদলের প্রয়োজন হয়ে পড়ে। সেই সময় আম্পায়ার কিংবা প্রতিপক্ষ অধিনায়কের সঙ্গে কোনওরকতম আলোচনা না করেই হেলমেট বদলের চেষ্টা করেন তিনি। আর তাতেই অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজের স্চ্রাইকের সময় পেড়িয়ে যায়। সেই সুযোগ কাজদে লাগাতে এতটুকুও ভুল করেননি প্রতিপক্ষ শিবিরের অধিনায়ক সাকিব অল হাসান।
অধিনায়কত্ব
২০১১ সালের আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপের পর কুমার সাঙ্গাকারাকে অধিনায়কের পদ থেকে অব্যাহতি নেন। এরপর থেকেই শ্রীলঙ্কার পরবর্তী অধিনায়করূপে বিশ্বব্যাপী সফর করতে থাকেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস। সুন্দর নেতৃত্বের গুণাবলী সাঙ্গাকারার কাছ থেকে ম্যাথিউস পাচ্ছিলেন। সাঙ্গাকারাও তার পদত্যাগের পর তাকে অধিনায়কত্বের তালিম দিচ্ছিলেন। তিলকরত্নে দিলশানকে অধিনায়কত্বের দায়িত্ব দেয়া হয়। তাকে অবাক করে নির্বাচকমণ্ডলী থিলিনা কাদম্বিকে সহ-অধিনায়ক হিসেবে মনোনীত করা হয়। অথচ, কাদম্বি স্বল্পকালীন সময়ের জন্যে শ্রীলঙ্কা দলে খেলছেন কিংবা শ্রীলঙ্কার পক্ষ হয়ে ২০১১ সালে ইংল্যান্ড সফরে একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ও টুয়েন্টি২০ আন্তর্জাতিক দলের সহ-অধিনায়কত্ব করেছেন। কিন্তু দিলীপ মেন্ডিসের নেতৃত্বাধীন নির্বাচিত কর্তৃপক্ষ কাদম্বি’র ব্যাটিংয়ের দুরবস্থায় তাকে অব্যাহতি দিয়ে নতুন সহ-অধিনায়ক হিসেবে ম্যাথিউসের নাম প্রস্তাব করে। জুলাই, ২০১১ সালের শেষদিকে ম্যাথিউস দিলশানের সহ-অধিনায়ক হন। দিলশানকে অব্যাহতি দিলেও তিনি স্ব-পদে বহাল থেকে জানুয়ারি, ২০১২ সালে মাহেলা জয়াবর্ধনের পাশে দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
২০১৮ সালে এশিয়া কাপে ব্যর্থতার পর আ্যঞ্জেলো ম্যাথিউসকে এক দিনের ক্রিকেটের অধিনায়কত্ব থেকে বহিষ্কার করা হয়। তার পরিবর্তে অধিনায়কত্ব পান দীনেশ চান্দিমাল।
জাতীয় দল |
|
টেস্ট অভিষেক (ক্যাপ ১১২) |
৪ জুলাই ২০০৯ বনাম পাকিস্তান |
শেষ টেস্ট |
১২ জানুয়ারি ২০১৭ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা |
ওডিআই অভিষেক (ক্যাপ ১৩৭) |
৩১ ডিসেম্বর ২০০৮ বনাম জিম্বাবুয়ে |
শেষ ওডিআই |
৩১ আগস্ট ২০১৬ বনাম অস্ট্রেলিয়া |
ওডিআই শার্ট নং |
৬৯ |
শেষ টি২০আই |
২২ জানুয়ারি ২০১৭ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা |
প্রতিযোগিতা |
টেস্ট |
ওডিআই |
টি২০আই |
এফসি |
ম্যাচ সংখ্যা |
৬৫ |
১৮০ |
৬৮ |
৮৫ |
রানের সংখ্যা |
৪,৪৭০ |
৪,৪৯২ |
১,০৪৭ |
৬,২৪০ |
ব্যাটিং গড় |
৪৬.০৮ |
৪০.১০ |
২৯.০৮ |
৫৪.২৬ |
১০০/৫০ |
৭/২৬ |
১/৩২ |
-/৫ |
১৪/৩৩ |
সর্বোচ্চ রান |
১৬০ |
১৩৯* |
৮১* |
২৭০ |
বল করেছে |
৩,৮২৮ |
৪,৮৯৭ |
৯১৯ |
৫,৩৭৫ |
উইকেট |
৩৩ |
১১১ |
৩৬ |
৫৬ |
বোলিং গড় |
৫২.৬৬ |
৩৪.০৪ |
২৮.৬৯ |
৪৫.১৬ |
ইনিংসে ৫ উইকেট |
০ |
১ |
০ |
১ |
ম্যাচে ১০ উইকেট |
০ |
- |
০ |
০ |
সেরা বোলিং |
৪/৪৪ |
৬/২০ |
৩/১৬ |
৫/৪৭ |
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং |
৪৯/– |
৪৩/– |
২৩/– |
৫২/– |
|
sourse:bengali.crictracker: dainikazadi: wikipedia...