হযরত ইমরান (আ) এর জীবনী | Biography of Hajrat Imran (alaihissalam)

হযরত ইমরান (আ) এর জীবনী | Biography of Hajrat Imran (alaihissalam)

May 27, 2025 - 22:54
Jun 20, 2025 - 18:45
 0  2
হযরত ইমরান (আ) এর জীবনী | Biography of Hajrat  Imran (alaihissalam)

কে এই ইমরান (আ) 

ইমরান (আ.) এর পূর্ণাঙ্গ জীবনী

ইমরান (আ.) এর জন্ম

ইমরান (আ.)-এর জন্মের সঠিক তারিখ বা স্থান নিয়ে কুরআন ও হাদিসে স্পষ্টভাবে কিছু বলা হয়নি। তবে তিনি ছিলেন বনী ইসরাইলের একটি সম্মানিত পরিবারের সন্তান, এবং তাঁর পরিবার আল্লাহর ইবাদাত, তাকওয়া এবং দ্বীনের পথে অগ্রগণ্য ছিল।

তিনি ছিলেন হযরত হারুন (আ.) এর বংশধর, এবং তাঁর সময়ে বনী ইসরাইলের মধ্যে ধার্মিকতা ও ইবাদাতের কারণে তাঁর পরিবারের মর্যাদা ছিল অনেক উঁচু।

পরিচয়:
ইমরান (আ.) ছিলেন বনী ইসরাইলের একজন সম্মানিত ও ধার্মিক ব্যক্তি, যিনি ছিলেন আল্লাহর একজন প্রিয় বান্দা। ইমরান (আ.) এর পরিবারকে আল্লাহ তা'আলা পবিত্রতা, মর্যাদা ও বিশেষ অনুগ্রহ দান করেছিলেন। কুরআনে ইমরান (আ.) এর পরিবারের কথা বিশেষভাবে উল্লিখিত হয়েছে এবং পবিত্র কুরআনে একটি পূর্ণ সূরার নাম রাখা হয়েছে তাঁর পরিবারের নামে — সূরা আল ইমরান

ইমরান (আ.) এর পরিবার:
ইমরান (আ.) এর স্ত্রী ছিলেন হান্নাহ (আ.), একজন ধর্মপরায়ণ নারী। তাঁরা দুজনেই আল্লাহর প্রতি গভীর ঈমান রাখতেন এবং আল্লাহর ইবাদাতে সদা মগ্ন থাকতেন। ইমরান (আ.) এর পরিবার বনী ইসরাইলের মধ্যে খুবই সম্মানিত ছিল। তাঁদের পুত্রসন্তান না থাকলেও হান্নাহ (আ.) ছিলেন মাতৃত্বের জন্য উদগ্রীব এবং আল্লাহর কাছে বিশেষভাবে দোয়া করেছিলেন যেন তিনি একটি সন্তান পান।

হান্নাহ (আ.) এর মানত:
হান্নাহ (আ.) যখন আল্লাহর কাছে দোয়া করছিলেন, তখন তিনি আল্লাহর কাছে মানত করেছিলেন যে, যদি তিনি একটি সন্তান পান তবে সেই সন্তানকে আল্লাহর পথে উৎসর্গ করবেন। আল্লাহ তাঁর দোয়া কবুল করেন এবং হান্নাহ (আ.) একটি কন্যা সন্তান জন্ম দেন, যার নাম রাখা হয়

 মরিয়ম (আ.)

হান্নাহ (আ.) প্রথমে কিছুটা বিস্মিত হয়েছিলেন, কারণ তিনি একটি পুত্রসন্তান আশা করেছিলেন যাকে আল্লাহর পথে উৎসর্গ করবেন। কিন্তু আল্লাহ জানিয়েছিলেন যে মরিয়ম (আ.) একটি বিশেষ কন্যা এবং তাঁর মর্যাদা অনেক উঁচু হবে।

মরিয়ম (আ.) এর লালনপালন:

ইমরান (আ.) এর ইন্তেকালের পরে মরিয়ম (আ.) এর দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন তাঁর মামা নবী যাকারিয়্যা (আ.)। মরিয়ম (আ.) বেড়ে উঠেছিলেন মসজিদ আল-আকসায় এবং তিনি আল্লাহর ইবাদাত-বন্দেগিতে সবসময় মগ্ন থাকতেন। তাঁর পবিত্রতা এবং ইবাদাতের প্রতি একনিষ্ঠতা এত বেশি ছিল যে আল্লাহ তা'আলা বিশেষভাবে তাঁকে খাদ্য ও অন্যান্য অনুগ্রহ দিয়ে সম্মানিত করতেন।

ইমরান (আ.) এর পরিবারের বিশেষত্ব:

ইমরান (আ.) এর পরিবার ছিল আল্লাহর কাছে বিশেষ প্রিয়। তাঁর কন্যা মরিয়ম (আ.) ছিলেন মানবজাতির মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ নারী এবং তাঁর নাতি হযরত ঈসা (আ.) ছিলেন আল্লাহর অন্যতম মহান রাসূল। ইমরান (আ.) এর পরিবারের কাহিনি আমাদের শেখায় আল্লাহর পথে উৎসর্গ, পবিত্রতা এবং ইবাদাতের মাধ্যমে কীভাবে মহান সম্মান লাভ করা যায়।

ইয়েমেনের কিছু অংশ ওমান দখল করে ফেলায় ওমানের সালালা শহরের ভিতরে একটি মাজার আছে সেটি হজরত ঈসা (আ:)-এর নানা ইমরান (আ:)-এর। এতো লম্বা মাজার! ৩৩ মিটার বা ১০৮ ফুট লম্বা!অনেকের মন্তব্য, আগেকার মানুষ অনেক লম্বা ছিল। আসল ঘটনা কিন্তু তা নয়। মূলত নবী ইমরানের কবর ভেঙে যাবার পর, এর নির্দিষ্ট জায়গাটা বোঝা যাচ্ছিল না। যে কারণে কবর বেশ লম্বা করে করা হয়, যাতে ভুল করেও তাঁর কবরে অসম্মান জানানো না হয়।
ইমরান (আঃ) কে ছিলেন?
১)" ইমরান " হচ্ছেন হযরত মুসা (আঃ) এর পিতা । যিনি হযরত ইবরাহীম (আঃ) এর বংশধর । তিনি মনোনীত।
২)" ইমরান " হচ্ছেন হযরত মরিয়ম (আঃ) এর পিতা । সেই সুত্রে তিনি হযরত ঈসা (আঃ) এর নানা । তিনিও হযরত ইবরাহীমের বংশধর । আর তিনি কোন পুত্র সন্তান রেখে যান নি । হযরত মরিয়ম (আঃ) হচ্ছেন ওনার কন্যা সন্তান । হযরত ঈসা (আঃ) এর মাতা তিনি । তিনিও ইবরাহীম (আঃ) এর বংশধর । কাজেই তিনিও মনোনীত ।
এখন সর্বশেষ ও তৃতীয় -----
" ইমরান " হচ্ছেন মহানবী (স:) এর চাচা , যিনি আবু তালিব নামে সর্বাধিক পরিচিত ।
এই আবু তালিবেরই প্রকৃত নাম হচ্ছে " ইমরান " ।
প্রচলিত নাম হচ্ছে আবু তালিব বা তালিবের পিতা ।
ওনার জৈষ্ঠ পুত্রের নাম হচ্ছে তালিব । তাই ওনাকে ডাকা হতো আবু তালিব ।
উপরোক্ত ব্যক্তিবগ ব্যতীত আর কোন উল্লেখযোগ্য " ইমরান" অদ্যবধি ইসলামের ইতিহাসে খুজে পাওয়া যায় নি ।
সুতরাং মহান আল্লাহ কতৃক মনোনীত ও ঘোষিত " আলে ইমরান " ( ইমরানের বংশধর ) আসলেই কোন জন তা আল্লাহ পাকই ভাল জানেন।
হযরত ইমাম হোসেন (আঃ) এর বংশ থেকে শেষ যামানার ইমাম হযরত ইমাম মাহদী (আঃ) পর্যন্ত যে নয়জন আল্লাহর মনোনীত ইমাম আগমনের সংবাদ বা ঘোষনা মহানবী (স:) দিয়েছেন , তারা সকলেই , " আলে ইমরান " এর বংশধর।

কুরআনে ইমরান (আ.) এর উল্লেখ:
পবিত্র কুরআনে ইমরান (আ.) এর পরিবারের কথা বারবার স্মরণ করিয়ে আল্লাহ তা'আলা আমাদের অনুপ্রাণিত করেছেন যেন আমরা আল্লাহর ইবাদাত এবং আনুগত্যে ইমরান (আ.) এর পরিবারের মতোই দৃঢ় হই।

“নিশ্চয়ই আল্লাহ আদম, নূহ, ইব্রাহীমের পরিবার এবং ইমরান এর পরিবারকে সমস্ত বিশ্বের উপর মনোনীত করেছেন।” — (সূরা আল ইমরান, ৩:৩৩)

ইমরান (আ.) এর মৃত্যু

কুরআন বা বিশুদ্ধ হাদিসে ইমরান (আ.)-এর মৃত্যু বা তাঁর মৃত্যু-পরবর্তী ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ নেই। তবে ইসলামী ঐতিহাসিকরা বলেন যে—

  • ইমরান (আ.) তাঁর স্ত্রী হান্নাহ (আ.)-এর গর্ভে মরিয়ম (আ.) থাকাকালীনই ইন্তেকাল করেন।

  • এর ফলে ইমরান (আ.) তাঁর কন্যা মরিয়ম (আ.)-কে বড় হতে দেখে যেতে পারেননি।

  • ইমরান (আ.) এর মৃত্যুর পর মরিয়ম (আ.)-এর দায়িত্ব নেন নবী যাকারিয়্যা (আ.)

ইমরান (আ.)-এর জন্ম সম্পর্কে ঐতিহাসিকভাবে স্পষ্ট কোনো তারিখ নেই, তবে তিনি ছিলেন বনী ইসরাইলের ধার্মিক পরিবারে জন্মগ্রহণকারী একজন মহান ব্যক্তি। মৃত্যুবরণ করেছিলেন মরিয়ম (আ.) জন্মগ্রহণের আগেই, যা তাঁর পরিবারের জন্য একটি বড় পরীক্ষা ছিল। ইমরান (আ.) এর পবিত্র পরিবারই পরবর্তী সময়ে ইসলামের ইতিহাসে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।

সারাংশ:

ইমরান (আ.) ছিলেন আল্লাহভীরু এবং পরহেজগার একজন মহান ব্যক্তি, যাঁর পবিত্র পরিবারের মাধ্যমে আল্লাহ তা'আলা মানবজাতিকে একটি বড় নিদর্শন দান করেছেন। তাঁর পরিবারের প্রত্যেক সদস্য ইবাদাত, পবিত্রতা এবং আল্লাহর অনুগত্যের উজ্জ্বল উদাহরণ। ইমরান (আ.) এর জীবনী আমাদের শেখায় পরিবারের মধ্যে ইমানের আলো জ্বালিয়ে রাখা এবং পরবর্তী প্রজন্মকে আল্লাহর পথে উৎসর্গ করার মাধ্যমে কীভাবে দুনিয়া এবং আখিরাতে মহান মর্যাদা লাভ করা যায়।

sourse: wikipedia, islaminbengali

What's Your Reaction?

Like Like 0
Dislike Dislike 0
Love Love 0
Funny Funny 0
Angry Angry 0
Sad Sad 0
Wow Wow 0