আল বাত্তানি এর জীবনী | Biography of Al Battani
আল বাত্তানি এর জীবনী | Biography of Al Battani

আল বাত্তানী: আধুনিক ইউরোপীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানের ভাবগুরু
জীবন
আল বাত্তানীর জীবন সম্পর্কে যতদূর জানা যায় তিনি মেসোপটেমিয়ার উচ্চভূমির অন্তর্গত হাররান নগরীতে জন্মগ্রহণ করেন যেটি এখন তুরস্কতে অবস্থিত। তার বাবা ছিলেন বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতির বিখ্যাত একজন নির্মাতা। তার উপাধি 'আস সাবী' হওয়ায় অনেকে ধারণা করেন যে তার পূর্বপুরুষ ছিল সাবেয়িন গোত্রভুক্ত হতে পারে,তবে তার পুরো নাম পড়ে বুঝা যায় তিনি ছিলেন একজন মুসলিম। অনেক পশ্চিমা ঐতিহাসিকদের মতে তার পূর্বপুরুষ ছিল আরব রাজাদের মতই উচ্চবংশের। তিনি উত্তর সিরিয়ায় অন্তর্গত আর-রাক্কা শহরে বসবাস করতেন।
জ্যোতির্বিজ্ঞান
জ্যোতির্বিদ্যায় আল বাত্তানীর সর্বাধিক পরিচিত অর্জন হল সৌরবর্ষ নির্ণয়।আল বাত্তানীই প্রথম নির্ভুল পরিমাপ করে দেখিয়েছিলেন যে, এক সৌর বৎসরে ৩৬৫ দিন ৫ ঘণ্টা ৪৬ মিনিট ২৪ সেকেন্ড হয় যার সাথে আধুনিক পরিমাপের পার্থক্য মাত্র ২ মিনিট ২২ সেকেন্ড কম।
জ্যোতির্বিজ্ঞানে টলেমির আগের কিছু বৈজ্ঞানিকের ভুলও তিনি সংশোধন করে দেন। সূর্য ও চন্দ্র গ্রহণ সম্পর্কিত টলেমি যে মতবাদ ব্যক্ত করেছিলেন, আল বাত্তানি তা ভুল প্রমাণ করে নতুন প্রামাণিক তথ্য প্রদান করেন। অনেক শতাব্দী কোপের্নিকুস কর্তৃক আবিষ্কৃত বিভিন্ন পরিমাপের চাইতে আল বাত্তানীর পরিমাপ অনেক বেশি নিখুত ছিল।
গণিত
তিনি ত্রিকোণমিতি নিয়ে বিস্তর কাজ করেন এবং সাইন, কোসাইন, ট্যানজেন্ট, কোট্যানজেন্ট ইত্যাদি ধারণা নিয়ে কাজ করেন।
আল বাত্তানী ত্রিকোণমিতি নিয়ে বিস্তর কাজ করেছিলেন। জানা যায়, সাইন (sinθ), কোসাইন (cosθ), স্পর্শক (tanθ) এবং কোট্যানজেন্ট (cotθ) ইত্যাদি ধারণা নিয়েও তিনি কাজ করেছিলেন।
আল বাত্তানী: আধুনিক ইউরোপীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানের ভাবগুরু
আল বাত্তানী'র পুরো নাম মুহাম্মদ ইবনে জাবির ইবনে সিনান আল রাক্কি আল হারানী আস সাবী আল বাত্তানী। ল্যাটিন ভাষায় তিনি আল বাতেজনি, আল বাতেজনিয়াজ, আল বাতেনিয়াজ নামে পরিচিত। আল বাত্তানী ছিলেন একজন আরব জ্যোতির্বিজ্ঞানী এবং গণিতবিদ। তিনি অনেকগুলি ত্রিকোণমিতির সম্পর্কেরও উদ্ভাবক। তার রচিত কিতাবুল আয-জিজ থেকে নিকোলাস কোপারনিকাস (১৪৭৩-১৫৪৩) সহ অনেক মধ্যযুগীয় ইউরোপীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানী উদ্ধৃতি প্রদান করতেন। জ্যোতির্বিজ্ঞানে তাকে ইউরোপীয়রা ভাবগুরু হিসেবে মান্য করে।
আল বাত্তানীর জীবন সম্পর্কে যতদূর জানা যায়, তিনি মেসোপটেমিয়ার (বর্তমান ইরাক) উচ্চভূমির অন্তর্গত হাররান নগরীতে ৮৫৮ সালে জন্মগ্রহণ করেন। সেই জায়গাটি বর্তমানে তুরস্কে অবস্থিত। তার বাবা ছিলেন বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতির বিখ্যাত একজন নির্মাতা। তার উপাধী 'আস সাবী' হওয়ায় অনেকে ধারণা করেন যে, তার পূর্বপুরুষ ছিল সাবেইন গোত্রভুক্ত। তবে তার পুরো নাম থেকে বোঝা যায়, তিনি ছিলেন একজন মুসলিম। অনেক পশ্চিমা ঐতিহাসিকদের মতে, তার পূর্বপুরুষ ছিল আরব রাজাদের মতই উচ্চবংশীয়। তিনি উত্তর সিরিয়ার অন্তর্গত আর-রাক্কা শহরে বসবাস করতেন। এখানেই তিনি ৯২৯ সালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
জ্যোতির্বিদ্যায় আল বাত্তানীর সর্বাধিক পরিচিত অর্জন হল সৌরবর্ষ নির্ণয়। আল বাত্তানীই প্রথম নির্ভুল পরিমাপ করে দেখিয়েছিলেন যে, এক সৌর বৎসরে ৩৬৫ দিন ৫ ঘণ্টা ৪৬ মিনিট ২৪ সেকেন্ড হয়। যার সাথে আধুনিক পরিমাপের পার্থক্য মাত্র ২ মিনিট ২২ সেকেন্ড কম।
জ্যোতির্বিজ্ঞানে ক্লডিয়াস টলেমি (খ্রীষ্টপূর্ব ১৮০-১০০) এর আগের কিছু বৈজ্ঞানিক ভুলও তিনি সংশোধন করেন। সূর্য ও চন্দ্র গ্রহণ সম্পর্কিত টলেমি যে মতবাদ ব্যক্ত করেছিলেন, আল বাত্তানী তা ভুল প্রমাণ করেন এবং নতুন প্রামাণিক তথ্য প্রদান করেন। নিকোলাস কোপারনিকাস (১৪৭৩-১৫৪৩) কর্তৃক আবিষ্কৃত বিভিন্ন পরিমাপের চাইতে আল বাত্তানী'র পরিমাপ অনেক বেশি নিখুঁত ছিল। যা ৬০০ বছরেরও অধিক সময় যাবৎ অনুসরণ করা হয়েছিলো।
মধ্যযুগের সফলতম জ্যোতির্বিজ্ঞানীর গল্প
আল বাত্তানি ব্যবসা বাণিজ্যে ভীষণ পটু ছিলেন। পাশাপাশি বাবার মতো তিনিও বাদ্যযন্ত্র নির্মাণকৌশল রপ্ত করেন। পরিমাপণে তার হাত ছিল অত্যন্ত পরিপক্ক। ফলে তার তৈরি বাদ্যযন্ত্রগুলো হতো অনেক উন্নতমানের। তিনি ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে নয়, শুধুমাত্র নিজের জন্য বাদ্যযন্ত্র তৈরি করতেন। তবে বাদ্যযন্ত্রের চেয়ে বেশি তৈরি করেছেন জ্যোতির্বিজ্ঞান সম্বন্ধীয় যন্ত্রপাতি। তাদের মধ্যে ‘আর্মিলারি স্ফিয়ার’ নামে পরিচিত একটি আধুনিক গ্লোব সদৃশ যন্ত্র তৈরি করেছিলেন, যার উপর বিভিন্ন নভোস্থিত বস্তুসমূহের বিচরণ পথ বিশেষ ধরনের রিং বা বলয় দ্বারা চিহ্নিত ছিল। এসব রিং ঘোরানো যেত, ঘোরানো যেত পুরো স্ফিয়ারটিকেও।
আর্মিলারি স্ফিয়ারের উদ্ভাবক যদিও আল বাত্তানি নন, তথাপি তার তৈরি স্ফিয়ার ছিল পূর্বের সকল যন্ত্রের চেয়ে নিখুঁত এবং উন্নতমানের। এই যন্ত্রের সাফল্য এককথায় অভাবনীয়। তিনি নিজের তৈরি যন্ত্রটি দিয়ে পর্যবেক্ষণ করে পৃথিবী থেকে সূর্যের দূরত্ব সম্বন্ধীয় যুগান্তকারী তথ্য দেন। “পৃথিবী সূর্যের চারদিকে ঘোরে”, ১৫৪৩ সালে কোপার্নিকাসের এই আবিষ্কারের আগপর্যন্ত মানুষ জানতো যে সূর্যই পৃথিবীর চারদিকে ঘোরে। অথচ সেই মধ্যযুগে বসে, ভুল সৌরমডেল নিয়ে কাজ করেও আল বাত্তানি সঠিকভাবে পর্যবেক্ষণ করেছিলেন যে পৃথিবী এবং সূর্যের মধ্যে দূরত্ব সর্বদা সমান থাকে না, পরিবর্তিত হয়। এই পর্যবেক্ষণ থেকেই তিনি আরো একটি চমৎকার সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন যে, যখন সূর্যগ্রহণ হয়, তখন চাঁদ সূর্য ও পৃথিবীর মাঝে অবস্থান নেয়।
ইন্তেকাল:
এই মহা মনীষী ৯২৯ সালে ৭২ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন।
What's Your Reaction?






