জাবির ইবনে হাইয়ান এর জীবনী - Biography of Jabir ibn Hayyan

জাবির ইবনে হাইয়ান এর জীবনী | Biography of Jabir ibn Hayyan

May 13, 2025 - 16:07
May 14, 2025 - 18:45
 0  2
জাবির ইবনে হাইয়ান এর জীবনী - Biography of Jabir ibn Hayyan

রসায়নের জনক জাবির ইবনে হাইয়ান এর সংক্ষিপ্ত জীবন বিবরণী 

আবু মুসা জাবির ইবন হাইয়ান

(আল-বারিজি/আল-আযদি/আল-কুফি/আল-তুসি/আল-সুফি, আরবি: جابر بن حیان, ফার্সি: جابرحیان) (জন্ম:৭২১ - মৃত্যু:৮১৫ খ্রিষ্টাব্দ) বিখ্যাত শিয়া মুসলিম বহুবিদ‍্যাবিশারদ। পাশ্চাত্য বিশ্বে তিনি জেবার নামে পরিচিত যা তার নামের লাতিন সংস্করণ। তিনি ছিলেন একাধারে রসায়নবিদ ও আলকেমিবিদ, জ্যোতির্বিজ্ঞানী ও জ্যোতিষী, প্রকৌশলী, দার্শনিক, পদার্থবিজ্ঞানী এবং ঔষধ বিশারদ ও চিকিৎসক। তার প্রকৃত জাতীয়তা সঠিকভাবে জানা যায়নি। অনেকে বলেন তিনি আরব, অনেকে আবার বলেন তিনি পারস্যের নাগরিক ছিলেন। তাকে "রসায়নের জনক" হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। জাবির ইবন হাইয়ান আলকেমিতে পরীক্ষণমূলক পদ্ধতির গোড়াপত্তন করেছিলেন।

১০ম শতাব্দীর প্রাথমিক দিকে, জাবিরের কাজের পরিচয় এবং সঠিক রচনাসমূহের সংগ্রহ ইসলামী চক্রের মধ্যে বিতর্ক ছিল। তিনি ১৩শ শতাব্দীতে ইউরোপে একজন বেনামী লেখক ছিলেন এবং পাশ্চাত্যের খ্রিস্টানরা লাতিন অনুযায়ী তার নাম "জেবার" দেন। সাধারণত তাকে ছদ্ম-জেবার হিসাবে উল্লেখ করে। তিনি কলম-নাম জেবার অধীনে আল-কেমি ও ধাতুবিদ লিখেন

তিনি রসায়নের অসংখ্য গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া আবিষ্কার করেছিলেন যার অনেকগুলো এখনও ব্যবহৃত হয়। যেমন: হাইড্রোক্লোরিক ও নাইট্রিক এসিড সংশ্লেষণ, পাতন এবং কেলাসীকরণ। তার অধিকাংশ রচনাই দুর্বোধ্য এবং বিভিন্নভাবে সংকেতায়িত। বিশেষজ্ঞ ছাড়া তার রচনা কেউ খুব একটা বোঝেন না, বিশেষজ্ঞদের মধ্যেও কেউ জানেন না ঠিক কি সংকেতের মাধ্যমে লিখেছিলেন তিনি। তাক্বিনের ধারণা এবং সে সময় আরবে প্রচলিত বিভিন্ন পদার্থের নামের মাধ্যমে তিনি বিস্তৃত রাসায়নিক সংখ্যায়ন পদ্ধতি তৈরি করেছিলেন। তার আলকেমি ক্যারিয়ার এই পদ্ধতিকে ঘিরেই আবর্তিত হয়েছে। তাক্বিন বলতে আলকেমি গবেষণাগারে কৃত্রিমভাবে জীবন সৃষ্টির প্রক্রিয়াকে বোঝায়। বর্তমানে প্রমাণিত হয়েছে যে, জাবিরের প্রাথমিক গবেষণামূলক রচনাগুলো পারস্যের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বৈজ্ঞানিক সংস্কৃতির পটভূমিতে রচিত হয়েছে। কৌশলগত শব্দভাণ্ডারে ব্যবহৃত ফার্সি ভাষা এবং মধ্য পারস্য দেশীয় শব্দের মাধ্যমে তার অভিসন্দর্ভগুলো পড়া যায়। তিনি লোহার মরিচারোধক বার্নিস আবিষ্কার করেছিলেন। এছাড়া ধাতুর শোধন, তরলীকরণ, বাষ্পীকরণও তার আবিষ্কার।

তিনিই সর্বপ্রথম ইস্পাত তৈরি করার পদ্ধতি বের করেছেন। চুলের কলব, কাচ, লেখার কালি তৈরির প্রক্রিয়া ও ব্যবহারবিধি সম্পর্কে বিস্তারিত বলেছিলেন।

জীবনী

জাবির ইবন হাইয়ান ৭২২ খ্রিষ্টাব্দে তুসপারস্যে জন্ম গ্রহণ করেন। ধ্রুপদী সূত্র অনুযায়ী জাবির ভিন্নভাবে আল-আযদি বা আল-বারিজি বা আল-কুফি বা আল-তুসি বা আল-সুফী হিসেবে পরিচিত হয়েছেন। তার জন্ম স্থান নিয়ে মত পার্থক্য রয়েছে, কারো মতে তিনি ছিলেন একজন খোরাসান, পারস্য যিনি পরে কুফাতে যান, অন্যদের মতে তিনি ছিলেন সিরিয়া আদিবাসি পরে তিনি পারস্য ও ইরাকে বসবাস করেন। তার পূর্বপুরুষগনের পটভূমি স্পষ্ট নয়, কিন্তু অধিকাংশ সূত্র তাকে একজন ফার্সি হিসেবে উল্লেখ করে। কিছু সূত্রে জানা যায় যে, তার পিতা ছিলেন হাইয়ান আল-আযদি। তিনি ছিলেন আরব আযদ উপজাতির একজন ফার্মাসিস্ট যিনি উমাইয়া খিলাফতের সময় ইয়েমেন থেকে কুফাতে প্রবসিত হন।

জাবির তাঁর জীবনের অধিকাংশ সময়ই বাগদাদে কাটিয়েছেন। কিতাবুল খাওয়াসের ঘটনাবলী থেকে বুঝা যায় যে, অষ্টম শতাব্দীর শেষ দিকে বাগদাদেই তিনি রসায়ন ও চিকিৎসা বিজ্ঞানে তাঁর গবেষণা চালিয়ে ছিলেন। বাগদাদেই তাঁর রসায়নাগার স্থাপিত ছিল। উল্লেখ্য যে, জাবিরের মৃত্যুর ১০০ বছর পরে কুফায় অবস্থিত দামাস্কাস গেটের নিকট রাস্তা নতুন করে তৈরি করতে কতকগুলো ঘর ভেঙ্গে ফেলার সময় একটি ঘরে ২০০ পাউন্ডের একটি সোনার থা ও একটি খল পাওয়া যায়। ফিহারিস্তের মতে এটি ছিল জাবিরের বাসস্থান ও ল্যাবরেটরী। ঐতিহাসিক হিট্টিও ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন।

জাবির ইবনে হাইয়ানের অবদান মৌলিক। তিনি বস্তুজগতকে প্রধানত তিন ভাগে বিভক্ত করেন। প্রথম ভাগে স্পিরিট, দ্বিতীয় ভাগে ধাতু এবং তৃতীয় ভাগে যৌগিক পদার্থ। তাঁর এ আবিষ্কারের উপর নির্ভর করেই বিজ্ঞানীরা বস্তুজগৎকে তিনটি ভাগে ভাগ করেন । যথা-বাষ্পীয়, পদার্থ ও পদাৰ্থ বহির্ভুত। জাবির এমন সব বস্তু বিশ্ব সভ্যতার সামনে তুলে ধরেন, যেগুলোকে তাপ দিলে বাষ্পায়িত হয়। এ পর্যায়ে রয়েছে কর্পূর, আর্সেনিক ও এমোনিয়া ক্লোরাইড়। তিনি দেখান কিছু মিশ্র ও যৌগিক পদার্থ, যেগুলোকে অনায়াসে চুর্ণে পরিণত করা যায়। নির্ভেজাল বস্তুর পর্যায়ে তিনি তুলে ধরেন সোনা, রূপা, তামা, লোহা, দস্তা প্রভৃতি।

জাবির ইবনে হাইয়ানই সৰ্ব্ব প্রথম নাইট্ৰিক এসিড আবিষ্কার করেন। সালফিউরিক এসিডও তাঁরই আবিষ্কার। তিনি ‘কিতাবুল ইসতিতমাস’ এ নাইট্ৰিক এসিড প্রস্তুত করার ফর্মুলা বর্ণনা করেন। নাইট্রিক এসিডে স্বর্ণ গলানোর ফর্মুলা তিনিই প্রথম আবিষ্কার করেন। নাইট্ৰিক এসিড ও হাইড্রোক্লোরিক এসিডে স্বর্ণ গলানোর পদার্থটির নাম যে “একোয়া রিজিয়া” এ নামটিও তাঁর প্রদত্ত। জাবির ইবনে হাইয়ান নানাভাবেই তাঁর রাসায়নাকি বিশ্লেষণ বা সংশ্লেষণের নামকরণ বা সংজ্ঞা উল্লেখ করেছেন। পাতন, উর্ধ্বপাতন, পরিস্রাবণ, দ্রবণ, কেলাসন, ভ্ৰষ্মীকরণ, গলন, বাষ্পীভবন ইত্যাদি রাসায়নিক সংশ্লেষণ বা অনুশীলন গবেষণার কি কি রূপান্তর হয় এবং তার ফল কি তিনি তাও বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করেছেন। তিনি চামড়া ও কাপড়ে রং করার প্রণালী, ইস্পাত প্রস্তুত করার পদ্ধতি, লোহা, ওয়াটার প্রুফ কাপড়ে বার্নিশ করার উপায়, সোনার জুলে পুস্তকে নাম লেখার জন্য লৌহের ব্যবহার ইত্যাদি আবিষ্কার করেন।

জাবির ইবনে হাইয়ান স্বর্ণ ও পরশ পাথর তৈরি করতে পারতেন। কিন্তু তিনি স্বর্ণ কিংবা পরশ পাথরের লোভী ছিলেন না। ধন সম্পদের লোভ লালসা তাঁকে সভ্যতা উন্নয়নে ও গবেষণার আদর্শ থেকে বিন্দু মাত্রও পদস্থলন ঘটাতে পারেনি। দুর্দান্ত সাহসী জাবির ইবনে হাইয়ান স্বর্ণ ও পরশ পাথর তৈরি করতে গিয়ে আজীব যেখানেই গিয়েছেন দুৰ্যোগ, দুশ্চিন্তা ও মৃত্যুর সাথে লড়াই ছাড়া সুখ শান্তির মুখ দেখতে পারেননি। জাবিরের মতে সোনা, রূপা, লোহা প্রভৃতি যত প্রকার ধাতু আছে কোন ধাতুরই মৌলিকতা নেই। এসব ধাতুই পারদ আর গন্ধকের সমন্বয়ে গঠিত। খনিজ ধাতু খনিতে যে নিয়মে গঠিত হয় সে নিয়মে মানুষও ঐসব ধাতু তৈরি করতে পারে। অন্য ধাতুর সংগে মিশ্ৰ স্বৰ্গকে Cupellation পদ্ধতিতে অর্থাৎ মীগারের সংগে মিশিয়ে স্বর্ণ বিশুদ্ধ করার পদ্ধতি তিনিই আবিষ্কার করেন।

জাবির এপোলিয়ানের আধ্যাত্মিকবাদ, প্লেটো, সক্রেটিস, এরিস্টটল, পিথাগোরাস, ডেমোক্রিটাস প্রমুখের গ্রন্থের সংগে পরিচিত এবং গ্ৰীক ভাষায় সুপন্ডিত ছিলেন। তিনি চিকিৎসা শাস্ত্র, ইউক্লিড ও আল মাজেস্টের ভাষ্য, দর্শন, যুদ্ধবিদ্যা, রসায়ন, জ্যামিতি, জ্যোতির্বিজ্ঞান ও কাব্য সম্পর্কে বিভিন্ন গ্ৰন্থ প্রণয়ন করেন। তিনি দুই হাজারেরও বেশী গ্ৰন্থ রচনা করেন। তবে তাঁর অধিকাংশ গ্ৰন্থই মাত্র কয়েক পৃষ্ঠার মধ্যে সীমাবদ্ধ। তিনি বিভিন্ন বিষয় পরীক্ষা নিরীক্ষা করে যা পেয়েছেন, তার ফলাফলই ছিল গ্রন্থের বিষয়বস্তু। বিভিন্ন বিষয়ে তাঁর প্রণীত গ্রন্থাবলীর মধ্যে রসায়ন ২৬৭টি, যুদ্ধাস্ত্ৰাদি ৩০০টি, চিকিৎসা ৫০০টি, দর্শনে ৩০০টি, কিতাবুত তাগদির ৩০০টি, জ্যোতির্বিজ্ঞান ৩০০ পৃষ্ঠার ১টি, দার্শনিক যুক্তি খণ্ড ৫০০টি উল্লেখযোগ্য। এসব গ্ৰন্থ সংখ্যায় অধিক হলেও পৃষ্ঠা সংখ্যায় ছিল কম

জাবের ইবনে হাইয়ানের শিক্ষা অর্জন

যখন তাঁর বয়স মাত্র নয় বছর, তখন তুসের একটি মসজিদে মহাপবিত্র আল-কোরআনের হাফেজ হন।

পিতার মৃত্যুর পর মায়ের সাথে পিতৃালয় ইয়ামেনে ফিরে যান। সেখানে থেকে আরব সংস্কৃতি ও জ্ঞান বিজ্ঞানের চর্চা শুরু করেন।

তিনি সেখানে হারবী আল হামেরীর কাছে অধ্যয়ন করতে থাকেন। তিনি তথায় খালিদ বিন ইয়াজিদের বই অধ্যয়ন করেন। তবে জাবের ব্যক্তিগতভাবে খালিদ বিন ইয়াজিদের সাথে দেখা করেননি। খালিদ বিন ইয়াজিদ হলেন রসায়ন সম্পর্কে কথা বলা প্রথম ব্যক্তি।

জাবের বড় হওয়ার পর, তিনি নিজেকে আরব বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে জ্ঞান অন্বেষণ করতে চলে যাবার জন্য প্রস্তুত করলে তাঁর মা সাথে যেতে চাইলেন। ফলে একা না গিয়ে তাঁর মাকে সাথে নেন ও সঙ্গে বই-পুস্তকগুলোও নিয়ে যান।

বিবাহ সন্তানাদি পেশা ও ওফাত লাভ

জাবের ইবনে হাইয়ান, যাহাব নামের এক মেয়েকে বিয়ে করেন। তার থেকে জাবেরের তিনটি ছেলে সন্তান হয়েছিল। বড় জনের নাম মূসা, আব্দুল্লাহ মেঝো ছেলে এবং ছোট ছেলে ইসমাঈল

জাবের আরবে তাঁর নিজস্ব গবেষণাগার তৈরি করেছিলেন। সেখানে তিনি রসায়ন নিয়ে গবেষণা করতেন। তাঁর পূর্ববর্তী অনেক বইয়ের তথ্যকে তিনি ভুল প্রমাণ করেন। রসায়নে আসে এক নতুন দিগন্ত।

তাঁর প্রথম আবিষ্কারের পর তিনি তাঁর মা, স্ত্রী ও তিন সন্তানকে নিয়ে হজ্বে গমন করেন। জাবির ইবনে হাইয়ানের বয়স যখন পয়তাল্লিশ বছর, তখন তাঁর প্রিয় দুজন ব্যক্তি তাঁর মা এবং প্রখ্যাত আলেম জাফর সাদেক মারা যান।

জাবের বিন হাইয়ান বাগদাদে পণ্ডিত, উচ্চবিত্ত, সাধারণ মানুষ এবং অন্যান্যদের মধ্যে বিখ্যাত হয়ে ওঠেন। খলিফা হারুন আল-রশিদ ক্ষমতা গ্রহণ করলে জাবেরের খ্যাতি বৃদ্ধি পায়। তিনি নিত্যনতুন আবিষ্কার করতে থাকেন।

জাবের ইবনে হাইয়ানের কয়েকটি উপাধী রয়েছে। যেমন,

  • রসায়নের জনক
  • জাবেরের রসায়ন
  • রসায়নবিদদের ওস্তাদ
  • বীজগণিতের জনক

প্রায় ১৯৪ হিজরি মোতাবেক ৮১৪ ঈসাব্দে ইরাকের কুফা নগরীতে থাকাবস্থায় জাবের ইবনে হাইয়ান যখন অনুভব করলেন যে তার মৃত্যুর সময় ঘনিয়ে এসেছে, তখন তিনি উঠে অযু করলেন এবং ফজরের নামায পড়লেন। তখন নামাজে শেষ সিজদাবনত অবস্থায় ইহকাল ত্যাগ করেন। আল্লাহ তাঁর প্রতি রহম করুন।

জাবের ইবনে হাইয়ানের লিখিত গ্রন্থসমূহ

জাবির ইবনে হাইয়ান দর্শনের উপর তিনশ বই লিখেছেন। যুদ্ধের যন্ত্র তৈরির উপর এক হাজার তিনশ গ্রন্থ রচনা করেছেন। চিকিৎসার উপর একটি বিশাল বই লিখেছেন। ঔষধের উপর পাঁচশত বই লিখেছেন।

অ্যারিস্টটলের মতানুসারে যুক্তিবিদ্যার উপর বই লিখেছেন। ইসলাম ও আধ্যাত্মিকতার উপর লিখেছেন এক হাজার বই। তিনি দার্শনিকদের পাঁচশত বই খন্ডন করে অনেকগুলো বই লিখেছেন। কারুশিল্পের উপর একটি বই রচনা করেন। কিতাবুর রহমত নামে একটি বই রচনা করেন, যার মধ্যে ধাতুকে স্বর্ণে রূপান্তর করার আলোচনা করেছেন।

তিনি বিষবিদ্যার উপর বই লিখেছেন। তাঁর বইটির ইংরেজী অনুবাদ The Book of Poisons and Repelling Their Harm, বইটি পাঁচটি অধ্যায়ে বিভক্ত।

জাবিরের রচনাসমূ

জাবির ইবন হাইয়ানকে প্রায় ৩,০০০ থেরাপিই এবং নিবন্ধসমূহের কৃতিত্ব দেওয়া হয়েছে। তার রচনার পরিধি ছিল সুবিশাল: সৃষ্টিতত্ত্ব, সঙ্গীত, ঔষধ, জাদু, জীববিজ্ঞান, রাসায়নিক প্রযুক্তি, জ্যামিতি, ব্যাকরণ, দর্শনশাস্ত্র, যুক্তিবিদ্যা, জীবিত প্রাণীর কৃত্রিম প্রজনন, জ্যোতির্বিদ্যার পূর্বাভাস এবং সাঙ্কেতিক ইমামি কাল্পনিক।

  • ১১২টি বই বারমাকিডসকে উৎসর্গ করা হয়েছে।

  • দ্য সেভেন্টি বুক, যার বেশিরভাগ মধ্যযুগে লাতিন ভাষায় অনুবাদ করা হয়েছে।
  • দ্য টেন বুক অন রেক্টিফিকেশন, আল-কেমির বিবরণ ধারণকারী, যেমন, পাইথাগোরাস (পিথাগোরাস), সক্রেটিস, প্লেটো এবং এরিস্টটল।
  • দ্য বুক অন ব্যালেন্স, এই গ্রুপে তার বিখ্যাত 'প্রকৃতি মধ্যে ভারসাম্য তত্ত্ব' রয়েছে।

বির ইবনে হাইয়ান অনেক বড় মাপের একজন বিজ্ঞানী ছিলেন। তার জীবন ও কার্যক্রমের ওপর ইউরোপীয় বেশ কজন বিজ্ঞানী গবেষণা করেন। তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন এইচ ই স্টাফলেটন, জে রুসকা, হোলমারড।

মূল কথা হলো, জাবির ইবনে হাইয়ান মুসলমানদের গর্ব। জাবির ইবনে হাইয়ানকে আধুনিক আলকেমির স্রষ্টা বলা হয়। তার নাম রসায়ন জগতে স্মরণীয় হয়ে রয়েছে। বিজ্ঞানের এমন কোনো শাখা নেই, যেখানে তার অবাধ বিচরণ ছিল না ।

মৃত্যু: 

বিশ্ব বিখ্যাত এ মনীষীর মৃত্যুর তারিখ নিয়েও মতভেদ রয়েছে। যতদূর জানা যায়, তিনি 815  খ্রিস্টাব্দে এ নশ্বর পৃথিবী থেকে বিদায় গ্রহণ করেন। তিনি পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছেন বটে, কিন্তু বিজ্ঞানে তিনি যে অবদান রেখে গেছেন তা চির স্মরণীয়। বর্তমান প্রজন্মের অনেকেই তাঁর নাম জানে না; অথচ বিজ্ঞানে তাঁর মৌলিক আবিষ্কারের উপরই বর্তমান বিজ্ঞানের অধিষ্ঠান।

sourse: wikipedia

What's Your Reaction?

Like Like 0
Dislike Dislike 0
Love Love 0
Funny Funny 0
Angry Angry 0
Sad Sad 0
Wow Wow 0