শাহরুখ খান এর জীবনী | Biography Of Shah Rukh Khan
শাহরুখ খান এর জীবনী |

খান
|
|
জন্ম |
শাহরুখ খান
২ নভেম্বর ১৯৬৫ নতুন দিল্লি, ভারত[১]
|
---|---|
জাতীয়তা | ![]() |
অন্যান্য নাম |
|
নাগরিকত্ব | ভারতীয় |
শিক্ষা | স্নাতক (অর্থনীতি) |
মাতৃশিক্ষায়তন |
|
পেশা |
|
কর্মজীবন | ১৯৮৮–বর্তমান |
উল্লেখযোগ্য কর্ম
|
শাহরুখ খানের চলচ্চিত্র তালিকা |
দাম্পত্য সঙ্গী | গৌরী খান (বি. ১৯৯১) |
সন্তান |
|
পুরস্কার | শাহরুখ খান গৃহীত পুরস্কার ও মনোনয়নের তালিকা |
সম্মাননা | পদ্মশ্রী (২০০৫) লেজিওঁ দনর (২০১৪) |
শাহরুখ খান
(হিন্দি: शाहरुख खान; জন্ম: ২ নভেম্বর ১৯৬৫) অনানুষ্ঠানিকভাবে তার নামের আদ্যক্ষর দিয়ে গঠিত এসআরকে নামে ডাকা হয়, একজন ভারতীয় অভিনেতা, প্রযোজক এবং টেলিভিশন উপস্থাপক।
"বাদশাহ", "বলিউডের কিং" ও "কিং খান" হিসেবে পরিচিত শাহরুখ খান ৯০টির অধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। তিনি অসংখ্য পুরস্কার অর্জন করেছেন, তন্মধ্যে রয়েছে চৌদ্দটি ফিল্মফেয়ার পুরস্কার, যার আটটিই শ্রেষ্ঠ অভিনেতার পুরস্কার। হিন্দি চলচ্চিত্রে অসাধারণ অবদানের জন্য ২০০২ সালে ভারত সরকার শাহরুখ খানকে পদ্মশ্রী পুরস্কারে ভূষিত করে এবং ফ্রান্স সরকার তাকে অর্দ্র দে আর্ত এ দে লেত্র ও লেজিওঁ দনর সম্মাননায় ভূষিত করে। অভিনেতা হিসেবে বৈশ্বিক অবদানের জন্য শাহরুখ খানকে সম্মানসূচক ডক্টরেট উপাধিতে ভূষিত করেছে স্কটল্যান্ডের প্রাচীন বিশ্ববিদ্যালয় এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়।[৬] এশিয়ায় ও বিশ্বব্যাপী তার প্রায় ৪.২ বিলিয়ন ভক্ত রয়েছে এবং তার মোট অর্থসম্পদের পরিমাণ ৭৩০০ কোটি রুপি।
শাহরুখ খান ১৯৮০-র দশকের শেষের দিকে বেশ কিছু টেলিভিশন ধারাবাহিকে অভিনয়ের মাধ্যমে তার অভিনয় জীবন শুরু করেন। ১৯৯২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত দিওয়ানা চলচ্চিত্রের মাধ্যমে তিনি চলচ্চিত্র জগতে প্রবেশ করেন। তিনি কর্মজীবনের শুরুর দিকে খল চরিত্রে ডর (১৯৯৩), বাজিগর (১৯৯৩), ও আঞ্জাম চলচ্চিত্রে অভিনয় করে পরিচিতি লাভ করেন। এরপর তিনি অসংখ্য বাণিজ্যিকভাবে সফল চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন এবং খ্যাতি অর্জন করেন। তন্মধ্যে রয়েছে দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে যায়েঙ্গে (১৯৯৫),
দিল তো পাগল হ্যায় (১৯৯৭), কুছ কুছ হোতা হ্যায় (১৯৯৮), মোহব্বতেঁ (২০০০), ও কভি খুশি কভি গম... (২০০১)। তিনি দেবদাস (২০০২)-এ মদ্যপ জমিদার পুত্র দেবদাস মুখার্জি, স্বদেশ (২০০৪)-এ নাসার বিজ্ঞানী, চাক দে! ইন্ডিয়া (২০০৭)-এ হকি কোচ ও মাই নেম ইজ খান (২০১০)-এ অ্যাসপারগারের লক্ষণে আক্রান্ত ব্যক্তি চরিত্রে অভিনয় করে সমাদৃত হন। তার সর্বোচ্চ আয়কারী চলচ্চিত্রসমূহ হল প্রণয়ধর্মী হাস্যরসাত্মক ছবি চেন্নাই এক্সপ্রেস (২০১৩), উত্তেজনাপূর্ণ হাস্যরসাত্মক ছবি হ্যাপি নিউ ইয়ার (২০১৪), মারপিটধর্মী ছবি দিলওয়ালে (২০১৫) এবং অপরাধমূলক ছবি রইস (২০১৭)। স্বল্প বিরতির পর শাহরুখ মারপিটধর্মী চলচ্চিত্র পাঠান (২০২৩) দিয়ে ফিরে আসেন, যেটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আয়কারী হিন্দি চলচ্চিত্র।
২০১৫ সাল থেকে শাহরুখ খান চলচ্চিত্র প্রযোজনা কোম্পানি রেড চিলিজ এন্টারটেইনমেন্ট ও এর সহযোগী সংগঠনের সহ-চেয়ারম্যান এবং ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের দল কলকাতা নাইট রাইডার্স ও ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগের দল ত্রিনবাগো নাইট রাইডার্সের সহ-কর্ণধার। তাকে প্রায়ই টেলিভিশন অনুষ্ঠানের সঞ্চালক ও স্টেজ শোতে পরিবেশনা করতে দেখা যায়। পণ্যের শুভেচ্ছাদূত ও শিল্পোদ্যোগের জন্য গণমাধ্যম তাকে প্রায়ই "ব্র্যান্ড এসআরকে" বলে উল্লেখ করে থাকে।
শিশুদের শিক্ষায় সহায়তার জন্য ইউনেস্কো তাকে পিরামিড কন মার্নি পুরস্কার প্রদান করে এবং ভারতে নারী ও শিশুদের অধিকার রক্ষার্থে তার নেতৃস্থানীয় ভূমিকার জন্য ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম তাকে ২০১৮ সালে ক্রিস্টাল পুরস্কার প্রদান করে। তাকে প্রায়ই ভারতের সংস্কৃতির সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের তালিকায় স্থান পেতে দেখা যায়। ২০০৮ সালে নিউজউইক তাকে বিশ্বের ৫০ ক্ষমতাধর ব্যক্তির তালিকায় স্থান দেয়।
প্রাথমিক জীবন এবং পরিবার
শাহরুখ খান ১৯৬৫ সালের ২ নভেম্বর নতুন দিল্লির এক মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা ভারতের নতুন দিল্লির পাঠান বংশোদ্ভূত। তার পিতা মীর তাজ মোহাম্মদ খান ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের কর্মী ছিলেন। তিনি খান আবদুল গাফফার খানের অনুসারী ছিলেন এবং ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সাথে যুক্ত ছিলেন। তিনি তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের পেশাওয়ারে (বর্তমান পাকিস্তান) বসবাস করতেন এবং ১৯৪৮ সালে ভারত বিভাজন হওয়ার পরে পেশাওয়ারের কিসা খাওয়ানি বাজার থেকে নতুন দিল্লি চলে আসেন। খানের মতে, তার পিতামহ মীর জান মুহাম্মদ খান আফগানিস্তানের পশতুন জনগোষ্ঠীর একজন ছিলেন।
২০১০ সালের হিসাব অনুসারে, খানের পিতার পরিবারের কিছু অংশ এখনো কিসা খাওয়ানি বাজারে বসবাস করছেন। শাহরুখ খানের মাতা লতিফ ফাতিমা ছিলেন ঊর্ধ্বতন সরকারী প্রকৌশলী ইফতিখার আহমেদের কন্যা। তার মায়ের পরিবার ব্রিটিশ ভারতের রাওয়ালপিন্ডি থেকে এসেছিলেন। ১৯৫৯ সালে খানের মাতাপিতা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। শাহরুখ খান এক টুইটার বার্তায় নিজেকে "অর্ধেক হায়দ্রাবাদী (মায়ের দিক থেকে), অর্ধেক পাঠান (পিতার দিক থেকে) এবং অংশিক কাশ্মীরি (পিতামহীর দিক থেকে)" বলে উল্লেখ করেন। শাহরুখের চাচাতো ভাইদের দাবী তাদের পরিবার কাশ্মীরের হিন্দকোওয়ান বংশোদ্ভূত, পশতুন নয়, এবং তার পিতামহ আফগানিস্তান থেকে এসেছিলেন এই দাবীটির বিরোধিতা করেন।
খান দিল্লির পার্শ্ববর্তী রাজেন্দ্র নগর এলাকা বেড়ে ওঠেন৷ তার পিতার রেস্তোরাঁসহ একাধিক ব্যবসা ছিল, এবং তার একটি ভাড়া বাড়িতে মধ্যবিত্ত জীবনযাপন করতেন। খান মধ্য দিল্লির সেন্ট কলুম্বাস স্কুলে পড়াশোনা করেন, সেখানে তিনি লেখাপড়া এবং হকি ও ফুটবল খেলায় ভালো করেন। তিনি এই স্কুলের সর্বোচ্চ পুরস্কার সোর্ড অব অনার লাভ করেন। শুরুতে খান খেলাধুলায় তার কর্মজীবন শুরু করার কথা ভাবেন, কিন্তু তার কাঁধের একটি আঘাতের কারণে তিনি আর খেলাধুলা করতে পারবেন না বলে মনে করেন। খেলাধুলার পরিবর্তে তিনি যৌবনে মঞ্চনাটকে অভিনয় করতেন এবং বলিউডের অভিনেতাদের নকল করে তিনি প্রশংসা অর্জন করেন। তার প্রিয় অভিনয়শিল্পী ছিলেন দিলীপ কুমার, অমিতাভ বচ্চন ও মুমতাজ।
তার শৈশবের একজন বন্ধু ও অভিনয়ের সঙ্গী ছিলেন অমৃতা সিং, যিনি পরবর্তী কালে বলিউডে অভিনয় করেন। খান হংসরাজ কলেজে (১৯৮৫-৮৮) অর্থনীতিতে স্নাতক ডিগ্রি অর্জনের জন্য ভর্তি হন, কিন্তু তার বেশিরভাগ সময় দিল্লির থিয়েটার অ্যাকশন গ্রুপের (টিএজি) সাথে কাটান, যেখানে তিনি মঞ্চ পরিচালক ব্যারি জনের অধীনে অভিনয়ের পাঠ গ্রহণ করেন। হংসরাজ কলেজ থেকে স্নাতক সম্পন্ন করে তিনি জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়ায় গণযোগাযোগ বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জনের জন্য ভর্তি হন, কিন্তু অভিনয় জীবন শুরুর লক্ষ্যে তিনি স্নাতকোত্তর সম্পন্ন না করেই এই প্রতিষ্ঠান ত্যাগ করেন।
বলিউডের তার কর্মজীবন শুরুর সময়ে তিনি দিল্লির ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামাতেও অভিনয়ের পাঠ গ্রহণ করেন। তার পিতা ১৯৮১ সালে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন, এবং তার মাতা ১৯৯১ সালে বহুমূত্রের জটিলতায় মৃত্যুবরণ করেন। খানের শেহনাজ লালারুখ (জ. ১৯৬০) নামে একজন বড় বোন আছে, যিনি তাদের পিতামাতার মৃত্যুর পর বিষাদগ্রস্থ হয়ে পড়লে খান তার সেবা-যত্নের দায়িত্ব নেন। শেহনাজ এখনো তার ভাই ও তার পরিবারের সাথে মুম্বইয়ের বাড়িতে বসবাস করছেন।
তার জন্ম নাম শাহরুখ খান (অর্থ "রাজ মুখ") রাখা হলেও কিন্তু তার নাম শাহ রুখ খান লিখতে পছন্দ করেন, এছাড়াও সাধারণত তাকে তার নামের সংক্ষেপ এসআরকে নামে ডাকা হয়। খান গৌরী চিব্বারের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন, গৌরী পাঞ্জাবি হিন্দু ধর্মাবলম্বী৷ তারা ছয় বছর প্রেম করার পর ১৯৯১ সালের ২৫শে অক্টোবর ঐতিহ্যগত হিন্দু রীতিতে বিয়ে করেন। তাদের এক পুত্র আরিয়ান খান (জ. ১৯৯৭) ও এক কন্যা সুহানা খান (জ. ২০০০)।
২০১৩ সালে তারা তৃতীয় সন্তানের পিতামাতা হন, তার নাম আব্রাম খান, সারোগেট মায়ের মাধ্যমে তার জন্ম হয়৷ তার বড় দুই সন্তান বিনোদন শিল্পে আগমনের আগ্রহ প্রদর্শন করেছেন। খান বলেন, তার পুত্র আরিয়ান ক্যালিফোর্নিয়ার ইউসিএস স্কুল অব সিনেম্যাটিক আর্টসে পড়াশোনা করেছেন এবং লেখক-পরিচালক হতে আগ্রহী, অন্যদিকে সুহানা জিরো (২০১৮) চলচ্চিত্রে সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করেছেন, এবং উচ্চতর শিক্ষার জন্য নিউ ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের টিশ স্কুল অব দি আর্টসে পড়াশোনা করছেন। খান ইসলাম ধর্ম পালন করলেও তিনি তার স্ত্রীর হিন্দু ধর্মকে সম্মান করেন৷ তার সন্তানেরাও দুটি ধর্মই পালন করে৷ বাড়িতে কুরআন ও হিন্দু দেবতাদের মূর্তি পাশাপাশি অবস্থান করে।
১৯৮৮-১৯৯২: টেলিভিশন ও চলচ্চিত্রে অভিষেক
শাহরুখ খানের প্রধান চরিত্রে প্রথম কাজ ছিল লেখ ট্যান্ডনের টেলিভিশন ধারাবাহিক দিল দরিয়া। ১৯৮৮ সালে ধারাবাহিকটির শুটিং শুরু হয়, কিন্তু নির্মাণ বিলম্বের কারণে ১৯৮৮ সালে রাজ কুমার কাপুর পরিচালিত ফৌজি টেলিভিশন ধারাবাহিকে অভিনেতা হিসেবে তিনি আত্মপ্রকাশ করেন। এই ধারাবাহিকে আর্মি ক্যাডেটদের প্রশিক্ষণের বাস্তব চিত্র তুলে ধরা হয়, এবং তিনি কমান্ডো অভিমন্যু রাই চরিত্রের অভিনয় করেন। এরপর তিনি সাধারণ সার্কাস অভিনেতার জীবন নিয়ে নির্মিত আজিজ মির্জার টেলিভিশন ধারাবাহিক সার্কাস (১৯৮৯-১৯৯০)-এ কেন্দ্রীয় ভূমিকায় অভিনয় করেন এবং মণি কৌলের মিনি ধারাবাহিক ইডিয়ট (১৯৯১)-এ অভিনয় করেন।
এছাড়া তিনি উম্মীদ (১৯৮৯) ও ওয়াগলে কি দুনিয়া (১৯৮৮-৯০) ধারাবাহিকে এবং অরুন্ধতী রায়ের ইংরেজি ভাষার ইন হুইচ অ্যানি গিভস ইট দোজ ওয়ানস (১৯৮৯) টেলিভিশন চলচ্চিত্রে গৌণ চরিত্রে অভিনয় করেন। এইসব ধারাবাহিকে তার অভিনয় দেখে সমালোচকগণ তার অভিনয়ের কৌশলকে দিলীপ কুমারের অভিনয়ের সাথে তুলনা করেন, কিন্তু খান তখনো চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য যথেষ্ট ভালো নন এই বিবেচনায় চলচ্চিত্রে অভিনয়ের প্রতি আগ্রহী ছিলেন না।
শাহরুখ খান ১৯৯১ সালের এপ্রিলে তার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন, এবং এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন যে তিনি তার মায়ের মৃত্যুর দুঃখ ভুলতে চেয়েছিলেন। তিনি বলিউডে পূর্ণকালীন কর্মজীবন শুরু করার লক্ষ্য নিয়ে দিল্লি থেকে মুম্বই পাড়ি জমান এবং অচিরেই চারটি চলচ্চিত্রে চুক্তিবদ্ধ হন। ফৌজিতে তার অভিনয়ের মাধ্যমে তিনি হেমা মালিনীর নজর কাড়েন। হেমা মালিনী তাকে তার পরিচালনায় অভিষেক চলচ্চিত্র দিল আশনা হ্যায়-তে অভিনয়ের প্রস্তাব দেন। জুন মাসের মধ্যে তিনি তার প্রথম চলচ্চিত্রের শুটিং শুরু করেন। তার অভিনীত প্রথম ছবি দিল আশনা হ্যায় হলেও ১৯৯২ সালের জুনে মুক্তিপ্রাপ্ত দিওয়ানা ছবির মধ্য দিয়ে তার বড় পর্দায় অভিষেক হয়। এ ছবিতে তার বিপরীতে ছিলেন দিব্যা ভারতী এবং তিনি ঋষি কাপুরের পর দ্বিতীয় প্রধান পুরুষ চরিত্রে অভিনয় করেন। দিওয়ানা ছবিটি বক্স অফিসে ব্যবসা সফল হয় এবং তিনি বলিউডে তার কর্মজীবন শুরু করতে সক্ষম হন। এই ছবিতে তার কাজের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ নবাগত অভিনেতা বিভাগে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার লাভ করেন। একই বছরে মুখ্য চরিত্রে তার প্রারম্ভিক চলচ্চিত্রসমূহ চমৎকার, দিল আশনা হ্যায় ও রাজু বন গয়া জেন্টলম্যান মুক্তি পায়। শেষোক্ত চলচ্চিত্রে তিনি অভিনেত্রী জুহি চাওলার সাথে জুটি গড়েন, যার সাথে জুটিবদ্ধ হয়ে তিনি পরবর্তী কালে আরও অনেকগুলো চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন।
১৯৯৩-৯৪: খলনায়ক
১৯৯৩ সালে বাজীগর ও ডর ছবিতে খলচরিত্রে অভিনয় করে তিনি বিপুল খ্যাতি পান। ডর ছবিতে শাহরুখ একজন অপ্রকৃতস্থ প্রেমিক এবং বাজিগর ছবিতে একজন খুনীর ভূমিকায় অভিনয় করেন। ডর চলচ্চিত্র নির্মাতা যশ চোপড়া ও তার কোম্পানি যশ রাজ ফিল্মসের সাথে তার অনেকগুলো কাজের মধ্যে প্রথম কাজ। খানের তোতলানো ও "আই লাভ ইউ, কি-কি-কি-কিরণ" শব্দগুচ্ছ দর্শকদের কাছে জনপ্রিয়তা অর্জন করে। ডর ছবিতে তার কাজের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ খল অভিনয়শিল্পী বিভাগে ফিল্মফেয়ার পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন, কিন্তু স্যার ছবিতে অভিনয়ের জন্য মনোনয়নপ্রাপ্ত পরেশ রাওয়ালের কাছে হেরে যান। বাজিগর ছবিতে প্রেমিকাকে খুন করা উচ্চাকাঙ্ক্ষী প্রতিশোধ পরায়ণ খুনী চরিত্রে অভিনয় করে বলিউডের তথাকথিত সূত্রে অপ্রত্যাশিত পরিবর্তন এনে ভারতীয় দর্শকদের চমকে দেন।
দ্য ক্যামব্রিজ কম্প্যানিয়ন টু মডার্ন ইন্ডিয়ান কালচার-এ সোনাল খুল্লার এই চরিত্রটিকে "অতিমাত্রায় দক্ষ খল-নায়ক" বলে অভিহিত করে। এই ছবিতে তিনি প্রথমবারের মত অভিনেত্রী কাজলের সাথে জুটি বাঁধেন, যার সাথে তিনি পরবর্তী কালে সফল ও দীর্ঘস্থায়ী জুটি গড়ে তোলেন। বাজিগর ছবিতে তার কাজের জন্য জন্য তিনি তার কর্মজীবনের প্রথম শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার লাভ করেন। ২০০৩ সালে এনসাইক্লোপিডিয়া অব হিন্দি সিনেমা উল্লেখ করে যে খান "এই দুটি চলচ্চিত্রে প্রথাগত নায়কের প্রতিমূর্তি উপেক্ষা করেন এবং নিজস্ব সংশোধিত সংস্করণ সৃষ্টি করেন।" একই বছর তিনি কেতন মেহতার বিতর্কিত আর্টহাউজ চলচ্চিত্র মায়া মেমসাব-এ দীপা সাহীর সাথে একটি নগ্ন দৃশ্যে অভিনয় করেন। সেন্ট্রাল বোর্ড অব ফিল্ম সার্টিফিকেশন ছবিটির এই দৃশ্যটির কয়েকটি অংশের সেন্সর প্রদান করে
১৯৮৮-১৯৯২: টেলিভিশন ও চলচ্চিত্রে অভিষেক
শাহরুখ খানের প্রধান চরিত্রে প্রথম কাজ ছিল লেখ ট্যান্ডনের টেলিভিশন ধারাবাহিক দিল দরিয়া। ১৯৮৮ সালে ধারাবাহিকটির শুটিং শুরু হয়, কিন্তু নির্মাণ বিলম্বের কারণে ১৯৮৮ সালে রাজ কুমার কাপুর পরিচালিত ফৌজি টেলিভিশন ধারাবাহিকে অভিনেতা হিসেবে তিনি আত্মপ্রকাশ করেন। এই ধারাবাহিকে আর্মি ক্যাডেটদের প্রশিক্ষণের বাস্তব চিত্র তুলে ধরা হয়, এবং তিনি কমান্ডো অভিমন্যু রাই চরিত্রের অভিনয় করেন। এরপর তিনি সাধারণ সার্কাস অভিনেতার জীবন নিয়ে নির্মিত আজিজ মির্জার টেলিভিশন ধারাবাহিক সার্কাস (১৯৮৯-১৯৯০)-এ কেন্দ্রীয় ভূমিকায় অভিনয় করেন এবং মণি কৌলের মিনি ধারাবাহিক ইডিয়ট (১৯৯১)-এ অভিনয় করেন।
এছাড়া তিনি উম্মীদ (১৯৮৯) ও ওয়াগলে কি দুনিয়া (১৯৮৮-৯০) ধারাবাহিকে এবং অরুন্ধতী রায়ের ইংরেজি ভাষার ইন হুইচ অ্যানি গিভস ইট দোজ ওয়ানস (১৯৮৯) টেলিভিশন চলচ্চিত্রে গৌণ চরিত্রে অভিনয় করেন। এইসব ধারাবাহিকে তার অভিনয় দেখে সমালোচকগণ তার অভিনয়ের কৌশলকে দিলীপ কুমারের অভিনয়ের সাথে তুলনা করেন, কিন্তু খান তখনো চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য যথেষ্ট ভালো নন এই বিবেচনায় চলচ্চিত্রে অভিনয়ের প্রতি আগ্রহী ছিলেন না
শাহরুখ খান ১৯৯১ সালের এপ্রিলে তার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন, এবং এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন যে তিনি তার মায়ের মৃত্যুর দুঃখ ভুলতে চেয়েছিলেন। তিনি বলিউডে পূর্ণকালীন কর্মজীবন শুরু করার লক্ষ্য নিয়ে দিল্লি থেকে মুম্বই পাড়ি জমান এবং অচিরেই চারটি চলচ্চিত্রে চুক্তিবদ্ধ হন। ফৌজিতে তার অভিনয়ের মাধ্যমে তিনি হেমা মালিনীর নজর কাড়েন। হেমা মালিনী তাকে তার পরিচালনায় অভিষেক চলচ্চিত্র দিল আশনা হ্যায়-তে অভিনয়ের প্রস্তাব দেন। জুন মাসের মধ্যে তিনি তার প্রথম চলচ্চিত্রের শুটিং শুরু করেন। তার অভিনীত প্রথম ছবি দিল আশনা হ্যায় হলেও ১৯৯২ সালের জুনে মুক্তিপ্রাপ্ত দিওয়ানা ছবির মধ্য দিয়ে তার বড় পর্দায় অভিষেক হয়।
এ ছবিতে তার বিপরীতে ছিলেন দিব্যা ভারতী এবং তিনি ঋষি কাপুরের পর দ্বিতীয় প্রধান পুরুষ চরিত্রে অভিনয় করেন। দিওয়ানা ছবিটি বক্স অফিসে ব্যবসা সফল হয় এবং তিনি বলিউডে তার কর্মজীবন শুরু করতে সক্ষম হন। এই ছবিতে তার কাজের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ নবাগত অভিনেতা বিভাগে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার লাভ করেন। একই বছরে মুখ্য চরিত্রে তার প্রারম্ভিক চলচ্চিত্রসমূহ চমৎকার, দিল আশনা হ্যায় ও রাজু বন গয়া জেন্টলম্যান মুক্তি পায়। শেষোক্ত চলচ্চিত্রে তিনি অভিনেত্রী জুহি চাওলার সাথে জুটি গড়েন, যার সাথে জুটিবদ্ধ হয়ে তিনি পরবর্তী কালে আরও অনেকগুলো চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন।
১৯৯৩-৯৪: খলনায়ক
১৯৯৫ ছিল তার জন্য খুব সাফল্যের বছর এবং এই বছরে তিনি সাতটি চলচ্চিত্রে শ্রেষ্ঠাংশে অভিনয় করেন। প্রথমটি ছিল রাকেশ রোশন পরিচালিত প্রণয়নাট্যধর্মী রোমহর্ষক করন অর্জুন। এতে তিনি সালমান খান ও কাজলের সাথে অভিনয় করেন। ছবিটি এই বছরে ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আয়কারী চলচ্চিত্র। এই বছরে তার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র হল আদিত্য চোপড়ার পরিচালনায় আত্মপ্রকাশ করা দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে যায়েঙ্গে। এতে তিনি প্রবাসী ভারতীয় যুবক চরিত্রে অভিনয় করেন, যিনি ইউরোপ জুড়ে ভ্রমণকালে কাজলের চরিত্রের প্রেমে পড়েন। খান শুরুতে প্রেমিক চরিত্রে অভিনয়ের ব্যাপারে সংযত ছিলেন, কিন্তু এই চলচ্চিত্রটি তাকে "প্রণয়ধর্মী নায়ক" হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে। সমালোচক ও দর্শকদের নিকট থেকে প্রশংসা অর্জনকারী ছবিটি সেই বছরে ভারত ও দেশের বাইরে সর্বোচ্চ আয়কারী চলচ্চিত্র।
বিশ্বব্যাপী ₹১.২২ বিলিয়ন টাকা আয়কারী ছবিটিকে বক্স অফিস ইন্ডিয়া "সর্বকালের ব্লকবাস্টার" বলে ঘোষণা দেয়। এটি ভারতের চলচ্চিত্রের ইতিহাসের দীর্ঘতম সময় ধরে চলা চলচ্চিত্র, যাকে তুলনা করা যায় শোলের সাথে যা ২৬০ সপ্তাহ চলেছিল। এখনো মুম্বইয়ের মারাঠা মন্দির থিয়েটারে ছবিটি প্রদর্শিত হচ্ছে এবং ২০১৫ সালের শুরুর হিসাব অনুসারে ছবিটি ১০০০ সপ্তাহের বেশি সময় ধরে প্রদর্শিত হচ্ছে। ছবিটি দশটি বিভাগে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার অর্জন করে, এবং খান শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে তার দ্বিতীয় ফিল্মফেয়ার পুরস্কার অর্জন করেন। পরিচালক ও সমালোচক রাজা সেন বলেন, "খান ব্যাপক গর্ব সহকারে ১৯৯০-এর দশকের প্রেমিককে নতুন সংজ্ঞায়িত করে অনবদ্য অভিনয় করেছেন। তিনি বাকচপল, কিন্তু দর্শকদের মাঝে আবেদন সৃষ্টির লক্ষ্যে আন্তরিক।" ১৯৯৫ সালে তার অভিনীত বাকি চলচ্চিত্রগুলো হল জামানা দিওয়ানা, গুড্ডু, ওহ ডার্লিং! ইয়ে হ্যায় ইন্ডিয়া!, রাম জানে, ও ত্রিমূর্তি।
১৯৯৬ সালে তার অভিনীত চারটি চলচ্চিত্র - ইংলিশ বাবু দেশি মেম, চাহাত, আর্মি, ও দুশমন দুনিয়া কা মুক্তি পায়, কিন্তু সবকয়টি ছবিই সমালোচনামূলক ও ব্যবসায়িক দৃষ্টিকোণ থেকে ব্যর্থ হয়। পরের বছর তার অভিনীত পাঁচটি চলচ্চিত্র মুক্তি পায়। বছরের শুরুতে মুক্তিপ্রাপ্ত গুদগুদি ও কয়লা ছবি দুটি স্বল্প আয় করে। আজিজ মির্জার প্রণয় ধর্মী হাস্যরসাত্মক ইয়েস বস ছবিতে আদিত্য পঞ্চোলি ও জুহি চাওলার সাথে অভিনয় করে তিনি তার অভিনয়ের জন্য প্রশংসিত হন এবং তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে ফিল্মফেয়ার পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন।
একই বছর তিনি সুভাষ ঘাইয়ের সামাজিক নাট্য ধর্মী পরদেশ ছবিতে নৈতিক উভয় সংকটে ভোগা সঙ্গীতজ্ঞ অর্জুন চরিত্রে অভিনয় করেন।
ইন্ডিয়া টুডে উল্লেখ করে যে এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সফলতা অর্জনকারী প্রথম মূলধারার বলিউড চলচ্চিত্র। ১৯৯৭ সালের খানের অভিনীত শেষ চলচ্চিত্র হল যশ চোপড়ার সঙ্গীত ধর্মী প্রণয় মূলক দিল তো পাগল হ্যায় (১৯৯৭)। এতে তিনি রাহুল নামে এক মঞ্চ নির্দেশকের চরিত্রে অভিনয় করেন, যাকে মাধুরী দীক্ষিত ও কারিশমা কাপুরের সাথে ত্রিভুজ প্রেমের দৃশ্যে দেখা যায়। ছবিটি ও তার অভিনয় সমালোচকদের কাছ থেকে প্রশংসা অর্জন করে এবং তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে তার তৃতীয় ফিল্মফেয়ার পুরস্কার অর্জন করেন।
১৯৯৮ সালে খান তিনটি চলচ্চিত্রে মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেন এবং একটি চলচ্চিত্রে তাকে বিশেষ চরিত্রে দেখা যায়। এই বছরে তার অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র হল মহেশ ভাটের ডুপ্লিকেট, এতে তিনি জুহি চাওলা ও সোনালী বেন্দ্রের বিপরীতে দ্বৈত চরিত্রে অভিনয় করেন। এটি যশ জোহরের প্রযোজনা কোম্পানি ধর্ম প্রোডাকশন্সের সাথে তার করা অনেকগুলো চলচ্চিত্রের প্রথম চলচ্চিত্র। ছবিটির বাণিজ্যিকভাবে ব্যর্থ হয়, কিন্তু ইন্ডিয়া টুডের অনুপমা চোপড়া খানের প্রাণোদ্যম অভিনয়ের ব্যাপক প্রশংসা করেন। একই বছর তিনি দিল সে.. ছবিতে রহস্যময় এক সন্ত্রাসীর (মনীষা কৈরালা) প্রতি মোহাবিষ্ট অল ইন্ডিয়া রেডিওর প্রতিবেদক চরিত্রে অভিনয় করে সমাদৃত হন।
এটি মণি রত্নমের সন্ত্রাস চলচ্চিত্র ধারাবাহিকের তৃতীয় কিস্তি। এই বছরে তার মুক্তিপ্রাপ্ত শেষ চলচ্চিত্র কুছ কুছ হোতা হ্যায়-এ তিনি একজন কলেজ শিক্ষার্থী ও পরবর্তী কালে বিপত্নীক পিতা চরিত্রে অভিনয় করেন। করণ জোহরের পরিচালনায় আত্মপ্রকাশ ঘটা এই ছবিতে খানের বিপরীতে অভিনয় করেন কাজল ও রানী মুখার্জী। লেখিকা অঞ্জনা মতিহার চন্দ্রা এই চলচ্চিত্রটিকে ১৯৯০-এর দশকের ব্লকবাস্টার হিসেবে অভিহিত করেন এবং বলেন "পাত্র-ভর্তি প্রণয়, হাস্যরস ও বিনোদন।" এই ছবিতে অভিনয় করে খান টানা দ্বিতীয় বছর শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার অর্জন করেন। তিনি এবং কয়েকজন সমালোচক মনে করেন যে তার অভিনয় কাজলের অভিনয়কে ম্লান করে দিয়েছিল।
১৯৯৯-২০০৩: কর্মজীবনে প্রতিবন্ধকতা
১৯৯৯ সালে খানের একমাত্র মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র হল বাদশাহ, এতে তিনি টুইঙ্কল খান্নার বিপরীতে অভিনয় করেন। ছবিটি বক্স অফিসে যথেষ্ট ব্যবসা করতে পারেনি, কিন্তু খান শ্রেষ্ঠ কৌতুকাভিনয় শিল্পী বিভাগে ফিল্মফেয়ার পুরস্কারের মনোনয়ন পান, কিন্তু হাসিনা মান যায়েগী ছবির জন্য মনোনয়ন প্রাপ্ত গোবিন্দের কাছে পরাজিত হন। ১৯৯৯ সালে খান অভিনেত্রী জুহি চাওলা ও পরিচালক আজিজ মির্জার সাথে মিলে যৌথভাবে ড্রিমজ আনলিমিটেড নামে একটি প্রযোজনা কোম্পানি চালু করেন। কোম্পানিটির প্রথম চলচ্চিত্র ফির ভি দিল হ্যায় হিন্দুস্তানি (২০০০)-এ তিনি ও জুহি শ্রেষ্ঠাংশে অভিনয় করেন। ছবিটি বাণিজ্যিকভাবে ব্যর্থ হয়। ছবিটি সে সময়ে নবাগত হৃতিক রোশনের কাহো না... প্যায়ার হ্যায় চলচ্চিত্রের এক সপ্তাহ পরে মুক্তি পায়, সমালোচকগণ মনে করেন হৃতিক শাহরুখ খানকে ম্লান করে দিয়েছিলেন। রেডিফ.কমের স্বপ্না মিত্তর খানের প্রত্যাশিত মুদ্রাদোষ সম্পর্কে বলেন, "খোলাখুলিভাবে বলতে গেলে খানের অভিনয়ে কিছুটা পরিবর্তন আনার এখনই উৎকৃষ্ট সময়।" একই বছর তিনি কামাল হাসানের হে রাম ছবিতে পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয় করেন। ছবিটি তামিল ও হিন্দি উভয় ভাষাতেই নির্মিত হয়। ফলে এই চলচ্চিত্রে প্রত্নতত্ত্ববিদ আমজাদ আলী খান চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে তার তামিল ভাষার চলচ্চিত্রে আত্মপ্রকাশ ঘটে। তিনি এই চলচ্চিত্রে বিনা পারিশ্রমিকে কাজ করেছিলেন, কারণ তিনি কামাল হাসানের সাথে অভিনয় করতে চেয়েছিলেন। শাহরুখ খানের অভিনয় সম্পর্কে দ্য হিন্দুর টি কৃতিকা রেড্ডি লিখেন, "শাহরুখ খান সবসময়ের মত নিখুঁত অভিনয় করেছেন।"
এই সময়ে শাহরুখ খান অভিনীত ব্যবসাসফল চলচ্চিত্রগুলো হল আদিত্য চোপড়ার প্রণয় ধর্মী মোহব্বতেঁ (২০০০), মনসুর খানের জোশ (২০০০), ও করণ জোহরের পারিবারিক নাট্য ধর্মী কাভি খুশি কাভি গাম... (২০০১)।এই সময়কে খান তার কর্মজীবনের বাঁকবদলের সময় বলে উল্লেখ করেন। মোহব্বতেঁ ও কাভি খুশি কাভি গাম... ছবিতে তার সহশিল্পী হিসেবে অমিতাভ বচ্চনকে কর্তৃত্বপরায়ণ চরিত্রে দেখা যায় এবং ছবি দুটিতে দুজন পুরুষের নীতিগত দ্বন্দ্বের চিত্র তুলে ধরা হয়। এই ছবি দুটিতে খানের অভিনয় ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে এবং মোহব্বতেঁ ছবিতে অভিনয়ের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে তার দ্বিতীয় ফিল্মফেয়ার সমালোচক পুরস্কার অর্জন করেন। মোহব্বতেঁ ও জোশ যথাক্রমে ২০০০ সালের দ্বিতীয় ও চতুর্থ সর্বোচ্চ আয়কারী ভারতীয় চলচ্চিত্র; অন্যদিকে কাভি খুশি কাভি গম... পরবর্তী পাঁচ বছর বিদেশের বাজারে সর্বকালের সর্বোচ্চ আয়কারী ভারতীয় চলচ্চিত্র হিসেবে টিকেছিল।
২০০১ সালে ড্রিমজ আনলিমিটেড সন্তোষ সিবনের ঐতিহাসিক মহাকাব্যিক অশোকা চলচ্চিত্র দিয়ে প্রযোজনায় ফিরে এবং শাহরুখ খান এতে নাম ভূমিকায় অভিনয় করেন। এটি সম্রাট অশোকের জীবনী সংক্রান্ত আংশিক কাল্পনিক চলচ্চিত্র। ছবিটি ভেনিস চলচ্চিত্র উৎসব ও টরন্টো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হয় এবং ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া লাভ করে, কিন্তু এটি ভারতীয় বক্স অফিসে অল্প পরিমাণ ব্যবসা করে। এই প্রযোজনা কোম্পানির লোকসানের পরিমাণ বাড়তে থাকলে খান ড্রিমজ আনলিমিটেডের সাথে চালু করা এসআরকেওয়ার্ল্ড.কম নামক কোম্পানিটি বন্ধ করে দিতে বাধ্য হন।
২০০১ সালের ডিসেম্বরে খান কৃষ্ণ ভামসি'র শক্তি: দ্য পাওয়ার চলচ্চিত্রের একটি বিশেষ দৃশ্যের মারপিটে অংশ নিতে নিয়ে স্পাইনাল আঘাতে ভোগেন। তাকে দ্রুত প্রোলাপ্সেড ডিস্কের সাহায্যে চিকিৎসা প্রদান করা হয় এবং একাধিক থেরাপি দেওয়া হয়। কোন থেরাপিই তার এই আঘাতের স্থায়ী সমাধান দিতে পারেনি এবং এতে তিনি তার পরবর্তী কয়েকটি চলচ্চিত্রের শুটিঙেও তীব্র ব্যথা অনুভব করেন ২০০৩ সালের শুরুতে তার অবস্থার অবনতি ঘটলে তিনি লন্ডনের ওয়েলিংটন হাসপাতালে অ্যান্টিরিয়র সার্ভিক্যাল ডিসেক্টমি ও ফিউশন সার্জারি করান।২০০৩ সালের জুনে তিনি পুনরায় শুটিং শুরু করেন, কিন্তু তিনি কাজের চাপ এবং বার্ষিক চলচ্চিত্রের অভিনয়ের সংখ্যা কমিয়ে ফেলেন।
২০০২ সালে খান সঞ্জয় লীলা ভন্সালীর প্রণয়ধর্মী দেবদাস ছবিতে ঐশ্বর্যা রাইয়ের বিপরীতে নাম ভূমিকায় মদ্যপ জমিদারপুত্র চরিত্রে অভিনয় করেন। ₹৫০০ মিলিয়নের অধিক ব্যয়ে নির্মিত ছবিটি সে সময়ের সবচেয়ে ব্যয়বহুল বলিউড চলচ্চিত্র, তদুপরি ছবিটি বিশ্বব্যাপী ₹৮৪০ মিলিয়ন আয় করে ব্যবসাসফল হয়। চলচ্চিত্রটি ১০টি ফিল্মফেয়ারসহ অসংখ্য পুরস্কার অর্জন করে এবং খান শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার, আইফা পুরস্কার, স্ক্রিন পুরস্কার ও জি সিনে পুরস্কার অর্জন করেন।
পরের বছর খান করণ জোহর রচিত ও পরিচালিত হাস্যরসাত্মক নাট্যধর্মী কাল হো না হো (২০০৩) ছবিতে অভিনয় করেন। নিউ ইয়র্ক সিটির পটভূমিতে নির্মিত ছবিটিতে তার সহশিল্পী ছিলেন জয়া বচ্চন, সাইফ আলি খান ও প্রীতি জিন্টা। ছবিটি সে বছরের দেশের বাজারে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আয়কারী চলচ্চিত্র এবং দেশের বাইরের বাজারে শীর্ষ আয়কারী বলিউড চলচ্চিত্র। খান মারাত্মক হৃদরোগে আক্রান্ত আমন মাথুর চরিত্রে তার অভিনয়ের জন্য সমাদৃত হন এবং সমালোচকগণ দর্শকের উপর তার ভাবানুভূতি সম্পন্ন কাজের প্রভাবের প্রশংসা করেন। ড্রিমজ আনলিমিটেড থেকে প্রযোজিত তৃতীয় ছবি আজিজ মির্জার চলতে চলতে (২০০৩) ব্যবসাসফল হয়, কিন্তু জুহি চাওলাকে প্রধান নারী চরিত্রে না নেওয়ার জন্য খান ও তার বাকি অংশীদারদের মধ্যে মত-বিরোধের কারণে তারা অংশীদারত্বের চুক্তি থেকে আলাদা হয়ে যান।
২০০৪-২০০৯: পুনরুত্থান
২০০৪ ছিল শাহরুখ খানের জন্য সমালোচনামূলক ও ব্যবসায়িকভাবে সফল একটি বছর। তিনি ড্রিমজ আনলিমিটেডকে রেড চিলিজ এন্টারটেইনমেন্ট নাম দিয়ে প্রতিস্থাপন করেন এবং তার স্ত্রী গৌরীকে প্রযোজক হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করেন।এই কোম্পানি থেকে নির্মিত প্রথম চলচ্চিত্র ম্যায় হুঁ না (২০০৪), এটি নৃত্য পরিচালক ফারাহ খান পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র। পাকিস্তান-ভারতের সম্পর্ক নিয়ে কাল্পনিক চলচ্চিত্রটিকে কয়েকজন সমালোচক পাকিস্তানকে চিরাচরিত খল হিসেবে দেখানো থেকে সতর্কভাবে দূরে সরানো হয়েছে বলে মন্তব্য করেন।[১১৯] খান একই বছর যশ চোপড়ার প্রণয় ধর্মী বীর-জারা ছবিতে ভারতীয় বিমান বাহিনীর পাইলট চরিত্রে অভিনয় করেন, যিনি একজন পাকিস্তানি তরুণীর প্রেমে পড়েন। ছবিটি ৫৫ তম বার্লিন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হয় ও সমাদৃত হয়।এটি ২০০৪ সালে ভারতে সর্বোচ্চ আয়কারী চলচ্চিত্র, যা বিশ্বব্যাপী ₹৯৪০ মিলিয়ন আয় করে। এছাড়া ম্যায় হুঁ না ₹৬৮০ মিলিয়ন আয় করে সে বছরের সর্বোচ্চ আয়কারী চলচ্চিত্রের তালিকায় দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে।
২০০৪ সালের তার অভিনীত শেষ চলচ্চিত্র হল আশুতোষ গোয়ারিকরের সামাজিক নাট্য ধর্মী স্বদেশ। এতে তিনি একজন নাসার বিজ্ঞানী চরিত্রে অভিনয় করেন, যিনি স্বদেশ প্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে শিকড়ের টানে ভারতে ফিরে আসেন। এটি ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টারের নাসা গবেষণা কেন্দ্রে ধারণকৃত প্রথম ভারতীয় চলচ্চিত্র। চলচ্চিত্র বিষয়ক পণ্ডিত স্টিভেন টিও হিন্দি চলচ্চিত্রের প্রথাগত বর্ণনাশৈলী ও দর্শক প্রত্যাশার স্বচ্চতা প্রদর্শনের জন্য ছবিটিকে "বলিউডিকৃত বাস্তবতা"র উদাহরণ বলে উল্লেখ করেন।
২০১৩ সালের ডিসেম্বরে দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া প্রতিবেদন প্রকাশ করে যে খান এই ছবির দৃশ্যধারণকে অনুভূতিকে আছন্ন করা ও জীবনে বদলে অভিজ্ঞতা বলে উল্লেখ করেন এবং তিনি তখনো এই ছবিটি দেখেন নি। ভ্যারাইটি'র ডেরেক এলি খানের "আত্মতুষ্ট একজন প্রবাসীর দরিদ্র ভারতীয় কৃষকদের মাঝে পশ্চিমা মূল্যবোধ নিয়ে আসার জন্য সংকল্পবদ্ধ" অভিনয়কে "উদ্বেগজনক" বলে উল্লেখ করেন, কিন্তু জিতেশ পিল্লাই-সহ কয়েকজন চলচ্চিত্র সমালোচক একে তার সুন্দরতম কাজ বলে মনে করেন। তিনি এই বছরের তিনটি কাজের জন্যই শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে ফিল্মফেয়ার পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন এবং স্বদেশ ছবিতে তার অভিনয়ের জন্য এই পুরস্কার লাভ করেন। ফিল্মফেয়ার ২০১০ সালে বলিউডের "সেরা ৮০ প্রতীকী কাজ" সংখ্যায় তার এই কাজ অন্তর্ভুক্ত করে।
এই নিশ্চিত বিতর্ক তাকে পরবর্তী কাজগুলোতে এমন দৃশ্য এড়িয়ে যেতে তৎপর করে।
১৯৯৪ সালে তিনি কুন্দন শাহের হাস্যরসাত্মক নাট্যধর্মী কাভি হাঁ কাভি না ছবিতে একজন ব্যর্থ যুবক ও প্রেমিকের চরিত্রে অভিনয় করেন। দীপক তিজোরি ও সুচিত্রা কৃষ্ণমূর্তির সাথে অভিনয় করা এই ছবিতে তার ভূমিকাকে তিনি পরবর্তী কালের তার প্রিয় চরিত্র বলে উল্লেখ করেন। এই ছবিতে অভিনয়ের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে ফিল্মফেয়ার সমালোচক পুরস্কার অর্জন করেন। ২০০৪ সালে এক ফিরে দেখা পর্যালোচনায় রেডিফ.কমের সুকন্যা বর্মা এই কাজটিকে খানের সেরা কাজ বলে উল্লেখ করে বলেন,
"তিনি স্বতঃস্ফূর্ত, নমনীয়, বাল্য সুলভ, দুষ্টু, কিন্তু অভিনয় করেছেন মন থেকে।" একই বছর তিনি আঞ্জাম ছবিতে মাধুরী দীক্ষিত ও দীপক তিজোরির সাথে অভিনয় করেন। ছবিটি ব্যবসাসফল হয়নি, তবে সাইকোপ্যাথ হিসেবে তার অভিনয় সমাদৃত হয় এবং তিনি শ্রেষ্ঠ খল অভিনয়শিল্পী বিভাগে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার লাভ করেন। সে সময়ে বলিউডে কোন মুখ্য অভিনেতার জন্য খল চরিত্রে অভিনয় করাকে ঝুঁকিপূর্ণ বলে গণ্য করা হতো। অর্ণব রায় এই ধরনের "পাগলাটে ঝুঁকি" নেওয়ার জন্য এবং এই রকম চরিত্র নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে বলিউডে তার কর্মজীবন প্রতিষ্ঠার জন্য শাহরুখ খানের প্রশংসা করেন। পরিচালক মুকুল এস. আনন্দ তাকে সে সময়ে "চলচ্চিত্র শিল্পের নতুন মুখ" বলে অভিহিত করেন
১৯৯৫-৯৮: প্রণয়ধর্মী নায়ক
১৯৯৫ ছিল তার জন্য খুব সাফল্যের বছর এবং এই বছরে তিনি সাতটি চলচ্চিত্রে শ্রেষ্ঠাংশে অভিনয় করেন। প্রথমটি ছিল রাকেশ রোশন পরিচালিত প্রণয়নাট্যধর্মী রোমহর্ষক করন অর্জুন। এতে তিনি সালমান খান ও কাজলের সাথে অভিনয় করেন। ছবিটি এই বছরে ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আয়কারী চলচ্চিত্র। এই বছরে তার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র হল আদিত্য চোপড়ার পরিচালনায় আত্মপ্রকাশ করা দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে যায়েঙ্গে। এতে তিনি প্রবাসী ভারতীয় যুবক চরিত্রে অভিনয় করেন, যিনি ইউরোপ জুড়ে ভ্রমণকালে কাজলের চরিত্রের প্রেমে পড়েন। খান শুরুতে প্রেমিক চরিত্রে অভিনয়ের ব্যাপারে সংযত ছিলেন, কিন্তু এই চলচ্চিত্রটি তাকে "প্রণয়ধর্মী নায়ক" হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে।
সমালোচক ও দর্শকদের নিকট থেকে প্রশংসা অর্জনকারী ছবিটি সেই বছরে ভারত ও দেশের বাইরে সর্বোচ্চ আয়কারী চলচ্চিত্র। বিশ্বব্যাপী ₹১.২২ বিলিয়ন টাকা আয়কারী ছবিটিকে বক্স অফিস ইন্ডিয়া "সর্বকালের ব্লকবাস্টার" বলে ঘোষণা দেয়। এটি ভারতের চলচ্চিত্রের ইতিহাসের দীর্ঘতম সময় ধরে চলা চলচ্চিত্র, যাকে তুলনা করা যায় শোলের সাথে যা ২৬০ সপ্তাহ চলেছিল। এখনো মুম্বইয়ের মারাঠা মন্দির থিয়েটারে ছবিটি প্রদর্শিত হচ্ছে এবং ২০১৫ সালের শুরুর হিসাব অনুসারে ছবিটি ১০০০ সপ্তাহের বেশি সময় ধরে প্রদর্শিত হচ্ছে। ছবিটি দশটি বিভাগে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার অর্জন করে, এবং খান শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে তার দ্বিতীয় ফিল্মফেয়ার পুরস্কার অর্জন করেন। পরিচালক ও সমালোচক রাজা সেন বলেন, "খান ব্যাপক গর্ব সহকারে ১৯৯০-এর দশকের প্রেমিককে নতুন সংজ্ঞায়িত করে অনবদ্য অভিনয় করেছেন। তিনি বাকচপল, কিন্তু দর্শকদের মাঝে আবেদন সৃষ্টির লক্ষ্যে আন্তরিক।" ১৯৯৫ সালে তার অভিনীত বাকি চলচ্চিত্রগুলো হল জামানা দিওয়ানা, গুড্ডু, ওহ ডার্লিং! ইয়ে হ্যায় ইন্ডিয়া!, রাম জানে, ও ত্রিমূর্তি।
১৯৯৬ সালে তার অভিনীত চারটি চলচ্চিত্র - ইংলিশ বাবু দেশি মেম, চাহাত, আর্মি, ও দুশমন দুনিয়া কা মুক্তি পায়, কিন্তু সবকয়টি ছবিই সমালোচনামূলক ও ব্যবসায়িক দৃষ্টিকোণ থেকে ব্যর্থ হয়। পরের বছর তার অভিনীত পাঁচটি চলচ্চিত্র মুক্তি পায়। বছরের শুরুতে মুক্তিপ্রাপ্ত গুদগুদি ও কয়লা ছবি দুটি স্বল্প আয় করে। আজিজ মির্জার প্রণয় ধর্মী হাস্যরসাত্মক ইয়েস বস ছবিতে আদিত্য পঞ্চোলি ও জুহি চাওলার সাথে অভিনয় করে তিনি তার অভিনয়ের জন্য প্রশংসিত হন এবং তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে ফিল্মফেয়ার পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন।
একই বছর তিনি সুভাষ ঘাইয়ের সামাজিক নাট্য ধর্মী পরদেশ ছবিতে নৈতিক উভয় সংকটে ভোগা সঙ্গীতজ্ঞ অর্জুন চরিত্রে অভিনয় করেন। ইন্ডিয়া টুডে উল্লেখ করে যে এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সফলতা অর্জনকারী প্রথম মূলধারার বলিউড চলচ্চিত্র।[৮৫] ১৯৯৭ সালের খানের অভিনীত শেষ চলচ্চিত্র হল যশ চোপড়ার সঙ্গীত ধর্মী প্রণয় মূলক দিল তো পাগল হ্যায় (১৯৯৭)। এতে তিনি রাহুল নামে এক মঞ্চ নির্দেশকের চরিত্রে অভিনয় করেন, যাকে মাধুরী দীক্ষিত ও কারিশমা কাপুরের সাথে ত্রিভুজ প্রেমের দৃশ্যে দেখা যায়। ছবিটি ও তার অভিনয় সমালোচকদের কাছ থেকে প্রশংসা অর্জন করে এবং তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে তার তৃতীয় ফিল্মফেয়ার পুরস্কার অর্জন করেন।
১৯৯৮ সালে খান তিনটি চলচ্চিত্রে মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেন এবং একটি চলচ্চিত্রে তাকে বিশেষ চরিত্রে দেখা যায়। এই বছরে তার অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র হল মহেশ ভাটের ডুপ্লিকেট, এতে তিনি জুহি চাওলা ও সোনালী বেন্দ্রের বিপরীতে দ্বৈত চরিত্রে অভিনয় করেন। এটি যশ জোহরের প্রযোজনা কোম্পানি ধর্ম প্রোডাকশন্সের সাথে তার করা অনেকগুলো চলচ্চিত্রের প্রথম চলচ্চিত্র। ছবিটির বাণিজ্যিকভাবে ব্যর্থ হয়, কিন্তু ইন্ডিয়া টুডের অনুপমা চোপড়া খানের প্রাণোদ্যম অভিনয়ের ব্যাপক প্রশংসা করেন।
একই বছর তিনি দিল সে.. ছবিতে রহস্যময় এক সন্ত্রাসীর (মনীষা কৈরালা) প্রতি মোহাবিষ্ট অল ইন্ডিয়া রেডিওর প্রতিবেদক চরিত্রে অভিনয় করে সমাদৃত হন। এটি মণি রত্নমের সন্ত্রাস চলচ্চিত্র ধারাবাহিকের তৃতীয় কিস্তি। এই বছরে তার মুক্তিপ্রাপ্ত শেষ চলচ্চিত্র কুছ কুছ হোতা হ্যায়-এ তিনি একজন কলেজ শিক্ষার্থী ও পরবর্তী কালে বিপত্নীক পিতা চরিত্রে অভিনয় করেন। করণ জোহরের পরিচালনায় আত্মপ্রকাশ ঘটা এই ছবিতে খানের বিপরীতে অভিনয় করেন কাজল ও রানী মুখার্জী। লেখিকা অঞ্জনা মতিহার চন্দ্রা এই চলচ্চিত্রটিকে ১৯৯০-এর দশকের ব্লকবাস্টার হিসেবে অভিহিত করেন এবং বলেন "পাত্র-ভর্তি প্রণয়, হাস্যরস ও বিনোদন।" এই ছবিতে অভিনয় করে খান টানা দ্বিতীয় বছর শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার অর্জন করেন। তিনি এবং কয়েকজন সমালোচক মনে করেন যে তার অভিনয় কাজলের অভিনয়কে ম্লান করে দিয়েছিল।
১৯৯৯-২০০৩: কর্মজীবনে প্রতিবন্ধকতা
১৯৯৯ সালে খানের একমাত্র মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র হল বাদশাহ, এতে তিনি টুইঙ্কল খান্নার বিপরীতে অভিনয় করেন। ছবিটি বক্স অফিসে যথেষ্ট ব্যবসা করতে পারেনি,[৯৩] কিন্তু খান শ্রেষ্ঠ কৌতুকাভিনয় শিল্পী বিভাগে ফিল্মফেয়ার পুরস্কারের মনোনয়ন পান, কিন্তু হাসিনা মান যায়েগী ছবির জন্য মনোনয়ন প্রাপ্ত গোবিন্দের কাছে পরাজিত হন। ১৯৯৯ সালে খান অভিনেত্রী জুহি চাওলা ও পরিচালক আজিজ মির্জার সাথে মিলে যৌথভাবে ড্রিমজ আনলিমিটেড নামে একটি প্রযোজনা কোম্পানি চালু করেন।[৯৪] কোম্পানিটির প্রথম চলচ্চিত্র ফির ভি দিল হ্যায় হিন্দুস্তানি (২০০০)-এ তিনি ও জুহি শ্রেষ্ঠাংশে অভিনয় করেন। ছবিটি বাণিজ্যিকভাবে ব্যর্থ হয়। ছবিটি সে সময়ে নবাগত হৃতিক রোশনের কাহো না... প্যায়ার হ্যায় চলচ্চিত্রের এক সপ্তাহ পরে মুক্তি পায়, সমালোচকগণ মনে করেন হৃতিক শাহরুখ খানকে ম্লান করে দিয়েছিলেন। রেডিফ.কমের স্বপ্না মিত্তর খানের প্রত্যাশিত মুদ্রাদোষ সম্পর্কে বলেন, "খোলাখুলিভাবে বলতে গেলে খানের অভিনয়ে কিছুটা পরিবর্তন আনার এখনই উৎকৃষ্ট সময়।"[৯৭] একই বছর তিনি কামাল হাসানের হে রাম ছবিতে পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয় করেন। ছবিটি তামিল ও হিন্দি উভয় ভাষাতেই নির্মিত হয়। ফলে এই চলচ্চিত্রে প্রত্নতত্ত্ববিদ আমজাদ আলী খান চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে তার তামিল ভাষার চলচ্চিত্রে আত্মপ্রকাশ ঘটে। তিনি এই চলচ্চিত্রে বিনা পারিশ্রমিকে কাজ করেছিলেন, কারণ তিনি কামাল হাসানের সাথে অভিনয় করতে চেয়েছিলেন। শাহরুখ খানের অভিনয় সম্পর্কে দ্য হিন্দুর টি কৃতিকা রেড্ডি লিখেন, "শাহরুখ খান সবসময়ের মত নিখুঁত অভিনয় করেছেন।"
এই সময়ে শাহরুখ খান অভিনীত ব্যবসাসফল চলচ্চিত্রগুলো হল আদিত্য চোপড়ার প্রণয় ধর্মী মোহব্বতেঁ (২০০০), মনসুর খানের জোশ (২০০০), ও করণ জোহরের পারিবারিক নাট্য ধর্মী কাভি খুশি কাভি গাম... (২০০১)।এই সময়কে খান তার কর্মজীবনের বাঁকবদলের সময় বলে উল্লেখ করেন। মোহব্বতেঁ ও কাভি খুশি কাভি গাম... ছবিতে তার সহশিল্পী হিসেবে অমিতাভ বচ্চনকে কর্তৃত্বপরায়ণ চরিত্রে দেখা যায় এবং ছবি দুটিতে দুজন পুরুষের নীতিগত দ্বন্দ্বের চিত্র তুলে ধরা হযএই ছবি দুটিতে খানের অভিনয় ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে এবং মোহব্বতেঁ ছবিতে অভিনয়ের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে তার দ্বিতীয় ফিল্মফেয়ার সমালোচক পুরস্কার অর্জন করেন। মোহব্বতেঁ ও জোশ যথাক্রমে ২০০০ সালের দ্বিতীয় ও চতুর্থ সর্বোচ্চ আয়কারী ভারতীয় চলচ্চিত্র অন্যদিকে কাভি খুশি কাভি গম... পরবর্তী পাঁচ বছর বিদেশের বাজারে সর্বকালের সর্বোচ্চ আয়কারী ভারতীয় চলচ্চিত্র হিসেবে টিকেছিল।
২০০১ সালে ড্রিমজ আনলিমিটেড সন্তোষ সিবনের ঐতিহাসিক মহাকাব্যিক অশোকা চলচ্চিত্র দিয়ে প্রযোজনায় ফিরে এবং শাহরুখ খান এতে নাম ভূমিকায় অভিনয় করেন। এটি সম্রাট অশোকের জীবনী সংক্রান্ত আংশিক কাল্পনিক চলচ্চিত্র। ছবিটি ভেনিস চলচ্চিত্র উৎসব ও টরন্টো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হয় এবং ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া লাভ করেকিন্তু এটি ভারতীয় বক্স অফিসে অল্প পরিমাণ ব্যবসা করে।
এই প্রযোজনা কোম্পানির লোকসানের পরিমাণ বাড়তে থাকলে খান ড্রিমজ আনলিমিটেডের সাথে চালু করা এসআরকেওয়ার্ল্ড.কম নামক কোম্পানিটি বন্ধ করে দিতে বাধ্য হন। ২০০১ সালের ডিসেম্বরে খান কৃষ্ণ ভামসি'র শক্তি: দ্য পাওয়ার চলচ্চিত্রের একটি বিশেষ দৃশ্যের মারপিটে অংশ নিতে নিয়ে স্পাইনাল আঘাতে ভোগেন। তাকে দ্রুত প্রোলাপ্সেড ডিস্কের সাহায্যে চিকিৎসা প্রদান করা হয় এবং একাধিক থেরাপি দেওয়া হয়। কোন থেরাপিই তার এই আঘাতের স্থায়ী সমাধান দিতে পারেনি এবং এতে তিনি তার পরবর্তী কয়েকটি চলচ্চিত্রের শুটিঙেও তীব্র ব্যথা অনুভব করেন। ২০০৩ সালের শুরুতে তার অবস্থার অবনতি ঘটলে তিনি লন্ডনের ওয়েলিংটন হাসপাতালে অ্যান্টিরিয়র সার্ভিক্যাল ডিসেক্টমি ও ফিউশন সার্জারি করান।২০০৩ সালের জুনে তিনি পুনরায় শুটিং শুরু করেন, কিন্তু তিনি কাজের চাপ এবং বার্ষিক চলচ্চিত্রের অভিনয়ের সংখ্যা কমিয়ে ফেলেন।
২০০২ সালে খান সঞ্জয় লীলা ভন্সালীর প্রণয়ধর্মী দেবদাস ছবিতে ঐশ্বর্যা রাইয়ের বিপরীতে নাম ভূমিকায় মদ্যপ জমিদারপুত্র চরিত্রে অভিনয় করেন। ₹৫০০ মিলিয়নের অধিক ব্যয়ে নির্মিত ছবিটি সে সময়ের সবচেয়ে ব্যয়বহুল বলিউড চলচ্চিত্র,[১১৪] তদুপরি ছবিটি বিশ্বব্যাপী ₹৮৪০ মিলিয়ন আয় করে ব্যবসাসফল হয়। চলচ্চিত্রটি ১০টি ফিল্মফেয়ারসহ অসংখ্য পুরস্কার অর্জন করে এবং খান শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার, আইফা পুরস্কার, স্ক্রিন পুরস্কার ও জি সিনে পুরস্কার অর্জন করেন। পরের বছর খান করণ জোহর রচিত ও পরিচালিত হাস্যরসাত্মক নাট্যধর্মী কাল হো না হো (২০০৩) ছবিতে অভিনয় করেন। নিউ ইয়র্ক সিটির পটভূমিতে নির্মিত ছবিটিতে তার সহশিল্পী ছিলেন জয়া বচ্চন, সাইফ আলি খান ও প্রীতি জিন্টা। ছবিটি সে বছরের দেশের বাজারে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আয়কারী চলচ্চিত্র এবং দেশের বাইরের বাজারে শীর্ষ আয়কারী বলিউড চলচ্চিত্র।
খান মারাত্মক হৃদরোগে আক্রান্ত আমন মাথুর চরিত্রে তার অভিনয়ের জন্য সমাদৃত হন এবং সমালোচকগণ দর্শকের উপর তার ভাবানুভূতি সম্পন্ন কাজের প্রভাবের প্রশংসা করেন। ড্রিমজ আনলিমিটেড থেকে প্রযোজিত তৃতীয় ছবি আজিজ মির্জার চলতে চলতে (২০০৩) ব্যবসাসফল হয়, কিন্তু জুহি চাওলাকে প্রধান নারী চরিত্রে না নেওয়ার জন্য খান ও তার বাকি অংশীদারদের মধ্যে মত-বিরোধের কারণে তারা অংশীদারত্বের চুক্তি থেকে আলাদা হয়ে যান।
২০০৪-২০০৯: পুনরুত্থান
২০০৪ ছিল শাহরুখ খানের জন্য সমালোচনামূলক ও ব্যবসায়িকভাবে সফল একটি বছর। তিনি ড্রিমজ আনলিমিটেডকে রেড চিলিজ এন্টারটেইনমেন্ট নাম দিয়ে প্রতিস্থাপন করেন এবং তার স্ত্রী গৌরীকে প্রযোজক হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করেন। এই কোম্পানি থেকে নির্মিত প্রথম চলচ্চিত্র ম্যায় হুঁ না (২০০৪), এটি নৃত্য পরিচালক ফারাহ খান পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র। পাকিস্তান-ভারতের সম্পর্ক নিয়ে কাল্পনিক চলচ্চিত্রটিকে কয়েকজন সমালোচক পাকিস্তানকে চিরাচরিত খল হিসেবে দেখানো থেকে সতর্কভাবে দূরে সরানো হয়েছে বলে মন্তব্য করেন। খান একই বছর যশ চোপড়ার প্রণয় ধর্মী বীর-জারা ছবিতে ভারতীয় বিমান বাহিনীর পাইলট চরিত্রে অভিনয় করেন, যিনি একজন পাকিস্তানি তরুণীর প্রেমে পড়েন। ছবিটি ৫৫ তম বার্লিন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হয় ও সমাদৃত হয়। এটি ২০০৪ সালে ভারতে সর্বোচ্চ আয়কারী চলচ্চিত্র, যা বিশ্বব্যাপী ₹৯৪০ মিলিয়ন আয় করে। এছাড়া ম্যায় হুঁ না ₹৬৮০ মিলিয়ন আয় করে সে বছরের সর্বোচ্চ আয়কারী চলচ্চিত্রের তালিকায় দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে।
২০০৪ সালের তার অভিনীত শেষ চলচ্চিত্র হল আশুতোষ গোয়ারিকরের সামাজিক নাট্য ধর্মী স্বদেশ। এতে তিনি একজন নাসার বিজ্ঞানী চরিত্রে অভিনয় করেন, যিনি স্বদেশ প্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে শিকড়ের টানে ভারতে ফিরে আসেন। এটি ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টারের নাসা গবেষণা কেন্দ্রে ধারণকৃত প্রথম ভারতীয় চলচ্চিত্র। চলচ্চিত্র বিষয়ক পণ্ডিত স্টিভেন টিও হিন্দি চলচ্চিত্রের প্রথাগত বর্ণনাশৈলী ও দর্শক প্রত্যাশার স্বচ্চতা প্রদর্শনের জন্য ছবিটিকে "বলিউডিকৃত বাস্তবতা"র উদাহরণ বলে উল্লেখ করেন। ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া প্রতিবেদন প্রকাশ করে যে খান এই ছবির দৃশ্যধারণকে অনুভূতিকে আছন্ন করা ও জীবনে বদলে অভিজ্ঞতা বলে উল্লেখ করেন এবং তিনি তখনো এই ছবিটি দেখেন নি। ভ্যারাইটি'র ডেরেক এলি খানের "আত্মতুষ্ট একজন প্রবাসীর দরিদ্র ভারতীয় কৃষকদের মাঝে পশ্চিমা মূল্যবোধ নিয়ে আসার জন্য সংকল্পবদ্ধ" অভিনয়কে "উদ্বেগজনক" বলে উল্লেখ করেন, কিন্তু জিতেশ পিল্লাই-সহ কয়েকজন চলচ্চিত্র সমালোচক একে তার সুন্দরতম কাজ বলে মনে করেন। [তিনি এই বছরের তিনটি কাজের জন্যই শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে ফিল্মফেয়ার পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন এবং স্বদেশ ছবিতে তার অভিনয়ের জন্য এই পুরস্কার লাভ করেন।ফিল্মফেয়ার ২০১০ সালে বলিউডের "সেরা ৮০ প্রতীকী কাজ" সংখ্যায় তার এই কাজ অন্তর্ভুক্ত করে।
পুরস্কার এবং মনোনয়
শাহরুখ খান ৩০টি ফিল্মফেয়ার পুরস্কারের মনোনয়ন থেকে ১৪টি পুরস্কার এবং একটি বিশেষ পুরস্কার অর্জন করেন। দিলীপ কুমারের সাথে যৌথভাবে তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে সর্বাধিক আটটি পুরস্কার বিজয়ের রেকর্ডধারী।[১৫২] খান বাজীগর (১৯৯৩), দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে যায়েঙ্গে (১৯৯৫), দিল তো পাগল হ্যায় (১৯৯৭), কুছ কুছ হোতা হ্যায় (১৯৯৮), দেবদাস (২০০২), স্বদেশ (২০০৪), চাক দে! ইন্ডিয়া (২০০৭), ও মাই নেম ইজ খান (২০১০) চলচ্চিত্রে অভিনয় করে শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার অর্জন করেন।
তিনি কোন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন না করলেও ২০০৫ সালে ভারত সরকার তাকে পদ্মশ্রী সম্মাননায় ভূষিত করে। ফ্রান্স সরকার তাকে ২০০৭ সালে অর্দ্র দে আর্ত এ দে লেত্র, ও ২০১৪ সালে ফরাসি লেজিওঁ দনরের পঞ্চম পদ শ্যভালিয়ে খেতাব প্রদান করে। খান পাঁচটি সম্মানসূচক ডক্টরেট গ্রহণ করেন; প্রথমটি ২০০৯ সালে বেডফোর্ডশায়ার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে, দ্বিতীয়টি ২০১৫ সালে এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে, তৃতীয়টি ২০১৬ সালে মৌলানা আজাদ জাতীয় উর্দু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে, শেষ দুটি ২০১৯ সালে ইউনিভার্সিটি অব ল ও লা ট্রোব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে
সম্মাননা
আন্তর্জাতিক সম্মাননা
- ২০০৭ - ফরাসি সরকার কর্তৃক Ordre des Arts et des Lettres (শিল্পকলা ও সাহিত্যে অবদানের স্বীকৃতি) উপাধি লাভ
- ২০০৬ - দুবাইয়ের গভর্নর প্রদত্ত সম্মাননা
- ২০০৬ - মাদাম তুসোর মোমের জাদুঘরে স্থাপনা মুর্তি
ফিল্মফেয়ার পুরষ্কার
- ২০০৮ - শ্রেষ্ঠ অভিনেতা - চাক দে ইন্ডিয়া
- ২০০৪ - শ্রেষ্ঠ অভিনেতা - স্বদেশ
- ২০০২ - শ্রেষ্ঠ অভিনেতা - দেবদাস
- ২০০০ - শ্রেষ্ঠ অভিনেতা, সমালোচকদের রায়ে - মোহাব্বতে
- ১৯৯৮ - শ্রেষ্ঠ অভিনেতা - কুছ কুছ হোতা হ্যায়
- ১৯৯৭ - শ্রেষ্ঠ অভিনেতা - দিল তো পাগল হ্যায়
- ১৯৯৫ - শ্রেষ্ঠ অভিনেতা - দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে যায়েঙ্গে
- ১৯৯৪ - শ্রেষ্ঠ ভিলেন - আঞ্জাম
- ১৯৯৩ - শ্রেষ্ঠ অভিনেতা, সমালোচকদের রায়ে - কাভি হাঁ কাভি না
- ১৯৯৩ - শ্রেষ্ঠ অভিনেতা - বাজীগর
- ১৯৯২ - শ্রেষ্ঠ উদীয়মান অভিনেতা - দিওয়ানা
বিশেষ পুরষ্কার
- ২০০২ - ফিল্মফেয়ার বিশেষ পুরষ্কার সুইস কনস্যুলেট ট্রফি
- ২০০৩ - ফিল্মফেয়ার শক্তি পুরষ্কার (যৌথভাবে - অমিতাভ বচ্চনের সাথে)
- ২০০৪ - ফিল্মফেয়ার শক্তি পুরষ্কার
অন্যান্য চলচ্চিত্র পুরষ্কার
- স্টার স্ক্রীন অ্যাওয়ার্ডস - ৭
- ইন্টারন্যাশনাল ইন্ডিয়ান ফিল্ম অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ডস - ২
- জি সিনে পুরষ্কার - ৬
- বলিউড মুভি অ্যাওয়ার্ডস - ৪
- গ্লোবাল ইন্ডিয়ান ফিল্ম অ্যাওয়ার্ডস - ২
- রুপা সিনেগোয়ার পুরষ্কার - ১০
- সানসুই ভিউয়ার'স চয়েস মুভি পুরষ্কার - ৬
- আফজা পুরষ্কার - ২
- আশীর্বাদ পুরষ্কার - ১
- ডিজনি কিডস চ্যানেল পুরষ্কার - ১
- এম.টি.ভি. পুরষ্কার - ১
- স্পোর্টস ওয়ার্ল্ড পুরষ্কার - ১
- সাহারা ওয়ান সংগীত পুরষ্কার - ১ (আপুন বোলা গানের জন্য শ্রেষ্ঠ নায়ক ও গায়ক)
জাতীয় সম্মাননা
- ১৯৯৭ - শ্রেষ্ঠ ভারতীয় নাগরিক
- ২০০২ - রাজীব গান্ধী পুরষ্কার
- ২০০৫ - পদ্মশ্রী পুরষ্কার, ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ সরকারী সম্মান
- ২০০৭ - আওয়াদে আহমেদ ফারাহ
অন্যান্য
- ২০০১ - জেড ম্যাগাজিন (Jade Magazine) পুরষ্কার এশিয়ার সবচেয়ে যৌনাবেদনময়ী পুরুষ
- ২০০৪ - এশিয়ান গিল্ড (Asian Guild) পুরষ্কার বলিউডের যুগের শ্রেষ্ঠ তারকা
- ২০০৪ - পেপসি সবচেয়ে প্রিয় তারকা পুরষ্কার
- ২০০৪ - 'এফ-পুরষ্কার' ভারতীয় ফ্যাশন তারকা মডেল
- ২০০৪ - ছোট কা ফুন্ডা পুরষ্কার
- ২০০৪ - টাইম ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদ
- ২০০৪ - সবচেয়ে তেজ বছরের শ্রেষ্ঠ পারসোনালিটি
- ২০০৪ - এম.এস.এন. বছরের শ্রেষ্ঠ সার্চ পারসোনালিটি পুরষ্কার
- ২০০৫ - ন্যাশনাল জিওগ্রাফি ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদ
- ২০০৬ - "হামীর-ই-হিন্দ" খেতাব, "দেশভক্ত" সংবাদপত্র থেকে
টিভি ক্যারিয়ার
- দিল দরিয়া (১৯৮৭)
- ফৌজী (১৯৮৮) - অভিমন্যু রাই
- সার্কাস (১৯৮৯)
- In Which Annie Gives It Those Ones (১৯৮৯)
- দুসরা কেওয়াল
- ইডিয়ট (১৯৯১) - পবন রঘুজান
- কারিনা কারিনা (২০০৪) - বিশেষ উপস্থিতি
- কৌন বনেগা ক্রোড়পতি (২০০৭) - সঞ্চালক
- আন্তাক্ষরী দ্য গ্রেট চ্যালেঞ্জ (২০০৭) - বিশেষ অতিথি
- ক্যা আপ পাঁচবী পাস সে তেজ হ্যায়? (২০০৮) - সঞ্চালক
soruse : wikipedia techtunes
What's Your Reaction?






