কেএফসি মালিক এর জীবনী | Biography of the KFC owner

কেএফসি মালিক এর জীবনী | Biography of the KFC owner

May 17, 2025 - 20:59
May 25, 2025 - 11:42
 0  0
কেএফসি মালিক এর জীবনী  |  Biography of the KFC owner

বিশ্ববিখ্যাত ফাস্টফুড ব্র‍্যান্ড “কেএফসি”

এর লোগোর হাস্যোজ্জ্বল ষাটোর্ধ্ব যে মানুষটিকে দেখা যায়, তিনিই হলেন কর্ণেল স্যান্ডার্স। তার নাম না জানলেও তাকে চেনে না এমন মানুষ পৃথিবীতে খুবই কম আছে হয়তো। আপনি তাকে হাস্যোজ্জ্বল ভাবে দেখলেও তার এই পর্যন্ত আসার পথটা কিন্তু অনেক কঠিন ছিলো। অত্যন্ত কষ্টকর ছিলো তার অতীত জীবন। বলতে গেলে জীবনের বেশিরভাগ সময় তার কেটেছিলো নিদারুণ কষ্টে। কেন্টাকির এক পথের ধারের রেস্টুরেন্ট থেকে সারাবিশ্বে কীভাবে ছড়িয়ে পড়লো এই কেএফসি বা “কেন্টাকি ফ্রায়েড চিকেন” – চলুন সেই যাত্রায় আমরা একটু উঁকি দিয়ে আসি।

জন্ম ও বাল্যকাল

১৮৯০ সালের ৯ সেপ্টেম্বর আমেরিকার ইন্ডিয়ানার হেনরিভিলেতে জন্মগ্রহণ করেন হারল্যান্ড ডেভিড স্যান্ডার্স। জীবনের শুরুতে মাত্র ৫ বছর বয়সেই প্রথম দুর্ভোগে পড়েন তার বাবা উইলবার স্যান্ডার্স এর মৃত্যুতে। বাধ্য হয়ে তার মা কাজ নেন টমেটো ক্যানজাত করার ফ্যাক্টরীতে। এছাড়াও আশেপাশের পরিবারের জন্য সেলাইয়ের কাজও করতেন তিনি। এসকল কাজের ফলে অনেক সময়ই তার মাকে পরিবার থেকে এক দুইদিনের জন্য দূরে থাকতে হতো। সে সময় কর্ণেল স্যান্ডার্স তার ছোট আরো দুই ভাইবোনসহ বাড়ি দেখাশোনা করে রাখতো। যেহেতু তিনি ছিলেন সবার বড়। এ সময়েই মূলত তার রান্নার হাতেখড়ি হয়ে থাকে। আস্তে আস্তে তিনি রান্নায় পরিপক্ক হয়ে উঠতে থাকেন। মাত্র ১০ বছর বয়সে তিনি তার জীবনের প্রথম চাকরি শুরু করেন স্থানীয় একটি খামারে। ১২ বছর বয়সে, তার মা আবার বিয়ে করলে পরিবারসহ চলে যান ইন্ডিয়ানাপোলিসের বাইরের এক শহরতলীতে। তার সৎ বাবার সাথে খুব একটা মিল ছিল না, বরং প্রায়ই ঝগড়া বিবাদ লেগে থাকতো। অবশেষে ১৩ বছর বয়সে তিনি আবার ক্লার্ক কাউন্টিতে ফিরে যান যেখানে তারা আগে বসবাস করতেন। গ্রীনউড, ইন্ডিয়ানার বিভিন্ন স্থানে খামারের কাজ, পশুপাখি খাওয়ানোসহ টুকটাক কাজ করে মাসে ১০ থেকে ১৫ ডলার ইনকাম করতেন। এর মাঝে পড়াশোনা চালানোরও চেষ্টা করেছেন। কিন্তু ৬ষ্ঠ শ্রেণির পর তাকে লেখাপড়া ছেড়ে দিতে হয়। তিনি এ ব্যাপারে বলেন যে, “বীজগণিতের কারণে আমি আমার লেখাপড়া ছেড়েছিলাম”।

দু:খ আর সংগ্রামের জীবন

স্কুল ছাড়ার পরবর্তী ২৮ বছরে নানারকম ছোটখাটো চাকরি ও কাজের মাধ্যমে অতি কষ্টে জীবন চালিয়ে নিতে থাকেন। তার চাকরি ও ক্যারিয়ার জীবন ছিল অত্যন্ত অস্থিতিশীল। কিছুদিনের জন্য আমেরিকান আর্মিতেও কাজ করেন, যখন তাকে কিউবায় পাঠানো হয়। এছাড়াও রেইলরোডের ফায়ারম্যান, স্ট্রীটকার কন্ডাক্টার, ইন্স্যুরেন্স সেলসম্যান, সেক্রেটারি, টায়ার বিক্রেতা, ফেরিচালক, উকিল এমনকি মিডওয়াইফ (ধাত্রী) হিসেবেও কাজ করেছেন। যেকোনো চাকরি সামলানোর ক্ষেত্রে কর্ণেল স্যান্ডার্স এর খুব একটা যে দক্ষতা ছিলো না, তা একটু খেয়াল করলেই বোঝা যায়। এমনকি মামলা চলাকালীন নিজের ক্লায়েন্টের সাথেই হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ারও রেকর্ড তার আছে। ফেরির ব্যবসায় তার ভাগ্যটাও খারাপ হয় যখন কাছাকাছি একটি সেতু নির্মিত হয়, ফলে ব্যবসাটাও ছেড়ে দিতে হয়। এ সময় তিনি একদমই বেকার হয়ে পড়েন। তিনি যখন মধ্যবয়সে আসেন, তখন তিনি ধরেই নেন যে তার এই এত পরিশ্রমের সুষ্ঠু ফলাফল আর তিনি পাবেন না।

পারিবারিক দিকও ছিলো দু:খময়

স্যান্ডার্স এর পারিবারিক দিকেও নানারকম দু:খজনক ঘটনা ঘটছিলো। ১৯০৮ সালে তিনি বিয়ে করেন জোসেফাইন কিং নামের একজন মহিলাকে। তার তিন সন্তান- মার্গারেট, হারল্যান্ড জুনিয়র এবং মিলড্রেডের জন্ম হয়। কিন্তু কোনো সফল ক্যারিয়ার না থাকায়, আর্থিক দৈন্যদশায় পারিবারিক ঝামেলা, টানাপড়েন লেগেই থাকতো। জোসেফাইন তাকে অল্প সময়ের মধ্যে ছেড়ে যায়, সাথে নিয়ে যায় তিন সন্তানকে। তবে ১৯৪৭ সালে পাকাপোক্তভাবেই ডিভোর্স হয় তাদের।

পারিবারিক আরো একটি বড় বিপর্যয় নেমে আসে যখন মাত্র ২০ বছর বয়সে হারল্যান্ড জুনিয়র টনসেলেকটমির অপারেশনে, রক্তের বিষক্রিয়ায় মারা যায়। সে সময় এটি খুব স্বাভাবিক একটি ঘটনা ছিলো। তবে এ ঘটনায় স্যান্ডার্স অনেক বেশি কষ্ট পান। এবং এই ঘটনাটির জন্য তিনি অনেক সময়ই ডিপ্রেসনে থাকতেন। অনেকবার জীবনের পথে হেরে গিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টাও করেছেন। তবে সেখানেও যখন সফল হননি, তখন নতুনভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন। অবশেষে ১৯৪৯ সালে তিনি ক্লডিয়া লেডিংটন নামের একজন নারীকে বিয়ে করেন যার সাথে মৃত্যুর আগে পর্যন্ত ছিলেন।

সাফল্যের সোনালী রেখা

অবশেষে কেন্টাকির কর্বিন শহরে একটি গ্যাস স্টেশন চালানো শুরু করেন স্যান্ডার্স। এ সময়ে ক্লান্ত ও ক্ষুধার্ত ড্রাইভার, যাত্রীদের জন্য তিনি খাবার রান্না ও বিক্রি শুরু করেন। তার রান্না করা খাবারগুলো মূলত ছিল প্যানে ভাজা মুরগী, হ্যাম, ঢেড়স ও সিম ভাজা এবং গরম গরম বিস্কুট। এই খাবারগুলো তার রান্নার দক্ষতার জন্য কেন্টাকি অঞ্চলে বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। যদিও এটি সাফল্যের চূড়ান্ত পর্যায় ছিল না, তবে স্যান্ডার্স এর দু:খজনক জীবনে আশার আলো দেখানোর মত সাফল্য ছিলো৷ এ সময়ে স্যান্ডার্সের জীবনটা যদিও অনেক আহামরি ছিলো না, তবে স্বাচ্ছন্দ্যের একটি জীবন ছিলো। কয়েক বছর পর গ্যাস স্টেশন তুলে জীবনের প্রথম রেস্টুরেন্ট দেন এই জায়গায়।কর্ণেল স্যান্ডার্স 

এই সময়ে স্যান্ডার্স এই মুরগীর রেসিপিটি নিয়ে রীতিমতো নানারকম পরীক্ষা চালাচ্ছিলেন কীভাবে আরো সুস্বাদু করা যায়। তারপরে যে রেসিপিটি তিনি আবিষ্কার করেন, তা আজও অত্যন্ত গোপনীয়তার সাথে সংরক্ষিত আছে কর্তৃপক্ষের কাছে। ১৯৩৯ সালে তার এই সফলতায় আরেকটি পালক যুক্ত হয় যখন তিনি প্রেসার কুকারের মাধ্যমে এই রেসিপিটি তৈরীর পদ্ধতি আবিষ্কার করেন। এর ফলে অল্প সময়ে গুনগত মান ও স্বাদ ঠিক রেখে মুরগীটি তৈরী করা যেত। এ সময় তার রেস্তোরাটি বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠতে থাকে, এলাকা ছেড়ে বাইরের দিকেও এর সুনাম ছড়িয়ে পড়তে থাকে।

আবারও দুভার্গ্যের আঘাত

বহু কষ্টের পর পাওয়া এই সাফল্যের উপর আবারও দুর্ভাগ্য আঘাত হানে কর্ণেল স্যান্ডার্সের উপর। হঠাৎ করে স্যান্ডার্সের রেস্তোরার উল্টোদিকের হাইওয়ে জংশনটি সরিয়ে অন্য জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়। যার ফলে ব্যস্ত ট্রাফিক, লোকজন, গাড়ি এবং যাত্রীদের আনাগোনা কমে যায় আর স্যান্ডার্সের রেস্তোরার বিক্রিও কমে যায়। এতেই তার রেস্তোরা বন্ধের পথে চলে যায়, তার উপর আঘাত হানে আরো একটি দু:সংবাদ। ঘোষণা করা হয় ওই স্থানটি থেকে মাত্র ৭ মাইল দূরে ইন্টারস্টেট হাইওয়ে তৈরী করা হবে৷ ফলে এই আশেপাশের একালায় যে কোনো রকম স্থাপনাই থাকবে না সেটা নিশ্চিত। স্যান্ডার্স যখন বুঝলেন যে এখানে আর থাকা সম্ভব না, ১৯৫৬ সালে তিনি রেস্তোরাটি বিক্রির চেষ্টা করেন। এখানেও বিশাল লসে বিক্রি করতে হয়৷ আর ইনকামের পথও বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় তার সেভিংস আর সোশ্যাল সিকিউরিটির টাকা দিয়ে মাসে মাত্র ১০৫ ডলার পেতেন। স্যান্ডার্সের জীবনে আবার নেমে আসে দৈন্যদশা। খুব অল্প সময়ে জীবনে সাফল্যের ঝলক দেখেই আবার হারিয়ে ফেলেন এই মানুষটি।

নতুন করে শুরু করার প্রত্যয়
রান্নায় নিবেদিতপ্রাণ স্যান্ডার্স রেস্তোরা বন্ধের পর নতুন উপায় খুঁজতে থাকেন। এবার তিনি ব্যবসার জন্য একটি কৌশল আবিষ্কার করেন আর নতুনভাবে ব্যবসা করার চেষ্টা করেন। তিনি মূলত পুরো যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে ঘুরে বেড়াতে থাকেন এবং তার এই মুরগীর রেসিপি বিক্রি করবে এমন ফ্রাঞ্চাইজি রেস্টুরেন্ট খুঁজে খুঁজে বের করেন এবং প্রতিটি মুরগী বিক্রির বদলে ৪ সেন্ট করে অফার করতেন। পরবর্তীতে তিনি এটির দাম একটু বাড়িয়ে এক নিকল করে নিতেন। স্যান্ডার্সের এই অফারে সর্বপ্রথম যে ফ্রাঞ্চাইজি রেস্টুরেন্ট রাজি হয় তা ছিলো পিট হারম্যান এর, যিনি ছিলেন সল্ট লেক সিটির এবং স্যান্ডার্সের একজন বন্ধু। পিট লক্ষ্য করেন, স্যান্ডার্সের এই রেসিপি দিয়ে বানানো মুরগী বিক্রির কারণে তাদের বিক্রি আগের চেয়ে বেশি হচ্ছে।

তবে এই জার্নিটাও সহজ ছিলো না৷ বরং এটা ছিলো প্রচন্ড ক্লান্তির, কষ্টের এবং অনেক ক্ষেত্রে অপমানেরও। স্যান্ডার্স সারা যুক্তরাষ্ট্রে উপযুক্ত রেস্টুরেন্টের খোঁজে ঘুরে বেড়াতেন। কোনো রেস্টুরেন্ট পেলে সেটির মালিককে তার এই অফারটি দিতেন আর বলতেন যেন তাকে রেস্টুরেন্টের কর্মচারীদের জন্য এটি রান্না করতে দেয়া হয়। কর্মচারীরা এটি খেয়ে যদি সন্তুষ্ট হন তাহলে স্যান্ডার্স পরীক্ষামূলকভাবে কিছুদিনের জন্য কাস্টমারদের জন্য রান্না করে পরিবেশন করতেন। যদি জনসাধারণ খাবারটি খেয়ে সন্তুষ্ট হতো তাহলেই রেস্টুরেন্টটির সাথে চুক্তি হতো। এই সংগ্রামের সময়টিতে অনেক সময়ই স্যান্ডার্স এবং তার স্ত্রীকে দেখা যেত বাইরে গাড়িতে থাকতেন বসবাসের জন্য এবং বন্ধুদের থেকে খাবার চেয়ে খেতেন। তবে এই পদ্ধতিটি আস্তে আস্তে ফলপ্রসূ হয়৷ ১৯৬৩ সাল নাগাদ স্যান্ডার্স ৬০০ টিরও বেশি ফ্রাঞ্চাইজি রেস্টুরেন্টের সাথে কাজ করতে শুরু করেন এবং একটি মিলিয়ন ডলার কোম্পানি গঠন করে ফেলেন। যদিও তখন ঠিক “কেন্টাকি ফ্রায়েড চিকেন” নামের কোনো রেস্টুরেন্ট ছিল না, বিভিন্ন রেস্টুরেন্টগুলোই শুধু এই মুরগী সেল করতো।

কেএফসি’র যাত্রা

জীবনের পুরোটা সময় ধরে অত্যন্ত কষ্ট করে চলা স্যান্ডার্সের জীবনে অবশেষে ধরা দেয় সাফল্য। ১৯৬৩ সালে, ৬৬ বছর বয়সে স্যান্ডার্স এর ব্যবসা ছিলো কানাডা, যুক্তরাজ্য, মেক্সিকো, জ্যামাইকা সহ ৬০০ টিরও অধিক স্থানে। স্যান্ডার্স সিদ্ধান্ত নেন ব্যবসাটি হাতবদল করার। ১৯৬৪ সালে তিনি ২ মিলিয়ন ডলারে ব্যবসাটি বিনিয়োগকারীদের হাতে দেন যারা ২ বছর পর ব্যবসাটিকে পাকাপোক্তভাবে প্রকাশ করে। নির্দিষ্ট ভাবে তৈরী হয় “কেন্টাকি ফ্রায়েড চিকেন” সংক্ষেপে “কে এফ সি”। ১৯৭০ সাল নাগাদ কেএফসি’র ৪৮ টি দেশে প্রায় ৩০০০ এর মত রেস্তোরা ছিলো। বর্তমানে কেএফসি’র ১১৮ টি দেশে প্রায় ২০,০০০ এরও বেশি আউটলেট রয়েছে। বর্তমানে এই প্রতিষ্ঠানে প্রায় ৮২০,০০০ কর্মী কাজ করে। ২০২১ সালে কেএফসি’র বার্ষিক আয় ছিলো ৬.৬ বিলিয়ন ডলার।

হাল না ছেড়ে সংগ্রাম চালিয়ে গেলে জীবনে সাফল্য আসবেই- ঠিক এটাই আমরা কর্ণেল স্যান্ডার্স এর জীবন থেকে দেখতে পাই। স্যান্ডার্স ১৯৮০ সালে ৯০ বছর বয়সে মারা যান। বলা যায় জীবনের দুই তৃতীয়াংশ সময় সংগ্রাম করার পর তিনি এতটাই সফল হন যে পৃথিবীর সমস্ত কোণায় কোণায় ছড়িয়ে যায় তার নাম। তার নাম না জানলেও তাকে চেনে না এমন মানুষও খুবই কম এই পৃথিবীর বুকে। তার সাফল্যের পেছনে ছিলো তার হার না মানা, শত বাঁধার পরও নতুন করে আবার চেষ্টা করা। কর্ণেল উপাধি পাওয়া এই মানুষটির কথাগুলোই তা প্রমাণ করে- “মনে রাখবেন, প্রতিটি ব্যর্থতা আরো ভালো কিছুর জন্য একটি এগিয়ে যাওয়ার ধাপ হতে পারে।”

স্যান্ডার্স তার কাজের প্রতি কতটা নিবেদিত ছিলেন তা তার এই স্টেটমেন্ট থেকে বোঝা যায়- “আমার মাত্র দুটি নিয়ম ছিলো- আপনি যতটা পারেন তার সবটা করুন এবং আপনার শেষ পর্যন্ত চেষ্টা করুন।“

এই চরম সংগ্রামী মানুষটার জীবন আমাদেরকে ব্যর্থ হলে থেমে না যাওয়া শেখায়, শেখায় নিজের কাজের প্রতি নিবেদিত হতে। এই মানুষটির জীবনে তাকালে আমরা বুঝতে পারি যে সাফল্য তখনই ধরা দেয় যখন আপনি হতাশ না হয়ে লেগে থাকেন এবং নিজের সবটা দিয়ে চেষ্টা করেন। তাই জীবনে যখনই ব্যর্থতার জন্য হতাশ হবেন, কর্ণেল স্যান্ডার্সের জীবনের দিকে একবার তাকিয়ে দেখবেন।

ভারতে জিঙ্গার চিকেন বার্গার

১৯৮৯ সালের আগস্টে, ক্র্যানর মার্কিন ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলির জন্য বিদ্যমান ১৯৭৬ সালের চুক্তিতে সংশোধনী প্রস্তাব করেন: পেপসিকো দুর্বল ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলি দখল করতে পারে, বিদ্যমান রেস্তোরাঁগুলিকে নতুন আউটলেটগুলির প্রতিযোগিতা থেকে সুরক্ষিত রাখা হবে না এবং পেপসিকোর রয়্যালটি ফি বৃদ্ধির অধিকার থাকবে । চুক্তিটি ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলির মধ্যে বিতর্কিত প্রমাণিত হয়েছিল, যারা একটি মামলার মুখোমুখি হয়েছিল এবং ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত সমস্যাটির সমাধান হয়নি।  পেপসিকোর বিরুদ্ধে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলির প্রতি কর্তৃত্বপূর্ণ আচরণ করার অভিযোগ আনা হয়েছিল, যারা তাদের বিশ্বাস ছিল যে ফার্মের বৃদ্ধিকে আটকে রাখছে, যখন ফ্র্যাঞ্চাইজিরা বিশ্বাস করেছিল যে তারা উদাসীন কর্পোরেট মালিকদের উত্তরাধিকারের সময় কোম্পানির মেরুদণ্ড ছিল। 

বিশ্বব্যাপী কোম্পানির কার্যক্রম পুনর্গঠনে ক্র্যানর ৪২ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছে। তিনি আউটলেটগুলি সংস্কারের জন্য অতিরিক্ত ৫০ মিলিয়ন ডলার এবং আউটলেট ক্যাশ রেজিস্টারগুলিকে রান্নাঘর, ড্রাইভ-থ্রু উইন্ডো, ম্যানেজারের অফিস এবং কোম্পানির সদর দপ্তরের সাথে সংযুক্ত করার জন্য একটি নতুন কম্পিউটার সিস্টেমে ২০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছেন ওহাইওর ডেটনে জেনারেল মোটরস অ্যাসেম্বলি প্ল্যান্টে ১৫০ বর্গফুট সীমিত মেনু কিয়স্ক দিয়ে শুরু করে ক্র্যানর অপ্রচলিত স্থানেও চেইনটি সম্প্রসারিত করেছিলেন ।

১৯৮৬ থেকে ১৯৯১ সালের মধ্যে, চেইনটি আরও ২০০০ আউটলেট তৈরি করে এর মোট সংখ্যা ৮,৫০০-এ নিয়ে যায় এবং বিক্রয় ৩.৫ ডলার থেকে বেড়ে ৬.২ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়।  আমেরিকানরা ক্রমবর্ধমান স্বাস্থ্য সচেতন হয়ে ওঠার সাথে সাথে চেইনটিকে গ্রিলড চিকেনের উত্থানের সাথে লড়াই করতে হয়েছিল।  কেএফসি ক্রমবর্ধমান এল পোলো লোকো রেস্তোরাঁ চেইনের সাথে প্রতিযোগিতা করতে শুরু করে, সেই সাথে বার্গার কিং , যারা সবেমাত্র বিকে ব্রয়লার , একটি গ্রিলড চিকেন বার্গার চালু করেছিল।  পণ্য উন্নয়নে বিলম্ব, সংকীর্ণ রান্নাঘর এবং চলমান ফ্র্যাঞ্চাইজি চুক্তি বিরোধের কারণে চেইনটি নিজস্ব একটি গ্রিলড পণ্য তৈরি করতে পারেনি। 

১৯৯১ সালের মার্চ মাসে আনুষ্ঠানিকভাবে কেএফসি নামটি গৃহীত হয়, যদিও চেইনটি ইতিমধ্যেই সেই প্রাথমিকতার দ্বারা ব্যাপকভাবে পরিচিত ছিল ।  পরিবর্তনটি শেচটার গ্রুপ ব্র্যান্ড পরামর্শ সংস্থা দ্বারা পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। গবেষণায় দেখা গেছে যে ৮০ শতাংশ গ্রাহক ইতিমধ্যেই "কেএফসি" প্রাথমিকের সাথে কেন্টাকি ফ্রাইড চিকেনের সম্পর্ক স্থাপন করেছেন।  চেইনের একজন মুখপাত্র বলেছেন যে এটি তার বৈচিত্র্যময় মেনুকে প্রতিনিধিত্ব করে, যা শুধুমাত্র ভাজা পণ্য থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। কেএফসি ইউএস-এর সভাপতি কাইল ক্রেগ স্বীকার করেছেন যে এই পরিবর্তনটি চেইনটিকে "ভাজা" এর অস্বাস্থ্যকর অর্থ থেকে দূরে রাখার একটি প্রচেষ্টা ছিল।  ১৯৯৪ সালে, মিলফোর্ড প্রিউইট ন্যাশনস রেস্তোরাঁ নিউজে "চতুর এবং সময়োপযোগী পুনঃস্থাপন" এর প্রশংসা করেছিলেন ।  অন্যদিকে, ২০০৫ সালে অ্যাডভার্টাইজিং এজ-এর একটি সম্পাদকীয়তে বলা হয়েছিল, "এই চেইনের একটি সম্মানিত নাম ত্যাগ করা - এবং ফ্রাইড শব্দটি থেকে দূরে থাকা - অকল্পনীয় এবং ক্ষতিকারক ছিল। এটি একটি স্পষ্ট ব্র্যান্ডকে অস্পষ্ট করে তুলেছিল।" 


১৯৯০-এর দশকের গোড়ার দিকে, চেইন জুড়ে সফল প্রধান পণ্য বাজারে আসে, যার মধ্যে রয়েছে মশলাদার "হট উইংস" (১৯৯০ সালে চালু), পপকর্ন চিকেন (১৯৯২), এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে, "জিঙ্গার", একটি মশলাদার চিকেন ফিলেট বার্গার (১৯৯৩)।  ১৯৯৩ সালে, "কর্নেল'স রোটিসেরি গোল্ড" নামে রোটিসেরি স্টাইলের মুরগি ৩০ শতাংশেরও বেশি মার্কিন আউটলেটে চালু করা হয়েছিল।  তবে, বিপণনে ১০০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ সত্ত্বেও, পণ্যটি বিক্রয় আকর্ষণ অর্জন করতে ব্যর্থ হয়েছিল। স্বাস্থ্য-সচেতন গ্রাহকদের কাছে আবেদন করার জন্য ডিজাইন করা চামড়াবিহীন মুরগির বাজারে আনা ব্যর্থ হয়েছিল; গ্রাহকরা অপরিচিত টেক্সচার অপছন্দ করেছিলেন এবং পণ্যটির ফলে অতিরিক্ত ব্যয় বৃদ্ধি পায় , যা ১৯৯১ সালে পরিচালন মুনাফায় ৩৭ শতাংশ হ্রাস পায়। 

১৯৯১ সালের জুন মাসে, সিঙ্গাপুরকে প্রথমবারের মতো কেএফসি-র প্রাতঃরাশের মেনু চালু করার জন্য বেছে নেওয়া হয়েছিল।  পণ্যগুলির মধ্যে ছিল মুরগির মাংস, অমলেট এবং স্ক্র্যাম্বলড ডিম, যা "কর্নেল'স কান্ট্রি ব্রেকফাস্ট" ব্যানারে বিক্রি হত।  সিঙ্গাপুরকে সেই দেশে প্রাতঃরাশের বাজারের বৃদ্ধির কারণে এই উদ্বোধনের জন্য বেছে নেওয়া হয়েছিল।

মার্কিন বিভাগ যখন লড়াই করছিল, তখন পেপসিকোর রেস্তোরাঁ বিভাগের সবচেয়ে দুর্বল অংশ হয়ে উঠছিল, অন্যত্র বিক্রি বৃদ্ধি পেয়েছিল, বিশেষ করে জাপানে।  1992 সালের মধ্যে, কোম্পানির টার্নওভারের প্রায় অর্ধেকই এসেছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে থেকে।  1993 সালের মধ্যে, এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলে KFC সমস্ত KFC বিক্রয়ের 22 শতাংশের জন্য দায়ী ছিল।  জন ক্র্যানর ঘোষণা করেছিলেন, "আমরা এশিয়ায় প্রবৃদ্ধির জন্য প্রায় সীমাহীন সুযোগের দিকে তাকিয়ে আছি"।  1993 সালের মধ্যে, KFC দক্ষিণ কোরিয়া, চীন, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া এবং ইন্দোনেশিয়ায় শীর্ষস্থানীয় পশ্চিমা ফাস্ট ফুড চেইন ছিল এবং জাপান এবং সিঙ্গাপুর সহ বেশিরভাগ অন্যান্য এশিয়ান বাজারে ম্যাকডোনাল্ডসের পরে দ্বিতীয় স্থানে ছিল। স্থানীয় ব্যবস্থাপনা লুইসভিল সদর দপ্তরের আদেশ উপেক্ষা করার সময় বিদেশী কার্যক্রম প্রায়শই সমৃদ্ধ হয়েছিল। 

ডেভিড নোভাক রাষ্ট্রপতি নিযুক্ত

১৯৯৪ সাল নাগাদ, বিশ্বব্যাপী কেএফসির মোট ৯,৪০৭টি আউটলেট ছিল, যার মধ্যে ৫,১৪৯টি আউটলেট ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এবং ১,০০,০০০ এরও বেশি কর্মচারী ছিল। সেই বছর, ম্যাকডোনাল্ডসের মতো প্রতিযোগীরা ভ্যালু মেনু অফার চালু করার পর চেইনটি লড়াই করতে শুরু করে। ত্রৈমাসিক আয়ের হতাশাজনক সেটের পরে, ক্র্যানর ১৯৯৪ সালের জানুয়ারিতে কোম্পানি ছেড়ে চলে যান।  তার পরিপ্রেক্ষিতে, মার্কেটিং ব্যাকগ্রাউন্ডের দুই নির্বাহীকে কোম্পানিটি পুনরুজ্জীবিত করার জন্য অভিযুক্ত করা হয়। রজার এনরিকোকে পেপসিকো ওয়ার্ল্ডওয়াইড রেস্তোরাঁর চেয়ারম্যান হিসেবে নিযুক্ত করা হয় এবং ডেভিড সি. নোভাককে কেএফসি উত্তর আমেরিকার প্রেসিডেন্ট/সিইও নিযুক্ত করা হয়।

১৯৯৫ সালে, নোভাক দুটি সফল নতুন পণ্য চালু করেন - ক্রিস্পি স্ট্রিপস (মুরগির রুটিযুক্ত স্ট্রিপ) এবং চিকেন পট পাই - প্রায় দুই বছরের মধ্যে চেইনের প্রথম প্রধান নতুন পণ্য।  নোভাক দুটি নতুন পণ্য প্রবর্তনের জন্য ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলির সাথে উন্নত, আরও "উন্মুক্ত" সম্পর্কের কৃতিত্ব দেন: ক্রিস্পি স্ট্রিপস একটি আরকানসাস ফ্র্যাঞ্চাইজি দ্বারা উদ্ভাবিত হয়েছিল এবং ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলির পাশাপাশি পট পাইও একইভাবে বিকশিত হয়েছিল।  ইতিমধ্যে, কর্ন মাফিনের মতো কম জনপ্রিয় আইটেমগুলি মেনু থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। একই সময়ে, এনরিকো কেএফসি এবং তার সহযোগী সংস্থাগুলি, টাকো বেল এবং পিৎজা হাটের মধ্যে ক্রমবর্ধমান প্রতিযোগিতা কমিয়ে আনে; টাকো বেল নিজস্ব মুরগির পণ্য সরবরাহ শুরু করেছিল এবং কেএফসি তার বিপণনে পিৎজা হাটকে আক্রমণ করেছিল।

১৯৯৬ সালে কোম্পানিটি তার ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলির সাথে তার সম্পর্ক পুনরুদ্ধার করে, পাঁচ বছর আগে চেয়ারম্যান জন ক্র্যানর কর্তৃক প্রস্তাবিত সবচেয়ে বিতর্কিত চুক্তির শর্তাবলী অবিলম্বে বাতিল কর। ১৯৭৬ সালের চুক্তিটি পুনরুদ্ধার করা হয়, যার মধ্যে ১.৫ মাইল আউটলেট এক্সক্লুসিভিটি জোন অন্তর্ভুক্ত ছিল, যখন মূল কোম্পানি জাতীয় বিজ্ঞাপনের উপর আরও বেশি নিয়ন্ত্রণ অর্জন করে। নোভাক কর্নেলের রোটিসেরি গোল্ড চিকেনও বাতিল করে দেন এবং টেন্ডার রোস্ট নামে একটি নতুন নন-ফ্রাইড চিকেন চালু করেন।  টেন্ডার রোস্ট ফ্রাইড চিকেনের মতো টুকরো টুকরো পরিবেশন করা হত, রোটিসেরি পণ্যের বিপরীতে, যা কোয়ার্টার, হাফ বা পুরো মুরগির অংশে বিক্রি হত। পরবর্তীতে, নোভাক কেএফসি উত্তর আমেরিকায় টানা দশটি আর্থিক প্রান্তিকের প্রবৃদ্ধি তত্ত্বাবধান করেন।  কেএফসি উত্তর আমেরিকায় তার সাফল্যের ফলে, নোভাক ১৯৯৬ সালে সমগ্র কেএফসি সংস্থার সভাপতি এবং সিইও হন।

ট্রাইকন (পরে ইয়াম! ব্র্যান্ডস) হিসেবে স্পিন-অফ

২০০৭ সালে মিশিগানে একটি কেএফসির বাইরে বিক্ষোভকারীরা
১৯৯৭ সালের আগস্টে, পেপসিকো তার খারাপ পারফর্মিং রেস্তোরাঁ বিভাগকে ৪.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (২০১৩ সালে প্রায় ৬.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার) মূল্যের একটি পাবলিক কোম্পানি হিসেবে আলাদা করে।  যদিও কেএফসি ভালো ব্যবসা করছিল, পিৎজা হাট এবং টাকো বেল তাদের পারফর্মিং দক্ষতা কম ছিল। পেপসিকোর একজন নির্বাহী স্বীকার করেছেন, "রেস্তোরাঁগুলি আমাদের পছন্দের ছিল না "।  ট্রাইকন গ্লোবাল রেস্তোরাঁ নামে নতুন কোম্পানিটির তখন ৩০,০০০ আউটলেট ছিল এবং বার্ষিক বিক্রয় ছিল ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (২০১৩ সালে প্রায় ১৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার), যা বিশ্বব্যাপী বিক্রয়ের ক্ষেত্রে ম্যাকডোনাল্ডসের পরেই দ্বিতীয় স্থানে ছিল।

তৃতীয় সহস্রাব্দের শুরু থেকেই, ফাস্ট ফুডের প্রাণী কল্যাণ রেকর্ড, স্থূলতার সাথে এর সংযোগ এবং পরিবেশগত প্রভাবের জন্য সমালোচিত হয়েছে। এরিক শ্লোসারের বই ফাস্ট ফুড নেশন (2002) এবং মরগান স্পারলকের চলচ্চিত্র সুপার সাইজ মি (2004) এই উদ্বেগগুলিকে প্রতিফলিত করে। ২০০৩ সাল থেকে, পিপল ফর দ্য এথিক্যাল ট্রিটমেন্ট অফ অ্যানিম্যালস (PETA) কেনটাকি ফ্রাইড ক্রুয়েল্টি প্রচারণার মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী KFC-এর পোল্ট্রি সরবরাহকারীদের পছন্দের প্রতিবাদ করেছে । PETA হাজার হাজার বিক্ষোভ করেছে,

কখনও কখনও KFC-এর নির্বাহীদের নিজ শহরে, এবং সিইও ডেভিড নোভাককে একজন প্রতিবাদকারী নকল রক্তে ভেজায়। KFC-এর সভাপতি গ্রেগ ডেড্রিক বলেছেন যে PETA KFC-কে মুরগির ক্রেতা হিসেবে নয় বরং পোল্ট্রি উৎপাদনকারী হিসেবে ভুলভাবে চিহ্নিত করেছে।   ২০০৮ সালে, ইয়াম! বলেছেন: "খাদ্য পণ্যের একজন প্রধান ক্রেতা হিসেবে, [ইয়াম!] আমাদের সরবরাহ করা প্রাণীদের সাথে কীভাবে আচরণ করা হয় তা প্রভাবিত করার সুযোগ এবং দায়িত্ব রয়েছে। আমরা সেই দায়িত্বটি অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে নিই এবং আমরা আমাদের সরবরাহকারীদের উপর ক্রমাগত নজর রাখছি।"


ডাবল ডাউন স্যান্ডউইচ ২০১০ সালে চালু হয়েছিল।
২০০২ সালের মে মাসে ট্রাইকনের নাম পরিবর্তন করে ইয়াম! ব্র্যান্ড রাখা হয়। সেই বছর, চেইনটিকে বার্গার কিং-এর চিকেন হুপার এবং ডোমিনো'স এবং পাপা জন'স পিৎজা চেইনের ফ্রাইড চিকেন অফারগুলির সাথে লড়াই করতে হয়েছিল । তিন মাসের মধ্যে, চিকেন হুপার বার্গার কিং-এর সর্বকালের সবচেয়ে সফল লঞ্চ হয়ে ওঠে, যার বিক্রি ছিল 50 মিলিয়ন। ২০০২ সালের সেপ্টেম্বরে, কেএফসির বিক্রি আগের বছরের তুলনায় ১০ শতাংশ কমে যায়। ২০০২ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত, কেএফসি তিন বছরের দুর্বল বিক্রয়ের সম্মুখীন হয়, যখন পণ্য উন্নয়নে কম বিনিয়োগের ফলে ব্র্যান্ডটি "ক্লান্ত এবং খারাপ অবস্থানে" পড়ে যায়, একটি স্বাধীন পরামর্শদাতা রেস্তোরাঁ রিসার্চ অনুসারে।  ২০০৪ সালে চালু হওয়া একটি রোস্ট চিকেন পণ্য লাইন ব্যর্থ প্রমাণিত হয় এবং ২০০৫ সালের বিশ্বব্যাপী এভিয়ান ফ্লু আতঙ্ক সাময়িকভাবে ৪০ শতাংশের মতো বিক্রি হ্রাস করে। ২০০৫ সালের মার্চ মাসে কেএফসি "স্ন্যাকার" নামে একটি সস্তা, ছোট মুরগির বার্গার মেনুতে যুক্ত করে সাড়া দেয়। এটি এখন পর্যন্ত চেইনের সবচেয়ে সফল পণ্যগুলির মধ্যে একটি হিসাবে প্রমাণিত হয়, যার বিক্রি ১০০ মিলিয়নেরও বেশি।  আন্তর্জাতিক বাজারে, কেএফসি "বক্সমাস্টার" চালু করে, যা একটি বাক্সে খাবারের আকারের মোড়ক। কেএফসি মার্কিন ব্র্যান্ড ইমেজের একটি পরিবর্তনও শুরু করে, কিছু আউটলেটে "কেনটাকি ফ্রাইড চিকেন" নামটি ফিরিয়ে আনে এবং কর্নেল স্যান্ডার্সের প্রতিকৃতিগুলিকে বিশিষ্টতা দেয়। 


২০০৯ সালে, কেএফসি ইন্টারন্যাশনাল ক্রুশার (কিছু বাজারে ক্রুশেম) হিমায়িত পানীয়ের লাইন চালু করে। এই পণ্যটি ছিল কেএফসি-তে খাবারের মধ্যে একটি নাস্তা প্রবর্তনের একটি প্রচেষ্টা, এবং কিশোর-কিশোরীদের জন্য বাজারজাত করা হয়েছিল এপ্রিল ২০১০ সালে, ডাবল ডাউন স্যান্ডউইচ চালু করা হয়েছিল। একটি অস্বাস্থ্যকর পণ্য হিসেবে সমালোচিত হয়ে, এতে প্রচলিত রুটির বানের পরিবর্তে দুটি টুকরো ভাজা মুরগি ছিল। এটি কোম্পানির জন্য একটি সাফল্য হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে, মার্চ ২০১১ থেকে মার্চ ২০১৩ এর মধ্যে বিশ্বব্যাপী ১৫ মিলিয়ন ডাবল ডাউন বিক্রি হয়েছে।  সেপ্টেম্বর ২০১২ সালে, চিকেন লিটল স্যান্ডউইচ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে আসে। ২০১৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত, বিশ্বের ১১৮টি দেশ ও অঞ্চলে ১৮,৮৭৫টি KFC আউটলেট ছিল। ম্যাকডোনাল্ডসের পরে বিক্রয়ের দিক থেকে KFC বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম রেস্তোরাঁ চেইন । ২০১৪ সালের এপ্রিলে, ইয়াম! ঘোষণা করে যে চীনে প্রথম প্রান্তিকে কেএফসি বিক্রি ১১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, ২০১৩ সালে ১৫ শতাংশ হ্রাসের পর। 

২০১৪ সালের জুলাই মাসে, চীনা কর্তৃপক্ষ OSI গ্রুপের সাংহাই কার্যক্রম বন্ধ করে দেয় , কারণ অভিযোগ ছিল যে তারা KFC-তে মেয়াদোত্তীর্ণ মাংস সরবরাহ করেছে।  ইয়াম! তাৎক্ষণিকভাবে সরবরাহকারীর সাথে তাদের চুক্তি বাতিল করে এবং বলে যে এই প্রকাশের ফলে বিক্রয় উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে।

What's Your Reaction?

Like Like 0
Dislike Dislike 0
Love Love 0
Funny Funny 0
Angry Angry 0
Sad Sad 0
Wow Wow 0