এএটিএম শামসুজ্জামান এর জীবনী | Biography of A. T. M. Shamsuzzaman
এএটিএম শামসুজ্জামান এর জীবনী | Biography of A. T. M. Shamsuzzaman

পরিপূর্ণ শিল্পী এটিএম শামসুজ্জামান
জন্ম |
আবু তাহের মোহাম্মদ শামসুজ্জামান
১০ সেপ্টেম্বর ১৯৪১[১] নোয়াখালী, বাংলাদেশ
|
---|---|
মৃত্যু |
২০ ফেব্রুয়ারি ২০২১ (বয়স ৭৯)[২] |
জাতীয়তা |
বাংলাদেশী |
নাগরিকত্ব |
বাংলাদেশী |
মাতৃশিক্ষায়তন |
জগন্নাথ কলেজ |
পেশা |
অভিনেতা, পরিচালক, লেখক |
কর্মজীবন |
১৯৬১-২০১৯ |
দাম্পত্য সঙ্গী |
রুনী জামান |
সন্তান |
৬ |
পুরস্কার |
একুশে পদক, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (৬ বার) |
আবু তাহের মোহাম্মদ শামসুজ্জামান
(সংক্ষেপে এটিএম শামসুজ্জামান হিসেবে অধিক পরিচিত; ১০ সেপ্টেম্বর ১৯৪১ - ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২১) ছিলেন একজন বাংলাদেশী অভিনেতা, পরিচালক ও লেখক। অভিনয়ের জন্য আজীবন সম্মাননাসহ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন ছয় বার, তন্মধ্যে দায়ী কে? (১৯৮৭) চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে; ম্যাডাম ফুলি (১৯৯৯), চুড়িওয়ালা (২০০১) ও মন বসে না পড়ার টেবিলে (২০০৯) চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ কৌতুক অভিনেতা বিভাগে; এবং চোরাবালি (২০১২) চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেতা বিভাগে পুরস্কৃত হন। এছাড়া ৪২তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার আয়োজনে তিনি আজীবন সম্মাননায় ভূষিত হয়েছিলেন। শিল্পকলায় অবদানের জন্য ২০১৫ সালে তিনি বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মাননা একুশে পদকে ভূষিত হন।
প্রারম্ভিক জীবন
এটিএম শামসুজ্জামান ১৯৪১ সালের ১০ সেপ্টেম্বর নোয়াখালীর দৌলতপুরে নানাবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি লক্ষীপুর জেলার ভোলাকোটের বড় বাড়ি আর ঢাকায় থাকতেন দেবেন্দ্রনাথ দাস লেনে। তার পিতা নূরুজ্জামান ছিলেন নামকরা উকিল এবং শেরে বাংলা একে ফজলুল হকের সঙ্গে রাজনীতি করতেন। মাতা নুরুন্নেসা বেগম। পাঁচ ভাই ও তিন বোনের মধ্যে শামসুজ্জামান ছিলেন সবার বড়।
তিনি ঢাকার পগোজ স্কুল, কলেজিয়েট স্কুল, রাজশাহীর লোকনাথ হাই স্কুলে পড়াশোনা করেছিলেন। পগোজ স্কুলে তার বন্ধু ছিলেন আরেক অভিনেতা প্রবীর মিত্র। তিনি ময়মনসিংহ সিটি কলেজিয়েট হাই স্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন পাস করেন। তারপর জগন্নাথ কলেজে ভর্তি হন।
চলচ্চিত্র জীবন
চলচ্চিত্র পরিচালনা : ১৯৬১ সালে পরিচালক উদয়ন চৌধুরীর ‘বিষকন্যা’ চলচ্চিত্রে সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ শুরু করেন। এরপর তিনি খান আতাউর রহমান, কাজী জহির, সুভাষ দত্তের মতো বিখ্যাত পরিচালকদের সহকারী হিসেবে কাজ করেছেন। ২০০৯ সালে ‘এবাদত’ নামের প্রথম সিনেমা পরিচালনা করেন এটিএম শামসুজ্জামান।
অভিনয় জীবন : এটিএম শামসুজ্জামানের অভিনয় জীবন শুরু হয়েছিল কৌতুক অভিনেতা হিসেবে। সে সময় তিনি বেশ কয়েকটি সিনেমায় কৌতুকাভিনেতার ভূমিকায় অভিনয় করেছেন। এই চরিত্রে তার অভিনীত সিনেমাগুলোর মধ্যে রয়েছে- ‘জলছবি’, ‘যাদুর বাঁশি’, ‘রামের সুমতি’, ‘ম্যাডাম ফুলি’, ‘চুড়িওয়ালা’ ইত্যাদি।
খল চরিত্রে প্রথম সিনেমা ‘নয়নমণি’। নেতিবাচক ভূমিকায় এটিএম যেসব সিনেমায় অভিনয় করেছেন, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- ‘অনন্ত প্রেম’, ‘দোলনা’, ‘অচেনা’, ‘মোল্লা বাড়ির বউ’, ‘হাজার বছর ধরে’ ও ‘চোরাবালি’।
এটিএম শামসুজ্জামানের চলচ্চিত্র পর্দায় আগমন ১৯৬৫ সালে। তাঁর অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র নয়া জিন্দগানী। চলচ্চিত্রটি মুক্তি পায়নি। ১৯৬৮ সালে নারায়ণ ঘোষ মিতার এতটুকু আশা চলচ্চিত্রে তাঁকে খবরের কাগজ বিক্রেতা চরিত্রে প্রথমবারের মত পর্দায় দেখা যায়। এরপর তিনি সুয়োরাণী দুয়োরাণী (১৯৬৮), মলুয়া (১৯৬৯), বড় বউ (১৯৭০) চলচ্চিত্রে ছোট চরিত্রে অভিনয় করেন। তিনি মলুয়া চলচ্চিত্রের সংলাপও রচনা করেন। তিনি প্রথম কাহিনী ও চিত্রনাট্য লিখেছেন জলছবি (১৯৭১) চলচ্চিত্রের জন্য। ছবির পরিচালক ছিলেন নারায়ণ ঘোষ মিতা এবং এই ছবির মাধ্যমেই অভিনেতা ফারুকের চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের পটভূমিতে নির্মিত প্রথম চলচ্চিত্র ওরা ১১ জন (১৯৭২) চলচ্চিত্রে এবং জীবনীমূলক লালন ফকির (১৯৭২) চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। দ্বিতীয় চলচ্চিত্রে অভিনয় করে তিনি ১ম বাচসাস পুরস্কারে অভিনয়ের জন্য একটি বিশেষ পুরস্কার অর্জন করেন। ১৯৭৫ সালে নারায়ণ ঘোষ মিতার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার বিজয়ী লাঠিয়াল চলচ্চিত্রে তিনি খল চরিত্রে অভিনয় করেন। তিনি ১৯৭৬ সালে চলচ্চিত্রকার আমজাদ হোসেনের নয়নমণি চলচ্চিত্রে খলনায়কের চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে আলোচনায় আসেন। এছাড়াও খল চরিত্রে তাঁর কিছু উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র হল - অশিক্ষিত, গোলাপী এখন ট্রেনে, পদ্মা মেঘনা যমুনা, স্বপ্নের নায়ক।
এটিএম শামসুজ্জামান অভিনীত সিনেমার তালিকাটা দীর্ঘ। সেই তালিকায় সফল সিনেমার সংখ্যাই বেশি। তার মধ্যে রয়েছে—‘বড় বউ’, ‘ওরা ১১ জন’, ‘লাঠিয়াল’, ‘নয়নমনি’, ‘অশিক্ষিত’, ‘সূর্য দীঘল বাড়ি’, ‘ছুটির ঘণ্টা’, ‘লাল কাজল’, ‘দায়ী কে?’, ‘রাজলক্ষ্মী শ্রীকান্ত’, ‘স্বপ্নের নায়ক’, ‘শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ’, ‘আমার স্বপ্ন তুমি’, ‘দাদীমা’, ‘ডাক্তার বাড়ি’, ‘চাঁদের মতো বউ’, ‘গেরিলা’, ‘লাল টিপ’ ইত্যাদি।
চলচ্চিত্রে এটিএম শামসুজ্জামানের প্রাপ্তি অনেক। শ্রেষ্ঠ কৌতুক অভিনেতা হিসেবে তিনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন তিনবার, শ্রেষ্ঠ অভিনেতা হিসেবে একবার, শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব চরিত্রে একবার এবং আজীবন সম্মাননা হিসেবে একবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন তিনি। এছাড়া, ২০১৫ সালে শিল্পকলায় অসামান্য অবদান রাখায় রাষ্ট্রীয় সম্মান একুশে পদক লাভ করেন এই গুণী অভিনেতা।
টিভি নাটকেও এটিএম শামসুজ্জামানের অবস্থান প্রথম দিকে। দীর্ঘদিন তিনি সিনেমার পাশাপাশি নাটক, টেলিফিল্মে অভিনয় করেছেন। তার অভিনীত শত শত নাটক রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে—‘রঙের মানুষ’, ‘ভবের হাট’, ‘শিলবাড়ি’, ‘ঘর কুটুম’, ‘বউ চুরি’, ‘নোয়াশাল’, ‘শতবর্ষে দাদাজান’, ‘সেরা কিপ্টুস’, ‘নাপিত’, ‘গরু চোর’, ‘মুরুব্বি জামাই’, ‘আমার বউ বেশি বুঝে’, ‘পিতা পুত্র’, ‘সিন্দুকনামা’, ‘ওস্তাদজি’, ‘আক্কেল আলীর নির্বাচন’, ‘ইলু ইলু’, ‘শোধবোধ’, ‘এই যে দুনিয়া’, ‘তরিক আলী হাডারি’ ইত্যাদি।
তিনি কৌতুক অভিনেতা হিসেবে যাদুর বাঁশি, রামের সুমতি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। ১৯৮৭ সালে তাঁর নিজের লেখা কাহিনিতে আফতাব খান টুলুর দায়ী কে? চলচ্চিত্রে অভিনয় করে শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন, এবং শ্রেষ্ঠ অভিনেতা ও শ্রেষ্ঠ কাহিনিকার বিভাগে বাচসাস পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়াও বেশ কিছু চলচ্চিত্রে তিনি পার্শ্ব-চরিত্রে অভিনয় করেন। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে - অনন্ত প্রেম, দোলনা, অচেনা।
তিনি ম্যাডাম ফুলি (১৯৯৯) ও চুড়িওয়ালা (২০০১) চলচ্চিত্রে অভিনয় করে শ্রেষ্ঠ কৌতুক অভিনেতা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। ২০০৫ সালে তিনি জহির রায়হানের হাজার বছর ধরে উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত একই নামের চলচ্চিত্রে মকবুল চরিত্রে অভিনয় করেন। এটি শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করে। একই বছর তিনি তার নিজের লেখা কাহিনিতে সালাউদ্দিন লাভলুর পরিচালনায় অভিষেক চলচ্চিত্র মোল্লা বাড়ীর বউ-এ গাজী এবাদত মোল্লা চরিত্রে অভিনয় করেন। এই কাজের জন্য তিনি তারকা জরিপে সেরা চলচ্চিত্র অভিনেতা বিভাগে মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার অর্জন করেন। এছাড়া তিনি মন বসে না পড়ার টেবিলে (২০০৯) চলচ্চিত্রে অভিনয় করে শ্রেষ্ঠ কৌতুক অভিনেতা বিভাগে তার চতুর্থ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন।
২০০৯ সালে শাবনূর-রিয়াজ জুটির এবাদত ছবি দিয়ে তার চলচ্চিত্র পরিচালক হিসেবে অভিষেক ঘটে। তিনি সৈয়দ শামসুল হকের নিষিদ্ধ লোবান উপন্যাস অবলম্বনে নাসির উদ্দীন ইউসুফ নির্মিত গেরিলা (২০১১) চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য ১৪তম মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কারে একটি বিশেষ পুরস্কার লাভ করেন। তিনি রেদওয়ান রনির পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র চোরাবালি-এ অভিনয় করে শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব-চরিত্রে অভিনেতা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন।
তার অভিনীত সিনেমার তালিকাটা দীর্ঘ। সেই তালিকায় সফল সিনেমার সংখ্যাই বেশি। তার মধ্যে রয়েছে- ‘বড় বউ’, ‘ওরা ১১ জন’, ‘লাঠিয়াল’, ‘নয়নমনি’, ‘অশিক্ষিত’, ‘সুর্য দীঘল বাড়ি’, ‘ছুটির ঘণ্টা’, ‘লাল কাজল’, ‘দায়ী কে?’, ‘রাজলক্ষ্মী শ্রীকান্ত’, ‘স্বপ্নের নায়ক’, ‘শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ’, ‘আমার স্বপ্ন তুমি’, ‘দাদীমা’, ‘ডাক্তার বাড়ি’, ‘চাঁদের মতো বউ’, ‘গেরিলা’, ‘লাল টিপ’ ইত্যাদি।
পুরস্কার :
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার : ১৯৮৭ সালে কাজী হায়াৎ পরিচালিত ‘দায়ী কে’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে প্রথম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান তিনি। ২০১২ সালে রেদওয়ান রনি পরিচালিত ‘চোরাবালি’ ছবিতে পার্শ্বচরিত্রে অভিনয়ের জন্যে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান এটিএম শামসুজ্জামান। ৪২তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের আজীবন সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন এই অভিনেতা।
ব্যক্তিগত জীবন
পরিবার : তার বাবা নূরুজ্জামান ছিলেন নামকরা উকিল এবং রাজনীতিবিদ। মা নুরুন্নেসা বেগম। পাঁচ ভাই ও তিন বোনের মধ্যে শামসুজ্জামান ছিলেন সবার বড়। মৃত্যুকালে স্ত্রী, তিন মেয়ে ও দুই ছেলে রেখে গেছেন।
এটিএম শামসুজ্জামানের স্ত্রী রুনী জামান। এই দম্পতির ৩ ছেলে ও ৩ মেয়ে রয়েছে। ২০১২ সালের ১৩ মার্চ এটিএম শামসুজ্জামানের ছোট ছেলে এটিএম খলিকুজ্জামান কুশল নিজ বড় ভাই এটিএম কামালুজ্জামান কবিরকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেন। হত্যাকাণ্ডের পর এটিএম শামসুজ্জামান নিজেই ছেলে কুশলের বিরুদ্ধে মামলা করেন। হত্যার অভিযোগে এটিএম খলিকুজ্জামান কুশলকে ২০১৩ সালে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় আদালত। কুশল পরে জামিনে বের হয়ে খুলনায় যাওয়ার কথা বলে বাসা থেকে বেরিয়েছিল, পরে ৩০ অক্টোবর ২০২৩ সালে পুলিশ জয়ন্তী নদীতে ভাসমান অবস্থায় অর্ধগলিত তার লাশ উদ্ধার করে।
শামসুজ্জামানের চলচ্চিত্র জীবন শুরু হয় কৌতুক অভিনেতা হিসেবে। জলছবি, যাদুর বাঁশি, রামের সুমতি, ম্যাডাম ফুলি, চুড়িওয়ালা, মন বসে না পড়ার টেবিলে চলচ্চিত্রে তাকে কৌতুক চরিত্রে দেখা যায়। তার অভিনয় জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয় আমজাদ হোসেনের নয়নমণি চলচ্চিত্রটি। এ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে তিনি আলোচনায় আসেন।
এর আগে নারায়ণ ঘোষ মিতার লাঠিয়াল চলচ্চিত্রে খল চরিত্রে অভিনয় করেন। এছাড়াও খল চরিত্রে তার কিছু উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র হল-অশিক্ষিত, গোলাপী এখন ট্রেনে, পদ্মা মেঘনা যমুনা, স্বপ্নের নায়ক। এছাড়াও বেশ কিছু চলচ্চিত্রে তিনি পার্শ্ব-চরিত্রে অভিনয় করেন। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে-অনন্ত প্রেম, দোলনা, অচেনা, মোল্লা বাড়ির বউ, হাজার বছর ধরে, চোরাবালি।
১৯৬১ সালে পরিচালক উদয়ন চৌধূরির বিষকন্যা চলচ্চিত্রে সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করেন। এছাড়াও খান আতাউর রহমান, কাজী জহির, সুভাষ দত্তদের সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করেছেন। এরপর ২০০৯ সালে প্রথম পরিচালনা করেন শাবনূর-রিয়াজ জুটির এবাদত নামের ছবিটি
অভিনেতার বাইরে তিনি অনেক সিনেমার কাহিনী ও চিত্রনাট্য লিখেছেন। নায়ক ফারুক অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র জলছবির জন্য প্রথমবার কাহিনী লিখেন তিনি।
গুনী অভিনেতা এটিএম শামসুজ্জামান সম্পর্কে সালাউদ্দিন লাভলু বলেন, 'এটিএম ভাই ছিলেন সত্যিকারের গুণী মানুষ। তার মতো পড়াশোনা করা ও জানাশোনা মানুষ কমই দেখেছি আমার দীর্ঘ ক্যারিয়ারে। ক্যামেরার সামনে দাঁড়ালেই তিনি অন্য মানুষ হয়ে যেতেন। যেকোন চরিত্রের জন্য তিনি ছিলেন শতভাগ যোগ্য। তার কাছ থেকে অনেককিছু শিখেছি।'
নাট্যজন মামুনুর রশীদ বলেন, 'এটিএম শামসুজ্জামানের সঙ্গে আমার ছিল দারুণ একটা সম্পর্ক। ভীষণ মেধাবী ছিলেন তিনি। লেখালেখি করতেন। সিনেমার কাহিনী লিখতেন। কবিতা লিখতেন। অভিনয়ে আসেন আরও পরে। তার গুণের শেষ নেই। পুরোটা জীবন অভিনয়ের জন্য দিয়ে গেছেন। সবচেয়ে বড় কথা-তার মধ্যে বিনয় ছিল। মানুষকে সম্মান করতে জানতেন। তার চলে যাওয়াটা আমার জন্য বেদনার ও কষ্টের।'
আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন নায়িকা ববিতা বলেন, 'এটিএম শামসুজ্জামানের সঙ্গে সিনেমায় অভিনয় করে সব সময়ই একটা ভালো লাগা বিষয় কাজ করত। তিনি অসম্ভব গুণী মানুষ ছিলেন। একটি চরিত্রে অভিনয় করার সময় তা কতটা সুন্দর করে ফুটিয়ে তুলতেন, সেসব পর্দায় দেখার পরই বোঝা যেত। মানুষ হিসেবে খুব ভালো ছিলেন। তার সাথে অভিনয় করার অসংখ্য স্মৃতি আজও চোখে ভাসে। একজন পরিপূর্ণ শিল্পী এটিএম শামসুজ্জামান। তিনি নেই, কিন্তু তার জন্মদিন আজ। বিশেষ দিনে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানাই।'
মৃত্যু:
বরেণ্য এই অভিনেতা শনিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টার দিকে সূত্রাপুরের নিজ বাসভবনে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন তিনি (ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্নইলাহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮০ বছর।
https://www.jagonews24.com/entertainment/news/644975
https://bangla.thedailystar.net/entertainment/news-513291
https://www.newsg24.com/entertainment-news/25684//
What's Your Reaction?






