অভিনেত্রী সাদিকা পারভিন পপি এর জীবনী | Biography Of Sadika Parvin Popy

অভিনেত্রী সাদিকা পারভিন পপি এর জীবনী | Biography Of Sadika Parvin Popy

May 15, 2025 - 13:43
May 20, 2025 - 23:02
 0  3
অভিনেত্রী সাদিকা পারভিন পপি এর জীবনী | Biography Of Sadika Parvin Popy

জন্ম
সাদিকা পারভিন পপি

১০ সেপ্টেম্বর ১৯৭৯ (বয়স ৪৫)
খুলনা, বাংলাদেশ

জাতীয়তা

বাংলাদেশী

পেশা

চলচ্চিত্র অভিনেত্রী, মডেল

কর্মজীবন

১৯৯৭–বর্তমান
উল্লেখযোগ্য কর্ম
মেঘের কোলে রোদ
কি যাদু করিলা
গঙ্গাযাত্রা

উচ্চতা

৫ ফু ৮ ইঞ্চি (১.৭৩ মি)

আত্মীয়

মৌসুমী (মামাতো বোন), ইরিন জামান (মামাতো বোন)

পুরস্কার

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (৩ বার)

সাদিকা পারভিন পপি

 (জন্ম: ১০ সেপ্টেম্বর, ১৯৭৯) যিনি পপি নামে পরিচিত, বাংলাদেশী চলচ্চিত্র অভিনেত্রী  মডেল। তিনি ১৯৯৭ সালে মনতাজুর রহমান আকবরের কুলি ছায়াছবিতে অভিনয়ের মধ্যদিয়ে চলচ্চিত্রে আবির্ভূত হন।[] বাংলাদেশের চলচ্চিত্র ইতিহাসে অন্যতম আবেদনময়ী এই অভিনেত্রী এ পর্যন্ত মেঘের কোলে রোদ, কি যাদু করিলা, গঙ্গাযাত্রা ছায়াছবিতে অভিনয়ের করে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হিসেবে তিনবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুস্কাররে ভূষিত হয়েছেন।

প্রাথমিক জীবন

পপি ১৯৭৯ সালের ১০ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের খুলনা জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা আমির হোসেন (মৃত্যু ২০২৪)।তার শৈশব কাটে খুলনায় দাদাবাড়িতে। ছয় ভাইবোনের মধ্যে পপি বড়। পড়াশুনা করেছেন খুলনার মুন্নুজান উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে।

অভিনয় জীবন

মডেলিং থেকে চলচ্চিত্রে আসেন পপি। লাক্স আনন্দ বিচিত্রার সুন্দরী প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়ে পরিচিতি লাভ করেন পপি। ১৯৯৭ সালে সোহানুর রহমান সোহান পরিচালিত আমার ঘর আমার বেহেশত ছায়াছবিতে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে চলচ্চিত্রে পা রাখেন পপি। কিন্তু তার প্রথম মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র কুলি। মনতাজুর রহমান আকবর পরিচালিত এই চলচ্চিত্রে তার বিপরীতে অভিনয় করেন ওমর সানি। ছবিটি সেই সময়ে ৭ কোটি টাকা ব্যবস্যা করে মাইলফলক করে।এরপর ১৯৯৮ সালে রিয়াজের বিপরীতে বিদ্রোহ চারিদিকে, ১৯৯৯ সালে মান্নার বিপরীতে কে আমার বাবা ও লাল বাদশা, ২০০২ সালে কমল সরকার পরিচালিত ক্ষেপা বাসু ও বাবুল রেজা পরিচালিত ওদের ধর ছায়াছবিগুলো ব্যবসাসফল হয়। মান্না প্রযোজিত লাল বাদশা ছায়াছবি ব্যবসা সফল হয় ও তার অভিনয় জীবনে বড় পরিবর্তন নিয়ে আসে।এই ছায়াছবিতে আবেদনময়ী খেতাব পাওয়া পপি নিজেকে নতুন ভাবে তুলে আনেন রুবেল এর সাথে জুটি গড়ে। একে একে তার সাথে অভিনয় করেন ২২টি ছায়াছবিতে। টর্নেডো কামাল, ভয়ংকর সন্ত্রাসী, অন্ধকারে চিতা, রাগী, চুরমার, মায়ের জন্য যুদ্ধ তার মধ্যে অন্যতম। চোখ ধাঁধানো দৈহিক সৌন্দর্য এর অধিকারিণী এই অভিনেত্রী খোলামেলা পোশাকে সবার নজর কেরে নেন। মায়ের জন্য যুদ্ধ ছায়া ছবিতে "মন বলে পিয়ু পিয়ু" গানে কালো ব্লাউজ ও পা উন্মুক্ত পোশাকে ব্যাপক উষ্ণতা ছড়ান এই লাস্যময়ী নায়িকা

 একই ছবিতে রুবেলের সাথে একট গানে বরফের টুকরা মুখে পপির শরীরে ছুয়ানোও ব্যপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। তাছাড়া আরো অনেক ছায়াছবিতে বোল্ড লুক ও চুম্বন দৃশ্যে ধরা দেন তিনি। তার পশ্চিমা খোলামেলা আবেদনময়ী উপস্থিতি দর্শকদের মনে জায়গা করেন নেয়। একের পর এক ব্যবসাসফল ছবি দিয়ে কিছুদিনের মধ্যেই বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের শীর্ষ নায়িকার স্থান দখল করেেন। তখন সময়ের অভাবে বলিউডের মহেশ ভাটের সিনেমায় অভিনয়ের প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন। পপি ২৫০ এর বেশি সিনেমায় অভিনয় করেছেন।

২০০৩ সালে অভিনয় করেন কালাম কায়সার পরিচালিত কারাগার ছায়াছবিতে। এতে এক টোকাই চরিত্রে অভিনয় করে প্রথম বারের মত শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন।] ২০০৬ সালে কথাসাহিত্যিক আসকার ইবনে শাইখ রচিত গল্প অবলম্বনে স্যাটেলাইট চ্যানেল এনটিভির প্রথম প্রযোজিত ছায়াছবি বিদ্রোহী পদ্মায় তার অভিনয় সমালোচকদের প্রশংসা অর্জন করে। এই বছর আরও মুক্তি পায় ফেরদৌসের বিপরীতে সামিয়া জামান পরিচালিত রানীকুঠির বাকী ইতিহাস। ২০০৮ সালে নারগিস আক্তার পরিচালিত এইডস বিষয়ক সচেতনতামূলক ছায়াছবি মেঘের কোলে রোদ ও চন্দন চৌধুরী পরিচালিত কি যাদু করিলা চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। মেঘের কোলে রোদ চলচ্চিত্রের জন্য তিনি অর্জন করেন দ্বিতীয় বারের মত শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার।[ এছাড়া কি যাদু করিলা চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য অর্জন করেন শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হিসেবে বাচসাস পুরস্কার। পরের বছর সৈয়দ অহিদুজ্জামান ডায়মন্ড পরিচালিত গঙ্গাযাত্রা ছায়াছবিতে ধুঙ্গরের চরিত্রে অভিনয় করেন। এ চলচ্চিত্রের জন্য তিনি তৃতীয় বারের মত শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান। এছাড়াও পান টানা দ্বিতীয়বারের মত বাচসাস পুরস্কার।

২০১২ সালে মুক্তি পায় ইমনের বিপরীতে জি সরকার পরিচালিত গার্মেন্টস কন্যা। বড় বাজেটের এই ছায়াছবিটি ব্যবসাসফল হয়। দুই বছর বিরতির পর ২০১৪ সালে মুক্তি পায় তার অভিনীত চার অক্ষরের ভালোবাসা। এতে তার বিপরীতে অভিনয় করেছেন নিরব। ২০১৫ সালে আবদুল্লাহ আল মামুন পরিচালিত শেষ চলচ্চিত্র দুই বেয়াইয়ের কীর্তিতে অভিনয় করেন। ২০১৬ সালে অভিনয় করেন নরেন্দ্রনাথ মিত্র রচিত গল্প রস অবলম্বনে নারগিস আক্তার নির্মিত পৌষ মাসের পিরীত-এ। এতে তার বিপরীতে অভিনয় করেন টনি ডায়েস।এছাড়া অভিনয় করছেন নাজমুল হাসানের দুই নয়ন ছায়ছবিতে।

চলচ্চিত্রে অভিনয়ের পাশাপাশি তিনি টেলিভিশনের নাটকে ও টেলিফিল্মে অভিনয় করেছেন। কাজ করেছেন মেজবাহ শিকদার পরিচালিত গোধূলির দেখা আলো নাটকে। ২০১৩ সালের ঈদে বাংলাভিশনের জন্য নির্মিত আমি ভালোবাসিনি টেলিফিল্মে অভিনয় করেন। টেলিফিল্মটি পরিচালনা করেছেন হিমেল আশরাফ এবং তার বিপরীতে ছিলেন চঞ্চল চৌধুরী। ২০১৪ সালে রেজানুর রহমানের নির্দেশনায় নোটবুক টেলিফিল্মে একজন বিবাহিত নারীর চরিত্রে অভিনয় করেন। এছাড়া অভিনয় করেছেন বি ইউ শুভ্র পরিচালিত নবনীতা তোমার জন্য  নীল কষ্ট খণ্ড ধারাবাহিকে এবং প্রহর  পলাশপুরের মেহেরজান টেলিফিল্মে। ২০১৫ সালের ঈদুল আযহা উপলক্ষে একুশে টেলিভিশনের জন্য নির্মিত এক্সপ্রেশন অব লাভ টেলিফিল্মে অভিনয় করছেন।

মডেলিং

২০১৫ সালের শেষের দিকে ১ বছরের চুক্তিতে রোমানিয়া বিস্কুটের ব্রান্ড এম্বাসেডর হন। এ সময় তাকে মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজের নির্দেশনায় রোমানিয়া বিস্কুটের বিজ্ঞাপনে দেখা যায়।

চলচ্চিত্রের তালিকা

বছর চলচ্চিত্র ভূমিকা পরিচালক সহশিল্পী টীকা
১৯৯৭ কুলি পপি মনতাজুর রহমান আকবর ওমর সানি পপি অভিনীত মুক্তিপ্রাপ্ত প্রথম চলচ্চিত্র
আমার ঘর আমার বেহেশত সোহানুর রহমান সোহান শাকিল খান পপি অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র
চারিদিকে শত্রু রুবেল পপি অভিনীত দ্বিতীয় চলচ্চিত্র
দরদী সন্তান ইলিয়াস কাঞ্চন পপি অভিনীত তৃতীয় চলচ্চিত্র
১৯৯৮ বিদ্রোহ চারিদিকে নুরি মহম্মদ হাননান রিয়াজ রিয়াজের বিপরীতে অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র
গুপ্ত ঘাতক অমিত হাসান
অনেক দিনের আশা অমিত হাসান
ভালবাসার ঘর অমিত হাসান
১৯৯৯ কে আমার বাবা মনতাজুর রহমান আকবর মান্না, আমিন খান
লাল বাদশা মালেক আফসারী মান্না
জিদ্দী অমিত হাসান
২০০০ দুজন দুজনার আবু সাঈদ খান শাকিব খান শাকিব খানের বিপরীতে অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র
জানের জান মোস্তাফিজুর রহমান শাকিব খান
হীরা চুনি পান্না মালেক আফসারী শাকিব খান, আমিন খান
আমার বউ শাকিল খান
দাম দিয়ে প্রেম যায়না কেনা শাকিল খান
মা যখন বিচারক শাকিল খান
প্রাণের প্রিয়তমা শাকিল খান
২০০২ ক্ষেপা বাসু কমল সরকার রিয়াজ
বিশ্ব বাটপার বাদল খন্দকার শাকিব খান
ওদের ধর রিয়া বাবুল রেজা রিয়াজ
কঠিন সীমার নদী মনতাজুর রহমান আকবর মান্না, অমিত হাসান
২০০৩ কারাগার পারুল কালাম কায়সার ফেরদৌস আহমেদ বিজয়ী: জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী
ক্ষমতার দাপট এ জে রানা শাকিব খান
২০০৪ বস্তির রানী সুরিয়া সুরিয়া মনতাজুর রহমান আকবর শাকিব খান
মান্না ভাই এফ আই মানিক মান্না
২০০৫ বিষাক্ত চোখ: The Blue Eye মাসুম পারভেজ রুবেল রিয়াজ ও রুবেল
সিটি টেরর মাসুম পারভেজ রুবেল মান্না
প্রেম করেছি বেশ করেছি উজালা বাদল খন্দকার রিয়াজ ও চাঙ্কি পান্ডে
২০০৬ বিদ্রোহী পদ্মা সুধা বাদল খন্দকার রিয়াজ স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেল এনটিভির প্রথম প্রযোজিত ছবি।
রানীকুঠির বাকী ইতিহাস মম সামিয়া জামান ফেরদৌস
২০০৮ মেঘের কোলে রোদ রোদেলা নারগিস আক্তার রিয়াজ  টনি ডায়েস বিজয়ী: জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী
কি যাদু করিলা ঝিনুক চন্দন চৌধুরী রিয়াজ  মীর সাব্বির বিজয়ী: বাচসাস পুরস্কার শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী
মায়ের স্বপ্ন ইলিয়াস কাঞ্চন ফেরদৌস
২০০৯ গঙ্গাযাত্রা সুধামণি সৈয়দ অহিদুজ্জামান ডায়মন্ড ফেরদৌস বিজয়ী: জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী
বিজয়ী: বাচসাস পুরস্কার শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী
২০১২ গার্মেন্টস কন্যা জী সরকার ইমন
২০১৪ চার অক্ষরের ভালোবাসা ভাবনা জাকির খান নিরব, ফেরদৌস
২০১৫ দুই বেয়াইয়ের কীর্তি আবদুল্লাহ আল মামুন ফেরদৌস
২০১৬ পৌষ মাসের পিরীত মাজু খাতুন নারগিস আক্তার টনি ডায়েস নরেন্দ্রনাথ মিত্র রচিত গল্প রস অবলম্বনে নির্মিত
দুই নয়ন নাজমুল হাসান নির্মাণাধীন
২০১৯ দি ডিরেক্টর কামরুজ্জামান কামু

পুরস্কার ও সম্মাননা

বছর বিভাগ চলচ্চিত্র ফলাফল
২০০৪ শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী কারাগার বিজয়ী
২০১০ মেঘের কোলে রোদ
২০১১ গঙ্গাযাত্রা

সাদিকা পারভিন পপি হলেন একজন বাংলাদেশী অভিনেত্রী, মডেলএবং রাজনীতিবিদ.যার “কুলি” ছবির মাধ্যমে ঢলিউড ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে অভিষেক ঘটে। পপি তার অভিনয় দক্ষতা দারুন খুব অল্প সময়ের মধ্যে তিনি অনেক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন। যিনি কারাগার(2008), মেঘের কোলে রাউত(2008) এবং গঙ্গা যাত্রা (2009) চলচ্চিত্রের জন্য তিনি তিনবার শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর জন্য বাংলাদেশ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জিতেছেন।

সাদিকা পারভিন কপি হলেন বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের  অধিকাংশ তরুণদের কাছে একটি স্বপ্নের মেয়ে। সাদিকা পারভিন পপি অভিনয়ের পাশাপাশি মডেলিং জগতেও একটি সুপরিচিত নাম।তার মডেলিং দক্ষতার মাধ্যমে বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের মডেলদের মধ্যে জায়গা করে নিয়েছেন সাদিকা পারভীন পপি।

বছর বিভাগ চলচ্চিত্র ফলাফল
১৯৯৯ শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী অনেক দিনের আশা বিজয়ী
২০০৩ জুয়াড়ী
২০০৭ বিদ্রোহী পদ্মা
২০০৯ কি যাদু করিলা
২০১৪ গঙ্গাযাত্রা
টেলিভিশন রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ট্রাব) পুরস্কার
বছর বিভাগ চলচ্চিত্র ফলাফল
২০০৪ সেরা চলচ্চিত্র অভিনেত্রী মান্না ভাই বিজয়ী
২০১২ গার্মেন্টস কন্যা
২০১৮ সোনাবন্ধু

SORUSE : wikipedia

What's Your Reaction?

Like Like 0
Dislike Dislike 0
Love Love 0
Funny Funny 0
Angry Angry 0
Sad Sad 0
Wow Wow 0