ইউনূস (আঃ) এর জীবনী | Biography of Jonah

ইউনূস (আঃ) এর জীবনী | Biography of Jonah

May 25, 2025 - 13:24
 0  1
ইউনূস (আঃ)  এর জীবনী | Biography of Jonah

নবী
হজরত

ইউনুস
يونس
যোনা

আলাইহিস সালাম
ইসলামি চারুলিপিতে লেখা ইউনুস

জন্ম

আনু. খ্রিস্টপূর্ব ৯ম শতাব্দী

মৃত্যু

আনু. খ্রিস্টপূর্ব ৮ম শতাব্দী

সমাধি

নবী ইউনুসের রওজা, আন-নবী ইউনুস মসজিদ, মসুল, ইরাক

অন্যান্য নাম

জুন নূন (আরবি: ذُو ٱلنُّوْن)
বিন মাত্তা
যোনা

উপাধি

নবী

পিতা-মাতা

মাত্তা (পিতা)

ইউনুস (আঃ) এর জীবনী

ইউনুস

 (হিব্রু ভাষায়: יוֹנָה‎, Yōnā; গ্রিক: Ἰωνᾶς, Iōnâs; আরবি: يونس, প্রতিবর্ণীকৃত: Yūnus বা আরবি: يونان, প্রতিবর্ণীকৃত: Yūnān; লাতিন: Ionas) হলেন হিব্রু বাইবেল  কোরআন অনুসারে একজন নবী। তিনি ছিলেন ৮ম খ্রিস্টপূর্বাদের ইস্রায়েল রাজ্যের উত্তরাঞ্চলের গাৎ-হেফরের বাসিন্দা। যোনা পুরাতন নিয়মের যোনা ভাববাদীর পুস্তকের কেন্দ্রীয় চরিত্র।[][][][]

কুরআনের বর্ণনা অনুসারে, তিনি ছিলেন একজন নবী। যাকে 'নীনাওয়া' বাসীদেরকে হিদায়াতের জন্য আল্লাহ প্রেরণ করেন।

বংশ পরিচয় ও নবুয়ত

  • পুরো নাম: ইউনূস ইবনে মাত্তা (يونس بن متى)

  • বংশধারা: ইস্রাঈলী নবী, ইবনে ইসহাক-এর মতে তিনি ইউসুফ (আঃ)-এর পরবর্তী নবীদের মধ্যে একজন।

  • উপাধি: ذو النون (যুল-নুন)—“মাছের সঙ্গী”

  • জন্মস্থান: অনুমান করা হয়, তিনি বর্তমান ইরাকের মোসুলের নিকটবর্তী শহর নিনবাহ (Ninawa)-র লোকদের কাছে পাঠানো হয়েছিলেন।

যোনা ভাববাদীর পুস্তক

মাছের পেটের ঘটনা

তিনি শহর ত্যাগ করে একটি জাহাজে আরোহন করেন। জাহাজটি সাগরের মাঝখানে ঝড়ে পড়ে এবং বোঝা হালকা করার জন্য লটারির মাধ্যমে একজনকে পানিতে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। লট বারবার হযরত ইউনূস (আঃ)-এর নামেই পড়ে। তাঁকে সমুদ্রে ফেলা হলে একটি বিশাল মাছ তাঁকে গিলে ফেলে।

পিটার লাস্টম্যানের আঁকা যোনা ও তিমি (১৬২১)

যোনা পুরাতন নিয়ম বা হিব্রু বাইবেলের যোনা ভাববাদীর পুস্তকের কেন্দ্রীয় চরিত্র যেখানে সদাপ্রভু তাঁকে নির্দেশ দেন যে, “তুমি উঠ, নীনবীতে, সেই মহানগরে যাও, আর নগরের বিরুদ্ধে ঘোষণা কর, কেননা তাহাদের দুষ্টতা আমার সম্মুখে উঠিয়াছে।”[] কিন্তু যোনা সদাপ্রভুর সামনে থেকে তর্শীশে পালাবার জন্য ওঠেন; তিনি যাফোতে নেমে গিয়ে, তর্শীশে যাবে এমন এক জাহাজ পান; তখন জাহাজের ভাড়া দিয়ে সদাপ্রভুর সামনে থেকে নাবিকদের সঙ্গে তর্শীশে যাবার জন্য সেই জাহাজে প্রবেশ করন।[] কিন্তু সদাপ্রভু সমুদ্রে প্রচন্ড ঝড়ো বায়ু পাঠিয়ে দেন, সমুদ্রে ভীষণ ঝড় ওঠে, জাহাজ ভেঙে যাবার উপক্রম হয়। তখন নাবিকেরা ভয় পায়, প্রত্যেকে নিজের নিজের দেবতার কাছে কাঁদতে থাকে, আর ওজন কমানোর জন্য জাহাজের মাল সমুদ্রে ফেলে দেয়। তারা উপলব্ধি করে যে এটা কোনো সাধারণ ঝড় নয়৷ পরে নাবিকেরা গুলিবাঁট করে বুঝতে পারে যে যোনার দোষেই তাদের প্রতি এই অমঙ্গল ঘটছে। যোনা তার দোষ স্বীকার করেন এবং নাবিকদের বলেন তাকে ধরে সমুদ্রে ফেলে দেওয়ার জন্য, তাতেই সমুদ্র শান্ত হবে। তবুও সেই লোকেরা জাহাজ ফিরিয়ে ডাঙায় নিয়ে যাবার জন্য ঢেউ কাটতে চেষ্টা করে। কিন্তু পেরে ওঠে না, কারণ সমুদ্র তাদের বিপরীতে আরো ভয়াবহ হয়ে ওঠে। পরে তারা যোনাকে ধরে সমুদ্রে ফেলে দেয়, তাতে সমুদ্র শান্ত হয়। তখন সেই লোকেরা সদাপ্রভুকে খুব ভয় পায় এবং আর তার উদ্দেশ্যে বলিদান এবং নানা মানত করে। আর সদাপ্রভু যোনাকে গিলে ফেলার জন্য একটা বড় মাছ ঠিক করে রেখেছিলেন; সেই মাছের পেটে যোনা তিন দিন ও তিন রাত কাটান। তখন যোনা ঐ মাছের পেট থেকে নিজের ঈশ্বর সদাপ্রভুর কাছে প্রার্থনা করেন এবং তার উদ্দেশ্যে ধন্যবাদসহ বলিদান ও মানত পূর্ণ করার সংকল্প করেন। পরে সদাপ্রভু সেই মাছকে নির্দেশ করাতে সে যোনাকে শুকনো ভূমির ওপরে উগরে দেয়।[

গুস্তাভ দরের আঁকা নীনবীয়দের নিকট প্রচারণারত যোনা (১৮৬৬)

তখন ঈশ্বর যোনাকে কহিলেন, “তুমি এরণ্ড গাছটির নিমিত্ত ক্রোধ করিয়া কি ভাল করিতেছ?” তিনি কহিলেন, “মৃত্যু পর্যন্ত আমার ক্রোধ করাই ভাল।” সদাপ্রভু কহিলেন, “তুমি এই এরণ্ড গাছের নিমিত্ত কোন শ্রম কর নাই, এবং এটা বাড়াও নাই; ইহা এক রাত্রিতে উৎপন্ন ও এক রাত্রিতে উচ্ছিন্ন হইল, তথাপি তুমি ইহার প্রতি দয়ার্দ্র হইয়াছ। তবে আমি কি নীনবীর প্রতি, ঐ মহানগরের প্রতি, দয়ার্দ্র হইব না? তথায় এমন এক লক্ষ বিংশতি সহস্রের অধিক মনুষ্য আছে, যাহারা দক্ষিণ হস্ত হইতে বাম হস্তের প্রভেদ জানে না; আর অনেক পশুও আছে।”


কুরআনে ইউনুসের আলোচনা

কোরআনে ছয়টি সূরায় মোট ১৮ বার ইউনুস (আ:)এর নাম উল্লেখ করা হয়েছে। সূরাগুলো হলো- আনআ'ম, ইউনুস, আস ছাফ্‌ফাত, আল আম্বিয়া, এবং আল ক্বলম। এর মাঝে প্রথম চারটি সূরায় তার নাম উল্লেখ করা হয়েছে। শেষের দু'টি সূরায় তার গুণপ্রকাশক শব্দ 'যুন্নুন' (আরবি: ذو النون) এবং 'সাহিবুল হূত' (আরবি: صاحب الحوت) উল্লেখ করা হয়েছে। আর সূরা আন-নিসা  সূরা-আনআ‍‌'মে পয়গম্বরদের তালিকার মাঝে শুধু তার নাম উল্লেখ করা হয়েছে; অন্য কোন আলোচনা করা হয়নি। এছাড়া বাকী চারটি সূরায় তার ঘটনার ওপর সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হয়েছে। নিচে এ সম্পর্কিত একটি ছক দেয়া হলো:

ক্রমিক সংখ্যা

সূরা আয়াত নং উল্লেখের সংখ্যা

আন নিসা ১৬৩

আল আনআম ৮৭

ইউনুস ৯৮

আল আম্বিয়া ৮৭,৮৮

আস ছাফ্‌ফাত ১৩৯-১৪৮ ১০

আল ক্বলম ৪৮-৫০

কোরআনে ইউনূস (আ:)এর ঘটনা উল্লেখ করে সূরা আস-ছাফফাতে বলা হয়েছে:

আর ইউনুসও ছিলেন পয়গম্বরগণের একজন। যখন পালিয়ে তিনি বোঝাই নৌকায় গিয়ে পৌঁছেছিলেন। অতঃপর লটারী (সুরতি) করালে তিনি দোষী সাব্যস্ত হলেন। অতঃপর একটি মাছ তাঁকে গিলে ফেলল, তখন তিনি অপরাধী গণ্য হয়েছিলেন। যদি তিনি আল্লাহর তসবীহ পাঠ না করতেন, তবে তাঁকে কেয়ামত দিবস পর্যন্ত মাছের পেটেই থাকতে হত। অতঃপর আমি তাঁকে এক বিস্তীর্ণ-বিজন প্রান্তরে নিক্ষেপ করলাম, তখন তিনি ছিলেন রুগ্ন। আমি তার উপর এক লতাবিশিষ্ট বৃক্ষ উদগত করলাম। এবং তাঁকে, লক্ষ বা ততোধিক লোকের প্রতি প্রেরণ করলাম। তারা বিশ্বাস স্থাপন করল অতঃপর আমি তাদেরকে নির্ধারিত সময় পর্যন্ত জীবনোপভোগ করতে দিলাম।

নাম ও বংশপরিচয়

ইউনূস (আ:)এর বংশ সম্পর্কে শুধু এটুকুই জানা যায় যে, তার পিতার নাম ছিল 'মাত্তা'।বুখারী শরীফের একটি হাদীসে আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস হতে এ কথা স্পষ্টভাবে বর্ণিত আছে। বাইবেলে ইউনূস (আ:)এর নাম 'যোনা' এবং তার পিতার নাম 'আমতা' বলা হয়েছে। তবে ইউনূস ইবনে মাত্তাহ এবং ইউনাহ ইবনে আমতার মাঝে ব্যক্তি হিসেবে কোন পার্থক্য নেই। এটা আরবি ও হিব্রু ভাষার উচ্চারণের পার্থক্য।

ধর্মপ্রচারের স্থান

ইরাকের সুপ্রসিদ্ধ জনপদ 'নীনাওয়া'এর অধিবাসীদের হিদায়াতের জন্য তার আবির্ভাব হয়েছিল। নীনাওয়া আশূরী রাজ্যের রাজধানী এবং মাওসেল এলাকার কেন্দ্রীয় শহর ছিল। কোরআনে এই শহরের জনসংখ্যা এক লক্ষাধিক বলা হয়েছে।
  1. == ইউনুস এর ঘটনা ==#

ইউনুস (আ) ইরাকের মুসল নগরীর মীনাওয়া জনপদের বছর বয়সে নবুয়াত লাভ করেন এবং নীনাওয়াবাসীদের দাওয়াত দিতে আদিষ্ট হন। দীর্ঘকাল দাওয়াত দেয়ার পরও তারা যখন ইমান আনল না তখন তিনি ক্রুদ্ধ হয়ে নীনাওয়াবাসীর জন্য আযাবের দোয়া করেন এবং ঐ শহর ত্যাগ করেন। ভীত-সন্ত্রস্ত ফোরাত (ইউফ্রেটিস) নদীর তীরে পৌঁছার পর তিনি নৌকায় আরোহণ করেন। মাঝ নদীতে যাওয়ার পর নৌকা ঝড়ে আক্রান্ত হয়। সেই যুগের কুসংস্কার অনুযায়ী নৌকার আরোহীরা মনে করল, নিশ্চয়ই এই নৌকায় কোন পলাতক দাস আছে। এটা শুনে ইউনুস এর চৈতন্যদয় হলো যে, তিনি শহর ছাড়ার ব্যাপারে আল্লাহর অনুমতির অপেক্ষা করেননি। তিনি নিজের দোষ স্বীকার করলেন।

নৌকার আরোহীরা তাঁর সততায় মুগ্ধ হল এবং তাঁকে নৌকা থেকে ফেলে দিতে সম্মত হল না। শেষ পর্যন্ত তারা লটারি করল এবং সেখানে ইউনুস এর নাম উঠল। ফলে বাধ্য হয়ে তারা ইউনুস কে নদীতে ফেলে দিল এবং ঐ সময়ে একটি বিরাট মাছ তাঁকে গিলে ফেলল। কারো মতে, ঐ মাছটি ছিল তিমি মাছ। মাছের পেটের ভেতর অন্ধকারের মাঝে তিনি আল্লাহর কাছে কাকুতি-মিনতি করে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। আল্লাহ তাঁর দোয়া কবুল করলেন। ফলে আল্লাহর আদেশে মাছটি তাঁকে নদীর তীরে এসে উগড়ে দিল। কুরআনের বর্ণনা মতে, দীর্ঘদিন মাছের পেটে থাকার কারণে তিনি অসুস্থ ও দুর্বল হয়ে পড়েন। তাই আল্লাহ আপন অনুগ্রহে সেখানে লাউগাছ উৎপন্ন করেন। সুস্থ হওয়ার পর তাকেঁ আবার নীনাওয়াবাসীদের কাছে পাঠানো হয় এবং নীনাওয়াবাসী ইমান আনে।

ফিরে আসা ও জাতির তাওবা

ইউনূস (আঃ) ফিরে এসে দেখেন, তাঁর জাতি ততদিনে আল্লাহর শাস্তির ভয়ে অনুতপ্ত হয়ে তাওবা করেছে। আল্লাহ তাদেরকে ক্ষমা করেন এবং ধ্বংস থেকে রক্ষা করেন।

 কুরআনে ইউনূস (আঃ)

হযরত ইউনূস (আঃ)-এর কাহিনী কুরআনের বিভিন্ন স্থানে এসেছে:

  • সূরা ইউনূস (১০:৯৮)

  • সূরা আস-সাফফাত (৩৭:১৩৯–১৪৮)

  • সূরা আল-আম্বিয়া (২১:৮৭–৮৮)

  • সূরা আল-কালাম (৬৮:৪৮–৫০)

 মৃত্যু ও কবর

তাঁর মৃত্যুর পর ধারণা করা হয়, তিনি ইরাকের মসুল অঞ্চলে সমাহিত হন। সেখানে তাঁর একটি মাজার আছে যেটি “নবী ইউনূসের কবর” নামে পরিচিত।

sourse:wikipedia 

https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%87%E0%A6%89%E0%A6%A8%E0%A7%81%E0%A6%B8

https://quraneralo.com/story-of-younus/

https://sistersforuminislam.com/%E0%A6%A8%E0%A6%AC%E0%A7%80-%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%B8%E0%A7%82%E0%A6%B2%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%9C%E0%A7%80%E0%A6%AC%E0%A6%A8%E0%A7%80/%E0%A6%87%E0%A6%89%E0%A6%A8%E0%A7%81%E0%A6%B8-%E0%A6%86%E0%A6%83-%E0%A6%8F%E0%A6%B0-%E0%A6%9C%E0%A7%80%E0%A6%AC%E0%A6%A8%E0%A7%80/

https://www.hadithbd.com/books/detail/?book=15§ion=348

What's Your Reaction?

Like Like 0
Dislike Dislike 0
Love Love 0
Funny Funny 0
Angry Angry 0
Sad Sad 0
Wow Wow 0