আরেথা ফ্র্যাঙ্কলিন এর জীবনী | Biography of Aretha Franklin

আরেথা ফ্র্যাঙ্কলিন এর জীবনী | Biography of Aretha Franklin

May 16, 2025 - 20:34
May 24, 2025 - 12:50
 0  1
আরেথা ফ্র্যাঙ্কলিন এর জীবনী | Biography of Aretha Franklin

জন্ম

২৫শে মার্চ, ১৯৪২, মেমফিস , টেনেসি , মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র

প্রারম্ভিক জীবন:

লুসি অ্যাভিনিউয়ে তার নিজ বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তার মাতা বারবারা সিগার্স ও পিতা ক্লেরেন্স লাভন "সি.এল." ফ্র্যাঙ্কলিন। তার পিতা ব্যাপ্তিষ্ম মিনিস্টার ও সার্কিট যাজক ছিলেন।

মারা গেছেন:

১৬ আগস্ট, ২০১৮, ডেট্রয়েট , মিশিগান (বয়স ৭৬)

জন্ম:

২৫শে মার্চ, ১৯৪২, মেমফিস , টেনেসি , মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র

প্রারম্ভিক জীবন:

আরিথা লুইস ফ্র্যাঙ্কলিন ১৯৪২ সালের ২৫শে মার্চ টেনেসি অঙ্গরাজ্যের মেম্ফিস শহরের ৪০৬ লুসি অ্যাভিনিউয়ে তার নিজ বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তার মাতা বারবারা সিগার্স ও পিতা ক্লেরেন্স লাভন "সি.এল." ফ্র্যাঙ্কলিন। তার পিতা ব্যাপ্তিষ্ম মিনিস্টার ও সার্কিট যাজক ছিলেন।

 তার মাতা পিয়ানোবাদক ও কণ্ঠশিল্পী ছিলেন।তার পিতামাতার পূর্বের সম্পর্কের সন্তান ছিল এবং এই দম্পতির চার সন্তান ছিল। আরিথার বয়স যখন দুই, তখন তাদের পরিবার নিউ ইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের বাফালো শহরে চলে যায়।

আরিথার বয়স যখন পাঁচ, তখন সি. এল. ফ্র্যাঙ্কলিন স্থায়ীভাবে মিশিগান অঙ্গরাজ্যের ডেট্রয়েট শহরে বসবাস শুরু করেন এবং সেখানে তিনি নিউ বেথেল ব্যাপ্টিস্ট চার্চে যাজকের পদে যোগ দেন।

ফ্র্যাঙ্কলিনের পরকীয়ার জন্য এই দম্পতির বিবাহ স্থায়ী হয়নি, যার ফলে ১৯৪৮ সালে তারা আলাদা হয়ে যান। এই সময় বারবারা আরিথার সৎ ভাই ভনকে নিয়ে বাফালোতে ফিরে যান। আলাদা হওয়ার পর আরিথা গ্রীষ্মকালে তার মায়ের সাথে সাক্ষাৎ করতে বাফালো যেতেন এবং বারবারা তার সন্তানদের সাথে সাক্ষাৎ করতে ডেট্রয়েটে আসতেন।

 ১৯৫২ সালের ৭ই মার্চ আরিথার ১০ম জন্মদিনের পূর্বে হার্ট অ্যাটাকে তার মায়ের মৃত্যু হয়। আরিথার পিতামহী রেচল ও মাহেলিয়া জ্যাকসন ফ্র্যাঙ্কলিনের বাড়িতে তাদের দেখাশোনা করতেন। এই সময়ে আরিথা পিয়ানো বাজানো শিখেন। তিনি ডেট্রয়েটের সরকারি বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন এবং পরে নর্থার্ন হাই স্কুলে প্রথম বর্ষে অধ্যয়নের পর দ্বিতীয় বর্ষে বিদ্যালয় থেকে ঝরে পড়েন।

 শৈশব ও পরিবার:

জন্ম ২৫ মার্চ ১৯৪২, মেমফিস, টেনেসি, যুক্তরাষ্ট্র।
তার মা বারবারা সিনগার ছিলেন গায়িকা ও পিয়ানোবাদক।
তার বাবা, সি. এল. ফ্র্যাঙ্কলিন ছিলেন একজন খ্রিস্টান যাজক ও গসপেল বক্তা, যিনি অত্যন্ত খ্যাতিমান ছিলেন।

আরেথার শৈশব ডেট্রয়েটে কেটেছে। বাবা-মায়ের বিচ্ছেদের পরে মা মারা যান, তখন আরেথা ছিলেন মাত্র ১০ বছরের। সংগীত চর্চা শুরু হয় গির্জার গসপেল গানের মাধ্যমে।

আর্থ-সামাজিক প্রভাব:

আরেথা কেবল সংগীতশিল্পীই ছিলেন না, তিনি ছিলেন এক সমাজকর্মী।
তিনি নাগরিক অধিকার আন্দোলনের সমর্থক ছিলেন এবং মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রের কাছের মানুষ ছিলেন। তাঁর গান ছিল নারীদের অধিকার ও স্বাধীনতার প্রতীক।

ব্যক্তিগত জীবনে সম্পর্কের টানাপোড়েন:

আরেথার প্রথম বিয়ে হয়েছিল টেড হোয়াইটের সঙ্গে, যিনি তার ম্যানেজারও ছিলেন। কিন্তু সেই সম্পর্ক ছিল গার্হস্থ্য নির্যাতনে ভরা।
তিনি বহুবার শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হন। অবশেষে বিচ্ছেদ করেন।
এই অভিজ্ঞতা থেকেই তিনি গেয়েছিলেন তাঁর বিখ্যাত প্রতিবাদী গান — “Think” এবং “Respect”।

সংগীতের প্রতি আগ্রহ ও প্রারম্ভিক জীবন:

ছোটবেলাতেই আরেথার অসাধারণ কণ্ঠ ও সংগীত প্রতিভা প্রকাশ পায়। ১৪ বছর বয়সে প্রথম গসপেল অ্যালবাম Songs of Faith প্রকাশিত হয়।

১৭ বছর বয়সে পপ ও জ্যাজ সংগীতে ক্যারিয়ার শুরু করেন এবং ১৯৬০ সালে কলম্বিয়া রেকর্ডসের সাথে চুক্তিবদ্ধ হন।

সঙ্গীতের ধরন ও ভাবমূর্তি:

রিচি আন্টারবার্জারের মতে ফ্র্যাঙ্কলিন "সোল সঙ্গীতের এবং সর্বোপরি মার্কিন পপ সঙ্গীতের অন্যতম ব্যক্তিত্ব। তিনি অন্য যে কোন পরিবেশকের চেয়ে বেশি সোল সঙ্গীতের সার-সংগ্রহ করেছেন। কণ্ঠের নমনীয়তা, ব্যাখ্যামূলক বুদ্ধিমত্তা, দক্ষ পিয়ানো-বাজানো, তার শ্রবণ ও তার অভিজ্ঞতার জন্য তাকে প্রায়ই সেরা সঙ্গীতশিল্পী ও সঙ্গীতজ্ঞ হিসেবে অভিহিত করা হয়।

 ফ্র্যাঙ্কলিনের কণ্ঠকে "জোরালো মেৎজো-সোপ্রানো কণ্ঠ" হিসেবে গণ্য করা হয়। তিনি অন্যান্য শিল্পীদের জনপ্রিয় গানসমূহের সঙ্গীতায়োজন ও উপস্থাপনার জন্য প্রশংসিত। ডেভিড রেমনিকের মতে তার সাঙ্গীতিক বুদ্ধিমত্তা, তালের সাথে তার গায়কীর ধরন, একটি শব্দ বা শব্দাংশ থেকে সুর বিচ্ছ্যুরিত করা তাকে অন্যদের থেকে আলাদা করে।

১৯৫৬ সালে প্রকাশিত ১৪ বছর বয়সী ফ্র্যাঙ্কলিনের প্রথম অ্যালবাম সংস অব ফেইথ-এ তার কণ্ঠের বর্ণনা দিতে গিয়ে জেরি ওয়েক্সলার বলেন, "এটি কোন বাচ্চার কণ্ঠ নয় বরং কোন পরমানন্দদায়ক পুরোহিতের কণ্ঠ। সমালোচক র‌্যান্ডি লুইস পিয়ানোবাদক হিসেবে তার দক্ষতার মূল্যায়ন করে বলেন তা "ঐন্দ্রজালিক" ও "প্রেরণাদায়ক"।

এলটন জন, কিথ রিচার্ডস, ক্যারোল কিং ও ক্লাইভ ডেভিসের মত সঙ্গীতজ্ঞ ও পেশাদাররা তার পিয়ানো বাদনের ভক্ত ছিলেন।

সংগীত জীবন ও খ্যাতি:

আরেথা ফ্র্যাঙ্কলিন ছিলেন একজন কিংবদন্তি আমেরিকান গায়িকা, গান লেখিকা, ও পিয়ানোবাদক। তাঁর সঙ্গীত জীবন শুরু হয় গির্জার গসপেল গানে, কারণ তাঁর বাবা ছিলেন একজন খ্রিস্টান যাজক এবং প্রভাবশালী বক্তা। শৈশবেই তিনি গানের প্রতি অসাধারণ প্রতিভা দেখান।

১৯৬০-এর দশকে তিনি আটলান্টিক রেকর্ডসের সঙ্গে চুক্তি করার পর আন্তর্জাতিক খ্যাতি লাভ করেন। তাঁর সবচেয়ে জনপ্রিয় গানগুলোর মধ্যে রয়েছে:

Respect

(You Make Me Feel Like) A Natural Woman

Chain of Fools

Think

I Say a Little Prayer

তিনি ছিলেন প্রথম নারী যিনি Rock and Roll Hall of Fame-এ অন্তর্ভুক্ত হন (১৯৮৭ সালে)।

অর্জন ও সম্মাননা:

*১৮টি গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ড জয় করেন

*শতাধিক চার্টে থাকা হিট গান

*প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা তাঁকে Presidential Medal of Freedom প্রদান করেন (২০০৫)

*Rolling Stone ম্যাগাজিনের "Greatest Singers of All Time" তালিকায় শীর্ষ স্থান পান

সংক্ষিপ্ত বার্তা:

আরেথা ফ্র্যাঙ্কলিন কেবল একজন গায়িকা নন, বরং তিনি ছিলেন আফ্রিকান-আমেরিকানদের অধিকার আদায়ের জন্যও একটি কণ্ঠস্বর। তাঁর গান ও সংগ্রাম আজও অনুপ্রেরণা যোগায় লাখো মানুষকে।

মারা গেছেন:

১৬ আগস্ট, ২০১৮, ডেট্রয়েট , মিশিগান (বয়স ৭৬)

উপসংহার:

আরেথা ফ্র্যাঙ্কলিন ছিলেন এমন একজন নারী, যিনি সংগীতের মাধ্যমে ইতিহাস রচনা করেছেন। তাঁর কণ্ঠে ছিল আত্মা, হৃদয়, প্রতিবাদ এবং প্রেম। তিনি এমন একটি সময়ে নারী ও কৃষ্ণাঙ্গদের কণ্ঠ দিয়েছেন, যখন তাদের কণ্ঠ ছিল অবদমিত।

আজও তাঁর গান নতুন প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করে।

তিনি ছিলেন এবং থাকবেন – সংগীতের ইতিহাসের এক উজ্জ্বল তারা

What's Your Reaction?

Like Like 0
Dislike Dislike 0
Love Love 0
Funny Funny 0
Angry Angry 0
Sad Sad 0
Wow Wow 0