আফরান নিশো জীবনী | Biography of Afran Nisho
আফরান নিশো জীবনী | Biography of Afran Nisho

অভিনেতার জন্ম ও পরিবার
বাংলাদেশী মডেল এবং অভিনেতা আফরান নিশো পুরো নাম আহম্মেদ ফজলে রাব্বি (জন্ম:৮ ডিসেম্বর ১৯৮০)। তিনি ২০০৩ সাল থেকে ৮০০টিরও বেশি টেলিফিল্ম, ওয়েব সিরিজ এবং ধারাবাহিক নাটকে অভিনয় করেছেন। বিশেষ করে নতুন নতুন রুপে পর্দায় উপস্থাপন হন বলেই ভক্তদের কাছে বেশ জনপ্রিয়। তাঁর জন্ম হয় টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলায়। আরফান নিশোর পিতার নাম মোঃ আব্দুল হামিম মিয়া। তিনি ছিলেন একজন সাহসী মুক্তিযোদ্ধা, তাছাড়াও তিনি পেশায় টাঙ্গাইল জেলা পরিষদের সদস্য ও ভূঞাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ফুসফুসে ক্যানসারজনিত রোগে দীর্ঘদিন ভোগেন তিনি, তারপর ২০২০ সালের ১ অক্টোবর না ফেরার দেশে চলে যান। আরফানের মায়ের নাম রাবেয়া খাতুন। পরিবারে মা বাবা ছাড়াও তাঁর এক ভাই ও বোন রয়েছে।
প্রাথমিক জীবন | আফরান নিশো
আফরান নিশো ৮ ডিসেম্বর ১৯৮০ খ্রিষ্টাব্দ সোমবার টাঙ্গাইল জেলার ভূঞাপুর উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। নিশোর এক ভাই ও এক বোন রয়েছে। নিশোর বাবা মো. আবদুল হামিদ মিয়া একজন মুক্তিযোদ্ধা এবং টাঙ্গাইল জেলা পরিষদের সদস্য ও ভূঞাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি ফুসফুসে ক্যানসারজনিত রোগে ভুগে ১ অক্টোবর ২০২০ মৃত্যুবরণ করেন।
নিশো ধানমন্ডি সরকারি বালক বিদ্যালয় থেকে এস.এস.সি. পাস করেন এবং পরবর্তীকালে ঢাকা কলেজ থেকে এইচ.এস.সি. পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।
কর্মজীবন | আফরান নিশো
বিজ্ঞাপনচিত্র
অমিতাভ রেজার বিজ্ঞাপনচিত্রে কাজ করার মাধ্যমে শুরু হয় তার অভিনয় যাত্রা এবং আফজাল হোসেনের প্রতিষ্ঠান “টকিজ” স্ক্রিন টেস্ট দেওয়ার জন্য তাকে ডাক দেয়। এরপরে আরো নানা নির্মাতার সাথে নানারকম কাজ করেন তিনি। থাইল্যান্ডে গিয়ে ডাবল কোলা ব্র্যান্ডের জিনি জিনজার ফ্লেভারের একটি বিজ্ঞাপনচিত্রে অংশ নেন তিনি। এরপরে গাজী শুভ্র, গোলাম হায়দার কিসলু, কিরন মেহেদী প্রমুখ খ্যাতনামা পরিচালকের পরিচালনায় তিনি বিজ্ঞাপনে অংশ নেন।
তিনি মেহজাবিন, তাসনিয়া ফারিণ, বাঁধন, আনিকা কবির শখ, কেয়া পায়েল, সাবিলা নূর, তাসনুভা তিশা, নুসরাত ইমরোজ তিশা, তানজিন তিশা সহ অনেক অভিনেত্রীদের সাথে অভিনয় করেছেন।
2000 সাল থেকে 882 টেলিফিল্ম এবং ধারাবাহিক নাটকে অভিনয় করে ব্যাপক জনপ্রিয়তা এবং খ্যাতি অর্জন করেন। আব্দুল্লাহ হামিম মিয়া একজন মুক্তিযোদ্ধা এবং টাংগাইল জেলা পরিষদের সদস্য এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি ফুসফুসে ক্যান্সার জনিত রোগে ভুগে মৃত্যুবরণ করেন। আফরান নিশোর এক ভাই এবং এক বোন আছে। তিনি ধানমন্ডি সরকারি বালক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন। তিনি একজন বাংলাদেশী। ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি মাতৃ শিক্ষা লাভ করেন। পেশায় বর্তমানে তিনি একজন মডেল ও অভিনেতা। বর্তমানে তার একটি সন্তান আছে। তিনি মেরিল প্রথম আলো পুরস্কার এ ভূষিত হন। গাজী রাকায়েতের পরিচালনায় ঘরছাড়া নাটকের মধ্য দিয়ে ভ্রমণে আসেন তিনি
তার বাংলাদেশি অসংখ্য ভক্ত রয়েছেন যারা প্রতিদিন আফরান নিশোর বায়োগ্রাফি জানতে চান। ২০২১ সালে ঈদুল আজহায় আফরান নিশো অভিনীত নাটক ঘটনা সত্য নিয়ে চরম বিতর্ক তৈরি হয়। রুবেল হাসান নির্মিত এ নাটকে বিশেষ শিশু বা স্পেশাল চাইল্ড এর বাবা মা বাপ কর্মের ফল বলে ভুল বার্তা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। নাটকটি চ্যানেল আইতে প্রচারিত হওয়ার পর প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ইউটিউব চ্যানেলে স্ট্রিমিং করে। এতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন পেজে এবং গুরুপে নাটকটি নিয়ে সমালোচনা হয় এবং তুমুল আপত্তি ওঠে । একাধিক সংগঠন প্রতিবাদ জানায় এবং এ ঘটনায় আফরান নিশো পুরো টিম দুঃখ প্রকাশ করে। পরে নাটকটি ইউটিউব চ্যানেল থেকে সরিয়ে দেয়া হয়।
তিনিই একমাত্র অভিনেতা যাকে দর্শকরা এমনকোন চরিত্রে দেখেনি যা বলা মুশকিল সেটা হোক, গ্রামের সহজ সরল যুবক, একজন মাঝির চরিত্র, একজন লিফম্যান , একজন পাগলের চরিত্র, হকার বা ফেরিওয়ালার চরিত্র, কিংবা মোবাইল মেকানিক্যাল, বা গ্যাং লিডির, একজন প্রেমিক বা স্বামী সব ধরনের চরিত্রে নিজেকে উজার করে দেন এই অভিনেতা ।
হুমায়ূন ফরিদী, জাহিদ হাসান, মাহফুজ আহমেদ, মোশাররফ করিম, চঞ্চল চৌধুরীর প্রজন্মের পরে আফরান নিশোর মতো ক্যারেক্টারের ভ্যারিয়েশন তার সমসাময়িকদের মধ্যে অন্য কেউ সেভাবে দেখাতে পারেনি। মোশাররফ বা চঞ্চল এখনো সমান দাপটে কাজ করলেও স্বভাবতই বয়সের কারণে সব চরিত্র তারা পান না।
নিশোর পারিবারিক নাম আহমেদ ফাজলে রাব্বি। ১৯৮০ সালে ৮ ডিসেম্বর টাঙ্গাইলের ভুয়াপুর উপজেলায় তার জন্ম। রাজধানীর ধানমন্ডি সরকারি বয়েস স্কুল থেকে এসএসসি, ঢাকা কলেজ থেকে এইচএসসি এবং গ্র্যাজুয়েশন করেন ইস্টওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি থেকে।
কখনো মডেল বা অভিনেতা হওয়া বা মিডিয়াতে কাজ করার স্বপ্ন না দেখলেও হঠাৎ করেই আফরান নিশোর মডেলিংয়ে আসা। ২০০৩ সালে অমিতাভ রেজার বিজ্ঞাপনচিত্রে তার অভিষেক হয়। আরও কিছু নির্মাতার সঙ্গে কাজের একই বছর আফজাল হোসেনের প্রতিষ্ঠান টকিজে স্ক্রিন টেস্ট দেন। সে সূত্রে থাইল্যান্ডে ডাবল কোলা ব্র্যান্ডের জিনি জিনজার ফ্লেভারের ড্রিংকসের বিজ্ঞাপনচিত্রে অংশ নেন তিনি, এতে ভালোই জনপ্রিয়তা পান নিশো। তারপর একে একে গাজী শুভ্র, গোলাম হায়দার কিসলু, কিরণ মেহেদীসহ খ্যাতনামা অনেক পরিচালকের বিজ্ঞাপনে কাজ করেন। এভাবে স্বতন্ত্র জায়গা করে নেন বিজ্ঞাপন ইন্ডাস্ট্রিতে।
২০০৬ সালে বাংলাভিশনে প্রচারিত গাজী রাকায়েত পরিচালিত ‘ঘরছাড়া’ নাটকের মধ্য দিয়ে প্রথম টেলিভিশন নাটকে মুখ দেখান নিশো। বলা যায়, প্রথম নাটকেই নজর কাড়েন এবং পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। অবশ্য স্ট্রাগলিং সময়ে যেসব নাটকে অভিনয় করেছিলেন সেগুলো তাকে চট করেই অভিনেতা হিসেবে তারকাখ্যাতি না এনে দেয়নি, বরং আস্তে আস্তে অভিনেতা হিসেবে তাকে তৈরি করতে সাহায্য করেছে। এভাবেই গুণী নির্মাতাদের সঙ্গে কাজ করে নিজেকে শানিত করার সুযোগ পান। কিছুটা সময় এভাবেই পার করলেও ২০১৬ থেকে ২০২১ এই পাঁচ বছরের বিশেষ দিন যেমন; দুই ঈদ বা বৈশাখ অথবা ভালোবাসা দিবসে প্রায় একচেটিয়া অভিনয় করতে দেখা গেছে নিশোকে। এই ব্যস্ততা ও পরিশ্রম তাকে এনে দিয়েছে অর্থ ও যশ। খ্যাতি পেয়েই দিশেহারা না হয়ে পরিণত অভিনেতা হিসেবে নিজেকে ঝালিয়ে নেওয়ার যুদ্ধে লড়ে যাচ্ছিলেন নিশো। এরই ধারাবাহিকতায় বিগত কয়েক বছরে অগণিত জনপ্রিয় নাটকে অভিনয় করে নিজেকে নিয়ে গেছেন এক অন্য উচ্চতায়।
অভিনয়কে প্যাশন হিসেবে মেনে চলা এই মানুষটা তার সকল ধ্যান-জ্ঞান এখনো অভিনয়ের মাঝেই রেখেছেন। ব্যক্তিজীবনের সময়টা বাদে দর্শকদের রুচি, চাহিদা ও সময়োপযোগী গল্প মাথায় রেখে কাজ করে চলেছেন অবিরাম। অভিনয় নিয়ে নিশোর স্বপ্ন হলো একদম বাস্তবিক ও ভিন্ন ভিন্ন চরিত্রে কাজ করা। বিভিন্ন সময় দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, প্রয়াত অভিনেতা হুমায়ূন ফরিদীকে আইডল মানেন তিনি। তাই হয়তো ফরিদীর পরে তাকেই টেলিভিশনে সব ধরনের চরিত্রে অভিনয় করার মতো শক্তিশালী অভিনেতা হিসেবে গণ্য করা হয়।
নিশো অভিনীত উল্লেখযোগ্য কিছু নাটক— অচেনা মানুষ, স্বপ্নগুলো ইচ্ছে মতো, ইডিয়টস, টার্নওভার, ফুলমতি, শুধু তোর জন্য, তুমি না থাকলে, লোটাকম্বল, রেড রোজ, বিয়ে পাগল, শেষ চিঠি, আকাশের ঠিকানায়, ইঞ্জিন, ধূমকেতু, কংকাবতির চিঠি
, প্রেম না দ্বিধা, আবারও দেবদাস, আকাশের ঠিকানায়, এক্স স্কয়ার, হার্টবিট, নিখোঁজ ভালোবাসা, সংসার, কমলা সুন্দরী, বাঁক, ডাইভোর্স, হাওয়াই শহরের গল্প,গুলবাহার, একটি অসমাপ্ত ভালোবাসা, ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প, প্রতীক্ষা, হেল্পফুল সাইফুল, হোম টিউটর, অগোচরে ভালোবাসা, জীবন সঙ্গী, কমলার বনবাস, অনুভবে, সহজ সরল ছেলেটা, বুকের বাঁ পাশে, বা সাম্প্রতিক সময়ে ফেরার পথ নেই, ছেলেরাও কাঁদে, লালাই, লায়লা তুমি কি আমাকে মিস করো, উচ্চতর হিসাববিজ্ঞান, দা প্রেস, এই শহরে, ভিকটিম, ইতি মা, নির্বাসন, উপহার, আগন্তুক, মিস শিউলি, জন্মদাগ ইত্যাদি।
আরফান নিশো অভিনীত উল্লেখযোগ্য নাটকের তালিকা
- আমার স্ত্রীর আততায়ী
- আবারো দেবদাস
- কমপ্লিকেটেড
- লিটমাস লাভ
- যোগ বিয়োগ
- লেটস ফ্লাই
- লাভ এট ফার্স্ট সাইট
- অগোচোরে ভালোবাসা
- ব্রিফকেস
- কালারফুল
- রাতুল বনাম রাতুল
- পয়লা নম্বর
- বিপ্রতীপ
- গুলবাহার
- দ্যা ব্লাইন্ড ডেট
- এক হাজার টাকা
- দ্যা প্রেস
- ট্রাম্প কার্ড
- আর্টিস্ট মজনু খাঁ
- তবুও আকাশ নীল
- যদি তুমি জানতে
- সমর্পণ –
- এক্স স্কয়ার
- আমি তোমার কথা বলবো কাকে
- মাই ডিয়ার দাদা ভাই
- মেঘলা রোদ্দুর
- বাদাবন
- একা একেলা মন
- শুধু তোর জন্যে
- তিনি আমাদের বকর ভাই
- জীবনসঙ্গী
- বোধোদয়
- নাম কি
- নিখোঁজ ভালোবাসা
- ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প
- সাদা কাগজে সাজানো অনুভূতী
- ট্রাইপড
- সীমাহীন দৃষ্টির রঙ নীল
- দ্যা ইন্ড অফ এ লাভ স্টোরি
- সুখপাখি
- সাইন্সের মেয়ে আর্টসের ছেলে
- একটাই আমার তুমি
- মেট্রো পলিটন প্রেম
- আমি ক্রিকেটার হতে চাই
- আলটিমেটাম
- ভাড়ায় চালিত
- টিউন অফ লাভ
- কিছুটা গল্পের মতো
- হঠাৎ
আরফান নিশো অভিনীত ওয়েব চলচ্চিত্র, Afran nisho’s first web series
বেশ কয়েকটি ওয়েব চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন আফরান নিশো। সেগুলি হল :
- মাইনকার চিপায় (২০২১) – জি৫
- মরীচিকা (২০২১) – চরকি
- রেডরাম (২০২২) – চরকি
- সিন্ডিকেট (২০২২) – চরকি
- কাইজার (২০২২) – হইচই
- সাড়ে ষোলো (১৬.৫) (২০২৩) – হইচই
What's Your Reaction?






